রাসুল (সা) এর যুগের ইসলাম ও বর্তমানে ইসলামী দলগুলোর অবস্হা।

লিখেছেন লিখেছেন বদর বিন মুগীরা ১২ মার্চ, ২০১৪, ০৮:১৯:০৩ রাত

রাসুল (সা) তার দাওয়াতী জীবনের প্রথম তিনটি বছর গোপনে দাওয়াতী কাজ করেন।তারপর আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা প্রকাশ্য দাওয়াতী কাজ করতে নির্দেশ দেন।রাসুল (সা) এর দাওয়াতী কাজের মূল উদ্দেশ্য আল্লাহ প্রদত্ত বিধানকে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠা করা।

যদি শুধুমাত্র মানুষকে ভালো কাজ করার কথা বললেই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হয়ে যেতা,তাহলে মক্কার কুরাইশরা রাসুল (সা) এর কাজে বাঁধার সৃষ্টি করতোনা।কিন্তু তারা রাসুল (সা) এর কাজকে বন্ধ করে দেয়ার জন্য সকল প্রকার জুলুম-নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছিলো।

রাসুল (সা) এর দাওয়াতী কাজের সর্বশেষ পর্যায় ছিলো ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা।এটি বাতিল শক্তি রাসুল (সা)এর দাওয়াতের মধ্যে দিয়েই বুঝতে পেরেছিলো।যদি রাসুল (সা) এর বানী সবাই গ্রহন করে,তাহলে কাফিরদের দেবতা ও তাদের সর্দারির কোন অস্তিত্ব থাকবেনা।তাই তারা রাসুল (সা) এর বানীকে সহজভাবে গ্রহন করতে পারেনি।

রাসুল (সা) তখন শুধু আমরি বিল মারুফ এর কাজে ব্যস্ত ছিলেন।কখনো কোন সাহাবীর উপর কাফেরদের অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে পারেননি।দাওয়াতী দ্বীনকে সর্বত্র পৌছিয়ে দিতে ব্যস্ত ছিলেন।

রাসুল (সা)মদীনায় হিজরতের পরে প্রথমেই মদীনাকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষনা দেন।সর্বপ্রখম ইসলামী রাষ্ট্রের ভিত্তি মজবুত করতে কাফিরদের একাধিকবার মোকাবিলা করেন।হুদায়বিয়ার সন্ধির পরে ধীরে ধীরে ইসলামের বানীকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার কাজে ব্যাপৃত হন।বিভিন্ন শাসকদের কাছে ইসলাম গ্রহনের দাওয়াত দেন।

মক্কা বিজয়ের পরে সমগ্র আরব ইসলামের ছায়াতলে নিয়ে আসেন।দশম হিজরীতে সিরিয়া অভিমুখে সেনাবাহিনী প্রেরন করেন।

রাসুল (সা)ও তার পরবর্তীতে খলিফারা বিভিন্ন অভিযান পাঠাতেন,তখন আক্রমনের পূর্বে তিনটি শর্ত দিয়ে দিতেন।

১.ইসলাম গ্রহন করতে হবে।নতুবা

২ জিজিয়া কর দিতে হবে।এই দুটির একটিও না হলে

৩.তলোয়ারই ভাগ্য নির্ধারন করবে।

তৎকালীন যুগে সমগ্র বিশ্ব ছিলো অন্ধকারে নিমজ্জিত।শাসক শ্রেনীর অত্যাচারে জনগন ছিলো অসহায়।সাধারন জনগন ছিলো মুক্তি পাবার অপেক্ষায়।যখনই কেউ ইসলামের দাওয়াত পেতো,সাথে সাথে ইসলাম গ্রহন করতেন।এবং বাহির থেকে কেউ মদীনায় এসে ইসলাম গ্রহন করলে তার দেশের অবস্হা তুলে ধরতেন এবং বলতেন,সবাই এরকম মুক্তি পাবার অপেক্ষায় রয়েছে।একটু শান্তির খোজে সবাই ছিলো পাগলপ্রায়।

সেই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলামের বানীকে বুলন্দ করার জন্য অভিযান চালানো হতো।

বর্তমানের ইসলামী দলগুলোর অবস্হা-

১.তাবলীগ-ইসলামের বানী জনমনে পৌছিয়ে দেয়ার কাজে ব্যস্ত।সবাইকে সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে বাঁধা দেয়ার কাজে তারা অভ্যস্ত নয়।শুধুমাত্র সৎ কাজের আদেশ দিতে রাজী।সহজ কথায়,মাক্কী যুগ থেকে বের হতে রাজী নয়।

তবে ইসলামের বানী সর্বস্তরে পৌছিয়ে দিতে এদের ভূমিকা অপরিসীম।

২.আল কায়েদা ও তালেবান-এরা সরাসরি চরমপন্হায় বিশ্বাসী।সৎকাজে আদেশের পরিবর্তে অসৎ কাজকে মোকাবেলা করতে সিদ্ধহস্ত।জনমতকে কোন সময়ই গুরুত্ব দেয়না।যেখানে খারাপ কাজ হয়,সেখানের সবকিছু ধ্বংস করে দিতে হবে।

এরা রাসুল (সা) এর সার্বিক জীবনকে মেনে চলতে প্রস্তুত নয়।রাসুল (সা) এর জিহাদী জীবনকে ইসলামের আসল রুপ বলে মনে করে।

দাওয়াতী কাজই যে ইসলামের আসল রুপ,এটি মানতে রাজী নয়।

৩.চরমোনাই-ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করতে বদ্ধপরিকর।তবে সেটা কাজের চেয়ে কথায় বেশী হয়।কিন্তু ইসলামের সার্বিক নিয়ম মেনে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করতে রাজী নয়।উনাদের ইসলামটা এখনও এক পরিবারের মধ্যেই আবদ্ধ করে রেখে দিয়েছেন।

ইসলামকে সর্বস্তরে পৌছিয়ে দেয়ার মত পুজি এবং রসদ একটিও পুরোপুরি নেই।কর্মীরা নিজস্ব গন্ডীর বাহিরে যেতে রাজী নয়।কুরআন-হাদীসের রেফারেন্স দেয়ার চেয়ে পীরের রেফারেন্স বেশী দিয়ে দেয়।

৪.জামায়াতে ইসলামী-ইসলামের পক্ষে একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে।রাসুল এর কর্মজীবনের সাথে এদের কাজের ধারা অনেক বেশী মিলে যায়।প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জুলুম নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে।

ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের জন্য পর্যাপ্ত উপায় উপকরন নিয়ে ময়দানে নেমেছে জামায়াত।যা কিছু ঘাটতি আছে,আস্তে আস্তে সেগুলোও পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।

বর্তমান বাংলাদেশে কুফরী শক্তির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি জামায়াতে ইসলামী।জামায়াতকে ধ্বংস করে দিতে পারলে বাংলাদেশে ইসলামের পক্ষে কথা বলার মত শক্তি থাকবেনা।

জামায়াতের নেতৃবৃন্দকে হত্যার মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জনের পথে অনেকটা এগিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু যাদের আদর্শ রাসুল (সা),তাদেরকে ধ্বংস করেও শেষ করা যায়না।

এই চরম সত্যি কথাটা কুফরী শক্তি আস্তে আস্তে বুঝতে পারছে।

বিষয়: বিবিধ

১৪৭৬ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

191286
১২ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:৩১
পথের খুঁজে লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
১২ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:৩৩
142247
বদর বিন মুগীরা লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ
191300
১২ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:৫৬
গৃহস্থের কইন্যা লিখেছেন : "রাসুল (সা)ও তার পরবর্তীতে খলিফারা বিভিন্ন অভিযান পাঠাতেন,তখন আক্রমনের পূর্বে তিনটি শর্ত দিয়ে দিতেন।
১.ইসলাম গ্রহন করতে হবে।নতুবা
২ জিজিয়া কর দিতে হবে।এই দুটির একটিও না হলে
৩.তলোয়ারই ভাগ্য নির্ধারন করবে।"


আহারে..........., দুনিয়ার মানুষ তো বিয়ে পাগলা মোহাম্মদের তালুক!! উনি যা শর্ত নিবেন তাই মেনে নি্যে হবে?? তো, বসে আছেন ক্যান! যান্না- আমেরিকা, চীন, ভারত থেকে জিজিরা করের টাকাটা নিয়ে আসুন। পাছে মোহাম্মদের বাপের নাম ভুলিয়ে দেয় কিনা ভয় হছ্ছে।
১৩ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:২৫
142396
পথের খুঁজে লিখেছেন : সঠিক মূল্যায়ণ করাটা সত্যিই কঠিন -সেটা আপনার আমার সবার জন্যই।
১৫ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:০২
143302
বদর বিন মুগীরা লিখেছেন : আমি বুঝদার বেবুঝ মানুষকে কোন কিছু বুঝাতে আসিনা।
191303
১২ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:৫৯
সন্ধাতারা লিখেছেন : মাশাআল্লাহ অনেক চমৎকার পোস্ট। আপনার লিখায় ইসলামী দলগুলোর প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠেছে। তবেদেশ ও জনগণের বৃহতর স্বার্থে সকলকে ঐক্যমতে পৌছানোর চেষ্টা করতে হবে। সম্ভব না হলেও হাল ছেড়ে দেয়া উচিত নয়। অনেক ধন্যবাদ সুন্দর পোষ্টটির জন্য।
১৫ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:০১
143301
বদর বিন মুগীরা লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ
191308
১২ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:০৪
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম, জাজাকাল্লাহুল খাইরান, অনেক সুন্দর পোস্ট
১৫ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:০৩
143303
বদর বিন মুগীরা লিখেছেন : ওয়া আলাইকুমুস সালাম।জাযাকাল্লাহ খাইর
191841
১৩ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৫
সজল আহমেদ লিখেছেন : আমাদের দেশের প্রত্যেকটি ইসলামিক দলগুলোকে উচিত্‍ এক হয়ে আল্লাহ পাকের দ্বীন ইসলামকে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করা।
১৫ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:০৩
143304
বদর বিন মুগীরা লিখেছেন : আল্লাহ তৌফিক দিন।
194682
১৯ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০১:২০
সালাম আজাদী লিখেছেন : ভালো লেগেছে, আরো একটু পড়া শুনা করে লিখলে মজা পাইতাম, তার পরেও অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File