"রক্তপাত, প্রগতিবাদ, মুক্তমনা লেখালেখি ও ইসলাম"
লিখেছেন লিখেছেন রঙ্গিন স্বপ্ন ০৩ এপ্রিল, ২০১৫, ০৮:০৯:২৬ রাত
১) কোন প্রাণ হরণ তথা কাউকে হত্যা করা সবচেয়ে বড় গুনাহ ও আইনের দৃষ্টিতে মহা অন্যায়। জীবন সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ, সুতরাং সেই জীবন নাশ করা বা হুমকির মুখে ফেলা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। সম্প্রতি ওয়াশিকুর নামের একজন ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগার খুন হয়েছেন। তারও আগে একই দিনে ৬ জন তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধে পুলিশের হাতে মারা গেছেন, যাদের শরীরে ৫৪ টি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে; যারা সবাই বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষ মতাবলম্বী। দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় প্রায় প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছেন অনেক মানুষ।প্রায় প্রতিদিনই বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষের কেউ না কেউ গুমের শিকার হচ্ছেন। প্রতি নিয়ত সীমান্তে বি এস এফ নামক কসাইয়ের হাতে বাংলাদেশী নিহত হচ্ছেন। এই প্রত্যেকটি খুনের রক্তই লাল, প্রতিটি ঘটনাতেই আক্রান্ত হচ্ছেন তার/ তাদের আত্নীয় ও ঘনিষ্ঠজন। একজন মানুষ হিসেবে এইসব প্রতিটি খুনের-ই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে হবে, আর সেটাই বিবেকের দাবী।দেশে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন থাকলে এগুলো ঘটার কথা না।
২) মন যা চায়, তাই কি লিখা যায়? আমি কি অভিজিৎ ও ওয়াশিকুরের বাবা-মা'র বিরুদ্ধেও যা ইচ্ছা, সত্য- মিথ্যা লিখতে পারবো? আমি কি পারবো তাদেরকে শ্রাব্য- অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে? রাষ্ট্র, সমাজ, ধর্ম এমন কি আমার স্বীয় বিবেক কি আমাকে বাঁধা দেবে না? যাকে আমার পছন্দ না, আমি কি ইচ্ছা করলেই যা ইচ্ছা বলতে বা লিখতে পারি তার বিরুদ্ধে? আমি কি এমন কিছু করতে পারি যা আপাত দৃষ্টিতে আইন সিদ্ধ কিন্তু নৈতিকতা, মুল্যবোধ তথা রুচি বিরোধী? আমি যদি জনাব শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বাজে কথা লিখলে বা বললে জেল,জরিমানা বা শাস্তির সম্মুখীন হই, তাহলে সমাজ তথা রাষ্ট্রের এটাও দায়িত্ত হয়ে যায় যে-কেউ কারো বিশ্বাস ও ধর্ম অবমাননা বা কটাক্ষ করে যা ইচ্ছা তাই লিখবে না এবং বলবে না।
৩, মুক্তচিন্তা নিয়ে লেখালেখি নয় বরং বলুন যে ইসলামকে গালিগালাজ করত তারা ।এটা লেখালেখি নয় বরং বিশ্রী ও নোংরা ভাষায় গালিগালাজ, এতে বরং তাদের শিক্ষা, বিবেক বুদ্ধি, মানসিকতা ও নিজ বংশেরই পরিচয় প্রকাশ পায় ।কোন মতেই খুন সমর্থন যোগ্য নয় , কিন্তু কেন যেন সরকার একটি খুনেরও পেছনের হাত বের করছে না।
৪) বাংলাদেশে কোন মুসলমান কে দেখি না যে হিন্দু বা খ্রিষ্টান ধর্ম নিয়ে বাজে লেখালেখি করেছে বা কটাক্ষ করেছে, কারণ এটা নৈতিকতা বিরোধী এবং খাঁটি একজন মুসলিম তা করতেও পারেন না। কিন্তু কেন যেন বাংলাদেশে ও বাইরে কিছু তরুণ যারা নিজেদেরকে মুসলিম পরিচয়ও দেয় তারা এবং কিছু হিন্দু ভাই- বোনেরা ক্রমাগত ইসলামের বিরুদ্ধে অসত্য ও রুচি বিরোধী লেখালেখি তথা গালিগালাজ করেই যাচ্ছেন।যাদের শব্দ চয়ন ও মিনিং এতোই বাজে যে ভদ্র ও সভ্য কোন মানুষের পক্ষে একটি লাইনও পড়ে শেষ করার মত নয়। এর মধ্য দিয়ে মূলত তাদের শিক্ষা-দীক্ষা, রুচি ও বংশেরই পরিচয় ফুটে উঠে। তবে নিজ ও অন্য ধর্ম ও বিশ্বাস জানা ও বুঝার জন্য যে কোন একাডেমিক আলোচনা- সমালোচনা অবশ্যই ভিন্ন কথা।
৫) আমাদের তথাকথিত প্রগতিবাদ ও মুক্তমনা লেখালেখি কেন শুধুই ইসলামের বিরুদ্ধে? সমাজে কত্ত বিষয় রয়েছে লেখালেখির, জীবন-জগত-প্রকৃতি-বিজ্ঞান, সমাজ ও রাষ্ট্র, ধর্ম-দর্শন আরো কত্ত কী! এইসব মুক্তমনারা দুকলম ইসলামের বিরিদ্ধে লিখেই প্রগতিবাদ সাজতে চায়? এই যদি প্রগতিবাদ হয় তাহলে বলতেই হয়; না, আপনাদের কলম ও মুখ দিয়ে অসত্যের বিশ্রী দুর্গন্ধ-ই বের হয়- ধর্মপ্রাণ দেশবাসির সত্য ও আদর্শের সুঘ্রানের বিপরীতে তার বিন্দু পরিমাণ জায়গা হবে না বাংলাদেশে, হবার নয় ইনশা আল্লাহ।
৬) রক্তপাত কোন সমাধান নয়।আখেরাতে সকল প্রকার জুলুম অন্ধকার বয়ে আনবে। বরং এদের বিশ্রী-দুর্গন্ধময় কাজের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা, সত্য ও সুন্দরের মার্জিত উপস্থাপন এবং সর্বোপরি আইনের মাধ্যমে মোকাবেলা করা উচিৎ। একজন মন্ত্রীকে যেভাবে ইসলাম অবমাননায় জেলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে, একইভাবে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলা যেতে পারে। তবে সরকারের ভুমিকা এক্ষেত্রে ফলপ্রসূ ফলাফল বয়ে আনবে, নিঃসন্দেহে।
বিষয়: বিবিধ
১২৪১ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ ভাইয়া অনেক সুন্দর যৌক্তিক লিখা
কারণ একদম পরিষ্কার!একমাত্র ইসলাম ধর্মেই খারাপ কাজের শাস্তি কে নিন্দা করেছেন এবং সাথে সাথে এ হুঁশিয়ারিও রয়েছে যে, খারাপ কাজের শাস্তি অবস্মভাবী! তাইতো পাপ কাজ গুলোকে দেদারসে করার জন্য ইসলামের বিরুদ্ধে সারাক্ষণ লেগে থাকা।
কিছু নাস্তিক বেছে নিয়ে ইসলামকে আক্রমণ করায় আর প্রয়োজন মত হত্যা করে মুসলিম কাউকে ফাসিয়ে দেয়!!!
ধন্যবাদ ভাইয়া অনেক সুন্দর যৌক্তিক লিখা!
সহমত
মন্তব্য করতে লগইন করুন