মেয়েদের প্রসব পরবর্তী মানসিক সমস্যা

লিখেছেন লিখেছেন আকরামস বিডি ২৮ জুন, ২০১৬, ০৪:৩২:৪২ বিকাল

প্রসব পরবর্তী মনোবিকার(Postpartum psychosis)

প্রসব পরবর্তী মনোবিকার, অনেক সময় প্রসব পরবর্তী মনোব্যাধি নামে পরিচিত, মারাত্মক এক মনোরোগ যা সন্তান জন্মদানের পর মা`দের দেখা দেয়। হ্যালুসিনেশান এবং উল্টাপাল্টা, ভ্রান্ত চিন্তা করা এই রোগের উপসর্গ।আমাদের দেশে প্রতি ১০০০ মায়ের একজন এই রোগের শিকার হয়, ইউরোপ-আমেরিকাতে প্রায়ই এটা দেখা যায়।

প্রসব পরবর্তী মনোবিকারের উপসর্গ

প্রসবের ১-২ সপ্তাহের মধ্যেই এই সমস্যা দেখা দেয়। অনেক সময় আরও পরে, যেমন সন্তান যখন বুকের দুগ্ধপান বন্ধ করে, বা পিরিয়ড আবার হওয়া শুরু

করে, তখনও এই রোগের উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

মনোব্যাধি

মনোব্যাধির যেসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশী দেখা যায় হচ্ছে

হ্যালুসিনেশান- কোন অদৃশ্য জিনিশ দেখা বা শোনা (কেও তার বাচ্চাকে নিয়ে যাচ্ছে)

ডিলিউশান- কোন ভুল বা ভ্রান্ত ধারনা রাখা (বাচ্চাকে কেও মেরে ফেলবে)

আরও যা যা থাকতে পারে-

বদমেজাজি হয়ে যাওয়া/সবসময় মন খারাপ থাকা

প্যারানয়া (সবসময় কোন কিছুর ভয়ে থাকা বা আতঙ্কগ্রস্ত থাকা)

ছটফট করা, শান্ত না থাকা

সব বিষয়ে কনফিউশান এ থাকা

খুব দ্রুত মেজাজ বদলানো

ডিপ্রেশন

এটি কতটা ক্ষতিকর?

এটি খুবই ক্ষতিকর একটি অসুখ কারণ রোগী অনেক সময় নিজের ক্ষতি করতে পারে এই অবস্থায়। তবে এটি তখনি এটা খুব ক্ষতিকর হয় যখন ঠিকমত চিকিৎসা না করা হয়, কারণ চিকিৎসা করালে এই রোগ পুরোপুরি ঠিক হয়ে যায়। অনেক সময় রোগী নিজে বুঝতে পারেনা যে তার সাহায্য দরকার, তাই পরিবারের অন্যান্যদের কে এগিয়ে আসতে হবে এবং উপসর্গ গুলো চিনতে হবে।

এই রোগ কাদের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে?

যাদের আগে এই রোগ হয়েছে অর্থাৎ আগের সন্তান জন্মদানের সময় কিংবা প্রথম সন্তান জন্মের সময়

যাদের অন্য কোন মনোরোগ (সিজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার ডিজঅর্ডার) আছে

যাদের পরিবারের অন্য কোন সদস্যার বা কোন আত্মীয়ের এই রোগ হয়েছে বা আছে

একান্নবর্তী পরিবারে বেশী দেখা যায়। কারণ হিসেবে বলা যায় যে, কনসিভ করা থেকে বাচ্চা ডেলিভারি পর পর্যন্ত যে মানসিক চাপ ও শারীরিক পরিবর্তন(হরমোন মাত্রার তারতম্য) ঘটে তারই প্রতিফলন।

করনীয়

এই রোগ একটি জরুরী মানসিক সমস্যা। তাই এই রোগের উপসর্গ দেখা দিলেই একজন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। রোগীকে হাসপাতালে মানসিক বিভাগে ভর্তি করাতে হবে, সম্ভব হলে তার সন্তান সহ। এতে করে মা এবং বাচ্চার মাঝের সম্পর্ক শক্ত হবে।তবে শংকা থাকলে বাচ্চাকে মায়ের কাছে না দেয়াই ভালো।

এই রোগের কারণ

হরমোন মাত্রার তারতম্য, ঘুমের অসুবিধা, জেনেটিক সমস্যা, বাইপোলার ডিজিস। এই সমস্যার জন্য অনেক কিছুকেই দায়ী করা হয়। যদিও নিশ্চিত হয়ে কোন এক কারণ বলা যায়না। কিন্তু এটা ঠিক যে এর জন্য মায়ের কোন দোষ, দাম্পত্য জীবনের সমস্যা, অপরিকল্পিত বাচ্চা ইত্যাদির কোন সম্পর্ক নেই।

আগে থেকেই প্রতিরোধ

কোন নিশ্চিত করে বের করার মত পরীক্ষা নেই। কিন্তু গর্ভাবস্থায় মায়ের চেক আপের সময়ই বের করতে হবে কারো যদি কোন মানসিক সমস্যা থাকে এবং ডাক্তারের (মনোবিদ) কাছে পাঠাতে হবে।

এই রোগে স্বাভাবিকভাবেই মায়ের মধ্যে বিষণ্ণতা, মন খারাপ ইত্যাদি আসতে পারে। পরিবারের সবার সহযোগিতা এবং সময়মত সঠিক চিকিৎসায় এই রোগ পুরোপুরি ভালো হয়।

http://www.psychobd.com

https://www.facebook.com/Psychobd

বিষয়: বিবিধ

১১২৩ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

373421
২৮ জুন ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:৫৩
শেখের পোলা লিখেছেন : অনেক প্রসূতীর উপকারে আসতে পারে। ধন্যবাদ।
373452
২৯ জুন ২০১৬ রাত ১২:৩৬
ক্রুসেড বিজেতা লিখেছেন : জেনে রাখলাম,,, কাজে লাগবার ও পারে Good Luck Good Luck, ধন্যবাদ।
373470
২৯ জুন ২০১৬ সকাল ০৫:০৯
কুয়েত থেকে লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File