৫ ই মের একটি কাল্পনিক ইনভেস্টিগেশিন
লিখেছেন লিখেছেন বশর সিদ্দিকী ০৫ মে, ২০১৪, ০৬:০৮:৫১ সন্ধ্যা
ইনভেস্টিগেশন রুম ১ :
চেয়ারে বসে আছে ভারি চেহারার মধ্য বয়স্ক এক লোক। বয়স হবে ৩৫-৪০ এর মধ্যে। মুখে প্রচন্ড ভয়ের ছাপ। কিছুক্ষন আগে রাঙামাটির একটা খুব দুর্গম এলাকার একটা মাদ্রাসায় লুকিয়ে থাকার সময় এরেস্ট হয়েছেন। ক্ষমতায় থাকার সময় তিনি যুবলিগের পল্টন এরিয়ার নেতা ছিলেন। তিনি এখনো ঠিক শিওর না ঠিক কি কারনে তাকে এখানে ধরে আনা হয়েছে। ক্ষমতায় থাকা কালিন সময়কার তার কৃতকর্মের স্বৃতি হাতরাচ্ছেন। অনেক গুলো খুন, গুম করেছেন। সাথে আছে ধর্ষন , চাদাবাজি এবং প্রতারনার মত অনেকগুলো ঘটনা। এছারা মাদকের ব্যাবসাও করেছেন।
হঠাৎ করে দরজা খুলে গেল। ওপাশ থেকে ঢুকলেন সদ্য প্রমোশন পাওয়া ডিবি অফিসার সাইফুল ইসলাম। সাধারনত এই মুহুর্তে সাইফুলের প্রশ্ন করার কথা। কিন্তু তিনি প্রশ্ন না করে একটা ব্যাগ থেকে একে একে প্লাস, হাতুরি, খুব সুক্ষ ছুরি, শক্তিশালি একটা লাইটার এবং একটা তোয়ালে বের করলেন। তোয়ালেটা নিয়ে সাইফুল একটা ভাজ করলেন এবং ঠিক এই সময়ে আরো দুইজন ঢুকল রুমটার মধ্যে। একজন খুব শক্ত ভাবে সাইফূলকে চেপে ধরল আর একজন সাইফুলের মুখে তোয়ালেটা পেচিয়ে ধরল। আর সাইফুল শুরু করলেন পানি ঢালা। শ্বাস রুদ্ধকর কিছু সময়েরে পরে ছারা পেলেন তিনি। এর পরই সাইফুল তার চেয়ারে গিয়ে বসলেন আর বাকি দুজন রুমথেকে চলে গেলেন। বেচারার তখনও নাক মুক থেকে গল গল করে পারি বের হচ্ছে।
এইবার সাইফুল তার প্রশ্ন পর্ব শুরু করলেন পর্ব শুরু করলেন।
প্রশ্ন ১: আপনি কি .................?
উত্তর: (কিছুক্ষন ভয়ানক কাশির পরে) জে ভাই। আমি .................। ভাই আমারে যা জিগাইবেন ডাইরেক্ট উত্তর দিমু। প্লিজ আর পানি ঢাইলেন না। (কেদে দিলেন তিনি)
প্রশ্ন ২: আমি সাইফুল ইসলাম। আপনারে কিছু প্রশ্ন করব খুব স্ট্রেইট জবাব দিবেন। যদি একটুও উল্টা পাল্টা কথা বইলা আমার সময় নস্ট করেন তাইলে আমি এর পরে প্লাস নিয়া শুরু করব। মনে হয় আমার কথা আপনে ক্লিয়ার বুঝতে পারছেন।
উত্তর : মাথা দোলালেন বন্দি(প্রচন্ড বিদ্ধস্থ চেহারা) যে পারছি। আপনে বলেন।
প্রশ্ন ৩: ৫ ই মে বিকালে আপনি ঠিক কোন স্থানে ছিলেন।
উত্তর: সিপিবির অফিসের পিছনে আছিলাম।
প্রশ্ন ৪: সাথে কে কে ছিল?
উত্তর: সাথে আমাগোর কিছু পোলাপাইন ছিল আর সিপিবির কয়েকটা পোলাপাইন আছিল।
প্রশ্ন ৫: কি করতেছিলেন ওই যায়গায় আপনেরা?
উত্তর: আমরা হেফাজতের পোলাপাইন গুলারে ধইরা ধইরা পুলিশের কাছে ধরাইয়া দিতে ছিলাম।
প্রশ্ন ৬: আরো ডিটেইলস বলেন? এক লাইনে কথা শেষ করবেন না। আমি কিন্তু তাইলে আমার নেক্সট স্টেপে যামু।( সাইফুল প্লাসে হাত দিলেন)
উত্তর: (প্রচন্ড ভয়ার্ত চেহারা) আমি আর আমার পোলাপাইনে হেফাজতের দারিওয়ালা গুলারে ধইরা ধইরা প্রথমে মারছি তার পরে পুলিশের হাতে দিছি। আর সিপিবির পোলাপাইনে তগোর অফিসের নিচে থাকা কয়েকটা দোকানে আগুন লাগাইছিল।
প্রশ্ন ৭: তো আপনি জানতেন না যে সেই দোকনগুলাতে কোরান শরিফ ছিল?
উত্তর: আমি জানতাম কিন্তু ভাবছিলাম এই কোরান পোরানোর জন্য হেফাজতরে দোষ দেয় যাবে তাই আমিও কিছু কেরাসিনের ব্যাবস্থা কইরা দিছিলাম।
প্রশ্ন ৮: রাতে যখন অপারেশন শুরু হয় তখন কই ছিলেন?
উত্তর: তখন মেহেদি সাব পোষাক পরাইয়া একটা শটগান দিছিল আর লগে প্রচুর গুলি দিছিল। বলছিল যেইটারে সামনে পামু যাতে গুলি কইরা দেই।
প্রশ্ন ৯: কত জন মারছিলি খেয়াল আছে?
উত্তর: গুনি নাই ভাই। তয় সবগুলা গুলি শেষ কইরা ফেলছিলাম। পুরা রাস্তা রক্তে কাদা কাদা হইয়া গেছিল। গোলগুলি যখন শেষ হয় তখন মেহেদি সাব শটগানটা নিয়া গেছিলেন।
প্রশ্ন : তারপরে কি হইছিল। এত গুলা লাশ গায়েব করলি কেমনে?
উত্তর: প্রথমে সবগুলা লাশ টাইনা আইনা এক জায়গায় থাবাই রাখতে বলে মেহেদি সাব। আমরা সবাই সেইটাই করি। তার পরে বিজিবির বেশ কযেকটা ট্রাক আসলে সেই ট্রাকে লাশ তুলতে থাকি। কিছু আবার তখনও কাতরাইতে ছিল পানি পানি কইরা। মেহেদি সাব সেগুলারে গুলি কইরা মাইরা গারিতে তুইলা দেয়। লাশ তুলা শেষ হইলে পুলিশের পানি কামান দিয়া রাস্তা পরিস্কার করা শুরু হয়। এক ঘন্টার মধ্যে রাস্তা পরিস্কা কইরা ফেলায় তারা। তার পরে আমারে লাশের গারিতে তুইলাদেন মেহেদি সাব। ( একটু দম নেয়ার সময় নিবেন)
প্রশ্ন: কতগুলা লাশ ছিল আন্দাজে বলতে পারবি? তার পরে কি হইছিল? লাশ গুলা গায়েব করলি কেমনে?
উত্তর: তিন চাইরটার উপরে ট্রাক ভরছিল। আমি সবার সামনের ট্রাকে ছিলাম। গারি দেখলাম সাভারের দিকে রওনা দিল। ভোরের দেকে আমরা সাভরে পৌছার পরে বিজিবি লাশগুলারে রানা প্লাজার লাশগুলার সাথে এক সিরিয়ালে শোয়ানো শুরু করল। তার পরে সবগুলা লাশ ঢাইকা দিল পাটি দিয়া। পরে শুনছি একই কবরে ৪-৫ টার উপরে লাশ দাফন করছে।
সেই মুহুর্তে সাইফুল আর নিজেকে সংবরন করতে পারল না। হাত পা বাধা বন্দিকে নিয়ে গেল টর্চার রুমে। মৃত্যু এই বন্দির জন্য অনেক কম শাস্তি হয়ে যাবে বলেই সাইফুলের কাছে মনে হয়ে যাচ্ছে।
ইভেস্টিগেশন রুম ২:
চেয়ারে বসে আছেন ঢাকার সাবের প্রতাপশালি পুলিশ কর্মকর্তা মেহেদি সাব। কিছুক্ষন পরেই শুরু হবে তার জবানবন্দি। ...........................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................
এর পরের অংশটুকু সেন্সর করা হইল। কারন এইটা পাঠকের সহ্য নাও হইতে পারে।
( বিদ্র: লেখাটি একেবারেই একটা কাল্পনিক লেখা। তাই সিরিয়াসলি না নেবার অনুরোধ রইলো)
বিষয়: বিবিধ
১৪৮২ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে একখান কথা - আপনার কাল্পনিকটা কেমন যেন আমার সাথে মিলে যাচ্ছে। ওহ ওহ আর পারছিনা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন