মেধাবৃদ্ধির চেষ্টা করা কি অপরাধ?

লিখেছেন লিখেছেন বদর বিন মুগীরা ২২ অক্টোবর, ২০১৪, ০৮:২৪:৫৫ রাত

ক্লাসে স্যার একটা প্রশ্ন করার পর এক ছেলে দাড়িয়ে উত্তর দেওয়া শুরু করলো।আর সাথে সাথে পুরো ক্লাস হাসিতে মেতে উঠলো।

স্যার থমকে দাড়িয়ে অন্য ছেলেদের জিজ্ঞেস করলেন-ও কি তোমাদের শত্রু,না তোমরা ওর শত্রু?

-না স্যার।আমরা কেউ শত্রু নই।

-তাহলে ওর উত্তর শুনে তোমরা হাসছো কেন?যে ছেলেটা আজ দাড়িয়ে উত্তর দিয়েছে,তোমাদের হাসির কারনে সে আর কোনদিন দাড়িয়ে উত্তর দিবেনা।তোমরাই তোমাদের এক ফ্রেন্ডের মেধাশক্তি বিকাশের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়াচ্ছো।

হ্যা।আজ আমরাই আমাদের নিজেদের মেধাশক্তিকে নষ্ট করে দিচ্ছি।যে ছেলেটা ক্লাসে স্যারের লেকচার পুরোপুরি বুঝতে না পেরে প্রশ্ন করে,তখন যারা লেকচারটা বুঝতে পারে,তখন প্রশ্নকারী তাদের হাসির খোরাকে পরিণত হয়।

ক্লাসে একটা প্রতিবন্ধী মেয়ের প্রশ্নে বেশীরভাগ ছাত্ররা বিরক্তিবোধ করে।তারা বলে-স্যারকে এত প্রশ্ন করতে হয় নাকি?অনেকে সরাসরি মেয়েটিকে নাক ছিটকাতেও কার্পন্যবোধ করেনা।

কিছুদিন পূর্বে এক স্যার মেয়েটির এক প্রশ্নের জবাব দিয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলছেন-এই মেয়েটা যতটুকু জ্ঞান রাখে ও প্রশ্ন করার সামর্থ্য রাখে,তোমাদের সবারও সামর্থ্য নাই তার সমান যোগ্যতা রাখার।সে যদি প্রতিবন্ধী না হতো,তাহলে সেই ক্লাসে ফার্স্ট হতো।

আমাদের মেধাকে আমরা নষ্ট করে দেই।অনেক অংকুরিত মেধাকে শুরুতেই বিনষ্ট করে ফেলি।অনেকে হিংসার বশবর্তী হয়ে অন্যের মেধাকে ধ্বংশ করে দেই।

সবাই জন্মগতভাবে ও পারিবারিকভাবে মেধাবী হয়না।অনেকের মেধা ও যোগ্যতা বড় হওয়ার সাথে সাথে ও পরিবেশ পরিস্হিতির উপর নির্ভর করে বৃদ্ধি পেতে থাকে।কিন্তু মেধা বৃদ্ধির এ শক্তিটিকে যদি নষ্ট করে ফেলা হয়,তাহলে অনেক সৃষ্টিশীল মেধা ধ্বংশের পথে নিমজ্জিত হয়।

বাংলাদেশের ৪০% মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে এবং শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা ধরা হয় ৩০%।বিশাল এক জনসংখ্যা যাবতীয় মৌলিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত।তারা ইচ্ছে করলেও তাদের সন্তানটিকে ধনী লোকদের সন্তানদের মত অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন করে তুলতে পারেনা।তাদের সন্তানরা যেটুকু যোগ্যতা অর্জন করে,ততটুকু জন্মগতভাবে ও পরিবেশ থেকেই গ্রহণ করে।

বাংলাদেশে একটি বহুল প্রচলিত কথা হচ্ছে-বাংলাদেশে মেধাবী মানুষগুলো বাংলাদেশে থাকেনা।তারা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে বাহিরের দেশগুলোতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে নেয়।

এর একটাই কারন হচ্ছে,আমাদের সমাজে ঐ লোকটির মেধাটিকে মূল্যায়ন হচ্ছেনা।যে কারনে তিনি তার মেধাটিকে নষ্ট না করে আরো বাড়িয়ে তোলার জন্য উন্নত দেশগুলোতে পাড়ি বাধ্য হন।

বিষয়: বিবিধ

১০২৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

277169
২২ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:২৪
আফরা লিখেছেন : এই কাজটা তো আমি ও করি কেউ বেশী প্রশ্ন করলে আমার খুব বিরক্ত লাগে তখন এটা সেটা বলে ফেলি আর এরকম করব না ।
২২ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৯:৩৬
257475
বদর বিন মুগীরা লিখেছেন : আমাদের বিরক্তি অনেককে সামনে এগিয়ে যেতে নিরুৎসাহিত করে।
277174
২২ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:৩৯
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ ভালো লাগলো
২২ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৯:৩৭
257476
বদর বিন মুগীরা লিখেছেন : পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ
277200
২২ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১০:৫৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এই প্রশ্ন না করার শিক্ষা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ পায় পরিবার থেকেই। অনেক পরিবারে প্রশ্ন করাকে বেয়াদবি বলে শিখান হয়। সুতারাং আমাদের প্রকৃত জ্ঞান সবসময় থাকে কম!
শেষ প্যারার সাথে একমত নই কোনভাবেই। আমরা কেন এত মেধাবি উৎপাদন করছি যারা দেশের কোন কাজেই আসছেনা।
২২ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৯:৪০
257478
বদর বিন মুগীরা লিখেছেন : দ্বিমত থাকাটাই স্বাভাবিক।তারপরও ধন্যবাদ Happy

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File