"হ্যালো বাংলাদেশঃ ওয়েস্টমিনস্টার থেকে বলছি"
লিখেছেন লিখেছেন রঙ্গিন স্বপ্ন ১৪ জুলাই, ২০১৬, ০৯:০৫:০৮ রাত
'‘যাঁরা আপনাদের শাসন করেন, তাঁদের ক্ষমতা থেকে সরানোর কোনো পথ যদি না থাকে, তাহলে আপনি যে ব্যবস্থায় বাস করছেন, তা গণতন্ত্র নয়।"
-টোনি বেন (Tony Benn) লেবার দলীয় ৪৭ বছর এমপি, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট।
বলা হয়ে থাকে যে বাংলাদেশে গণতন্ত্রে "Westminster system" ফলো করা হয়ে থাকে, বিশেষ করে ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্র আসার পর থেকে। চলুন তাহলে একটু খানি জেনে নেই "Westminster Democratic system" টা কী, কেমন এবং ওখানে যারা কাজ করেছেন তাঁদের বক্তব্যই বা কী এ ব্যাপারে।
ওয়েস্টমিনস্টার সিস্টেম যুক্তরাজ্য রাজনীতিতে সরকারের একটি গণতান্ত্রিক সংসদীয় পদ্ধতি. এই শব্দটি ওয়েস্টমিনিস্টারের প্রাসাদ, যুক্তরাজ্য সংসদ আসন থেকে আসে ( The Westminster system is a democratic parliamentary system of government modelled after the politics of the United Kingdom. This term comes from the Palace of Westminster, the seat of the Parliament of the United Kingdom. The system is a series of procedures for operating a legislature. It is used, or was once used, in the national legislatures and sub-national legislatures of most Commonwealth and ex-Commonwealth nations.
আমরা এই সংজ্ঞাটিও জানি,যার বাংলা করার দরকার পড়েনাঃ
«Government of the people, by the people, for the people»
-U.S. president Abraham Lincoln (1809-1865
গণতন্ত্রের বিপরীত সিস্টেম গুলো হলোঃ
Monarchy :Government by a single ruler (king/queen, emperor)
Aristocracy :Government by noblemen (hereditary)
Oligarchy :Government by few persons
Dictatorship :Government by people, that have seized power by force
প্রথমেই যার উক্তি দিয়ে শুরু করেছিলাম, সেই টোনি বেন (Tony Benn) ২০০১ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য পদ থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নেন এবং হাউস অব কমন্সে তাঁর শেষ বক্তৃতায় তিনি পার্লামেন্টের ভূমিকা এবং গণতন্ত্র সম্পর্কে যে মন্তব্য করেন, তা যে রাজনীতিবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য অবশ্যপাঠ্য হয়ে থাকবে, সন্দেহ নেই।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কার্যবিবরণীর রেকর্ড (হানসার্ড) অনুযায়ী টোনি বেন বলেন, ‘আমার জীবনে গণতন্ত্রের জন্য আমি ৫ টি সামান্য প্রশ্ন তৈরি করেছি। অ্যাডলফ হিটলার, জোসেফ স্টালিন কিংবা বিল গেটসের মতো ক্ষমতাধর কারও সঙ্গে দেখা হলে তাঁদের যে প্রশ্নগুলো করা যায়:
১,আপনার কী ক্ষমতা আছে?
২, এই ক্ষমতার উৎস কী?
৩,কার স্বার্থে আপনি এসব ক্ষমতা প্রয়োগ করেন?
৪, আপনি কার কাছে জবাবদিহি করেন? এবং
৫, আমরা আপনাকে কীভাবে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারব?’
এসব প্রশ্ন উত্থাপনের পর তিনি বলেন, ‘যাঁরা আপনাদের শাসন করেন, তাঁদের ক্ষমতা থেকে সরানোর কোনো পথ যদি না থাকে, তাহলে আপনি যে ব্যবস্থায় বাস করছেন, তা গণতন্ত্র নয়।’ এসব প্রশ্ন প্রয়োগ করা হলে তৃতীয় বিশ্বের খুব বেশি দেশকে যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাতারে ফেলা যাবে, তা মনে হয় না।
এখন আসুন আরেকটু জানি আমাদের সংবিধান কী বলেঃ
"সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদে বলা আছে, একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকাসমূহ থেকে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইন অনুযায়ী নির্বাচিত ৩০০ সদস্য নিয়ে সংসদ গঠিত হবে।"
সাংবিধানিকভাবে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়।কেননা দশম সংসদ নির্বাচনে এর কোনো প্রতিফলন ঘটেনি।এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এখন হানাহানি শুরু হয়েছে। এই হানাহানি থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় মধ্যবর্তী নির্বাচন।
রাজনীতি নয় আসুন সত্য ইতিহাস জানিঃ
১৯৭০ সালের নির্বাচনে যেই দলটি সর্বাধিক ভোট পেয়ে "ইউনাইটেড পাকিস্তানের" নেতৃত্বের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছিল, ২০১৪ সালে সেই দলটিই মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে , রাজনৈতিক দেউলিয়ায়, অগণতান্ত্রিকভাবে গায়ের জোড়ে ক্ষমতায়।
কোথায় ১৯৭০ এর নির্বাচন!
আর কোথায় ৫ জানুয়ারি ২০১৪!!
যেখানে শোষণ আর বঞ্চনার বিরুদ্ধেই ছিল স্বাধীনতার হুঙ্কার,
যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মতই ছিল স্বাধীনতা-সংগ্রামের ভিত্তি;
সেখানে, ৪৪ বছরে কী পেল বাংলাদেশ?
আমরা কী এগিয়েছি নাকি আরো পিছিয়েছি?
কোথায় থাকতে পারতাম আমরা, আর আছি কোথায়???
এ কোন বাংলাদেশ?
এ কেমন মুক্তি?
দেখুন মুক্ত কারাঃ
গত ২৩জুন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে থাকা না থাকা নিয়ে যে গণভোট হয় এতে বৃটেনের লোকজন না থাকার পহ্মে রায় দেয়। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামরুন থাকার পহ্মে ছিলেন। জনগণ তাঁর মতের বিপহ্মে বলে তিনি সাথে সাথে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তিনি নিজ পার্টির প্রধানের পদ থেকেও পদত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য,এই গণভোটের সাথে প্রধানমন্ত্রী বা পার্টি প্রধানের পদে থাকা বা না থাকার ন্যূনতম কোন সম্পর্ক ছিলনা।
শুধু জনগণের মতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন।
স্বল্প সময়ের ব্যাবধানে তেরেসা মে পার্টি প্রধান হোন এবং গতকাল রানীর প্রাসাদে যেয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
ছবিতে দেখুন, প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বে থাকতেই নিজে তার আসবাবপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন, কত সাধারনভাবে সরকারি অফিস ও বাসভবন থেকে স্বেচ্ছায় চলে যাচ্ছেন......।
অপর ছবিতে, বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বিদায়বেলা স্ত্রীও তিন সন্তান সহ ।নেই নেতা - কর্মীদের ভীড়! নেই মিছিল! হুমকি! দাঙ্গা পুলিশ! নেই পদত্যাগের আলটিমেটাম! নেই মামলা ! নেই কোন দুর্নীতির অভিযোগ! নীরবে চলে গেলেন। আর আমরা........... ??? বাংলাদেশী নেতারা......... ???
বিষয়: বিবিধ
১০৬০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তাই খালেদা - হাসিনা উনারা যখন রাস্তায় চলাচল করেন তখন উনাদের গাড়ি বহরকে জনগন উনাদের সন্মানে রাস্তা করে দেয় এবং অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে উনাদের এক নজর দেখবার জন্য ।
ডেভিড ক্যামেরন যদি সামান্যতম জনপ্রিয় হতেন তাহলে তাকে সাধারণ জনগনের সাথে এক গাড়িতে যাতায়াত করতে হত না , গাড়িতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মানুষ তাকে সিট ছেড়ে দিত বা ধরে এনে খাতির করে বসিয়ে দিত যেটা আমরা বয়ষ্কদের জন্যও করে থাকি ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন