বাইপোলার ডিজঅর্ডার একটি মানসিক রোগ

লিখেছেন লিখেছেন আকরামস বিডি ৩০ মার্চ, ২০১৪, ০২:৩৭:২৮ দুপুর





বাইপোলার ডিজঅর্ডার আবেগজনিত একটি মানসিক রোগ। নারী-পুরুষ উভয়ই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। যাদের নিকটাত্মীয়ের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস আছে, তাদের ক্ষেত্রে এ রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

‘বাইপোলার অ্যাফেকটিভ ডিজঅর্ডার’ এমন একটি মানসিক রোগ যা নাম দিয়ে চেনা যায়। ‘বাই’ শব্দের অর্থ ‘দুই’, আর ‘পোলার’ মানে মাথা। অর্থাৎ এই রোগটির দু’টি মাথা বা দু’টি দিক থাকে।

এক দিকে থাকে ‘ডিপ্রেশন বা বিষণ্নতা’ অন্যদিকে থাকে ‘ম্যানিক কন্ডিশান’। অর্থাৎ একদিকে তিনি প্রচণ্ড বিষণ্নতায় ভোগেন, সবসময় তার মন খারাপ থাকে। অন্যদিকে ম্যানিক কন্ডিশানের কারণে ব্যক্তি নিজেকে অনেক বড় মনে করতে থাকেন, যখন তখন ক্ষেপে যান, সব কিছুতেই অতি চঞ্চলতা কাজ করতে থাকে। খাবার দরকার নাই, ঘুম দরকার নাই, যেন সমস্ত শক্তি ও

ক্ষমতা এসে লোকটির ওপর ভর করে।

দু’টি দিক থাকলেও রোগ মূলত একটিই। নাম ‘বাইপোলার অ্যাফেকটিভ ডিজঅর্ডার’।

ডিপ্রেশন বা ম্যানিক এক একটি এপিসোড বা পর্যায়। সাধারণত, দুই থেকে ছয় মাস, কখনো কখনো আরো বেশি সময় ধরে থাকতে পারে। তবে নিয়মিত চিকিৎসার ভেতর থাকলে তা কমে আসে।

কেন হয়?

কেনো এ ধরনের সমস্যা তৈরি হয় তার সঠিক কোনো কারণ এখনো তেমন ভাবে আবিষ্কৃত হয়নি। তবে বংশ পরম্পরায় এই রোগের একটা সম্পর্ক থাকতে পারে। অর্থাৎ পূর্ববর্তী নিকট আত্মীয়দেরর কারো এ রোগ থাকলে তা পরবর্তী জেনারেশনেরও দেখা দিতে পারে।

রোগীর স্বজনদের যা যা মনে রাখা প্রয়োজন: এটি এমন একটি রোগ যা প্রয়োজনীয় চিকিৎসার আওতায় থাকলে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবন কাটানো সম্ভব। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যা না করে সবাই ভুল বুঝে চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে বিভিন্ন উপদেশ দিতে থাকে। মনে রাখতে হবে, উপদেশে কোনো রোগ সারে না। শারীরিক রোগ যেমন উপদেশে সারানো যায় না, তেমনি মানসিক রোগের ক্ষেত্রেও একই কথা মনে রাখতে হবে।

স্বাভাবিক আচরণের পরিবর্তন এবং রোগাক্রান্ত অবস্থার পরিবর্তনের মাঝে পার্থক্য থাকে, যা একটু খেয়াল করলেই বোঝা যায়। তবে অবশ্যই উভয় ক্ষেত্রেই বিষয়গুলোকে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।

সতর্কতা:

‘বাইপোলার অ্যাফেকটিভ ডিজঅর্ডার’ রোগটির একটি দিক হলো, এটি একবার হলে চিকিৎসায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসলেও মনে রাখতে হবে এ রোগের সমস্যাগুলো আবার যেকোনো সময় ফিরে আসতে পারে। সমস্ত উপসর্গ দূর হয়ে গেলেও এ রোগ আর হবে না, এমনটা বলা সম্ভব নয়।

লোকে কি বলবে বা কুসংস্কারের ভাবনা না ভেবে বরং চিকিৎসার স্মরণাপন্ন যত দ্রুত হওয়া যাবে ততই মঙ্গল।

চিকিৎসার উদ্দেশ্য:

মূল উদ্দেশ্য ডিপ্রেশন বা ম্যানিক পর্যায়ের সিম্পটমগুলোকে কমানো হলেও, এই রোগের চিকিৎসার আরো কিছু দিক থাকে। যেমন- রোগটির সমস্যাগুলো যাতে বার বার ফিরে না আসে সেদিকে খেয়াল রাখা, সেই সঙ্গে ডিপ্রেশনের কারণে অতি খারাপ মনকে ভালোর দিকে রাখা এবং অতি ভালো থাকা মনকে (ম্যানিক পর্যায়) স্বাভাবিক অবস্থায় রাখাও এ রোগের চিকিৎসার উদ্দেশ্য। মনের অবস্থাকে স্বাভাবিক বা মাঝখানে রাখাই চিকিৎসার একটি বড় দিক।

চিকিৎসা: এ ধরনের রোগে আক্রান্ত রোগীতে সেবনের জন্য নানা ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে থেরাপিও।

মুড স্টেবিলাইজার: মুড স্টেবিলাইজার দিতে হবে। অর্থাৎ মুডকে স্টেবল রাখার জন্য এ ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়। বিষণ্নতা বা ম্যানিক পর্যায় কোনো দিকেই যেনো অতিরিক্ত ঝুঁকে না পড়ে সেজন্য মনকে মাঝখানে ধরে রাখতে ব্যবহার করা হয় মুড স্টেবিলাইজার।

এন্টিডিপ্রেশন্ট: অতিরিক্ত খারাপ হয়ে যাওয়া মন বা ডিপ্রেস্ট মনকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনার জন্য এধরনের ওষুধ ব্যবাহার করা হয়।

এন্টিসাইকোটিক: ম্যানিক পর্যায়ের চিকিৎসার জন্য এন্টিসাইকোটিক ওষুধ ব্যবাহার করা হয়।

সেই সঙ্গে প্রয়োজন মতো ঘুম বা অস্থিরতা কমানোর জন্যও কিছু কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হয়।

সাইকোথেরাপি: সাধারণত সিম্পটম যখন বেশি থাকে তখন সাইকোথেরাপি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে না। তবে ফ্যামেলি এডুকেশন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় দিক। যার মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের রোগটির বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য বা নির্দেশনা দিয়ে, কখন কি করতে হবে সেসব বিষয়ে সতর্ক করে তোলা হয়।আরো দেখুনঃ http://www.psychobd.com/

বিষয়: বিবিধ

১৪০৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

200301
৩০ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:৩০
ভিশু লিখেছেন : শেখার লেখা! জানার পোস্ট!
ভালো লাগ্লো...Happy Good Luck
৩০ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৭
150072
আকরামস বিডি লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।
200430
৩০ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৮
মাটিরলাঠি লিখেছেন :
"বাইপোলার অ্যাফেকটিভ ডিজঅর্ডার" -বড়ই কঠিন রোগ, তার চেয়েও কঠিন দুই মহিলা ও তাদের সাথীদের হাসপাতাল ভর্তি করবে কে বা কারা?



200448
৩০ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File