সেই পঁচিশ থেকে এই পঁচিশ
লিখেছেন লিখেছেন সোহান আর চৌধুরী ২৫ মার্চ, ২০১৪, ০৭:৩০:০১ সন্ধ্যা
২৫শে মার্চ ২০১৩
আসরের নামাজের আগেই জামিনের নাম ডাকতে এলো দায়িত্বে নিয়োজিত কয়েদী। সকালে সাক্ষাৎকক্ষে সাংগঠনিক ভাই জানিয়ে গিয়েছিলো যে আজ/কালের মধ্যেই জামিন হবে। তাই কান পেতে শুনছিলাম সেই তালিকায় আমার নাম আছে কিনা।নাম আছে শুনে শুকরিয়া জানালাম মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে,কোলাকুলি করলাম আমার সঙ্গী পিয়াস,রাজীর সঙ্গে।
তাৎক্ষণিক ব্যাগ গুছিয়ে বিদায় নিতে হলো শিবির ওয়ার্ড খ্যাত হালদা-১৮ এর সব ভাইদের কাছ থেকে,কারণ জামিনের অফিসিয়াল প্রক্রিয়া তখনো বাকি।
আমদানিতে আসরের নামাজ আদায় করে কেস টেবিলে অপেক্ষা করছি জামিনের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার। যথারীতি আসরের পরপরই বন্ধিদের সব ওয়ার্ড লকআপ হয়ে গেলো শুধু আমরা কয়েকজন অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছি মুক্তির স্বাদ আস্বাদনের। অন্ধকার ঘনিয়ে আসছিলো,চারদিকে মৃদু হিমেল হাওয়া বইছিলো।অফিস ভবনের পাশের বাগানটিতে বসে তখন জেলখানার ঐ জাহান্নামী পরিবেশটাকেও একটুকরো জান্নাতের বাগান মনে হচ্ছিলো।
মাগরিবের আযান হলো,আমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা হলো যার আনুগত্য করার কারণেই আমি জুলুমের শিকার। ঐ বাগানেই নামাজ আদায়ের পরপরই শুরু হলো চূড়ান্ত প্রক্রিয়া-কাগজপত্র মিলিয়ে দেখা,অনুসন্ধানমূলক জিজ্ঞাসা বাদ, পি.সি কার্ডের টাকা ফেরত।
অবশেষে সবকিছু শেষে কারাগারের মেইন ফটক খুলে দেওয়া হলো। একে একে বেড়িয়ে এলাম আমরা। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম কেনো যেনো রাতের তারাগুলোকে আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিলো। ফেরার পথে শেষবারের মতো তাকিয়ে দেখলাম - লাইটের আলোতে ভবনের মাথায় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে লেখাটা " চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার"
অনুভুতির বর্ষপূর্তি আজ। দ্বিতীয় কারামুক্তির আজ এক বছর পূর্ণ হলো। শুকরিয়া সেই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে যিনি আমাকে দু'বার মজলুম হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন,যে দিনগুলো আমার মত পাপী বান্দার জান্নাত প্রাপ্তির অন্যতম সম্বল........
বিষয়: বিবিধ
৯৪৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন