সুন্নি মাজহাবের সম্মানিত ব্যক্তিত্বের অবমাননা হারাম: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা

লিখেছেন লিখেছেন ইনতিফাদাহ ০৪ মে, ২০১৬, ০৪:১৯:০৫ রাত



রেডিও তেহরান,বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫:

প্রশ্ন : আমি অনেকের কাছে শুনি যে, হযরত আলী ছাড়া বাকি তিন খলিফাদের নাকি শিয়ারা কাফের বলে? আর এটাও অনেকের কাছে শুনেছি যে, শিয়ারা নাকি আলীকে রাসূলের থেকেও শ্রেষ্ঠ মানে? অনেক শিয়া নাকি এটা বিশ্বাস করে যে, কুরআনের আয়াত ১১ হাজারের বেশি? আর রাসূলের (সা) হাদিস নাকি শিয়ারা মানে না? আমি শিয়াদের মধ্যে রাফেজি ও আলাভী গোত্র সম্পর্কেও জানতে চাই। পরিশেষে আমি জানতে চাই যে, মূলধারার শিয়া মাজহাব এ ব্যাপারে কী বলে?

---মোহাম্মদ রকিবুল ইসলাম মাহীন, ঢাকা- বাংলাদেশ

উত্তর:

‘সুন্নি মাযহাবের সম্মানিত ব্যক্তিত্বের অবমাননা হারাম’

প্রথম তিন খলিফাকে মূল ধারার শিয়ারা তথা ১২ ইমামে বিশ্বাসী বা ‘ইসনা আশারা’ শিয়ারা কাফির মনে করেন না বরং তাদের অবমাননাকে হারাম মনে করেন। বৃহত্তর ইসলামী ঐক্যের স্বার্থে হযরত আলী (আ) এই তিন সাহাবির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেননি বলেও তারা বলে থাকেন। তাদের সম্পর্কে বা সুন্নিদের কাছে সম্মানিত সাহাবিদের ব্যাপারে অশোভন উক্তি করা বা গালি দেয়াকে (শিয়া মুসলমানদের জন্য) নিষিদ্ধ করে গেছেন মূল ধারার শিয়া নেতৃবৃন্দ ও আলেম। মূল ধারার শিয়া নেতারা সুন্নি মুসলমানদেরকে মুসলমান বলেই মনে করেন।

এ সম্পর্কে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর একটি ঐতিহাসিক ফতোয়া উল্লেখযোগ্য।

২০১০ সালে আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী এক ফতোয়ায় মহানবী (স.)’র স্ত্রী হযরত আয়েশাসহ সুন্নি মাজহাবের সকল সম্মানিত ব্যক্তিত্বের অবমাননাকে হারাম ঘোষণা করেন।

এ ঐতিহাসিক ফতোয়া বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সাড়া জাগায়। বিশেষ করে কুয়েতের দৈনিক ‘আল আম্বিয়া',বার্তা সংস্থা মুহিত,লেবাননের দৈনিক আস সাফির,লন্ডন থেকে প্রকাশিত আল হায়াত এবং মিসরের রেডিও ও টেলিভিশন সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে ফতোয়াটি ফলাও করে প্রকাশ করা হয়।



কুরআন অবিকৃত


শিয়া মুসলমানরা মনে করেন কুরআন অবিকৃত রয়েছে এবং বর্তমানে প্রচলিত কুরআন ও আদি কুরআনের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তবে কুরআনের বিভিন্ন আয়াতের ব্যাখ্যা নিয়ে কিছু মতভেদ আছে এবং এ বিষয়টি ইসলামের নানা মাজহাব সৃষ্টি ও মুসলমানদের মধ্যে মতভেদের অন্যতম বড় কারণ।

আপনি কিছু প্রশ্ন বা অভিযোগের ব্যাপারে শিয়াদের মূল ধারার বক্তব্য জানতে চেয়েছেন। শিয়াদেরকেই সামগ্রিকভাবে রাফেজি বলে থাকেন বিভিন্ন মাজহাব বা ধারার মুসলমানরা। কারণ, শিয়া মুসলমানরা মনে করেন একমাত্র হযরত আলীই (তাঁর ওপর সালাম) ছিলেন বিশ্বনবী (স.)’র ঘোষিত ও মহান আল্লাহর মনোনীত প্রথম ইমাম বা খলিফা

তারা আবুবকর, ওমর এবং ওসমানকে ন্যায়সঙ্গত খলিফা হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করেন বলেই এই শব্দটি তথা রাফেজি (অর্থাৎ ‘ভিন্নপন্হী’) ব্যবহার করা হয় তাদের সম্পর্কে।

আলাভীদের ব্যাপারে মূল ধারার শিয়াদের দৃষ্টিভঙ্গি

‘আলাভাইট’ বা ‘আলাভী’ বলতে এক সময় হযরত আলী (আ.)’র বংশধর ও তাঁর সমর্থকদেরকে বোঝাত। এখনও প্রাচীন বইয়ে ব্যবহৃত এই শব্দকে সেই অর্থেই ব্যবহার করা যায়।

তবে আলাভী বলতে একটি বিভ্রান্ত সম্প্রদায়ও ছিল প্রাচীন যুগে এবং বর্তমান যুগেও এ সম্প্রদায়ের অস্তিত্বের কথা জানা যায়। এরা আলী (আ)-কে আল্লাহর সমতুল্য বলে মনে করে। মূল ধারার শিয়ারা তাদেরকে কাফির বলে মনে করেন। ইরানের ইসলামী বিপ্লবের পর এইসব বিভ্রান্ত ব্যক্তিদের অনেকেই মূল ধারার শিয়ায় পরিণত হয়েছেন।

শিয়াদের দৃষ্টিতে বিশ্বনবী ও হাদিস

শিয়ারা বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা)-কে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ নবী ও রাসূল বলে মনে করেন। বিশ্বনবীর নাম শুনা মাত্র তারা উচ্চস্বরে দরুদ পড়াকে অনেকটা ওয়াজিবের মতই পালন করে থাকেন। তাদের মত এত বেশি দরুদ পাঠ অন্যরা করে না।

হাদিস প্রসঙ্গে কথা হল, শিয়ারা মনে করেন সুন্নি ভাইরা যেসব হাদিস মেনে চলেন তার মধ্যে অনেক হাদিসই অনির্ভরযোগ্য বা জাল তবে সব হাদিস নয়

আসলে সুন্নিদের মধ্যে পথভ্রষ্ট ও অনাচারী বা বেদ্আতী মুসলমানদের দোষ-ত্রুটিকে যেমন সমস্ত সুন্নি মুসলমানদের বৈশিষ্ট্য বলা যায় না, তেমনি শিয়াদের কোনো বিচ্যূত বা পথভ্রষ্ট ধারাকে সব শিয়াদের চিন্তাধারা বলে প্রচার করার বা মনে করার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে শিয়া মুসলমানদের নামে নানা অপপ্রচার যুগ যুগ ধরে প্রচলিত রয়েছে। এর পেছনে রয়েছে ইসলাম ধর্মের শত্রুদের বড় ষড়যন্ত্র। তারা এ ধরনের বিষয়গুলোকে অপব্যবহার করে মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য জিইয়ে রাখতে চায়।#

সোর্স:http://bangla.irib.ir/2012-06-26-09-20-49/item/80487-%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%A4-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%AC%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%87%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A7%8B%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9A-%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A6%BE

বিষয়: রাজনীতি

১০৯১ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

367957
০৪ মে ২০১৬ দুপুর ০১:১০
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : ‍"তাক্যিয়া"র অসাধারণ প্রয়োগ!
আচ্ছা, ‍উসূলে কাফি, বিহারুল আনওয়ার, হায়াতুল ক্বুলুব- এই বইগুলো সম্পর্কে আপনার মতামত কি> মানে বইগুলোকি হক্ব না বাতিল?
367963
০৪ মে ২০১৬ দুপুর ০২:৫৯
ইনতিফাদাহ লিখেছেন : আপনি এই বইগুলো নিজে পড়েছেন কি?
না পড়লে এগুলো থেকে সরাসরি কোট করে কথা বলুন। ইসলামের নামে যারা মিথ্যা ছড়ায় তাদের কথা কোট করবেন না।
এখানে কিতাব আল কাফী ও বিহার আল আনোয়ার সমেত সবগুলি বইয়ের ই-ভার্সন আছে:http://www.theislamicseminary.org/wp/books/

আপনি সরাসরি কোট করে কথা বলুন
০৪ মে ২০১৬ রাত ০৮:৫১
305369
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : আপনাকে আমাদের পাঠাগারে আমন্ত্রন জানাই। আমার কাছে আছে কিনা, আমি নিজে পড়েছি কিনা, এসে বাস্তবে দেখে যাবেন।
আপনাকে আমি যে প্রশ্ন করেছি তার উত্তর না দিয়ে এভাবে লাফ দিয়ে উঠলেন কেন তা বোধগম্য বটে। যাই হোক, আমার প্রশ্নের উত্তরগুলো দিলে বাধিত হবো- তাকিয়্যা কি আর উপরে যে বইগুলোর নাম বলেছি সেগুলো আপনাদের কাছে হক্ব কি না?
০৪ মে ২০১৬ রাত ০৯:১৫
305375
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : আপনার দেয়া ওয়েবসাইট দেখলাম। মাশাআল্লাহ, হাতে গোনা দু'তিনটে বই, তাও আবার সম্পূর্ণ খন্ড নেই। তাই দিয়ে রেফারেন্স মাপতে চাচ্ছেন!
367968
০৪ মে ২০১৬ বিকাল ০৪:৩৭
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : শিয়ারা ইসলামের লেবাসে এক ধরনের ফিতনা।
367972
০৪ মে ২০১৬ বিকাল ০৫:১৪
সঠিক ইসলাম লিখেছেন :
শিয়ারা মনে করেন সুন্নি ভাইরা যেসব হাদিস মেনে চলেন তার মধ্যে অনেক হাদিসই অনির্ভরযোগ্য বা জাল তবে সব হাদিস নয়।


নির্দিষ্ট করে বলুন, সুন্নীদের কোন হাদীসগুলো জ্বাল কোন গুলো জ্বাল নয়। আপনাদের হাদীসগ্রন্থ কোন গুলো, সেগুলো লিখা হয়েছে কবে , আপনাদের হাদীস এবং সুন্নীদের হাদীসের মধ্যে কি কি পার্থ্ক্য রয়েছে বিস্তারিত বলুন।
368249
০৭ মে ২০১৬ রাত ০৪:৩৯
ইনতিফাদাহ লিখেছেন : এটা বাজে কথা বলার জাগা নয়।ওয়েবসাইটগুলিতে যে বইগুলির নাম বলেছেন সবক'টা আছে। আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি,আপনি মিথ্যা প্রচার করছেন অসদুদ্দেশ্যে। ইসলামী দেশের
০৭ মে ২০১৬ দুপুর ১২:০৬
305631
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো ম্যা ম্যা না করে কাজের কথায় আসুন। আপনাকে দুটো তিনটে বইয়ের নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে প্রশ্ন করতেই এত আঁতে ঘা লাগলো কেন? ‍"সরষেতেই ভূত আছে" তাই না?

কে মিথ্যা বলছে আর কে সত্যি তা কথার ভাঁজেই বোধগম্য। রাফেজিদের কাছে তাক্যিয়া মিথ্যাচার ছাড়া আর কি আশা করা যা@। রইলো আইন; তো আইন শেখাতে আসবেন না। কোনটা ক্রাইম আর কোনটা না সেটা আপনার চেয়ে ভালো জানা আছে।

মু'তার নামে জেনা ব্যাভিচারের পয়দায়েশ শিআদের ফিৎনা সম্পর্কে মুসলমানরা অচেতন না। তথাকথিত ভ্রাতৃত্ব, ইসলামী ঐক্যমত বুলি আওড়িয়ে পিঠে ছুরি মারা রাফেজীদের পুরোনো অভ্যাস; আজ মুসলমানরা এসব ভেল্কিবাজী ধরে ফেলেছে। ইরান, ইরাক, সিরিয়া সহ অন্যান্য দেশে নিরীহ মুসলমানদের উপর হিংস্র রাফেজিদের করা অমানবিক নির্যাতনের কথা মুসলমানরা ভোলেনি, ভূলবে ও না। শিআরা কাফের, কাফের, কাফের; আর কাফেরদের সাথে মুসলমানদের কোন সমঝোতা নেই।

368250
০৭ মে ২০১৬ রাত ০৪:৪০
ইনতিফাদাহ লিখেছেন : আইনের বাইরেও এদেশের আিন মোতাবেক এটা ক্রাইম

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File