খ্রিস্টান মিশনারীদের ভয়ংকর অপতৎপরতা ও সরকারের অস্বাভাবিক নিরবতা।
লিখেছেন লিখেছেন বদর বিন মুগীরা ১৫ জুন, ২০১৪, ০৫:৪১:২০ বিকাল
বাংলাদেশ আজ খ্রিস্টান ধর্মের অভয়ারণ্য পরিণত হচ্ছে।দিনকে দিন বেড়ে চলেছে খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী।বিগত ২০ বছরে রাঙ্গামাটি,খাগড়াছড়ি,বান্দরবানে প্রায় লক্ষাধিক লোক খ্রিস্টান ধর্মে প্রবেশ করেছে।
একটি দৈনিক পত্রিকার ’১২ আগস্ট ২০১১’সংখ্যায় প্রথম পাতায় ছাপানো একটি রিপোর্র্টের শিরোনাম ছিল-‘পার্বত্য চট্টগ্রামকে খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল গড়তে বিভিন্ন তৎপরতা।’ রিপোর্টে বলা হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা থেকে তৈরি করা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তিন পার্বত্য জেলাকে কেন্দ্র করে খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল গড়ে তোলার তৎপরতা চালাচ্ছে বিদেশি কয়েকটি দাতা সংস্থাসহ কয়েকটি এনজিও। দরিদ্র উপজাতীয় সম্প্রদায়কে অর্থ-বিত্তের লোভ দেখিয়ে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করার হার আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। গত দুই দশকে শুধু খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় ১২ হাজার ২শ উপজাতীয় পরিবারকে খ্রিস্টান বানানো হয়েছে।
বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ সরকারী অন্যান্য সংস্থার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তিন পার্বত্য জেলা-খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটিতে বর্তমানে ১৯৪ টি গির্জা উপজাতীয়দের ধর্মান্তরিত করে খ্রিস্টান বানানোর ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। এ গির্জাগুলোকে কেন্দ্র করেই দেশি-বিদেশি এনজিও ও অন্যান্য সংস্থা তাদের সমস্ত তৎপরতা চালাচ্ছে।
এনজিওগুলোর মধ্যে খাগড়াছড়িতে রয়েছে ক্রিশ্চিয়ান ফ্যামিলি ডেভেলপমেন্ট অব বাংলাদেশ (সিএফডিবি), বাংলাদেশ ব্যাপ্টিস্ট চার্চ ফেলোশিপ, খাগড়াছড়ি জেলা ব্যাপ্টিস্ট চার্চ ফেলোশিপ, ক্রিশ্চিয়ান সম্মেলন কেন্দ্র খাগড়াছড়ি, সাধু মোহনের ধর্মপল্লী, বাংলাদেশ ইউনাইটেড ক্রিশ্চিয়ান অ্যাসোসিয়েশন, ক্রাউন ব্যাপ্টিস্ট চার্চ ইত্যাদি। খাগড়াছড়ি জেলায় ৭৩টি গির্জা রয়েছে। ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এ জেলায় ৪ হাজারের অধিক পরিবার খ্রিস্টান হয়েছে।
প্রতিবেদনে বান্দরবান বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জেলায় গির্জা রয়েছে ১১৭টি। এখানে খ্রিস্টান ধর্মবিস্তারে কাজ করছে ক্রিশ্চিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (সিসিডিবি), গ্রাম উন্নয়ন সংগঠন (গ্রাউস), কারিতাস বাংলাদেশ, অ্যাডভেন্টিস্ট চার্চ অব বাংলাদেশ, ইভেনজেলিক্যাল ক্রিশ্চিয়ান চার্চ (ইসিসি) ইত্যাদি। ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এ সংগঠনগুলো বান্দরবানে ৭ হাজার উপজাতীয় পরিবারকে খ্রিস্টান পরিবারে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছে।
রাঙামাটিতে ক্যাথলিক মিশন চার্চ, রাঙামাটি হোমল্যান্ড ব্যাপ্টিস্ট চার্চ ও রাঙামাটি ব্যাপ্টিস্ট চার্চ প্রায় ১ হাজার ৬৯০ উপজাতীয় পরিবারকে খ্রিস্টান পরিবারে পরিণত করেছে।
প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়,খ্রিস্টান ধর্ম দ্রুত বিস্তারের ফলে উপজাতিরা তাদের সংস্কৃতি,সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতি,ইতিহাস-ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে।ভবিষ্যতে কোন স্বার্থান্বেষী মহল ঐ অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতকে কাজে লাগিয়ে তাদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা অর্জনে সচেষ্ট হতে পারে।
সরকার এই ক্ষেত্রে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া বিভিন্ন প্রতিবেদনে বিশিষ্টজনেরা এই ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তারা তাদের মন্তব্য বলেন,খ্রিস্টান মিশনারীগুলো অত্যন্ত সুকৌশলে তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।খ্রিস্টান এনজিও ও তাদের দাতা সংস্হাগুলো পার্বত্য চট্টগ্রামকে ’পূর্ব তিমুর’বানানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
এছাড়াও খ্রিস্টান এনজিওগুলো বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের তৎপরতা অব্যহত রেখেছে।রাজশাহী-নওগার সাওতাল, হালুয়াঘাট, দুর্গাপুর ও মধুপুর-শেরপুরের গারো উপজাতীয়দের মাঝেও টাকা-পয়সার জোরে ব্যাপক হারে খ্রিস্টান বানানোর কাজ চলছে।
এই সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনের উপর নজর রাখলে বুঝা যায়,খ্রিস্টান এনজিওগুলোর উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দ্রুতই ফুরিয়ে পাচ্ছে।যদি এখনও সরকার এই অপতৎপরতা সম্পর্কে সচেতন না হয়,তাহলে বাংলাদেশকে মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে কঠিন বিপদ মোকাবেলা করতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন