আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা থেকে যদি ভালো কিছু আসে, তাহলে নিষেধাজ্ঞাই ভালো।

লিখেছেন লিখেছেন বশর সিদ্দিকী ২৩ এপ্রিল, ২০১৪, ১২:২৭:০১ দুপুর





আমেরকিা গত কয়েক দশক ধরে বিশ্বের অর্থনিতি, রাজনিতি এবং অন্যান্য সকল বিষয়ে মোরলিপানা করছে। বিষয়টা গত এক দশকে ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। বিশেষ করে সোভিয়েত ফেডারেশন ভেঙে যাওয়ার পর থেকে শুরু হয় তাদের আগ্রাসি মনোভাবের। আফগানিস্তান থেকে শুরু হয়ে সিরিয়া পর্যন্ত এবং এখনো চলছে এই আগ্রাসান।

যাদের উপর আগ্রাসন চালাতে তারা ব্যার্থ হচ্ছে তাদের উপর চালাচ্ছে কুটনৈতিক নিপিরন। চলছে নিষেধাজ্ঞার উপর নিষেধাজ্ঞার খরগ।

বিষয়টা শুরু হয়েছিল ইরানকে দিয়ে। ইরান তখন আমেরিকার দালাল শাহদের হাত থেকে মাত্র মুক্তি পেয়েছে। ক্ষমতায় বসেছে সদ্য বিশাল রেভ্যুলেশনের নেতা আয়াতুল্লাহ খামেয়নি। অত্যান্ত শক্ত হাতে দেশ পরিচালনা শুরু করলেন তিনি। পশ্চাৎদেশে লাথ্থি মেরে বের করে দিলেন সম্রাজ্য বাদি দেশগুলোর তেল কোম্পানিগুলোকে। কারন তারা তেলের ন্যাজ্য দাম না দিয়েই একরকম জোচ্চুরি করে নিয়ে যেত তেল। এর পরে আমেরিকার দুতাবাস গুলো যে সিআইএ এবং মোসাদের গুপ্তচরবৃত্তি এবং সকল দুস্ট কাজের আখরা এটা ইরানিরাই সর্বপ্রথম সারা বিশ্বের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন। এর সাথে তারা মার্কিন দুতাবাসের কর্মকর্তাদের লাঞ্চিত করে ইরান থেকে বের করে দেয়।

এর পরই শুরু হয় ইরানের উপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা। আমেরিকা ও ইউরোপ এক সাথে শুরু করে ব্যাপক মাত্রার নিষেধাজ্ঞা। একে একে তারা নিষেধাজ্ঞা দেয় উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া সহ অনেকগুলো দেশকে। নিষেধাজ্ঞার আওতা বারিয়ে নিয়ে আসা হয় ওষুধের মত মারাত্মক সব পন্যকে। কিন্তু এখন তো দেখি উল্টা অবস্থা। ইরান এখন কন্ট্রোল করছে ইরাক, আজারবাইজান, সিরিয়া, ওমান সহ তার আশেপাশের সবগুলো দেশকে। শক্তিশালি করেছে হিজবুল্লাহ আর হামাসকে ইসরাইলেল বিরুদ্ধের যুদ্ধের জন্য। নিজেরো ম্যানুফ্যাকচারিং করছেনা এমন কোন পন্য এবং অস্ত্র নাই।

এদিকে এত দিন পরে রাশিয়া অনেকটা ঘুছিয়ে উঠেছে তাদের ভাঙা চুরা অবস্থা থেকে। এবং রাশানরা অনেক অংক কষেছে এই নিষেধাজ্ঞা বিষয়টা নিয়ে। এখন তার ফলাফল সবার সামনে ফকফকা পরিস্কার। ইউক্রেনের সরকারে মস্কোপন্থিদের ক্ষমতাহোরন এবং মোসাদ এবং সিআইএ কর্তৃক আবার তাদের ক্ষমতা থেকে অপসারন। শেষ পর্যন্ত রাশিয়া কর্তৃক ক্রিমিয়া দখল এবং পুরো ইউক্রেনের পুর্বাঞ্চল দখলের পায়তারা।

এখন আমেরিকা ঘন ঘন রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিচ্ছে। খবরে দেখলাম কালও আরেকবার হুমকি দেওয়া হল আমেরিকা কর্তৃক। মজার বিষয় হচ্ছে রাশিয়া এইসব হুমকি ধামকি একেবারেই পাত্তা দিচ্ছে না। প্রশ্ন হচ্ছে কেন?

সহজ উত্তর।

আমেরিকা কর্তৃক নিষেধাজ্ঞার পরিমান যত বারবে তত তাদের অর্থনিতি মানে ডলারের বিপরিতে অন্যএকটা মুদ্রা শক্তিশালি অবস্থানে যাওয়া শুরু করবে। যেমন উদারন হচ্ছে ইরান এবং রাশিয়া রুবলের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে লেনদেন করছে। ভারত ইরানের তেল বাবদ অর্থ পরিশোধ করছে স্বর্ন দ্বারা। জাপান, কোরিয় সহ বেশ কিছু দেশ অর্থ পরিশোধ করছে চিনের মাধ্যমে।

এবার আসি চিনের বিষয়ে। এইরকম মুহুর্তে সবচেয়ে মারাত্মক ভুমিকা পালন করছে চীন। আমেরিকা চীনের উপর ভয়ানক ভাবে ডিপেন্ডেন্ট হয়ে পরেছে। এটা যারা জানেন তারা বলতে পারবেন অবস্থা কোন পর্যায়ে পৌছেছে। যার কারনে চীন আমেরিকার কোন নিষেধাজ্ঞাকেই পাত্তাই দিচ্ছেনা। তারা ইরান, সিরিয়া, উত্তর কোরিয় সহ সকল দেশের সাথে সমান তালে ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে এবং মনে হচ্ছে রাশিয়ার উপর যদি নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে তাহলেও তারা রাশিয়ার সাথে ব্যাবসা বানিজ্য চালিয়েই যাবে। এদিকে ভারত চীনের পথে হাটতেছে, দক্ষিন আমেরিকার দেশগুলো বিশেষ করে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, চিলি সহ বেশকিছু দেশ আমদানি রপ্তানি ক্ষেত্রে চিনের পথেই হাটবে বলে মনে হইতেছে।

এবার আসি আমেরিকার মিত্রদের বিষয়ে। ইউরোপিয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগলোর মাধে অর্ধেকের বেশি দেশ এই মুহুর্তে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্রাইসিসে আছে। জার্মানি আর ইংল্যান্ডের মধ্যে কামরাকামরি চলতেছে সমান তালে। গ্রিস, স্পেইন আর ইতালি পারলে এখনি বের হয়ে যায় এই গ্রুপ থেকে। স্পেইনের অবস্থা আরো চরম। তারা তাদের অর্থনিতি নিয়া পুরা মাইনকা চিপায় আছে।

এই যখন অবস্থা তখন আমার মনে হয় নিষেধাজ্ঞায় যদি সারা বিশ্বে আমেরিকার বিপরিতে অন্য একটা শক্তি উঠে আসে তাহলে পুরোপুরি একটা ব্যালান্সের মধ্যে চলে আসবে পুরো পৃথিবিটা। কারন তখন রাশিয়া একক ভাবে সেই বিপক্ষ অক্ষের নিয়ন্ত্রন নিতে পারবে না। একটা জোট ভিত্তিক নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা হবে। তখন আমাদের মত ছোট দেশগুলোর সৈরাচারি সরকারকে ক্ষমতা থেকে অপসারনের জন্য আর একটা দেশ আমেরিকার বা রাশিয়ার প্রতি তাকিয়ে থাকতে হবে না। আপরাই ক্যাপাবল হব এগুলোকে কান ধরে নামিয়ে দেয়ার জন্য।

বিষয়: বিবিধ

১৭১০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

212215
২৩ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৩৬
হতভাগা লিখেছেন : আমেরিকা-রাশিয়ার যুদ্ধ দেখব - এটা সেই ছোট কাল থেকেই কল্পনা করতেছি ।

এইসব স্নায়ু যুদ্ধ , নিষেধাজ্ঞা জারির মত বোরিং জিনিস আর কত ?
212435
২৪ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১২:০৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : রাশিয়ার অর্থনিতি এমনই যে সেখানে নিষেধাজ্ঞা বিশেষ কাজে আসবে না।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File