চেতনার রমরমা ব্যবসা
লিখেছেন লিখেছেন বদর বিন মুগীরা ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১১:৪১:২৫ রাত
১৯৯২ সাল।জাহানারা ইমাম,শাহরিয়ার কবির,মুনতাসীর মামুনরা চেতনার ব্যবসা চালু করে বসলেন।যুদ্ধাপরাধীদের বেচার করতে হবে।কিন্তু ৫-৭ জনের মিছিল,মিটিংয়ে কেউই উনাদের পক্ষে সাড়া দেয়নি।তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তো বর্তমানের যুদ্ধাপরাধীদের নেতা ছিলেন,কিন্তু বর্তমানের সর্বাধিক সাফল্যের মালিক শেখ হাসিনাও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে সাড়া দেননি।
১৯৯৬ সালে বর্তমানের মান্নীয় প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাপরাধীদের সাথে নিয়ে ক্ষমতার মসনদে আরোহণ করলেন।
এতদিন পর্যন্ত চেতনার ব্যবসাটা কারোরই মনে ধরেনি।
-------
২০০১ সালে জামায়াতের বেঈমানীর ফলে (আওয়ামীয় মতে) আওয়ামীলীগ চেতনার ব্যবসা ধার করতে বাধ্য হয়।আর বামপন্হীরা তাদের সাথে যোগ দেওয়ায় বামদের সেই ব্যবসা দেউলিয়াত্ব কাটিয়ে উঠে সফলতার মুখ দেখতে শুরু করে।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলগ হাজার ইশতেহার ঘোষণা করলেও মূল ব্যবসা হিসেবে চেতনাকেই আঁকড়ে ধরে।আর সেটার জোরেই বাংলাদেশে চেতনা বিকশিত করে চলেছে।
----------
ইদানীং জামায়াত শিবিরের জনশক্তিরাও সেই চেতনার ধারক বাহক হিসেবে উপস্হাপনের সর্বাধিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।বিশেষ করে চেতনার অগ্নিতীরে যারা শহীদ হিসেবে খ্যাত হয়েছেন,তাদের পুত্রধনেরা এইসব ক্ষেত্রে কয়েকধাপ এগিয়ে। উনারা সারাজীবন এই চেতনার বিরোধীতা করলেও এখন সেই চেতনাকে ধারণ করেই ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের স্বপ্ন দেখে চলেছেন।
অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব সারাজীবনে কখনো নিজেকে ভাষাসৈনিক হিসেবে কোথাও বলে বেড়াননি।জীবনের শেষপ্রান্তে এসে এই বিষয়ে কিছু কথা বলেছেন।আর এরই ধারাবাহিকতায় ভাষাসৈনিক গোলাম আযম উপাধি লাগিয়ে ইনার অনুগত জনশক্তিরা সেই চেতনাকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন।
সারাজীবন উনাদের বিবৃতি ছিলো,ইসলামে জাতীয়তাবাদ তথা চেতনাবাদ হারাম।কিন্তু সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে উনারা এখন চেতনাবাদকে জায়েজ করার রাস্তায় নেমে পড়েছেন।মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকার করা যাবেনা,মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বয়ান করতে হবে।২৬ ই মার্চে মিছিল করতে হবে।১৬ ই ডিসেম্বর উদযাপন করতে হবে।
আরো কত কি......
----------
আমি এগুলো পালনের বিরোধী নই।কিন্তু বিরোধিতা এই কারণে করছি,সারাজীবন যেটাকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে,সেটা এখন হালাল হয়ে যায় কিভাবে?এটা যদি এখন হালাল হয়েই থাকে,তখনও এটা হালাল ছিলো।
মুক্তিযুদ্ধের ভুল স্বীকার করে মাফ চাওয়া নিয়ে যারা দলীয় অন্তর্কোন্দল সৃষ্টি করতে পারেন,তাদের কাছে হঠাৎ করে এই চেতনাবাদ ধারণ করা ক্ষণিকের খোলস বদলানো মাত্র।যদি এটাকে হালাল করতেই হয়,তাহলেই ৭১ এ ফিরে যেতে হবে।এবং পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতা করে যে অপরাধ করা হয়েছে,সেটার জন্য মাফও চাইতে হবে।
-------------------
ব্যবসায়ের সবচেয়ে বড় পলিসী হচ্ছে,যারা শুরুতে ব্যবসা করে মার্কেট দখল করতে পারবে,তারাই ব্যবসার শীর্ষে থাকবে।হঠাৎ করে ব্যবসা শুরু ব্যবসাতে বিশাল লাভ করে ফেলবেন,সেটা কল্পনা করা বাতুলতা বৈ আর কিছু নয়।
৯০ এর পর থেকে বামরা চেতনাবাদের ব্যবসা শুরু করেছে।সেই চেতনার জন্য জনগণের গালিগালাজ,পুলিশের লাঠিপেটা সবই খেয়েছে।তারপরই ২০ বছর পরে সেই ব্যবসায়ের সফলতা দেখতে শুরু করেছে।
জামায়াত-শিবির ইদানিং চেতনাবাদের বন্দনা শুরু করেছে।মার্কেটে লুজার হিসেবে নিজেদের উপস্হাপন করছে।ইসলামীবাদ বাদ দিয়ে এভাবে চেতনাবাদ নিয়ে টিকে থাকলে দেখা যাবে,উনাদের চেতনাবাদের ব্যবসা ২০ বছর পর কতদূর এগুতে পারে???????
বিষয়: বিবিধ
১৪২৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন