আমাকে ব্লক! আমরা মুসলিমরা কতোটা অসহিষ্ণু?
লিখেছেন লিখেছেন শাহ আলম বাদশা ০৩ আগস্ট, ২০১৪, ০১:০৮:২১ দুপুর
''আপনিও ভেবে দেখুন!'' শিরোনামে আমার এক ব্লগারভাই অনেকদিন পর একটা রাজনৈতিক পোস্ট দিলেন। আমি সাধারণত রাজনৈতিক পোস্টে কখনোই মন্তব্য না করলেও তার পোস্টে মন্তব্য দিলাম। কিন্তু তিনি অকারণে আমাকে শ্ত্রু বানালেন, ব্লক করলেন।
তিনি জবাবও দিলেন ইসলামসম্মত ও সুন্দরভাবে এবং আমিও খুশি হলাম। অথচ আমাকে আবার ব্লক করে দিলেন কেনো বুঝলাম না? এ ব্লগে তো নবীকে গাল দেয়, ইসলামকে গাল দেয় এমন ধিক্কৃত ব্লগারও আছে, যাদের ব্লক করাই যায় এবং ব্যান করাই উচিৎ।
আমিতো নাস্তিক বা ইসলামবিরোধী নই? আমাকে যারা চেনেন তারা আমার প্রশ্নের ধরণ দেখলেই বুঝবেন-কী উদ্দেশ্যে প্রশ্নটি করেছি আমি? আমি কি গাল দিয়েছি, আমি কি ইসলামের বিরুদ্ধে বলেছি নাকি নাস্তিকতার পক্ষে বলেছি? নাকি কোনো দলের বিরুদ্ধে বলেছি? তাহলে কেনো তিনি একাজ করলেন?
একজন দা'য়ীকে, ইসলামের প্রচারককে এমন অসহিষ্ণু হলে কি চলে? নবীকে তায়েববাসী রক্তাক্ত করলে ফেরেস্তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে এসে তাকে বলেন যে, হে নবী-আপনি বললেই আমরা এদের মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে পারি? নবী বললেন-না তা করবো না আমি, এমন করলে কাকে দাওয়াত দেবো তবে?
আর আমি যদি ইসলামবিরোধী কিংবা ইসলামসম্পর্কে অজ্ঞও হয়ে থাকি--তবে আমার অজ্ঞতা দূর করার মতো যুক্তি দিয়ে আমাকে বোঝানো যেতো নাকি? এটাই তো ইসলামের পথ, ঈমানী দায়িত্ব?
আর আমার প্রশ্নও কি খুব খারাপ ছিলো, তা শুনে এতো ক্রোধে ফেটে পড়ার মতো মারাত্মক ছিলো? আমার প্রশ্ন ছিলো-''কিন্তু তারা (শিবির) ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করে কেনো? তারা তাবলীগ করলেতো ঝামেলা থাকেনা ভাই?'' এতেই আমাকে ব্লক করে দিতে হবে? ব্লক বা ব্যান এর মানে আমরা অনেকেই জানিনে। এর মানে হলো গলাটিপে হত্যা করা।
আমিও গালবাজ, যুক্তিহীন, অশালীন মন্তব্যকারী এবং ইসলামের বিরোধিতাকারীদের ব্লক করে থাকি। কিন্তু ইসলাম্পন্থীদের এবং যারা ভদ্র অথচ আস্তিক-নাস্তিক এমনকি বিধর্মীদের আমি সম্মান করি। কিন্তু ব্লক করিনা।
ইসলামে যুক্তির অভাব নেই কিন্তু শক্তি থাকলেও সহজে তা ব্যবহার করা যায়না। যুদ্ধাবস্থায় এবং হত্যারত অবস্থায় একজন কাফির আলীর রাঃ মুখে থুথু মারে। এতে আলী রাঃ মারাত্মক ক্রোধান্বিত হলেও নিজেকে এ ভেবে সামাল দেন যে, এখন আমার ব্যক্তিগত রাগ এসে গেছে এবং একে হত্যা করলে তা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হবেনা। তাই তাকে না মেরে তৎক্ষণাৎ ছেড়ে দেন।
লোকটিও বিস্মিত যে, যখন মারতে কালবিলম্ব করা উচিৎ নয়--তখনই আমাকে ছেড়ে দিলো?
কাফির অবাক হয়ে যখন এর রহস্য জানলো; সঙ্গেসঙ্গেই কলেমা পড়ে মুসলিম হয়ে গেলো? শিবির বলেন আর সাধারণ মুসলিম বলেন--এমন নৈতিকতা এবং চরিত্রের কারিশমার অধিকারী না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ আপনাদের দ্বারা এদেশে ইসলাম কায়েম করবেন বলে মনে হয়না।
আর আপনাদের একটা জিনিস মনে রাখতে হবে যে, ইন্নামাল আ;মালু বিন্নিয়াত-কর্মের ফল নিয়াতের ওপরই নির্ভরশীল। আমি যেমন সদুদ্দেশ্য ব্যতীত অসদুদ্দেশ্যে প্রশ্নটি করিনি তবুও আমার ভাই আমাকে হত্যা করে দিলেন। এজন্যই কারো নিয়তের ওপর হামলা করা ঠিক নয় কিংবা বাহ্যিক দিক দেখেই তাকে মুল্যায়ন করা বোকামী।
আর এমন অসহিষ্ণুতা নিয়ে আর যা-ই হোক ইসলামী আন্দোলন করা সম্ভব নয়। আমাকে দূর থেকে না দেখে ব্লক করা হলেও সামনাসামনি পেলে কি আঘাত করতেন সেই ভাইটি? তাহলে আলীর রাঃ মতো চরিত্র কবে হবে আমাদের? আমরা কেনো গালবাজ হবো, কেনো ইসলামের বিরোধিতা সহ্য করবোনা? কেনো শত্রু বা বিভ্রান্ত মানুষের মুখ গাল নয়, শক্তি নয় যুক্তি দিয়েই বন্ধ করবোনা?
পরিশেষে একটা কথা বলি--সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলাই ইসলাম শেখায়; ইসলাম রাধাকৃষ্ণর লীলা-খেলা' মতো অর্থাৎ কারো জন্য যা লীলা আর কারো জন্য তা খেলা'র শিক্ষা দেয়না। অন্যায় করেও তা জাস্টিফাই করাও আরেক অন্যায়, যা আজকাল মুসলিমরা এমনকি জামাত-শিবিরের অনেকেই করে থাকে। কিন্তু আল্লাহর কাছে কি সেই যুক্তি দিয়ে বাঁচা যাবে?
আপনার কথামতো শিবির-জামাতের সৎমানুষদের দ্বারা ৪০ বছর পর হঠাৎ অন্যান্য দলের মতো গাড়িভাংচূর, হরতাল-অবরোধে নিরীহ মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থ করার পক্ষে কি ইসলামের কোনো যুক্তি আছে? ভুল ভুলই, অন্যায় অন্যায়ই। সেটা স্বীকার করে আল্লাহর কাছে তওবা করাই কি উচিৎ নয়। নাকি আল্লাহ এসব কাজের দায় থেকে জড়িতদের মুক্তির গ্যারান্টি দিয়েছে? এধরণের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে জামাত-শিবিরের যে ক্ষতিগ্রস্থ ভাবমূর্তি তা উদ্ধার করতে হলে আপনাদের একেবারে মাটির মানুষই হতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৭৯০ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এটা একটা মিস্টেক হতে পারে এমনও হতে পারে আপনাকে প্রিয়তে রাখতে গিয়ে ব্লক করেছেন ভুলে।
এমনটি আগেও হয়েছে এরকম হতে পারে।
আল্লাহ ভালো জানেন।
ধন্যবাদ
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 9368
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
হতে পারে সে আপনাকে প্রিয়তে রাখতে গিয়ে ব্লক করে দিয়েছেন।
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন ভাইকে আমি প্রিয়তে রাখতে গিয়ে দুইবার ব্লক করেছিলাম কিছু দিন পরে দেখলাম তিনি আমার ব্লক লিস্টে !
পরে আর কি করা তারে ব্লক থেকে ছুটাইয়া প্রিয়তে নিয়া নিলাম ।
তাও আবার নাইস ভাই
পুরাই মাথা নষ্ট
মানে কী দাঁড়ালো তিনি আমাকেই ফেভারিটও রেখেছেন আবার রাগ করে ঠিকই ব্লক করেছেন!!
ওভারঅল যদি কোন ভদ্রলোককে কেউ বিনা কারনে ব্লক করে দেয় তবে তা চরম অবমাননাকর মনে হয় ব্লককৃত ব্যক্তির কাছে। আমিও একবার এমন পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম।
মানে কী দাঁড়ালো তিনি আমাকেই ফেভারিটও রেখেছেন আবার রাগ করে ঠিকই ব্লক করেছেন!!
ধন্যবাদ। আহত হবার কিছু নেই।
আসলে মোবাইল থেকে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম আপনিও ভেবে দেখুন!। সেখানে আমার প্রিয় ব্লগার ভাই শাহ আলম বাদশা মন্তব্য করেছেন। আমি জবার দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
আসল ব্যাপারটা এখানেই শেষ নয়। শাই আলম বাদশা ভাইকে আমার প্রিয়তে রাখতে গিয়ে সম্ভবত ব্লক করুনে ক্লিক পড়েছে। হয় তো তিনি কষ্ট পেয়েছিলেন। তিনি শুধু খেয়াল করেছেন আমার ব্লগে তিনি ব্লক আছেন। কিন্তু তিনি খেয়াল করেন নি তিনি আমার প্রিয়তেও আছেন। আমি দুঃখিত যে মোবাইলে এমনটা হতেও পারে যা থেকে অন্ততঃ বেরিয়ে আসা যায় না। আমি আসলেই মর্মাহত। গভীরভাবে মর্মাহত। গত ২ আগষ্ট দেয়া পোস্ট মোবাইলে করার পরে আমি আজ আবার ব্লগে এলাম। দেখি অনেকেই আমাকে বাদশা ভাইয়ের ব্লক মারা নিয়ে আমাকে অনেক কিছুই বলেছেন। অনেক চিন্তা করে মনে করেছি ব্যাপারটা আসলে কি ঘটেছিল!
এই ব্যাপারে যারা আমাকে ভুল বুঝেছেন, ক্ষমা করবেন আশা করি। আর বাদশা ভাই আমার সম্মুখে আসবেন। কিন্তু এখন আমি কি করব? আমি তো জানি না কিভাবে ব্লক মুক্ত করতে হয়!
তবে আমিও সদুদ্দেশ্যেই পোস্টটা দিয়ে অনেক মুসলিমের স্ববিরোধী আচরণের প্রতিবাদে, যারা গালাগাল করে, অসহিষ্ণু এবং বাজে মন্তব্য করে নবীর উম্মত দাবিদার হয়ে। শিরোনাম দেখলেই তা বোজাহা যাবে। যাক--আপনার পাতায় গিয়ে দেখবেন-ব্লককৃত ব্লগার এর তালিকা আছে। সেখানে পরিবর্তন বাটনে ক্লিক করে যাকে ব্লক থেকে বাতিল করবেন, তার নামের পাশের ক্রসে ক্লিক করলেই ব্লক উঠে যাবে।
ব্লককৃত ব্লগার
গ্রামের পথে পথে
সমালোচক
অপ্রিয় সত্য কথা
চুতিয়া
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি
মন্তব্য করতে লগইন করুন