জামায়াতে ইসলামীর কারণে বিএনপি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে!
লিখেছেন লিখেছেন জুলকারনাইন সাবাহ ১৯ মার্চ, ২০১৪, ১২:২০:১৪ দুপুর
জামায়াতে ইসলামীর কারণে বিএনপি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, এমন প্রচারণা ইদানীং আবার শুরু হয়েছে। বি এন পি নাকি জামাতের কারণেই কম সিট পাচ্ছে- উপজেলা নির্বাচনে? আসল বাস্তবতা লুকিয়ে রাম-বামপন্থীরাই এমন রেডিমেড নিউজ সাফ্লাই করছে। এটা পুরনো রোগ যে, ১৮/১৯ দলীয় জোটের মধ্যে জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি করা, ভাঙ্গন ধরানো বা সমস্যা সৃষ্টি করা। এটা শুরু হয়েছে ২০০১ সাল থেকেই।
উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল মূল্যায়ন করতে গিয়ে নানা রকম পাণ্ডিত্য জাহির করা হচ্ছে। কেউ কেউ আবিষ্কার করে ফেলেছেন জামায়াতে ইসলামীর কারণে বিএনপি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আসলে এ ধরনের প্রচারণা যারা চালাচ্ছেন, তারা নির্বাচনী ফলাফলও ভালো করে দেখেননি।
১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফার উপজেলা নির্বাচনে ৯৭টি উপজেলার মধ্যে ২৭টি উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জামায়াতে ইসলামী। বাকি ৭০টি উপজেলায় জামায়াত চেয়ারম্যান পদে কোন প্রার্থী দেয়নি। এতে ১২টি বিজয়ী হয় জামায়াত।
২৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফার উপজেলা নির্বাচনে ১১৫টি উপজেলার মধ্যে ২৮টি উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জামায়াতে ইসলামী। বাকি ৮৭টি উপজেলায় জামায়াত চেয়ারম্যান পদে কোন প্রার্থী দেয়নি। এতে ৮টিতে বিজয়ী হয় জামায়াত।
গত ১৫ মার্চ তৃতীয় দফার উপজেলা নির্বাচনে ৮১টির মধ্যে ২৪টি উপজেলায় প্রার্থী দেয় জামায়াতে ইসলামী। বাকি ৫৭টি জামায়াতে ইসলামী কোন প্রার্থী দেয়নি। এতে বিজয়ী হয় ৮টিতে। অবশিষ্ট ১৬ উপজেলার মধ্যে জামায়াত ১১টি উপজেলায় স্বল্প ভোটের ব্যবধানে ২য় স্থানে থেকে পরাজিত হয়।
৩ দফায় উপজেলা নির্বাচনে ২৯৩টি উপজেলার মধ্যে জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী দিয়েছে ৭৯টিতে। অর্থাৎ বাকি ২১৪টিতে জামায়াতে ইসলামীর কোন প্রার্থীই ছিল না। তাই জামায়াতের কারণে বিএনপির বিপর্যয় হয়েছে বলে যারা তত্ত্ব আবিষ্কার করেছেন তারা কেবল আওয়ামী লীগের এজেন্ডাই বাস্তবায়ন করতে চান। তারা মূলত সরকার দলীয় নেতাদের সুরেই কথা বলেন। চারদলীয় জোট ভাঙ্গার যে ষড়যন্ত্র ২০০১ সালে শুরু হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতা মাত্র।
জামায়াতে ইসলামী যেসব উপজেলায় পাস করতে পারবে বা ভালো করবে সম্ভাবনাময় এমন সব উপজেলায়ই কেবল প্রার্থী দিয়েছে। জামায়াত যেখানে প্রার্থী দেয়নি সেখানে বিএনপি বা ১৯ দলীয় জোটের অন্য শরীকরা প্রার্থী দিয়েছে। তাই বিএনপির বিপর্যয় (?) জামায়াতের কারণে হয়নি। এটা বিভ্রান্তি ছাড়া আর কিছুই নয়।
এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পর্যায়ক্রমে সরকার ভোট ডাকাতি, সন্ত্রাস, সহিংসতা বাড়িয়েছে। ১৯ দল সমর্থকরা পাস করতে পারে এমন উপজেলার অনেক কেন্দ্র দখল করে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে তাদের সমর্থক চেয়ারম্যানদের পক্ষে সিল মেরেছে। আওয়ামী সমর্থিতদের ক্রমান্বয়ে বেশি এবং ১৯ দল সমর্থক চেয়ারম্যান ক্রমান্বয়ে কম পাস করার এটাই অন্যতম কারণ। ফল বিশ্লেষণকারীরা এই দিকটা একেবারেই আড়াল করে রেখেছেন।
[b][b]
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রথম দফার উপজেলা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়েছে। বিএনপি জামায়াত জোট পেয়েছে ৫৬টি আর আওয়ামী লীগ পেয়েছে ৩৪টি। প্রথম দফার নির্বাচনের সহিংসতায় কেউ নিহত হয়নি। দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে সহিংসতায় একজন নিহত হয়েছিল। দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছিল ৪৪টিতে আর বিএনপি জামায়াত জোট বিজয়ী হয়েছিল ৫৮টিতে। আর তৃতীয় দফার নির্বাচনে সহিংসতার রেকর্ড ছাড়িয়েছে। নিহত হয়েছে ৩ জন। এ দফার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীসহ আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে ৪১টিতে আর বিএনপি জামায়াত জোট বিজয়ী হয়েছে ৩৫টিতে। তৃতীয় দফার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এগিয়ে গেলে সার্বিকভাবে এখনো পিছিয়ে আছে। তিন ধাপের নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ১১৯টি উপজেলায় বিজয়ী হয়েছে আর বিএনপি জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী ১৪৯টি উপজেলায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। এখনো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জোট থেকে বিএনপি জামায়াত জোট ৩০টি উপজেলায় এগিয়ে আ[/b]ছে।[/b]
বিগত ৩ দফা নির্বাচনের পথ ধরে পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে জোটগতভাবেই সমঝোতার মাধ্যমে প্রার্থী দেয়া উচিত বলে মনে করেন পর্যবেক্ষক মহল। মহাজোটে এখন আওয়ামী লীগ একক দল হিসেবে কাজ করছে। কিন্তু ১৯ দলীয় জোটে বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য দল রাজনৈতিক ময়দানে সক্রিয় রয়েছে। সমঝোতার মাধ্যমে ১৯ দলীয় জোট যদি উপজেলায় প্রার্থী নির্ধারণ করতে পারে তাহলে আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতি করেও তৃতীয় দফার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারবে না। কারণ আওয়ামী দুঃশাসনে জনগণ অতিষ্ঠ। সুযোগ পেলেই জনগণ সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আসছে।
Click this link
বিষয়: বিবিধ
১৪২৫ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
চতুর্থ শর্ত হলো-নিউজের সপক্ষে প্রামাণ্য ডকুমেন্ট দলীল থাকতেই হবে ইত্যাদি
এটার রেশ কবে যে শেষ হবে আল্লাহ মালুম ।
মাইরের পর মাইর
তাই জামায়াত রাগে ক্ষোভে যা করেছে তা সময়ের সাহসী পদক্ষেপ। এতে বিএনপির কিছু কান্ডজ্ঞানহীন সমর্থক এমনটি ভাবলে বুঝতে হবে, লেট দেম ক্রাই......
তোমরা দাড়ি ছেড়ে দাও ও মোচ খাঁ কর' এমন নিদের্শনা চলবে কি?
আপনি মদীনার হাদিস মানতে নারাজ কেন বুছলাম না।
মন্তব্য করতে লগইন করুন