আমাদের বই ঘর
লিখেছেন লিখেছেন জুম্মি নাহদিয়া ১৯ মার্চ, ২০১৪, ০১:৪২:০৪ রাত
শেখেরটেক ৮ এর নীচতলা একটা বাসা আমরা সে বছর ভাড়া নিলাম, নীচতলা হিসেবে বেশ খোলামেলা বাসাই আম্মু খুঁজে বের করেছিল। ওখানে জানালার বাইরে ইট পাথরের দেয়ালের বদলে নগরজীবনের দৃশ্য ছিল, বারান্দার গ্রীলজুড়ে বাড়িওয়ালা আঙ্কেলের লাগানো নীল অপরাজিতা আর মানিপ্ল্যান্ট ছিল।
নতুন নতুন বাসা চেঞ্জ করলে যা হয় আর কি, বাসাকে ঘিরে পরিবারের লোকজনের উৎসাহ উদ্দীপনা- প্ল্যান পরিকল্পনার কোন শেষ থাকে না। আম্মু তখন নতুন চাকরীতে জয়েন করেছে। এতকাল দরিদ্র অথচ হাতখোলা এক কবির সংসারে কত অনিবার্য প্রয়োজনই তো পূরণ করা যায়নি- এখন তাই ফেরার পথে বেশ সাহস করেই এটা সেটা কিনে বাসায় ফিরছে।
আমি পড়তাম ক্লাস ফোর-এ। টুকটাক বান্ধবী হয়েছে তখন আমার। কারো কারো বাসায়ও গিয়েছি। ওরা যেগুলো দিয়ে ঘর সাজায় আমারও ইচ্ছে হত আমাদের ড্রইংরুমটা-বেডরুমটা সেভাবে সাজাতে, এ্যাকুরিয়াম, প্লাস্টিকের ফুল, দেয়ালে জোড়া দামী পেইন্টিংস, বিছানা ভর্তি তুলতুলে পুতুল, টেডিবিয়ার এগুলো দিয়ে ঘরসাজানো ছিল আমার স্বপ্ন।
আম্মুকে এ্যাকুরিয়ামের কথা বলতেই খেলাম ঝাড়ি। “তোমাদেরকেই পালার লোক নাই আবার মাছ পালা! শখ কত!”
আম্মুর এই ঝাড়ির পেছনে সঙ্গতকারণ ছিল বলে আর কথা বাড়াইনি। তার নিজের নয়টা-পাঁচটা অফিস, স্বামীটির দিন রাতের অধিকাংশ সময় কাটে প্রত্যাশা প্রাঙ্গন, সাহিত্য সভা, সফর আর মিটিং মিছিলে। বাসায় ফোর থেকে প্লে গ্রুপ পড়ুয়া তিনটি শিশুর দেখা শোনার দায়িত্ব ছুটা বুয়ার আছিয়ার, যে কিনা বেশীরভাগ দিনই ছুটিতে থাকে।
যাই হোক, আর পুতুল ফুতুল দিয়ে ঘর সাজানোও আব্বু আম্মু আ্যালাউ করবেনা। তাছাড়া আব্বুরও এই বাসা নিয়ে নিজস্ব প্ল্যান অলরেডি হয়ে গিয়েছে। সেটা হল বই দিয়ে ঘর সাজানো।
আমার মনটা গেল ভেঙে। ধুৎ! বই দিয়ে আবার ঘর সাজায় কিভাবে? আগের বাসাগুলোতে একটা স্টীলের শো-কেসে গাদাগাদি অবস্থায় বই ঠেসে রাখা ছিল। ওগুলো কি কখনো শো-পিস হতে পারে? অথচ তুলিদের আ্যাকুরিয়ামে কত চমৎকার সব মাছ। শান্তাদের বসার ঘরে এই এদ্দুর থেকে শুরু করে আমার সমান লম্বা পুতুলও আছে। আয়শা আপুদের তো কথাই নেই। পৃথিবীর আশ্চর্য সুন্দর শো-পিস দিয়ে ওদের শো-কেসগুলো ঠাসা। আর আমাদের বাসা আব্বু কিনা বই দিয়ে সাজাবে।
এদিকে আমাদের মহাব্যস্ত আব্বু কিছুদিন বাসায় অবস্থান করবে বলে জানা গেল। উদ্দেশ্য বাসা গোছানো। জায়গার অভাবে এতদিন কাড়ি কাড়ি বই বস্তাবন্দী ছিল। এবার সেগুলো উদ্ধার হবে এবং পুরো একটা আস্ত ঘর ভরা হবে শুধু বই দিয়ে।
আমার ছোট বোন নাজমী বরাবরই আব্বুর এক নাম্বারের এসিসটেন্ট। টুকটুক করে আব্বুকে বস্তা খোলায় সাহায্য করছে,- জিনিসপত্র এগিয়ে দিচ্ছে। আর আমি হতাশ হৃদয় নিয়ে আব্বুকে বললাম,
- “আব্বু, বইগুলোতো পুরোনো হয়ে গিয়েছে।”
- “বই কোনো দিন পুরোনো হয়নারে মা।”
- “এই যে এগুলোর কভার ছিড়া, অনেকগুলোর ভেতর তেলাপোকার ডিম, ল্যাদাপোকা; আমরা এসব দিয়ে ঘর সাজাবো !”
- “ছেড়া কভারে আমরা আস্তে আস্তে মলাট লাগাবো, তেলাপোকার ডিমও পরিস্কার করা যাবে। এখন বুঝবেনা মাগো, বই হচ্ছে দুনিয়ার সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস আর আমরা সেটা দিয়েই না হয় আমাদের ছোট্ট ঘরটা সাজাচ্ছি।”
- “কিন্তু আমরা এত বই রাখবো কই? আমাদের তো বইয়ের আলমারী আর নাই।”
- “সেটা তো একটা সমস্যাই….. দেখা যাক, আল্লাহ ভরসা।”
নাজমীটা কটকট করে বলে উঠলো, “আব্বু জুম্মি আপু না ক্যালেন্ডারের পৃষ্ঠা দিয়ে ওর ক্লাসের বইয়ের কভার লাগায়- এই ছিড়া বইগুলো জুম্মি আপুই আমার মনে হয় লাগাতে পারবে।”
আব্বু তো মাথা নেড়ে নেড়ে বললো, “তাহলে তো খুবই ভালো কথা ছেড়া কভার নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণই দেখছি না।”
এমনিতেই মনোকষ্টে ভূগছি তার ভেতর ইচঁড়ে পাকা মেয়েটার মাতুব্বরীতে আরো তিতা হয়ে গেলাম। দাঁড়া তোকে একলা পেয়ে নেই!
বিকেলবেলা কি কাজে আব্বু যেন বেরিয়েছে। আর আছিয়া বুয়াও বাসায় এসেছে, এসেছে ইতি উতি তাকিয়ে আমাকে একাকী একটা প্রস্তাব দিল। ওটাকে আসলে কুপ্রস্তাব বলাই ভাল। বললো, “আফা ও বড় আফা! হুনেন, আংগোর গেসোদ্দীনের দুস্ত ছিড়া বই খাতা কিনে- খালায় ট্যার ফাইবো না, কতডি বই বেইচ্যা দেন। যেডি ট্যাহা ফাইবেন অনেকডি জিনিস খাইতারবেন।
অনেক কিছু খাওয়ার লোভ যে মনের ভেতর জাগেনি এমনটা বলবোনা তবে মোরালিটি তারচেয়ে বেশী সাহসের অভাব হয়তো কিছটা ছিল বলে রাজী হলাম না। “এডি কতা কাউরে কইয়েন নাগো বড় আফা। খালাম্মায় হুনলে দুইন্যার গোস্বা করবো।
রাতে আম্মু ঘরে ফেরার পরপরই আছিয়ার কুপ্রস্তাবের কথা বলে দিলে আম্মুর মেজাজ হয়ে গেল গরম। তার ভেতর আমি আবার কানের কাছে ঘ্যানর ঘ্যানর শুরু করলাম।
- “আম্মু, আব্বু না বস্তার সব বই খুলে ফেলেছে।”
- “তা তো দেখতেই পাচ্ছি, সারা ঘরে তেলাপোকা…..,
- “আব্বু ছিড়া বই দিয়ে ঘর সাজাবে।”
- “ভালো কথা- তো আমি কি করবো?
- “আমাদের তো বইয়ের এত র্যাক নাই- আব্বু কেমনে সাজাবে?”
- “যে সাজাচ্ছে এটা তার টেনশন, তোমার সমস্যা কি?
-পড়া নাই লেখা নাই সারাদিন ঘর সাজানো-ঘর সাজানো…
বয়স কত তোমার? এমনিতেই বাসার একটা মানুষের ওপরও ভরসা করা যায় না…. সারাদিন খাটা খাটুনির পর এত কথা ভাল্লাগেনা যাও….”
জানতাম, আম্মুর ধমক খাবো, তবুও শান্তারা মনিরা বেড়াতে এলে বাসায় একগাদা পুরোনো বইয়ের বাহার ছাড়া কিছুই দেখতে পাবে না এটা মানতে কষ্ট হচ্ছিলো খুব।
পরদিন স্কুল থেকে ফিরেই দেখি বাসায় অদ্ভুত কিছু বস্তু আনা হয়েছে। একটা শীতল পাটি, একটা মহাজনদের ক্যাশবাক্স, একটা বেতের ঢাকনাওয়ালা ঝুড়ি আর কিছু তেলাপাোকা আর ইঁদুর মারার ওষুধ। ঘরভর্তি বইরে স্তুপ এর ভেতর আব্বু বসে বই ভাগ করছে।
বাড়িওয়ালা আঙ্কেল কি এটা কাজে এসে ক্যাশবাক্স দেখে প্রশ্ন করলো, “তারপর কবি সাহেব, এই ক্যাশবক্স কি মনে করে কিনলেন?”
- “এই টেবিলের বিকল্প আর কি।”
উনি সম্ভবত কিছু বুঝলেন না। সরু চোখে ‘ও আচ্ছা’ বলে চলে গেলেন।
পাশের বাসার হীরা আন্টি জানিনা কেন যেন বাক্সটা দেখে হিহিহিহি হাসতেই থাকলো।
নাজমী আবার আব্বুকে কটকটিয়ে বললো,
-দোকানদের বক্স কেন কিনলেন আব্বু? আমরা কি বইয়ের দোকান বাসাতেই দিচ্ছি?
আব্বু হেহে করে হেসে বললো, “দেখই না কি হয়!”
এভাবে বিকেল গেল- সন্ধ্যা গেল। আব্বু একা একা বই ঘেটেই যাচ্ছে। আম্মু বাসায় ফিরে এই ক্যাশবক্স দেখে গেল রেগে। “এই টানাটানির সংসারে এসব বিচিত্র জিনিস কেউ ফট করে কেনে? মানুষটার জীবনেও আক্কেল হল না”- এই সব আর কি।
পরদিন সকাল বেলা চোখ ডলতে ডলতে পাশের ঘরে ঢুকেই কেমন চমকে গেলাম। চার দেয়াল জুড়ে এই উঁচু পর্যন্ত বই আর বই। একপাশে আমাদের পুরোনো বুক শেলফ আর দুটো বাশের র্যাকে কিছু বই আর বাকি তিনদিকে কোনরকম আশ্রয় ছাড়াই বইগুলো দাঁড়িয়ে আছে। আর সারারাত আব্বু বিষয়ভিত্তিক বই বাছাই করেছে- জোড়া তালির মলাটও লাগিয়েছে অনেক বইয়ে ফলে ওগুলো তেমন পুরোনোও লাগছেনা।
আমাদের রঙজ্বলা কার্পেটটার ওপর বিছানো হয়েছে শীতল পাটি। ঢাকনা ওয়ালা বেতের ঝুড়ির ওপরে কলমদানি- লেখার আনুসঙ্গিক টুকিটাকি, পাটির একপ্রান্তে জানালার কাছে রাখা হয়েছে সেই মহাজনী ক্যাশবাক্স যার ডালা খুললেই দিস্তা দিস্তা কাগজ। দেয়ালের ফাকা অংশে আব্বুকে দেয়া মান পত্রগুলোও ঝুলানো হয়েছে। আর সকালের নরম রোদ ঘরটাকে কি যে অদ্ভুত রূপবতী করে তুলেছিল!
এরপর অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে। এখনও ঐ ঘরটার কথা মনে পড়লে বুকের ভেতর খুব স্নিগ্ধ একটা অনুভূতি হয়। চোখ বুজলেই যেন দেখতে পাই একজন লেখক তার সারাজীবনের একটু একটু করে সঞ্চিত অসংখ্য বইয়ের মাঝখানে পাটি পেতে বসে আছে আর ক্যাশবাক্সকে টেবিল বানিয়ে সৃষ্টি করে যাচ্ছে অনবদ্য সব সাহিত্যকর্ম। ঘরটা ছিল তার যাবতীয় বিলাসীতার কেন্দ্রবিন্দু। সে সময়গুলোতে প্রচন্ড আনন্দ দিয়ে মানুষটাকে আমি লিখে যেতে দেখেছি।
এই বইঘর থেকে আমরা যারা বাকিরা, এদের প্রাপ্তিও কিন্তু কিছু কম না। আমার আম্মু প্রায়ই বলে যে তার বাচ্চাদের মন ভোলানোর উপকরণ রকমারী খেলনার বদলে ছিল বই।
মনে পড়ে, ছোট্ট মুন্না মনোযোগ দিয়ে ‘আম আঁটির ভেপু’ পড়তো আর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতো; যদিও ওর যুক্তাক্ষর জ্ঞান ছিল ‘উদে বাধন’, ‘মুগধ’ ‘দগধ; কিসিমের। নাজমীটাও এপার বাংলা- ওপার বাংলা সাহিত্যের তুলনামূলক পর্যালোচনায় বেশ ভারী কন্ঠে বড়দের সাথে তর্কে যেতে পারতো।
এর আগে আমার নিজেরও বই পড়তে হয়তো কিছুটা ভাল লাগতো তবে এই ভালো লাগাটা ধীরে ধীরে শখে পরিণত হলো। কত আলস দুপুর –মেঘলা বিকেল- ছুটির সকাল কাটিয়ে দিতাম বইয়ের সঙ্গে। আব্বুর সংগ্রহও ছিল খুব সতর্ক –একদম বাছা বাছা। যার জন্য যে কোনো ধরনের বই পড়ার অনুমতিই আমার ছিল। আর আমি এই বই এর হাত ধরে যেন গোটা পৃথিবীর পথ প্রান্তরে হেঁটে বেড়াতে পারতাম। ভীষণ ব্যস্ত বাবা মায়ের সন্তান হবার পরও আমরা হয়তো এ কারণেই কখনো একাকীত্বের অভিযোগ তুলতে পারিনা।
যেহেতু বইগুলো তালাবদ্ধ ছিল না এবং খোলা জায়গায় ছিল সে কারণে পরবর্তীতে অনেক বই হারিয়েও যায়-নষ্টও হয়। আর এর মাঝে বেশ ক’বার বাসা অদল বদলও হয়। সময়ের সাথে সাথে শীতল পাটির গাঁথুনিও নরম হয়ে যায়- আর ক্যাশবাক্সের জায়গা হয় পেছনের বারান্দায়।
অসুস্থ হবার ক’মাস আগে আব্বু আবার সেই বইঘরটাকে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিল। তবে কিছুটা লাইব্রেরীর আঙ্গিকে যাতে বই পত্রের হিসাব ঠিক থাকে, কেনাও হয়েছিল তিনটা বড়সড় আলমারী। কিন্তু আর হলো কই? মানুষটাই তো রইলোনা।
এখন মাঝে মাঝেই মনে হয় ঠিক সে রকম একটা বইঘর বানাই। হাস্যকর দেখালেও একটা মহাজনী ক্যাশবাক্স কিনতে ইচ্ছা করে। সাধ্য আছে তবুও সাধ হয় দেয়ালজুড়ে রাশি রাশি বই উন্মুক্ত সাজিয়ে রাখি।
আমার আব্বু নিদারুণ আবেগ আর ছেলেমানুষী দিয়ে সাজিয়ে তোলা বইঘরটা হয়তো পৃথিবীর কাছে অনেক কমদামী- উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু না। কিন্তু আমার কাছে চিরদিনই ভীষণ অভিজাত। তামাম দুনিয়ার সমস্ত মূল্যবানের চেয়ে অধিক মূল্যবান হয়ে থাকবে। কারণ হৃদয় দিয়ে যেটুকু হয় ঐ সেটুকুর সাথে আর কোনকিছুর তুলনাই বোধহয় চলে না।
বিষয়: বিবিধ
৩৯৬১ বার পঠিত, ১৩৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নিয়মিত লিখবেন প্লিজ!
শুভকামনা রইলো।
- “আব্বু, বইগুলোতো পুরোনো হয়ে গিয়েছে।”
- “বই কোনো দিন পুরোনো হয়নারে মা।”
আামার কাছে সেই শ্রেষ্ট মানুষ যে চিন্তা রুচি আর জ্ঞানের দিক থেকে শ্রেষ্ঠ। আপনার আব্বু তাদেরই একজন্য। ধন্যবাদ।
টিক টিক টিক টিক এই ঘড়িটা বাজে...
আরও অনেক কিছু স্মৃতি জড়িত। নির্বাক স্বার্থহীন এক সংগীতারুগী সম্রাট। আল্লাহ তাকে জান্নাতের উচ্চাসনে স্থান দিন। আমীন।
স্মৃতিতে মনে করিয়ে দিলেন পনের বছর আগের একটি দিন। কবি ফররুখ আহমদ এর স্মৃতিতে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে। প্রত্যাশা প্রাঙ্গনে নামাজে দাড়িয়ে ছিলাম। একেবারে শেষ সারিতে। আমার পাশে ডান পাশে তিনি। বাম পাশে পরিচালকের রুমের ভিতর চেয়ারে সৈয়দ আলি আহসান কবি আলমাহমুদ সহ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যাক্তি। নামাজে জোড়ে তকবির দিচ্ছিলেন তিনি। অনুষ্ঠান শেষে পরিচয় হলো। আমি তখন নামকরা প্রতিষ্ঠানের চাকুরি জিবি। দামি প্যান্টসার্ট পড়া। অথচ পায়জামা-পাঞ্জাবি পরা মানুষটির কাছে নিজেকে মনে হচ্ছিল বামন। না তার শরিরের বিশালত্ব ছিলনা। কিন্তু হৃদয় এর বিশালত্ব আর স্নিগ্ধতা ছিল।
আপনাকে স্বাগতম ব্লগে।
স্টিকি পোস্টে অভিনন্দন আপনাকে... থামবেন না কিন্তু একটুও... ইনশাআল্লাহ...
আল্লাহ এ জ্ঞানী ভালো মানুষটিকে জান্নাতে নসীব করুন। আমিন।
আর মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা তিনি আপনার বাবাকে উত্তম প্রতিদান দিন। আমিন
আপনার লেখার সাথে আরো একাত্ব হবার কারণ হলো, শেখেরটেক ৮ নং রোডে আমিও দীর্ঘদিন ছিলাম। কাজেই সবকিছুই আমার নিজের ঘটনা মনে হচ্ছিল।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। লিখে যান।
প্রতিটি ঘরে এমন বইঘর খেলার উপকরণের বিকল্প হিসেবে থাকলে কত্ত কত্ত জুম্মি নাহদিয়া জন্ম হবে।অসাধারণ।
আর নিয়মিত লেখা চাই
জেদ্দায় এই আল্রাহর ওলীকে খেদমত করার সুযোগ হয়েছিল।আমাকে মনে হয়েছে একজন চলমান সাহাবী আবুজর গেফারী (রাঃ)। অনুগ্রহ করে আমাদের প্রিয় ব্লগে নিয়মিত হবেন।
আপনার নিজের ষ্টাইলে লেখা এই শব্দগুলি লেখাটিকে অসাধারন করে তুলেছে । বুয়ার মুখে 'খাইতারবেন' শব্দটা যেন আমি নিজের কানে শুনতে পাচ্ছি ।
কলম যেন থেমে না যায় ।
যাজ্জাকাল্লাহ খায়ের
ধন্যবাদ সম্পাদক সাহেবকে, স্টিকি করে পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য
এই চাচুর দোয়া রইলো তোমার প্রতি,পরিবারের সবার প্রতি।।
eLibrary রয়েছে। আশা করি লিখে যাবেন।
eLibrary রয়েছে। থাম্বস আপ !
সেটা হয়তো লিখে বুঝাতে পারবোনা আর আপনি কাজের আন্টির কথা শুনে যদি সত্যিই বই বিক্রি করে দিতেন তবে একটা অট্টচিৎকার দিতাম যেটা ব্লগেও হয়তো শুনতে পেতেন। বই বিক্রি না করাতে বেঁচে গেলেন। আপনার বাবার মত আল্লাহ আপনাকেও যেনো বইয়ের প্রতি মমতা দান করেন। আমিন।
আর এ ব্লগটির দ্বারা আমিও লাইব্রেরীর একটা ধারনা নিয়ে নিলাম। একদম অন্যরকম লাইব্রেরী।
আল্লাহ আপনার বাবাকে জান্নাতবাসী করুন এই কামনা করি।
সুন্দর পোষ্টটির জন্য অনেক শুকরিয়া।
একদিন এক লোক আমাকে পুরান বই কিনতে দেখে বললঃ এগুলোত পুরান বই ?
আমি বললামঃ ভাই বই কি কখনও পুরান হয়? বই একমাত্র জিনিস যা শত হাজার বছর পরেও যে পড়েনি তার জন্য চির নতুন থাকে । ঠিক যেন ঘোমটা পড়া নববধু ।
প্রাণ আনতেই হবে আনতেই হবে তোমাকে.।.।.।.।
মল্লিক ভাইয়ের সেই আহ্বান যেন কোনদিন না ভুলি ।
সেই আহ্বান যেন কোনদিন না ভুলি ।আল্লাহ সাহায্য করুন ।
আপনার বাবার প্রতি শ্রদ্ধা রইলো। বাবা-মায়ের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে লিখে যান নিয়মিত। শুভকামনা রইলো
লিখতে থাকুন আপু, অপেক্ষায় থাকবো নিত্য নতুন পোস্ট পাওয়ার আশায়। যাজাকিল্লাহু খাইর।
আপনার বাবাকে আল্লাহ উনার জান্নাতি মেহমান হিসেবে কবুল করে নিন! আপনাদের সবার জন্য দোআ ও শুভকামনা রইলো!
--
সেই মানহা মুন্নার কি অবস্থা এখন ?? উনিও লেখালেখি করেন নাকি ??
নদী গুলো কেন যেন হয়েছে নিথর.......
কেন হৃদয় বিনায় আজ সূর উঠেনা...........
কেন মনের বেতারে আর গান বাজে না?
চোখ দুটি যেন গেছে আঁধারে ডেকে...........
কেন মন থেকে আমি কিছু ভাবী না????????
কেন দৃষ্টি থেকে ও আমি কিছু দেখি না??????
ভোরের শীতের আকাশ.........
কেঁদে কেঁদে যেন করে শুধু হা হোতাস......
পাখিদের গানে গানে.......
আর কোন ফুল ফুটেনা বাগানে??????
কেন জীবন আকাশে সূর্য হাসে না???
কেন মনের পাখিদের গানে আর মন ভরে না??????
তারা গুলো আজ যেন নিবে গেছে সব..........
নদী গুলো কেন যেন হয়েছে নিথর.......
কেন হৃদয় বিনায় আজ সূর উঠেনা...........
কেন মনের বেতারে আর গান বাজে না?
চোখ দুটি যেন গেছে আঁধারে ডেকে...........
কেন মন থেকে আমি কিছু ভাবী না????????
কেন দৃষ্টি থেকে ও আমি কিছু দেখি না??????
ভোরের শীতের আকাশ.........
কেঁদে কেঁদে যেন করে শুধু হা হোতাস......
পাখিদের গানে গানে.......
আর কোন ফুল ফুটেনা বাগানে??????
কেন জীবন আকাশে সূর্য হাসে না???
কেন মনের পাখিদের গানে আর মন ভরে না??????
তোমার আব্বুর মতো আব্বু হতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারলাম কৈ? আমারও শখ ছিল,সধ্য ছিলনা। তবুও হাত দিয়েছিলাম। দারুন পরবাস সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছে। এখন মাঝে মাঝে আবদুল করিমের গান শুনি।
'আগের বাহাদুরী এখন গেলো কৈ?
চলিতে চরণ চলেনা দিনে দিনে অবস হই।'
আর ভাবি যদি আবার সেদিন ফিরিয়ে আনা যে্তো।
মল্লিক ভাইকে যেনো আল্লাহ ভাল রাখেন। আর তোমাদেরকেও।
''কেউ না করুক, আমি করবো কাজ'' গানটি গেয়ে আমাদের এতো মুগ্ধ করেছিলেন যে, ঐদিনই গানটি মুখস্ত করে ফেলেছিলাম।
দুআ করি, আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুন।
May Allah allow u fulfill your dream. i have a dream too.
যখন মাসিক কলমে লিখতাম, তখন যোগাযোগ হতো, দেখা হতো মাঝে মাঝে।
আর আমার বাসার পাশে মোহাম্মদপুরের বিপরীতের সাহিত্যানুষ্ঠানে কতোই না কৌতুককর পরিবেশে সময় কাটাতাম আমরা।
তার পাঞ্জেরী কবিতার আবৃত্তি শুনতাম। তিনি প্রায়ই আমাকে অনুষ্ঠানে সভাপতির আসনে বসিয়ে দিতেন।
খুব খারাপ লাগে, যদিও মৃত্যুই আসল সত্য। আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদাউসে রাখুন।
আমার একটি বইঘর ছিল, মনে পড়ে ক্লাস ফাইভ থেকেই সেই ঘর কে তিলে তিলে গড়ে তুুলেছি। প্রচুর বই ছিল সবই আমার পড়া বই, অনেক বই বিভিন্ন পাঠকেরা পড়ে ছিড়ে ফেলত মনে দুঃখ লাগত না। আমি নিজেই বই বাইন্ডারের কাছে গিয়ে বাইন্ডিং শিখে নিজের বইঘরের বইগুলোকে সতেজ করেছি। আমার বইঘরের মূল্য বুঝত শুধু একজন তিনি আমার আব্বা। তিনি আমার সংগৃহীত প্রতিটি বইয়ের পাতা তন্ন তন্ন করে পড়তন।
এরশাদের আমলে রাজনৈতিক হানাহানিতে একদা ছাত্রলীগের ছেলেরা বাড়ী জ্বালিয়ে দিতে এসেছিল। তাদের আক্রোশ ছিল বইয়ের উপর। কেননা ইসলামী বই পাওয়া গেছে এমন বহু বাড়ী ইতিপূর্বে জ্বালানো হয়েছে। বাবা বাড়ি রক্ষার্থে বহু ইসলামী বই নিজেই জ্বালিয়ে ফেলেন, অনেক গুলো পুকুরে ফেলে দেন।
আজকে আমি প্রবাসে, আজো অনেক বই পড়ে রয়েছে, তবে পড়ার মানুষ নাই। বইয়ের উপর বালির স্তুপ পড়ে যায়, তবে মূল্য দেবার মানুষ নাই। আমার পিতার সন্তানদের মাঝে আমিই পাঠক ছিলাম, এখন মনে হচ্ছে পুরো এলাকায় আমি ব্যতীত আর কোন পাঠক নাই।
সত্যিই তুমি আমাদের জন্য আদর্শ। কিন্তু আমরা আদর্শ হতে পারিনি। মল্লিক ভাইয়ের মতো যেমন বাবা হতে পারিনি। তেমনি করে জুম্মিদের বাবাও হতে পারিনি।
ভাল থেকো মা। নিশ্চয়ই জান্নাতে বসে তোমার বাবা এই লেখাটা পড়ে তৃপ্তির হাসি হাসছে আর তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।
এখন তোমার বাবার রব যদি কেবল এই জিনিসটার প্রতিদান দেন, তাহলে তোমার বাবার অবস্থানটা কোথায় হতে পারে??
যথই চলুক বাহানা্,
খোদার দ্রুহী শক্তি গুলো পড়ছে বেকায়দাই" টাইপের অনেক সংগীত । আপনার বাবার লিখাটি আগ্রহ নিয়ে পড়ছি দেখে বাবা আরেকটি বই দিলেন মাও. মহিউদ্দীনের লেখা "কিশোরদের মুহাম্মাদ (সা এর পর আমি নিজ উদ্যেগেই একে একে এ যুগের নসিম হিজাজী, মাওলানা আব্দুর রহিম, মাও. মহিউদ্দীন খান, মাও. আবুল আলা মওদুদি (রা বই গোগ্রাসে গিলেছি, আর ইসলামিক ফিলোসপিতে শান্তি এবং প্রগতীর উত্তানে সর্বজন এক্সসেপ্টবল পথ এখনো খুজে বেড়াচ্ছি। আর আমার বিপথ ছেড়ে সুপথে দেখানোতে আপনার বাবা অনেকজনের মধ্যে অন্যতম একজন পথ প্রর্দশক তাই আপনার বাবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ, আপনি সেই বাবার সন্তান, যে বাবা কত-শত বাবার বকে যাওয়া সন্তানদের সুজা করার চাকরি করেছেন "ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মত" আল্লাহ্ ওনাকে এবং ওনার পরিবার/স্বজনদের আজীবন অনুগ্রহ দান করবেন এই প্রর্থানাই রইলো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন