জিহাদী ভাইদের ফেসবুকীয় জিহাদ

লিখেছেন লিখেছেন বদর বিন মুগীরা ১৯ মার্চ, ২০১৪, ০৭:০৭:৩১ সকাল

আমি ফেসবুকে এসে হাসতে হাসতে ঘুমায়ে গেলাম।

কতিপয় জিহাদিস্ট ভাই ফেসবুকে জিহাদের দাওয়াত দিতে দিতে কয়েকজন ভাইকে ফেসবুকের মুজাহিদ হিসেবে শপথ দিয়েছেন।

কালকে এক ফেসবুক জিহাদিস্ট ভাইয়ের স্ট্যাটাসে কমেন্ট করছিলাম-আপনারা থাবা বাবা,আসিফ মহিউদ্দীন,আরিফ জেবতিকদের হত্যার হুমকি না দিয়ে শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রীপরিষদের কয়েকজনকে সরাসরি হত্যা করে ফেলুন।তাহলে এই কতিপয় ইসলামবিদ্বেষীদের কিছুই করতে হবেনা।এম্নিতেই এরা পালিয়ে যাবে।কিন্তু এই কাজটি করতে পারবেননা কারন শেখ হাসিনার কথা শুনলেই আপনাদের প্যান্ট ভিজে যায়।

উনি জবাব দিলেন-আপনি যদি আরেকবার এইরকম অপ্রাসঙ্গিক কমেন্ট করেন,তাহলে আপনাকে আনফ্রেন্ড করে দেবো।

বললাম-ভাইজানরে,অপ্রাসঙ্গিক কমেন্ট করি নাই।এই কাজটি করতে পারলে আপনাদের জিহাদও হয়,ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা মুক্তি পায় এবং বাংলাদেশের জনগন আপনাদের সারাজীবন আপনাদের মাথায় করে রাখবে।

এই লোকগুলো ফেসবুকে কয়েকশ লাইক পেয়েই মনে করে,জিহাদের পক্ষে বিশাল বড় একটা জনসমর্থন তৈরী হচ্ছে।

আমি এই ভাইদের স্পষ্ট করেই বলি,শুধু রাসুল (সা) এর জিহাদী যুগটাই ইসলাম নয়।যদি কিছু লোক তৈরী হলেই ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করা যেতো,তাহলে রাসুল (সা) মাক্কী যুগেই মক্কা বিজয় করতে পারতেন।আর যদি তখন নাও করতেন,তাহলে হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় অনায়াসে মক্কা বিজয় করতে সক্ষম হতেন।

কিন্তু তিনি অস্ত্রের জোরে মানুষকে ইসলামে দাখিল করতে চাননি।হুদায়বিয়া সন্ধির পরে যখন খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা) এর মত ব্যক্তিরা ইসলামে দাখিল হলেন,তখন মক্কা বিজয়ের কথা চিন্তা করা হয়।এবং মক্কা বিজয়কে ইতিহাসে রক্তপাতহীন এক বিপ্লব বলা হয়।

নামাজ-রোজা না করে,মানুষকে ইসলাম না বুঝিয়ে হঠাৎ করে জিহাদের আহবান করলে কতটুকু ইসলামসম্মত হয়,সেটা আপনারা জিহাদিরা কুরআন-হাদীস পড়ে বুঝে নিয়েন।কুরআনে নামাজ,রোজার চেয়ে বেশীবার জিহাদের কথা উল্লেখ আছে,তাই নামাজ,রোজা বাদ দিয়ে জিহাদে শরীক হতে হবে,এটাই যদি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আপনাদের জিহাদ হয়,তাহলে ফেসবুকে জিহাদ জিহাদ করা ছাড়া বাস্তব ময়দানে জীবনেও নামতে পারবেননা।

ভাইজান,জিহাদ জিহাদ বলে ভন্ডামি করা বাদ দেন।কুরআন,হাদীস ভালো করে পড়ুন ও বুজুন।ইসলামের মূল স্পিরিটকে ধরে রাখার চেষ্টা করুন।রাসুল (সা) ও তার সাহাবাদের দাওয়াতের ফলে ইসলাম বিশ্বব্যাপী বিস্তৃতি হয়েছিলো।শুধুমাত্র দেশ দখল ও মানুষকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মানুষের মনে ইসলামকে গেঁথে দেওয়া যায়নি।।

বিষয়: বিবিধ

১২০৬ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

194513
১৯ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৮:০৮
মোহাম্মদ নূর উদ্দীন লিখেছেন : আমার ধারনা আমাদের কোথাও একটি গোলমাল বা বুঝার ভুল রয়েছে । সুরা বাকারার ২১৬ নং আয়াতের তাফসীর শুনছিলাম সেদিন ।
সত্যি বলতে কি আমাদের কেউ মনেকরি, যেখানে যে অবস্হায় আছি শত্রু খতম করতে হবে, কেউ আবার আরব ওয়ার্ল্ড আর বিলাদ-আশ-শামে যুদ্ধ করলেই মনে করে আল্লাহর রাহে জিহাদ করছেন। কেউ, নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ হল উত্তম জিহাদ এবং মনে করছে ময়দানে যুদ্ধ করার চেয়েও গায়েরুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নামাজ-রোজা ও অন্যান্য কিছু হুকুম আহকাম মানতে পারাই আসল জিহাদ । কেউ আবার মনে করে দ্বীন প্রতিষ্টার আন্দোলনে সার্বিকভাবে ঝাপিয়ে পড়ার নাম জিহাদ। তারা আবার সারা বিশ্বজাহানের মুসলমানের অতটা খোজ রাখতে পারেনা ।
১৯ মার্চ ২০১৪ সকাল ১১:২৪
145120
বদর বিন মুগীরা লিখেছেন : ভাইজান,ইসলামের মূল স্পিরিট হচ্ছে দাওয়াতী কাজ।প্রথমে দাওয়াতী কাজের মাধ্যমে ইসলামের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে হবে।জনমত সৃষ্টি হওয়ার পরে জিহাদের প্রসঙ্গ আসে।যারা কোন আমলের ধার না ধারে শুধু জিহাদ জিহাদ করেন,উনারা ইসলামই ভালোভাবে বুঝতে পারেননি।
১৯ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:১৬
145316
ঈগল লিখেছেন : বদর বিন মুগীরা' ভাইকে আমার প্রশ্ন, কতটুকু দাওয়াহর কাজ করলে জিহাদ ফরজ হবে? কত পার্সেন্ট জনমত সৃষ্টি করলে জিহাদের প্রশ্ন আসবে? মুসলিম হওয়া ব্যতিত কোন কোন আমল করার পর জিহাদ ফরয় হয়? জিহাদীরা আমলের কোন ধার ধারে না এই বিদ্বেষমূলক তথ্য আপনি কোথায় পেলেন? জানতে খুব ইচ্ছে করছে।
=================
আলজেরিয়াতে জনমত সৃষ্টি হয়েছিল, তিউনিসিয়া, মিসরে ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে জমনত সৃষ্টি হয়েছিল কিন্তু আপনার কাঙ্খিত শরীয়াহর বাস্তবায়ন কোথায়? নাকি আরো আরো জনমত সৃষ্টি করতে হবে? নাকি একসময় বলে বসবেন যে, ভূপৃষ্ঠের প্রত্যেক মানুষ ইসলাম গ্রহণ না করা পর্যন্ত কাঙ্খিত শরীয়াহ প্রতিষ্টা করা অবৈধ? বিষয়গুলি জানতে খুব ইচ্ছে করছে।
===============
তাবলিগ খারাপ, চরমনাই খারাপ, তালেবান খাারাপ, আল কায়েদা খারাপ তাহলে ভালো কি আপনারাই। মহান আল্লাহই ভালো জানেন। বিভ্রান্তিতে আছি, আসলে যাবো কোথায়? কোন দলটি ইসলামের জন্য কাজ করছে বুঝা খুবই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। মহান আল্লাহ তায়ালার সাহায্য কামনা করছি।
====================
আপনার ইমেল আইডি কি পাওয়া যাবে। দিলে হয়ত যোগাযোগ উপকার হত।
194519
১৯ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৮:৫৭
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাইয়া-আমি এই ভাইদের স্পষ্ট করেই বলি,শুধু রাসুল (সা) এর জিহাদী যুগটাই ইসলাম নয়।যদি কিছু লোক তৈরী হলেই ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করা যেতো,তাহলে রাসুল (সা) মাক্কী যুগেই মক্কা বিজয় করতে পারতেন।আর যদি তখন নাও করতেন,তাহলে হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় অনায়াসে মক্কা বিজয় করতে সক্ষম হতেন।
১৯ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:৪৭
145360
ঈগল লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাইয়া, আমি জিহাদী ও দওয়াতী প্রত্যেক ভাইকে স্পষ্ট করেই বলি, শুধু রাসূল (সাঃ) এর জিহাদী অথবা দাওয়াতী যুগটাই ইসলাম নয় বরং এই দুইটার সম্বনয় জরুরী।
========
এই ভাবে বললে কতই না ভালো হতো।
194550
১৯ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৯:৪২
egypt12 লিখেছেন : ভালোই বলেছেন
194622
১৯ মার্চ ২০১৪ সকাল ১১:১৯
ঈগল লিখেছেন : ১। তাহলে থাবা বাবাকে হত্যা করা ভুল হয়েছে?
২। অনেক কুলাঙ্গারকে তো ছাত্র শিবিরেরর ভাইয়েরা জিহাদী চেতনায় হত্যা করেছে এবং ভবিষতেও করবে। তাহলে নিজের অন্যায়টা স্বীকার করে নেওয়াটা কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে না?
৩। শেখ হাসিনার কথা শুনলে প্যান্ড ভিজে যায়'- মানেটা ঠিক বুঝলাম না।
৪। ফেসবুক, ব্লগে যারা জিহাদী দাওয়াহ ছড়িয়ে দিচ্ছে তারা সলাত সিয়াম করে না এর প্রমাণ আপনি কিভাবে পেয়েছেন?
৫। আপনি হয়ত একজন জিহাদী চেতনাধারী ভাইকে দেখিয়ে দিয়ে বলবেন এই তো, তখন তো আমিও পাঁচ জামাতী চেতনাধারী ভাইকে দেখিয়ে দিয়ে বলতো, এরাও সলাতে গাফলতি করে, ভুলভাল রির্পোট পূরণ করে তখন আপনার জওযাব কেমন হবে?
=================
সম্মাণিত ভাই, অনুরোধ করছি, জিহাদী ভাইদেরকে দেখলেই মন খারাপ করে তাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ মূলক পোস্ট দিয়ে অপপ্রচার চালাবেন এটাই কি ইসলামের শিক্ষা? আমার মনে হয়, যেসব ভাইয়েরা ফেসবুক, ব্লগ ইত্যাদি ফোরামে জিহাদী দাওায়াহ ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছে তাদেরকে আগে বুঝুন, তারা কি চাই এটা আগে জানার চেষ্টা করুন অতঃপর তাদের ভুলগুলি নিয়ে গঠন মূলক সমালোচনা করুন। ইনশাআল্লাহ এটাই হবে এক মুসলিম ভাইয়ের প্রতি ইহসান।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File