জনাব Golam Maula Rony, আপনার সাম্প্রতিক লেখা প্রসঙ্গেঃ
লিখেছেন লিখেছেন রঙ্গিন স্বপ্ন ০২ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৮:৩১:৩৮ রাত
১, আপনার লেখাটি পড়ে মনে হল জামায়াত সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন আসলে অন্ধ লোকের হাতি দেখার মতই। হাতি কিন্তু হাতির মতই থাকে যদিও অন্ধ লোকটি তার মত করে বর্ণনা দেয়। এতে আসলে বিশ্ময়ের কিছু থাকে না কারণ, তার সক্ষমতা যে অতটুকুই। লেখাটি জামায়াত প্রসঙ্গে আপনার ধারনা, বুঝার সক্ষমতা এবং জ্ঞানের বহিঃ প্রকাশ। জামায়াত হাতির মতই আকার ও চরিত্রে স্ব বহাল আছে।
২, আপনাকে একটা চুটকি বলি (আপনিতো আবার টক শো তে মাঝে মাঝে চুটকির অবতারনা করেন, যদিও তার ভাষা ও শব্দ চয়ন খুব নীচু মানের; মানুষ সেগুলো নিয়ে হাসাহাসি করে কিন্তু আপনি টের পান না), এটি আসলে চুটকি নয়, বাস্তব ঘটনা। আমাদের গ্রামের সৌদি ফেরত কয়েক ভাই এসে পাড়ায় একেবারে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলল এবং শুধু তাই নয়- যেই জিজ্ঞেস করে যে সৌদি আরব কেমন দেশ? উত্তরে বলেঃ "আর কইয়েন না, সৌদিরা অজু ছাড়াই নামাজে দাঁড়ায় এবং নামাজ শেষে সুন্নত না পড়েই ফরজ নামাজ শেষে সালাম ফিরিয়ে বের হয়ে যায়; এর চেয়ে আমাগো বাঙ্গালীরা অনেক ভালো", আমি বুঝানোর চেষ্টা করেছি যে, তাঁরা আমাদের অনেকের মত মসজিদে যেয়ে অজু করেনা, বরং বাসা থেকে অজু করে সোজা মসজিদে ঢুকে যায়। আর সুন্নাত নামাজ বাসায় পড়া নবিজীর সাঃ সুন্নাত। তাই তাঁরা এমনটি করে থাকেন। কে শুনে কার কথা। এক শ্রেনীর মানুষ তাদের কথা শুনে এবং হাসাহাসি করে।
জনাব, জামায়াত সম্পর্কে আপনার জ্ঞানের গভীরতা ও আভিজ্ঞতা ঐ সৌদি ফেরত ভাইদের মতই, লেখাটি পড়েও তাই মনে হল।
৩, লেখাটি কয়েক মাস আগের আপনার আরো দুটি লেখার স্ব বিরোধি এবং সম্পূর্ণ উল্টো। একটি জনাব সাঈদী সাহেবে কে নিয়ে লেখা যেখানে আপনি জামায়াত ও সাঈদী কে নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ এবং আওয়ামিলীগের বিরোধিতায় ভরপুর।অপর লেখাটি (এই সেই লেখাটি 6 November 2014, https://www.facebook.com/mdgolam.maularony/posts/589469487824581) জনাব মীর কাশেম আলী সাহেব ও জামায়াত নিয়ে আপনার জেলখানার স্মৃতিচারন। মনে আছে আপনি ফাঁসি হতে যাওয়া সর্বদা হাসিখুশি মীর কাশেম আলী সাহেবের হঠাত চিন্তিত মুখ দেখে আপনি প্রশ্ন করেছিলেন। তিনি নিজেকে নিয়ে চিন্তিত নন বরং উত্তর মেরুর বরফ গলে এক সময় বাংলাদেশের অর্ধেক তলিয়ে যেতে পারে'' এমন সাহসী ও দেশ প্রেমকিক জবাবে আপনি গোলাম মাওলা রনি নিজেকে "বোকা" সাব্যস্ত করেছিলেন? সেদিন কেন জামায়াতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন?
৪, আপনার লেখাটি ভুল, অসত্য আর বাস্তবতা বিবর্জিত- সুতরাং ভেতরের বিষয় নিয়ে আলোচনা অর্থহীন। শুধু একটি লাইন আপনি লিখেছেন জামায়াত কর্মী ও নেতারা " বরং উল্টোটি চিন্তা করে সকাল-বিকাল দেশ-জাতি এবং নিজেদের তকদিরের ওপর অভিমানী হয়ে হা-হুতাশ করে।" আমার ৩ নাম্বারে আমি যে আপনার আরো দুটি লেখার রেফারেন্স দিলাম, এই লাইনটি আপনার সেই দুটি লেখার ১০০% বিরোধী এবং ১৮০ ডিগ্রী বিপরীতে। আপনিই জেল থেকে এসে লেখার মাধ্যমে জানিয়েছিলেন জামায়াত নেতারা কতটা নির্ভীক, চিন্তাহীন, বলিষ্ঠ, আল্লাহর উপর নিরভরশীল এবং আদর্শবান। সেদিন কেন জামায়াতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন?
৫, আপনি জামায়াতের নেতা হলে কেমন ঘাবড়ে যেতেন, আপনার অন্তরের দুর্বলতা মেশানো ভীতি ও দ্বিধাযুক্ত মানসিকতাই ফুটে উঠেছে আপনার এই লেখায়।জামায়াত আপনার মত দুর্বল চিত্তের মানুষের জন্য নয়, সেটা গত ৬ বছরে জামায়াত প্রমাণ দিয়েছে।
৬,আপনি ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির একজন সাংবাদিক কে চড়- লাথি মেরে এম পি অবস্থায় হাজতে গেলেন। আপনাকে আপনার প্রিয় দল ছুড়ে ফেললো। আপনি আপনার নেত্রী ও তার পুত্রের বিরুদ্ধে সমালোচনায় কত খোলা চিঠি লিখলেন।আবার নেত্রীর প্রশংসা করলেন, এভাবে আপনি কখন যে কী করছেন, মানুষ আপনাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ হাসাহাসি করে আপনি কি বুঝতে পারেন?
৭, আপনি রাজনৈতিক কেবলা পরিবর্তন করছেন বারবার,দলে জায়গা না পেয়ে রাজনৈতিক দেউলিয়া হয়ে স্ব বিরীধী আবোল- তাবোল বকছেন প্রতি নিয়ত। কারণ যখন দেখছেন অবৈধ হলেও এই সরকার টিকে যাচ্ছে তখন দলের প্রশংসায় আপনিও আবার কেবলা পরিবর্তন করছেন। এগুলো কি উদ্দেশ্য মুলক নয়?
৮, ২০০৮ এ এমপি হয়ে আপনি সংসদে আউজু বিল্লাহ পড়েই পরের কথা থাকতো জামায়াত বিরোধীতা।সেই আপনি দল থেকে ছিটকে পড়ে জামায়াত প্রশংসায় কলাম লিখলেন। পুরোটাই উদ্দেশ্য মুলক। সচেতন দেশবাসি তা ভালো করেই জানে।
৯, যে কেউ যে কারো সমালোচনা করতেই পারে। আপনিও পারেন। কিন্তু তা হতে হবে যৌক্তিক, প্রাসঙ্গিক, সত্য এবং গ্রহণযোগ্য। আপনার লেখায় এসব গুলোই অবর্তমান।
১০, Constitutionally এবং Institutionally দেশকে আদর্শহীন তথা ইসলামহীন এবং ভারতের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে একমাত্র বাঁধা জামায়াত।সম্প্রতি জনাব শাহজাহান উমর বীর প্রতিকের লেখায় তা স্পষ্ট। গত ৬ বছর রাজনীতি তে সরকারী দলের একমাত্র গঠন মুলক সমালোচনা ও দেশের স্বার্থ রক্ষায় জামায়াত প্রধান বিরোধী দলের ভুমিকা রেখে আসছে ।
আপনার ভাষায় জামায়াত যদি এরকমই হবে তাহলে- ৬ বছরে এত্ত শক্তি নিয়ে আপনার প্রিয় দল কি পেরেছে জামায়াত কে দুর্বল করতে?
১১, ৪ দল বা ২০ দলীয় জোট কিংবা এর আগে আপনার দলের সাথে জোট প্রভৃতি বিষয়ে অনেক বক্তব্য আছে, থাকতেই পারে। কিন্তু আপনার মত চরম সুবিধাবাদী ও রাজনৈতিক দেউলিয়া হয়ে যাওয়া ব্যক্তি জামায়াতের আদর্শ নিয়ে কথা বলার মিনিমাম যোগ্যতা রাখেন না।
বিষয়: বিবিধ
১৪৩৪ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
স্কুল পালানো প্রার্থমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় একদিন শুনেছিলাম নামের কোন ভুল নাই তাই, ‘কাজী নজরুল ইসলাম’ লিখতে গিয়ে লিখেছিলাম ‘কাজি নজরুল ইসলাম’। আমার ছোট্ট মামার বাতিখ ছিল খালি পড়া ধরা। আমাদের বাড়িতে এসে তার বোনের (আমার মা) হাতে একটু ভালো মন্দ খাওয়ার আশায় আমাকে একটা কবিতা লিখতে দিলেন। লিখলাম। কিন্তু কবির নাম লিখতে গিয়ে কাজি নজরুল ইসলাম লেখায় মামার হাতে কান জোড়া এক চপেটাঘাত খেয়ে বুঝেছিলাম নামেরও ভুল আছে।
প্রথমেই রনি সাহেব সেই ভুলটা করেছেন। হায়রে জামাত! হায়রে শিবির! কবে হবে হুশ? রনি সাহেবের লেখা জামাত নামটা মনে হয় ‘জামায়াত। তার মত কলাম লেখকের কাছথেকে নামের বানান ভুল করা জাতি আশা করেনা, তিনি সেটা করেছেন বলেও মনে হয়না তবে তার অন্তর যে বিষিয়ে উঠেছে, নামের বানানে তার প্রভাব পরেছে কিনা কে জানে?
জামায়াত শিবিরের ব্যপারে তাকে বিষিয়ে তোলা, আবার স্বার্থের খাতিরে তাদের দলে টানার চেষ্টা করাকে যদি রনি সাহেবের কাছে বেহায়াপনা মনে হয় তাহলে, ‘ইসলামী ব্যাংকের অনুষ্ঠানে গিয়ে জাফর স্যারের হর্ষে হাত তালি দেয়া, তুষারের অনুষ্ঠান পরিচালনা করা আর খোদ রনি সাহেবের কলাম নয়াদিগন্তে প্রকাশিত হওয়া দেখে কেউ যদি বুদ্ধি বেশ্যা সুশীলদের মত এদেরও বেহায়া ঠাওরায় তাহলে কাকে দোষ দিবেন?
অনান্য রাজনৈতিক দলের নীতি আদর্শ এক ও অভিন্ন। তাদের মধ্যে ভিন্নতা শুধু সার্থের তাই তারা ক্ষমতার পালাবদলের অপেক্ষায় থাকে, আবার সাকারী আর বিরোধী দল জেন্টেলম্যান এগ্রীমেন্টের মাধ্যমে সরকারী সম্পদ লোপাট করে ফলে বাধ্য হয়েই যে যত বিরধিতা করুক না কেন মূলে তারা একই। কিন্তু জামায়াতের মূলনীতিই তাদের ঠিক উল্টো ফলে জামায়াতকে নীতিহীনরা তথা চোরে চোরে মাস্তুত ভাইরা ঘৃণা করবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু যারা ঘৃর্ণা করে তারাই যখন স্বার্থের জন্য দলে টানতে চেষ্টা করে তখন মূলত ধর্মহীন সেকুলার, নষ্টবাম আর শ্লোগান সর্বশ্ব জাতীয়তাবাদের দৈন্যতাই প্রকাশ পায়। জামায় হীনমন্ব নয় বরং উদার, দেশের স্বার্থে তারা আদর্শহীনদের সাথে বসতে কার্পণ্য করেনা।
৭১এ যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে, পাকিস্তান থেকে আলাদা হতে চেয়েছে তারা একান্তুই দেশপ্রেমের কারণে তা করেছে। যারা স্বধীনতা যুদ্ধে অংশ নেয়নি, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা চালু রেখেছে, পুলিশবিভাগে দায়িত্ব পালন করেছে, সচীবালয়ে অফিস করেছে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রীত রেডিও টিভিতে দায়িত্ব পালন করেছে, রাজনৈতিক ময়দানে পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছে তারাও দেশের ভালবাসার খাতিরে এবং নিকটতম প্রতিবেশীর থেকে যে কারণে ৪৭ সালে বিচ্ছিন্য হয়েছিল যেই একই কারণে বিরোধী ভূমিকা পালন করেছে। যার বাস্তবতা বর্তমানে প্রতিবেশীদের আগ্রাসী নীতি। ২০১৪তে এসে দেখা যাচ্ছে যারা নিজেদের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে দাবী করে জনগণ তাদেরই স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি মনে করে আর ৭১এ যারা যুদ্ধে অংশ নেয়নি তাদেরকেই মানুষ স্বাধীনতার অন্যতম রক্ষাকব্জ মনে করে। সেজন্যই হয়ত প্রধানন্ত্রীকে বলতে হয়, ‘আমরা দেশ স্বাধীন করেছি তাই আমরাই স্বাধীনতা রক্ষা করব’।
জামায়ত শিবিরের গন্তব্য অনিশ্চিত নয় বরং আপনি নেতা কর্মীদের মতামতের বাহ্যিক দিকটা দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। যা মুদ্রার এক পিঠ। ‘এখানে প্রস্রাব করিবেন না, করিলে একশত টাকা জরিমানা। কিন্তু আপনার অবস্থা যেহেতু মিশ্র অর্থাৎ জগাখিচুড়ি তাই বাক্যাটাকে পড়ছেনঃ ‘এখানে প্রস্রাব করবেন, না করলে একশত টাকা জরিমানা! মান্যবর, জামায়াত শিবিরের রুহানী দিকটা সম্পর্কে আপনার ধারনা না থাকায় যথা স্থানে কমাটা ব্যবহার করতে পারেননি বলেই অনেকে ধারনা করছে।
আদর্শহীনেরাই সৌভাগ্যের চাবি সহজেই হাতের নাগালে পেয়েযায় এবং কাজেও লাগায়। আর আদর্শবাদীরা হেলায় হারায়। সে কারণেই স্বৈরাচারী এরশাদ এখন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত, রওশন বিরোধীদলের নেত্রী, অনেক অখ্যাত কুখ্যাতরা সংসদ সদস্য মন্ত্রী আর রনি সাহেবেরা আম পাব্লিক বা ম্যাংগ পিপোল! ২০০৮এ সৌভাগ্যের চাবি ধরতে পারলেও ২০১৩তে এসে রনি সাহেবের ঘরের চাবি পরের হাতে গেল কিভাবে? সৌভাগ্যের চাবি তো সেফ হোমে জিগ্যাসাবাদের সময় জামায়াত নেতাদেরও হাতের নাগালে এসেছিল। বেঈমানীর সে চাবি হাতে না নিয়েকি তাহলে জামায়াত নেতারা ভুল করেছেন? জাতি কি তাই মনে করে নাকি রনি সাহেবের ইথিক্স সেটাই?
জনতার বৃহৎ অংশ জামায়াতকে ঘৃণা করেনা এমনকি অনেক ঝানু রাজনীতিক, সেনানায়ক, কুটনীতিক, ব্যবসায়ী জামায়াতকে ব্যক্তিগতভাবে ভালোবাসে। অনেকেই প্রকাশ করেনা। মক্কার কাফেররা মুহাম্মদ (সঃ)কে ভালবাসত, আল আমীন, আস সাদিক বলে জানত কিন্তু প্রকাশ্যে ঘৃণা করতে নিজেদের হীন স্বার্থের কারণে। সেটাকে তারা জিয়িয়ে রেখেছিল মক্কায় তাদের লাঞ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত। জামায়াত যেহেতু সেই আদর্শেরই পতাকাবাহী তাই চুড়ান্ত বিজয়ের আগপর্যন্ত তাদেরও সবধরনের অপবাদ সহ্য করতে হবে।
শিবির জামায়াতের ৭১এর ভূমিকার দায়ভার কেন নিচ্ছে সেটা আপনার মাথায় না ঢোকারই কথা। জামায়াতের উপর জোড় করে যেহেতু দায়ভার চাপান হচ্ছে সেহেতু শিবিরের উপরেও সে দায়ভার এসেযায়। যেমনটা পিতার উপর অন্যায্য জেল জুলম হলে সন্তানকেও সাফার করতে হয়। তা নাহলে সেনাবাহিনীর মেধাবী কর্মকর্তা সাবেক ব্রিগেডিয়ার আব্দুল্লাহীল আযমীকে চাকুরীচ্চুত করা হল কোন দায় দায়িত্বের কারণে। এত সহজ অংক রনি সাহেরব মত রাজনীতিকের মাথায় কেন যে ঢোকেনা সেটা সাধারণ জনতার বোধগম্য নয়।
আব্দুল কাদের মোল্লা নিজের জীবনের সফলতা খুজে পেয়েছে, জান্নাতে যাওয়ার হাতছানী তাকে ভি চিহ্ন দেখাতে ভাধ্য করেছে। নিরপরাধ একজন রাজনীতিক, সাংবাদিক ও সুনাগরিককে যেভাবে জাতির সামনে বলির পাঠা বানান হয়েছে আর জাতির সুধীজনেরা তা উপভোগ করছে সেই জাতির মুখে ভি চিহ্নের চপেটাঘাত করা ছাড়া আব্দুল কাদের মোল্লার আর কিইবা করার ছিল। চপেটাঘাতটা যে তাদের মেখে লেগে অন্তর ভেদ করে পাগলা কুকুরের মত আচরণ করতে বাধ্য করেছে তার প্রমাণ পরবর্তি বিরিয়ানি জাগরণ, আইন সংশোধন এবং শেষ পর্যন্ত বিচারিক হত্যাকান্ড।
অধ্যাপক গোলাম আযম জাতির সুমতি ফিরে পাবার আশায় এতটা বছর মাটি কামড়ে পরেছিল। পদ্মা শুকাল, বানিজ্য হাতছাড়া হল, সংস্কৃতি গেল, পাট, চামড়া, চা, চিংড়ি গার্মেণ্টস গেল কিন্তু জাতির একটা বড় অংশের সুমতি হলনা! মৃত্যু যখন তার দুয়ারে কড়া নাড়ছিল তখন সত্য প্রকাশ না করে যাওয়ার মত বোকামী করার সময় আর অবশিষ্ঠ্য ছিলনা। যদি তিনি এতকিছুর পরেও মুখবুজে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতেন তাহলে ইতিহাসও তাকে ক্ষমা করত না। যে কারণে ভারতের রক্ষনাগার থেকে মুক্তিযুদ্ধের দলিল গায়েব হয়ে গেছে ঠিক তার বিপরীত কারণে কবরে এক পা রেখে মরহুম গোলাম আযম সত্য প্রাকাশ করে সাহসের পরিচয় দিয়ে গেছেন। একে খন্দকার সত্য প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে আরও অনেকে এমন অজানা অনেক কথাই হয়ত বলবেন।
নির্বাচনী এজেন্ডা থাকার পরেও যাদ্ধাপরাধের বিচারের কর্মসূচী সরকার হাতে নিতে চায়নি দুইটি কারণে। প্রথমত তাতে সরকারের রাজনৈতিক পূঁজি শেষ হয়ে যাবে আর দ্বিতীয়টা হল তারা এর কোন কুলকিনারা করতে পারবেনা। কিন্তু জামায়াত এক্ষেত্রে অবশয়ি ভুল করেছে, সেটা তাদের রাজনীতিক ভুল তবে রনি সাহেব যা বলতে চেয়েছেন সেরকম ভুল জামায়াত করেনি।
২০০৮ এর নির্বাচনের পরে বিএনপি পাইকারী দরে মার খেয়েছে, জামায়াতের গেয়েও ছিটাফোটা আচড় লেগেছে। কঠিন মার খেয়েও বিএনপি সাংগঠনিক বছর ঘোষনা করে শীত নীদ্রায় চলে গেছে কিন্তু জামায়ত অতিউতসাহে নৌমার্চ, ফারাক্কা মার্চ, সীমান্ত মার্চ তথা বিভাগীয় সম্মেলন করে ভারতের চোখের কাটায় পরিণত হয়েছে আর সেটাই তাদের জন্য কাল হয়েছে। ভারত নিজেদের অন্যায় ঢাকতে আওয়ামিলীগকে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রকৃয়া শুরু করতে এবং জাতি ঘাতি পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে বাধ্য করছে।
ইন্টারন্যাশনাল বার এসোসিয়েশনও আইনটি সম্পর্কে লিখিতভাবে ভূয়সী প্রশংসা করে, এক সময় তারা প্রশংসা করেছে কিন্তু বিচারতো আইন দ্বারা হচ্ছে না। ৬ কিলোমিটার দূর থেকে দেখা আর লোক মারফত শোনা কথার উপর ভিত্তি করে যখন আইনের প্রয়ো শুরু হয়েছে তখন ইন্টারন্যাশনাল বার এসোসিয়েশন যে সংশোধনী দিয়েছে তা বেমালুম এরিয়ে যাওয়া কি সত্যের অপলাপ নয়?
জামায়াত শিবির দেশের আইন প্রশাসনের প্রতি শ্রোদ্ধা রাখে বলেই বিচারিক আদালতে হাজির হয়ে জাতির সামনে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে যে বিচারের নামে যা হচ্ছে তা অবিচার ছাড়া কিছুই নয়। উচ্চ আদালত রিভিউ খারিজ করে প্রমাণ করেছে তারা বিষয়টা রাজনীতির উপর ছেড়ে দিয়েছে। বিচার যখন বিচারিক আদালত থেকে রাজনৈতিক আদালতে স্থানান্তরিত হয়, রায়ের আগে যখন দেশের প্রধান নির্বাহী সহ মন্ত্রী এম্পিরা ডিক্টেট করে তখন বাধ্য হয়েই তার প্রতিবাদ জানাতে হয়। আর রাজনৈতিক প্রতিবাদের প্রধান ভাষাই হল হরতাল। রাজনৈতিক হরতাল আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে নয় বরং ফরমায়েশি রায়ের বিরুদ্ধে, আশাকরি দেশবাসীর পাশাপাশি রনি সাহেবও বিষয়টি বুঝেন কিন্তু বলেন না ঐ যে সৌভাগ্যের চাবির জন্য, যা তিনি আগেই বলে গেছেন।
নিজের যোগ্যতায় যিনি ন্যায় বিচার করতে অক্ষম, বিচারপতির আসন অলঙ্কৃত করা কি তার সাজে? বিচারিক বিষয়ে আলোচনা করার অধিকার কোন বিচারকের নিজের স্ত্রীর সাথেও নাই। রনি সাহেব ছেলেভুলানো কথা জাতীয় পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতায় লেখাকি বালখিল্য নয়? লবিষ্ট বছেন কেন? আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুন্যাল করা হল আর সেখানে আন্তর্জাতিক আইন জিবী নীয়োগ দেয়া হবেনা এটা বিচারের নামে যে কত বড় ধোকা তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। সরকার তো বিচারের নামে অবিচার করছেই আর আপনাদের মত কলম সৈনিকেরা বিদেশী আইনজীবীদের পরামর্শ্বকদের লবিস্ট ফার্ম বলে কলমের খোচায় মজলুমদের আরও রক্তাক্ত করছেন। আশা করি একদিন আপনাদের সুমতি হবে কিন্তু ততদিনে আব্দুল কাদের মোল্লাদের জাতি হারিয়ে ফেলবে।
বাচ্চু রাজাকার বলে মাওলানা আবুল কালাম আযাদের সাথে যে তামাসা হয়েছে তার প্রতিবাদ জামায়াত শিবির করতে ব্যার্থতার পরিচয় দিয়ে অপরাধ করলে দেশের সুশীলদের সাথে আপনার অপরাধ কতটুকু তাও ভেবে দেখবেন। মাওলানা আবুল কালাম আযাদ একজন প্রতিথজসা আলেম। তিনি অপরাধী হলে গ্ণমানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য আলোচক ও টিভি ব্যক্তিত্ব হতে পারতেন না। গোয়েন্দা নজরদারির মধ্য থেকে তিনি কোথায় হারিয়ে গেলেন এবং কি ভাবে গেলেন? নাকি নাটক মঞ্চস্থ্য করার জন্য তাকে গুম করে দুনিয়া থেকে না হয় নিদেন পক্ষে দেশ থেকে সরিয়ে দেয়া হল সে সম্পর্কে আপনার বক্তব্য জানতে বড় ইচ্ছে করে।
কিউবা এবং ফিদেল ক্যাষ্ট্রোকে নিয়ে গবেষনা করার দরকার তাদের যাদের কাছে মক্কা মিদিনা আর রাসূলে আরাবিয়ার মত আদর্শ আর কুর’আন হাদীসের মত আদর্শ নাই। জামায়াত যেহেতু কুর’আনের রাজ কায়েম করতে চায় তাই তাদের জন্য তাদের আল্লাহর কুর’আন আর রাসুলের (সঃ) হাদিস বিদ্যমান থাকতে ফিদেল ক্যাষ্ট্রো, মাওজেদং, লেনীন বা চেগুদের নিয়ে গবেষনা করার কোন দরকার নাই।
যে কথা বলে শেষ করতে চাই তা হলঃ
‘আপনি কি ভালবাসার মানুষকে পেতে চান? ব্যবসায় সফল হতে চান? চাকুরী পেতে চান? বিদেশে যেতে চান? মামলায় জিততে চান? স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে চান? তাহলে আর দেরী নয়, এখনই চলে আসুন সর্পরাণী তাজে তাজ নূরে মোহতাজ, আদরের দুলালী, চাদে হেলালী, স্বনামধন্যা পীরে মাতা, মমতাজ বেগমের দরবারে’!
৯০ দশকে যখন ঢাকায় এসে কলেজে ভর্তি হই তখন পত্র পত্রিকায় হর হামেসা এধরণের বিজ্ঞাপন চোখে পরত। আজকাল অবশ্য টিভিতেও এধরণের বিজ্ঞাপন প্রচারিত হচ্ছে।
রিনি সাহেবের জামায়ত শিবির থিসিস দেখে মনে হচ্ছে এখন সময়ের দাবী হল নিন্মের বিজ্ঞাপন তৈরী এবং প্রচার করাঃ
আপনি কি রাজনীতিতে তরক্কি করতে চান? বছরের আলোচিত ব্যক্তি হতে চান? পত্রিকার কাটতি বাড়াতে চান? প্রসিকিউটর হতে চান? দ্রুত প্রোমশন পেতে চান? নেত্রীদের নজরে আসতে চান, হারনো সৌভাগ্যের চাবি ফেরত পেতে চান, তাহলে আর দেরী নয় আজ থেকেই গোলাম মাওলা রনির মত করে জামায়ত শিবিরের পক্ষে বিপক্ষে বলুন, পত্রিকায় কলাম লিখুন, টকশোতে গলাবাজি করুণ, সত্যের অপলাপ করুণ, দেখবেন সনই সনই উন্নতি হচ্ছে! নেত্রীর বদনজর কেটে যাচ্ছে। গলাবাজির পুরাণ স্টাইল ফিরে পাচ্ছেন। অন্যকে তুলাধুনা করতে পারছেন। এমনকি সৌভাগ্যের হারনো চাবীও আপনার মুঠোয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন