ইসলামের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে ইসরাইল ও সউদী গোষ্ঠী
লিখেছেন লিখেছেন ইনতিফাদাহ ১০ মে, ২০১৬, ১১:০৫:৫৮ সকাল
মোহাম্মদ রেজওয়ান হোসেন
সউদী-ইসরাইল 'সুপারপাওয়ার' হওয়ার স্বপ্ন !
গত বেশ কিছুদিন ধরে তেলআবিব ও রিয়াদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও সহযোগিতার বিষয়ে যেসব কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান তামির বারদো নিজেই এ সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি রিয়াদ ও তেলআবিবের কৌশলগত সম্পর্কের কথা স্বীকার করে বলেছেন, কেবলমাত্র ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিরোধই ইসরাইলের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদের কারণ।
কিছুদিন আগে সাবেক সৌদি গোয়েন্দা প্রধান তুর্কি আল ফয়সাল বলেছেন, সৌদি সরকার ইসরাইলের সঙ্গে সব ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা করতে আগ্রহী। তিনি ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাবেক মেজর জেনারেল ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইয়াকোভ আমিদরোর-এর সঙ্গে ওয়াশিংটন ইন্সটিটিউটে অনুষ্ঠিত এক সংলাপে ওই মন্তব্য করেছেন। ওই সংলাপে তারা দু’জনই মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ শক্তি ও ইরানের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়ার জন্য সৌদি আরব ও ইসরাইলের মধ্যে সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
মার্কিন বার্তা সংস্থা ব্লুমবার্গ এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে লিখেছে, ইসরাইল ও সৌদি আরবের প্রতিনিধিরা গত বৃহস্পতিবার অত্যন্ত গোপন বৈঠকে মিলিত হন। এর আগে ২০১৪ সালে ভারত, ইতালি ও চেক প্রজাতন্ত্রে ইসরাইল ও সৌদি কর্মকর্তাদের মধ্যে গোপন বৈঠক হয়। এসব বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল তাদের অভিন্ন শত্রু ইরানকে নিয়ে।
বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে সৌদি আরব নিজেকে পবিত্র কাবা শরীফের খাদেম বা সেবক এবং ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসির তৎপরতার প্রধান কেন্দ্র বলে মনে করে। কিন্তু তারপরও গত কয়েক বছরে সৌদি আরব মুসলিম স্বার্থ বিরোধী নানা পদক্ষেপ নিয়ে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর প্রতি জুলুম করেছে। দখলদার ইসরাইল ও আমেরিকার নীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সৌদি আরব একদিকে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল বিরোধী শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে অবস্থা নিয়েছে অন্যদিকে মুসলিম বিশ্বের অভিন্ন শত্রু ইসরাইলের সঙ্গে সহযোগিতা গড়ে তুলেছে।
ভিডিও: সউদী কানেকশন নিয়ে নিতানিয়াহুর স্বীকারোক্তি [https://www.youtube.com/watch?v=kvJMJcVb3ZA]
বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদি আরব ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় মুসলিম বিশ্বের শক্তি সামর্থ্যকে কাজে লাগানোর পরিবর্তে ইসরাইলের সেবাদাসের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেছে। ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় ওআইসি গঠিত হলেও সৌদি আরবের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে এ সংস্থাটি বর্তমানে মুসলিম দেশগুলোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এ কারণেই ফিলিস্তিন ইস্যুতে ওআইসি কোনো কথাই বলছে না। বর্তমানে যখন মজলুম ফিলিস্তিন জনগণের পাশে দাঁড়ানো সব মুসলিম দেশের কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে তখন সৌদি আরব তেল বিক্রির অর্থ দিয়ে ইসরাইলের সঙ্গে সহযোগিতা গড়ে তুলেছে। একই সঙ্গে ওআইসি, পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা পিজিসিসি ও আরব লীগকেও সৌদি আরব তার লক্ষ্য পূরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে এবং ইসরাইলের স্বার্থ রক্ষা করছে।
সিরিয়া-ইরাকের আল কায়েদা !
উদাহরণ স্বরূপ এসব সংস্থা সম্প্রতি লেবাননের ইসরাইল বিরোধী জনপ্রিয় প্রতিরোধ সংগঠন হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করেছে। আর এ সবই করা হচ্ছে সৌদি আরবের পরামর্শে। এ থেকেই দখলদার ইসরাইলের প্রতি সৌদি আরবের সেবাদাস ও আনুগত্যের বিষয়টি ফুটে ওঠে। লেবাননের প্রতিরোধ সংগঠন হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেছেন, এর ফলে সৌদি আরবের আসল চেহারা সবার সামনে প্রকাশ হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, সৌদি আরবের এ ন্যক্কারজনক ভূমিকার ফলে কেবল ইসরাইল লাভবান হবে যারা কিনা দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিন ও লেবাননের প্রতিরোধ সংগঠনগুলোকে দুর্বল করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে।#
বিষয়: আন্তর্জাতিক
৯৩৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন