মানবতার আর্তচিৎকার!
লিখেছেন লিখেছেন বদর বিন মুগীরা ১৩ জুন, ২০১৪, ০১:০৬:৩৩ রাত
১.
টাঙ্গাইল পাড়ি দিচ্ছিলাম।দুই পাশের চাষের জমির মাঝ দিয়ে গাড়ি দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলো।দূরে তাকিয়ে দেখি,জমির মাঝে কাপড় দিয়ে অনেকগুলো খুপড়ি তৈরী করা।খুপড়িগুলোর বাইরে কতগুলো বাচ্চা ছেলে মেয়ে দৌড়াচ্ছে।
কিছু দূর এগিয়ে যাওয়ার পর দেখি,উচু রাস্তার নিচের সরকারী জমিতে আরো কতগুলো তাবু টাঙ্গানো।এগুলো অনেকটাই নিস্তব্ধ।কোথাও কোন সাড়া-শব্দ পেলামনা।
এদের সীমানা পেরিয়ে যাওয়ার পর মাথায় অনেক চিন্তা ভর করলো।
এরা কারা?এরা কোথা আসছে?
হয়ত এরা নদীভাঙ্গনের শিকার কোন গ্রামের অধিবাসী।সবকিছু হারিয়ে আজ এরা নিঃস্ব।
হয়ত দিনে দুইবেলা খায়।এক কাপড়ে এক বছর চলে।
কিন্তু এদের বেদনাগুলো কি আমাদের অন্তরে পৌছে?
২.
-ভাইয়া,একটা কথা বলি।
-জ্বী বলেন।
তারপরও কথা বলতে লজ্জা পাচ্ছে।
-একটা টিউশনি খুব দরকার।খুব খারাপ অবস্হার মাঝে আছি।
-এখন কত ঋণ আছে?
-দুই হাজার টাকার মত ঋণ আছে।
-আচ্ছা!এই টাকা নেন।এর দ্বারা কিছুদিন চলেন।দেখি,এর মাঝে টিউশনির ব্যবস্হা করতে পারি কিনা?
৩.
-দোস্ত!চল্ নাস্তা করে আসি।
-না।
-ক্যান?
-আমি যাবোনা।তুই যা...
-আমার সাথে আয়!(জোর করে)
কিছুদূর গিয়ে...
-নাস্তা কি করছিলি?
-না।এখন সাথে টাকা নাই।
-তাহলে না করলি ক্যান?
-সবার সামনে বলবো নাকি,আমি নাস্তা করি নাই।
এই সমস্যাগুলো জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।অনেকে অনেক সুখের মাঝেও বাস করে অনুভব করে,সে জীবনে অনেক কিছু পায় নাই।
অনেক ধনীর দুলালরা মাসে দশ হাজার টাকা উড়িয়েও মাস শেষে বলে,দোস্ত!টাকা শেষ।কিছু টাকা ধার দে।
এদের কাছে মনে হয়,টাকাটা কিছুই না।এটা একটা খেলনার বস্তু।হাতে আসবে আর নিজের ইচ্ছেমত উড়াবো।
কিন্তু একই সময়ে অনেকে তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো মিটাতে হিমশিম খাচ্ছে।তাদের কষ্টগুলো আমরা কখনো দেখতে পাইনা।তাদের আর্তনাদগুলো,না বলা কথাগুলো কখনো আমাদের কানে প্রবেশ করেনা।
কারন,আমরা এইসব ক্ষেত্রে অন্ধ ও বধির হয়ে গেছি।
বিষয়: বিবিধ
১০৮২ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
টাকা যেরকম ভাবে আসে সেরকম ভাবেই যায়
মন্তব্য করতে লগইন করুন