ইসরাঈলী পণ্যবর্জনের ঘোষণা ও আমাদের আবেগ।ইসরাঈলী পণ্যবর্জনের মেয়াদ কি শেষ?
লিখেছেন লিখেছেন বদর বিন মুগীরা ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১০:০৯:২০ রাত
যখন দেখি,কেউ হাটতে হাটতে কোকাকোলা বা পেপসি খেয়ে যাচ্ছে,তখন মনে হয় আমার শরীর থেকে কেউ রক্ত চুষে খাচ্ছে।
যে পণ্যবর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিলো,ইসরাঈলী হামলা থামার সাথে সাথে আমাদের সেই পণ্যবর্জনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।যেসব পণ্য বর্জন করেছিলাম,এখন থেকে সেগুলো আমাদের জন্য হালাল।
গত দুইটা মাসে ওদের পণ্য কেনা যথাসম্ভব বর্জন করার চেষ্টা করেছি।পুরোপুরি সফল হয়েছি বলা যাবেনা।অনেক ক্ষেত্রে কিনে না খেলেও অন্যদের খুশির জন্য খেতে হয়েছে। এখনও সেসব পণ্যবর্জনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।যখন চোখের সামনে কেউ ওগুলো কিনতে যায়,তখন ওদের সেসব কিনা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করি।
পরিবারের সবাইকে এগুলো কেনা থেকে বিরত রাখতে পারি নাই।গতরাতে দুলাভাই আমার ছোট ভাইকে বলছিলো,মিরান্ডা বা ফ্যান্টা কিনে নিয়ে এসো। বললাম-ভাই,এগুলো কিনে নিয়ে না আসাই ভালো।দেশীয় কোন পণ্য কেনাই ভালো। বললেন-দেশীয় পণ্য কি খাওয়ার উপযোগী নাকি?ওদের কোয়ালিটি কত উন্নত!
আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাফেতে ঢুকে একটা ঠান্ডা পানীয়র অর্ডার করলাম।সবসময় মজো বা ক্লেমন পাওয়া যায়।আজ স্প্রাইট দিলো।বললাম-এটা কেনো?অন্য কিছু দেন। বললো-এইটাই আছে।আর কিছু নেই। এইসময় ছোট ভাই কাছে এসে বলছে-ইসরাঈলী পণ্য তো!তাই খাবেননা? -হু।তুমি নিয়ে নাও।
কিছুক্ষণ পরে দেখি এক ফ্রেন্ড তার গেস্ট নিয়ে ক্যাফেতে ঢুকে স্প্রাইট খাচ্ছে।বললাম-এটা কি?তুমিও ইসরাঈলী পণ্য ব্যবহার করো? একটা হাসি দিলো আর বললো-এটা ইসরাঈলী পণ্য জানতামনা। কিছুক্ষণ ইসরাঈলী পণ্য ও ওদের সম্পর্কে বয়ান দিলাম।
কিছুদিন পূর্বের মেডিকেল ক্যাম্পে মিনারেল ওয়াটারের বোতল দেখে পরিচালক ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম-ভাইয়া,আমরা নিজেরা যদি ইসরাঈলী পণ্য বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বর্জন করতে না পারি,তাহলে অন্য মানুষগুলো কিভাবে এটা বর্জন করবে। পরিচালক বললেন-দেখো!আশেপাশে অনেক ঘুরেছি কিন্তু কোথাও এটা ছাড়া অন্য কোন মিনারেল ওয়াটার খুজে পেলামনা।
দুলাভাই আমার এইসব ব্যবহার দেখে ক্ষিপ্ত হলেও প্রায় সময়ই বলে-আহমদ,আমরা এমন জায়গায় আছি,যেখান থেকে ওদের ছাড়তেও পারছিনা আবার ধরে রাখতেও পারছিনা।ওদের কোয়ালিটি দেশীয় পণ্যের চেয়ে হাজার গুণ বেশী উন্নত।যদি দেশীয় পণ্য সমকক্ষ হতে পারে,তাহলে ওদের সমস্ত পণ্যবর্জন করে ফেলা যাবে।
আমরা মুসলমানরাই অনেক বেশী আবেগী।যখন গাজাতে ইসরাঈলী হামলার সময় শত শত ফিলিস্তিনি আহত হয়েছিলো,তখন আমাদের ঈমান অনেক বেড়ে গিয়েছিলো।কিন্তু যখন ইসরাঈল তার হামলা বন্ধ করে দিলো,তখন আমরা আবার তাদেরকে তাদের পূর্বের অবস্হানে ফিরিয়ে নিয়ে গেলাম।
ফেসবুক,ব্লগে বসে বসে অনেক বড় বড় কথা বলে বাস্তবে কি করছি,সেটা আমরা অনেকেই জানিনা।অনলাইনে ঢুকে কোন ফিলিস্তিনির রক্তাক্ত লাশ দেখে শপথ নিয়ে নিলাম,আর ইসরাঈলী পণ্য ব্যবহার করবোনা। কিন্তু আবার যখনই পরিবার,বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিত মহলে আনন্দে মেতে উঠি,তখন সবাইই এই শপখটা ভুলে যাই।আনন্দ উদযাপনের সময়টা পার করি কোকাকোলা,পেপসি,স্প্রাইট বা মিরান্ডা ও ফ্যান্টা খেয়ে।যা অনেকটা একজন মুসলিমের রক্ত চুষে খাওয়ার মতই।
ইসরাঈল তার হামলা বন্ধ করেছে।কিন্তু এটাই চিরস্হায়ী নয়।আবার তারা প্রস্তুতি নিয়ে মুসলমানদের উপর ঝাপিয়ে পড়বে।তাদের কাছে ঐ চুক্তিপত্রটা একটা কাগজ বৈ বেশী কিছু নয়।
তাদের অর্থনীতি আরো বেশী সমৃদ্ধ করবে।সৈন্যবাহিনীকে নতুন করে সাজিয়ে তুলবে।নতুন নতুন অস্ত্র তৈরী করবে।মুসলিমদের বিরুদ্ধে নতুন করে আগ্রাসনের পরিকল্পনা গ্রহন করবে।আর এটা করছে আমার-আপনার পূর্ণ সহযোগিতায়।
হ্যা!আমি-আপনিই তাদেরকে সে সুযোগটা করে দিচ্ছি।যে পণ্যগুলো ক্রয় করে নিজেদের লাভবান মনে করি,মনে মনে উৎফুল্ল হই,সেই পণ্যের লভ্যাংশ চলে যাচ্ছে ইসরাঈলীদের হাতে।আর ওরা সেই টাকাতেই প্রস্তুতি নিচ্ছে মুসলিম নিধনের।
আসুন,অামরা আমাদের নিজেদের জাগিয়ে তুলি এবং শুধু কথার স্কলার হয়ে নয়,কাজের স্কলার হয়ে আমাদের প্রমাণ করে দেই-আমরা প্রাকিটিসিং মুসলিম।।
বিষয়: বিবিধ
১৬০০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আসসালামু আলাইকুম,
ইহুদী ও ভারতীয় পন্যের বিকল্প বাংলাদেশি পন্য ব্যবহার করুন - ( https://www.facebook.com/pages/ইহুদী-ও-ভারতীয়-পন্যের-বিকল্প-বাংলাদেশি-পন্য-ব্যবহার-করুন/790669470984481?ref=hl ) পেজটার মাধ্যমে আমরা কয়েক জন ইহুদী ও ভারতীয় পণ্যের দেশীয় পণ্যের বিকল্প উপস্হাপন করছি । আমরা এই পেজের মাধ্যমে বাংলাদেশের পন্যগুলো ইহুদী ও ভারতীয় পন্যই নয় , সারা বিশ্বের অন্য সব দেশের পন্য হতে গুনে মানে অনন্য ও দামে সস্তা ।
আশা করি আপনারা সবাই এই পেজটা ভিজিট করবেন এবং আমাদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিবেন ।
পরিশেষে সবাইকে নিচের কথাগুলো হৃদয়ে ধারণ করার জন্য অনুরোদ করছি :
১। যে বা যারা জেনে শুনে ইহুদী ও ভারতীয় পন্যের বিকল্প হিসেবে নিজ দেশ অথবা মুসলিমদের দেশের উৎপাদিত পন্য ব্যবহার, বিপনন এবং গুদামজাত করবে ও এগুলোর ব্যবসায় মুলধন বিনিয়োগ করবে - সে বা তারা দুনিয়া ও আখিরাতে মুনাফিক হিসেবে চিহ্নিত হবে । নিষ্ঠাবান মুসলিমদের এসব ব্যক্তিবর্গকে সমাজিক ভাবে বয়কট করার পাশাপাশি তাদের এই গুনাহে কবীরা মুলক কাজ হতে বিরত থাকার জন্য উপদেশ দিতে যেতে হবে । প্রয়োজনবোধে তাদের এই আত্মঘাতি ও ভ্রাতৃঘাতি কাজ হতে বিরত থাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে হবে ।
২। যে বা যারা জেনে শুনে ইহুদী ও ভারতীয় পন্যের বিকল্প হিসেবে নিজ দেশ অথবা মুসলিমদের দেশের উৎপাদিত পন্য ব্যবহার না করে , বিপনন না করে এবং এসব দেশ ও জাতির পন্য গুদামজাত করে ও এগুলোর ব্যবসায় মুলধন বিনিয়োগ করে , তা গুনাহে কবীরা ধরনের কাজ করে । তাদের হাসর - নসরও হবে ইহুদী ও মুসরিকদের সাথে ।
৩। ইহুদী ও ভারতীয় পন্য জেনে শুনে ব্যবহার করলে ৪০ দিন ধরে করা কোন ইবাদতই কবুল হবে না এবং আল্লাহ তার বা তাদের উপর রহমতের নজরে তাকাবেন না ।
৪। মুসলিমদের দেশের উৎপাদিত নিষ্ঠাবান মুসলিমদের পন্য ব্যবহার করলে সেকেন্ডে সেকেন্ড অশেষ নেকি লাভ হয় ।
জেনে রাখা ভাল : স্কোয়ার ও বেক্সিমো গ্রুপ বাংলাদেশিদের হলেও এগুলো ব্যবহার করলে গুনাহে কবীরা হবে । কারণ : প্রথমত্বরা ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে খৃস্টান হয়ে খৃস্টান ধর্ম প্রচার করছে এবং দ্বিতীয়ত্বরা মুসলিম হয়েও প্রকাশ্যে ইসলামবিরোধী কাজকে প্রমোট করছে ও ইসলামের বিধি - বিধানের উপর আঘাত হানছে । যেমন : জিএমজি এয়ারলাইন্সে দরবেশ বাবা বিসমিল্লাহি মাজরেহা ওয়া মুরশাহা ইন্না রাব্বি লা গাফুরুর রাহিম - সহ বিভিন্ন দুয়া ও আল্লাহর কালাম নিষিদ্ধ করেছে । এবং অনেক বিমানবালা ইসলাম অনুযায়ী চলায় তাদের চাকুরী হতে বরখাস্ত করেছে ।
যে বা যারা ইউএস বাংলা এয়ার লাইন্স জিএমজি এয়ার লাইন্সের বদলে ব্যবহার করবে - তার বা তাদের সোয়াব হবে ।
দয়া করে এই রিসালা সর্বত্র বিতরণ করে দোজাহানের অশেষ নেকি হাসিল করুন ।
পরিবর্তিতে এই রিসালা-র ব্যাখ্যা কুরআন - হাদিস - ইজমা - কিয়াসের ভিত্ত্বিতে বিস্তারিত তথ্য উপাত্ত সহ উপস্হাপন করা হবে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন