"গাছ কুড়ালকে প্রশ্ন করে- কেন আমাকে কাটছ তুমি? তখন কুড়াল জবাবে বলেঃ আমি না, তোমার সগোত্রীয় একটি কাঠের টুকরার হাতলের শক্তিই তোমাকে কাটছে।"

লিখেছেন লিখেছেন রঙ্গিন স্বপ্ন ২৫ জুলাই, ২০১৪, ১০:১৮:৪৬ রাত



"আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে"( সুরা আর রা'দঃ ১১) "জালিমের জুলুম বন্ধে শুধু দোয়া করতে আল্লাহ তা'য়ালা পবিত্র কোরআনে একবারও বলেন নি। জুলুম প্রতিহত করতে শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ তা'য়ালা।"

ভেবে দেখুনতো যদি কোন বাড়িতে বা গ্রামে ডাকাত পড়ে তাহলে সম্মিলীত শক্তি প্রয়োগ করতে হবে নাকি ডাকাতদের সুযোগ করে দিয়ে বা তাদের হেল্প করে একপাশে দাঁড়িয়ে শুধু আল্লাহর কাছে দোয়া করলেই বিপদ দূরীভূত হবে! আমি প্রতিহত করলাম কিন্তু একই সময়ে বেশী রসদ সামগ্রী নিয়ে আমারই ভাই ডাকাতদের সহযোগিতা করলো, তাহলে অবস্থা কী দাঁড়াবে?

আজ ডাকাত আক্রান্ত হয়েছে গোটা মুসলিম উম্মাহ। অথচ গোটা মুসলিম উম্মাহ, আরব লীগ, ওআইসি, সাউদী আরব, মিশর, আরব আমিরাত, কাতার, সিরিয়া, জর্ডান,ইরাক, মরক্কো,ইয়েমেন,উমান, বাংলাদেশ- সেই ডাকাতদেরই সহযোগিতা করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

আর এই ডাকাত প্রতিহত করতে ৪ টি মৌলিক কাজ করতে হবে মুসলিম উম্মাহ কে। তবে চতুর্থটি যেন কক্ষনোই আগে না আসেঃ

১, শক্তি প্রয়োগ তথা জিহাদ করে বাঁধা দিতে হবে,

২, ইহুদীদের সাথে সব রকমের সহযোগিতা ছাড়তে হবে,

৩, নিজেদের ঐক্য মজবুত করতে হবে এবং

৪, সর্বশেষে আল্লাহর কাছে দো'য়া করতে হবে।


১, শক্তি প্রয়োগ তথা জিহাদ করে বাঁধা দিতে হবেঃ

যারা আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়ে মুসলমানদের সাথে বাড়াবাড়িতে লিপ্ত হবে, আল্লাহ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর যুদ্ধের জন্য মুসলমানদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। আর এই নির্দেশ মেনেই কেবল মুসলমান থাকা যাবে এবং ইজ্জত,সম্মান ও নেতৃত্ত লাভ করা যাবে । অন্যথা দুনিয়ায় মুসলমানরা অসম্মানীত ও লাঞ্ছিত হবে ( যেটা আমরা দেখতেই পাচ্ছি) আর আখেরাতে হবে ভয়াবহ শাস্তির সম্মুখীন।



ক, হে ঈমানদারগণ! নিজেদের অস্ত্র তুলে নাও এবং পৃথক পৃথক সৈন্যদলে কিংবা সমবেতভাবে বেরিয়ে পড়।-সুরা আন নিসাঃ ৭১

খ, আর তোমাদের কি হল যে, তেমারা আল্লাহর রাহে লড়াই করছ না দুর্বল সেই পুরুষ, নারী ও শিশুদের পক্ষে, যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর; এখানকার অধিবাসীরা যে, অত্যাচারী! আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পক্ষালম্বনকারী নির্ধারণ করে দাও এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দাও। -সুরা আন নিসাঃ ৭৫

৩, যারা ঈমানদার তারা যে, জেহাদ করে আল্লাহর রাহেই। পক্ষান্তরে যারা কাফের তারা লড়াই করে শয়তানের পক্ষে সুতরাং তোমরা জেহাদ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল। -সুরা আন নিসাঃ ৭৬

গ, আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করতে থাকুন, আপনি নিজের সত্তা ব্যতীত অন্য কোন বিষয়ের যিম্মাদার নন! আর আপনি মুসলমানদেরকে উৎসাহিত করতে থাকুন। শীঘ্রই আল্লাহ কাফেরদের শক্তি-সামর্থ খর্ব করে দেবেন। আর আল্লাহ শক্তি-সামর্থের দিক দিয়ে অত্যন্ত কঠোর এবং কঠিন শাস্তিদাতা। -আন নিসাঃ ৮৪

ঘ, কাজেই আল্লাহর কাছে যারা পার্থিব জীবনকে আখেরাতের পরিবর্তে বিক্রি করে দেয় তাদের জেহাদ করাই কর্তব্য। বস্তুতঃ যারা আল্লাহর রাহে লড়াই করে এবং অতঃপর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদেরকে মহাপুণ্য দান করব। -সুরা আন নিসাঃ ৭৪

ঙ, হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরে আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জেহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী। -সুরা আল মায়েদাঃ ৫৪

চ, যৎসামান্য কষ্ট দেয়া ছাড়া তারা তোমাদের কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি তারা তোমাদের সাথে লড়াই করে, তাহলে তারা পশ্চাদপসরণ করবে। অতঃপর তাদের সাহায্য করা হবে না। - আলে ইমরানঃ ১১১

মন্তব্যঃ আল্লাহর প্রকাশ্য নির্দেশ থাকার পরও কি ইসরাইলের বিরুদ্ধে জিহাদ করার জন্য কোন মুফতির ফতোয়ার অপেক্ষা করার দরকার আছে?

২, ইহুদীদের সাথে সব রকমের সহযোগিতা ছাড়তে হবেঃ

আহা! গোটা মুসলিম উম্মাহ, আরব লীগ, ওআইসি, সাউদী আরব, মিশর, আরব আমিরাত, কাতার, সিরিয়া, জর্ডান,ইরাক, মরক্কো,ইয়েমেন,উমান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ- যদি এই আয়াতগুলো মেনে চলতো, তাহলে- তারাই পৃথিবীর নেতৃত্ত দিত। আহারে! মসজিদ সমূহে তারাবীহর নামাজে আয়াতগুলো পড়ছে কিন্তু কোরআন বুঝার ও মানার খবর নাই!!! ঘুরেফিরে ইসরাইলেরই বন্ধু।



আল্লাহ তা'য়ালা যেখানে কোরআনে বলেছেন "যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত" এরপরও কি সাউদ বাদশা, জেনারেল সিসি, কাতারের আমীর, আরব আমিরাতের শেখ, মাহমুদ আব্বাস এবং প্রত্যেক ব্যাক্তি যে বা যারা ওদের সাথে বন্ধুত্ত রাখবে- তারা কী মুসলিম হিসেবে বিবেচিত হবে?

ক, হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। -সুরা আল মায়েদাঃ ৫১

খ, বস্তুতঃ যাদের অন্তরে রোগ রয়েছে, তাদেরকে আপনি দেখবেন, দৌড়ে গিয়ে তাদেরই মধ্যে( মানে ইহুদী- খৃষ্টানদের সাথে সম্পর্ক রাখে) প্রবেশ করে। তারা বলেঃ আমরা আশঙ্কা করি, পাছে না আমরা কোন দুর্ঘটনায় পতিত হই। অতএব, সেদিন দুরে নয়, যেদিন আল্লাহ তা'আলা বিজয় প্রকাশ করবেন অথবা নিজের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ দেবেন-ফলে তারা স্বীয় গোপন মনোভাবের জন্যে অনুতপ্ত হবে। -সুরা আল মায়েদাঃ ৫২

গ, যারা মুসলমানদের বর্জন করে কাফেরদেরকে নিজেদের বন্ধু বানিয়ে নেয় এবং তাদেরই কাছে সম্মান প্রত্যাশা করে, অথচ যাবতীয় সম্মান শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য। -আন নিসাঃ ১৩৯

ঘ, হে মুমিনগণ, আহলে কিতাবদের মধ্য থেকে যারা তোমাদের ধর্মকে উপহাস ও খেলা মনে করে, তাদেরকে এবং অন্যান্য কাফেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না। আল্লাহকে ভয় কর, যদি তোমরা ঈমানদার হও। -সুরা আল মায়েদাঃ ৫৭

ঙ, আর যারা আল্লাহ তাঁর রসূল এবং বিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারাই আল্লাহর দল এবং তারাই বিজয়ী।-সুরা আল মায়েদাঃ ৫৬

চ, হে ঈমানদারগণ! তোমরা মুমিন ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না, তারা তোমাদের অমঙ্গল সাধনে কোন ক্রটি করে না-তোমরা কষ্টে থাক, তাতেই তাদের আনন্দ। শত্রুতাপ্রসুত বিদ্বেষ তাদের মুখেই ফুটে বেরোয়। আর যা কিছু তাদের মনে লুকিয়ে রয়েছে, তা আরো অনেকগুণ বেশী জঘন্য। তোমাদের জন্যে নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করে দেয়া হলো, যদি তোমরা তা অনুধাবন করতে সমর্থ হও। - আলে ইমরানঃ ১১৮

মন্তব্যঃ কুড়াল যখন গাছ কাটে তখন গাছ নাকি কুড়ালকে প্রশ্ন করে- কেন আমাকে কাটছ তুমি? তখন কুড়াল জবাবে বলেঃ আমি না, তোমার সগোত্রীয় একটি কাঠের টুকরার হাতলের শক্তিই তোমাকে কাটছে।

৩,নিজেদের ঐক্য মজবুত করতে হবেঃ

ক, আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আল্লাহ তোমাদিগকে দান করেছেন। তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের মনে সম্প্রীতি দান করেছেন। ফলে, এখন তোমরা তাঁর অনুগ্রহের কারণে পরস্পর ভাই ভাই হয়েছ। তোমরা এক অগ্নিকুন্ডের পাড়ে অবস্থান করছিলে। অতঃপর তা থেকে তিনি তোমাদেরকে মুক্তি দিয়েছেন। এভাবেই আল্লাহ নিজের নিদর্শনসমুহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা হেদায়েত প্রাপ্ত হতে পার। আলে ইমরানঃ ১১৩

খ, আর তাদের মত হয়ো না, যারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং নিদর্শন সমূহ আসার পরও বিরোধিতা করতে শুরু করেছে-তাদের জন্যে রয়েছে ভয়ঙ্কর আযাব। - আলে ইমরানঃ ১০৫

মন্তব্যঃ নিজেদের ছোটখাটো বিবাদ- দ্বিমত ভুলে, আরব- অনারব ভুলে এমনকি শিয়া- সুন্নি ভুলে এখন শক্রুদের মোকাবেলা করতে হবে। অন্যথা সবাইকে কঠিন মাশুল দিতে হবে।

৪, সর্বশেষে আল্লাহর কাছে দো'য়া করতে হবেঃ

আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর।

- সুরা আল বাকারাঃ ২৮৬

মন্তব্যঃ যুদ্ধে লিপ্ত হয়েই দোয়া করতে হবে। নবীদেরও যুদ্ধ করতে হয়েছে, শুধু দোয়া করেন নি।

বিষয়: বিবিধ

১৩৬৬ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

248202
২৫ জুলাই ২০১৪ রাত ১১:১৭
সন্ধাতারা লিখেছেন : Valuable calls for muslim umma. jajakallah
২৬ জুলাই ২০১৪ রাত ০১:২০
192715
রঙ্গিন স্বপ্ন লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ খাইর সময় করে পড়ার জন্য।
248209
২৫ জুলাই ২০১৪ রাত ১১:৪২
বাজলবী লিখেছেন :
নবী মোদের শিখিয়ে গেছেন
জিহাদ করে বাচঁতে হবে।
জাযাকাল্লাহ খাইর।
248223
২৬ জুলাই ২০১৪ রাত ০১:২১
রঙ্গিন স্বপ্ন লিখেছেন : হুম আপনি ঠিকই বলেছেন। কাফেররা আজ জিহাদ করেই নেতৃত্ত দিচ্ছে, অথচ মুসলমানরা জিহাদ ছেড়ে আরামের ইসলামে ব্যস্ত। আফসোস !!!
248288
২৬ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৭:৫৬
ইবনে হাসেম লিখেছেন : কাফেররা আজ ক্রুসেড করেই নেতৃত্ব টিকিয়ে রাখতে ব্যস্ত, আর মুসলমানরা, যারা তাদের জুলুমের শিকার তারা জিহাদ ভূলে শুধু দোয়ার মাঝে মুক্তি খুঁজছে। এমনকি মুসলিম দেশগুলোর অনেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদেরই মদদ দিচ্ছে
২৬ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:০৮
192882
রঙ্গিন স্বপ্ন লিখেছেন : আপনি চমৎকার বলেছেন। আর তাই তারাই নানাভাবে জঙ্গী আখ্যা দিয়ে সুকৌশলে মুসলমানদের জিহাদ থেকে সরিয়ে রেখেছে।
248294
২৬ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৮:১৩
আল সাঈদ লিখেছেন : আপনার শিরোনামটি জটিল হয়েছে। আসলে কোরআনের আলো থেকে দূরে থাকার কারনেই আমাদের মুসলমানদের এই দুরাবস্থা।
২৬ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:১০
192883
রঙ্গিন স্বপ্ন লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ খাইর সাঈদ ভাই। আপনি সত্য বলেছেন। অবস্থা আরো খারাপ হতে পারে যদি আমরা ফিরে না আসি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File