রোগ যখন আয়-রোজগারের মাধ্যমঃ বঙ্গদেশে সবই সম্ভব
লিখেছেন লিখেছেন সোহান আর চৌধুরী ২৭ মে, ২০১৪, ০৮:৫১:১৪ রাত
দৃশ্যপটঃ১
গতকাল এক মসজিদে মাগরিবের নামায শেষে বের হতেই দেখি মসজিদের সামনে এক মহিলা ছোট্ট একটি বাচ্চাকে মাটিতে শুইয়ে রেখে ভিক্ষা চাইছে। বাচ্চার পাশে একটি কাগজে লেখা " এ বাচ্চাটি ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত। দয়া করে সহায়তা করুন। "
এক ব্যক্তিকে দেখলাম মহিলাটিকে দেখামাত্র রূঢ ভাষায় তিরস্কার করলেন এই বলে যে মহিলাটি নাকি সুস্থ বাচ্চাকে নিয়ে প্রতিদিন ভিক্ষা করছে।
দৃশ্যপটঃ ২
কিছুদিন আগে আদালতে গিয়েছিলাম মামলার হাজিরা দিতে।সেখানে দেখি এক মধ্যবয়স্ক লোক ফুটবল আকৃতির এক হার্নিয়া নিয়ে ভিক্ষা করছে। আমাদের কয়েকজন তাকে চিকিৎসার জন্যে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছিলো। কিন্তু সেসব কথায় মনোযোগ না দিয়ে সে শুধু টাকা চায়।সে বলে যে শুধু টাকার অভাবেই নাকি বিগত দশ বছর সে এ কষ্ট করে বেড়াচ্ছে। অথচ শুধু ওষুধ খরচ যোগাড় করলে মাত্র দশ টাকার টিকিটে সরকারী হাসপাতালে ভর্তি হলেই সে অপারেশন করাতে পারতো অনেক আগেই।
দৃশ্যপটঃ৩
বন্ধুদের সাথে হোস্টেলে ফিরছি। হঠাৎ এক বন্ধু ডেকে বলে দেখ Hydrocephalus( বড় মাথা ওয়ালা বাচ্চা) এর রোগী। এক মহিলা বাচ্চাসহ ফুটপাতে বসে ভিক্ষা করছে।
হুম,গত এক বছর ধরে ওকে দেখছি ভিক্ষা করতে
-জবাবে বললাম।
হাতে একটি অসুস্থতার সার্টিফিকেট নিয়ে পাবলিক প্লেসে ভিক্ষা করা মানুষের সংখ্যা বাংলাদেশে নেহায়েতই কম নয়। এদের মধ্যে হয়তো প্রকৃতপক্ষে হতোদরিদ্র আছে অনেকেই। কিন্তু এমন মানুষও কম নয় যারা অসুস্থতাকে বাহানা বানিয়ে দু'পয়সা রোজগারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তা নাহলে মরণব্যাধীতে আক্রান্ত শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে ডাক্তারের শরণাপন্ন না হয়ে রাস্তায় মানুষের কাছে কেনো হাত পাতবেন তার মমতাময়ী মা ....????
- Sohan R Chowdhury
বিষয়: বিবিধ
১০৮৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পঙ্গু হাসপাতালের কাছে শ্যামলীর মোড়ে গেলে এরকম কিছু ভিক্ষুকদের দেখে চমকে যাবেন ।
কিন্তু ইতিহাস ও সভ্যতার শিক্ষা সমূহ খুঁজে দেখলে দেখা যায় - পোভার্টি বা দারিদ্রতা মানুষকে মহৎ করেছে, ডাউন টু দ্যা আর্থ করেছে, কৃতজ্ঞ করেছে এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার প্রাকটিশ শিখিয়েছে। সো সব ধর্মের শিক্ষাই দারিদ্রতাকে মহৎ করে দেখিয়েছে। আমাদের নবী সঃ মৃত্যুর আগে নিজেকে নিঃস্ব করার জন্য শেষ ৫/৭ দিরহামকে ও দান করে দিতে বলেছিলেন। ওমর ফারুক, আলী, বেলাল ইত্যাকার রাঃ এর জীবন ও তাই শিক্ষা দেয় এবং তাদের স্বভাব নষ্ট হয়নি বরং মহৎ হতে মহত্তর লেভেল এ গিয়েছে তাই জানান দেয়।
নবী রসুল সহ তাদের সাহাবা সহ অলী আওলিয়া সহ অজ পাড়াগায়ে - যেখানে এখনো দজ্জালের ভেলকি তথা ডিসিপশানের বাক্স পৌছায় নি - সেখানে দরিদ্রের মাঝে এখনো তার ছিটাফোটা প্রমান দেখা যাবে।
আর পৃথিবীতে যা কিছু স্বভাব নষ্ট মানুষের দেখা পাওয়া যায় - তার মেজরিটি ই শুধু নয় ব্রুট মেজরিটি মানুষের দেখা পাওয়া যায় ধনী ও বিত্তশালীদের মধ্য।
লিখক যে কেইস গুলো উল্লেখ করেছে - তা আমার চোখে অনেকটা এমন যে, পুরো দেশের পাবলিক ফিগার গুলো মিডিয়ায় রাত দিন ২৪ ঘন্টাই মিথ্যা কথা বলছে, প্রতারনা করছে, ধান্ধা করছে এবং তাকে আর্ট ও কালচার ও সভ্যতার মানদন্ড হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছে - স্বভাবতঃই ধান্দাবাজ মানুষ সৃজনশীল উপায়ে পাবলিক ফিগারকে নকল করে ধান্ধামী করছে, প্রতারনা করছে এবং তাকে যথাযথ ও যৌক্তিক মনে করছে - ঠিক যেমনটা মিথ্যাবাদী পাবলিক ফিগার নিজের মিথ্যাকে যৌক্তিক মনে করছে।
এ্যানিওয়ে ধন্যবাদ আপনাকে এবং এ লিখার লিখককে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন