ইহুদি ও খৃস্টানদের সম্পর্কে কিছু স্পষ্ট ধারনা, প্রত্যেক মুসলমানের জানা জরুরি ঃ আপনারা কী মনে করেন- মুসা ও ঈসা আঃ মুসলিম ছিলেন না?
লিখেছেন লিখেছেন রঙ্গিন স্বপ্ন ০৩ জুলাই, ২০১৪, ১০:৪২:৫৭ রাত
ঈসা আঃ গড না গডের পুত্রও নন, তিনি আল্লাহর নবী। যেমন আদমকে আঃ বাবা-মা ছাড়া মাটি থেকে তৈরি করেছেন ঠিক তেমনি আল্লাহ তা'য়ালা বাবা ছাড়া শুধু মায়ের গর্ভে ঈসাকে আঃ তৈরি করেছেন। পড়ে দেখুন নিচের আয়াতটি। ঈসা আঃ নিজে মুসলিম ছিলেন, অনুসারীদেরও মুসলিম হবার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সুতরাং বর্তমান মুসার আঃ অনুসারী দাবিদার ইহুদী ও ঈসার আঃ অনুসারী দাবীদার খৃস্টান, কেউই সঠিক ধর্মের উপরে নেই। আল্লাহর কাছে একমাত্র ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম গ্রহণযোগ্য নয়।
"নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত হচ্ছে আদমেরই মতো। তাকে মাটি দিয়ে তৈরী করেছিলেন এবং তারপর তাকে বলেছিলেন হয়ে যাও, সঙ্গে সঙ্গে হয়ে গেলেন।" - সুরা আলে ইমরানঃ ৫৯
(ঈসা আঃ বলেছিলেন)" নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার পালনকর্তা এবং তোমাদেরও পালনকর্তা-তাঁর এবাদত কর, এটাই হলো সরল পথ।" - আলে ইমরানঃ ৫১
"জীবন ব্যবস্থা হিসেবে একমাত্র ইসলামই আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্যঃ ইহুদী ও খ্রিষ্টানরা আর আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।"
ঈসার (আঃ) আগমনের পরে মুসার (আঃ) শরীয়ত গ্রহণযোগ্য নয়। আর মুহাম্মদের (সাঃ) আগমনের পর ঈসা ও মুসার (আঃ) শরীয়ত ও বিধান আর কার্যকর নেই। নবী ঈসা ও মুসা (আঃ) মুসলমান ছিলেন, মুহাম্মদের (সাঃ) আগমনের পর পূর্বের দুই নবীর অনুসারীরা তাঁর উপর ঈমান আনেনি বিধায় তারা অর্থাৎ বর্তমান সময়ের ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ইহুদীরা যারা মুসার (আঃ) অনুসারী বলে দাবী করে, তারা দারুন ত্যারামি করে পরবর্তী দুই নবী- মুহাম্মাদ (সাঃ) ও ঈসার (আঃ) উপর ঈমান আনেনি। আর ঈসার (আঃ) অনুসারী দাবীদার মুহাম্মাদের (সাঃ) উপর ঈমান তো আনেইনি বরং ঈসাকে (আঃ) বেশী সম্মান দেখাতে যেয়ে আল্লাহর সন্তান সাব্যস্ত করেছে । উভয় পক্ষ চরম বাড়াবাড়ি করেছে। অথচ মুসা ও ঈসা (আঃ) তাঁদের অনুসারীদের এক আল্লাহর উপর ঈমান ও পরবর্তী নবীর কথা বলেছিলেন। আল্লাহ তায়া'লা কোরআনে তাদেরকে "আহলে কিতাব" হিসেবে সম্বোধন করেছেন।
ঈসা আঃ নিজে মুসলিম ছিলেন, অনুসারীদেরও মুসলিম হবার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই আয়াতের শেষ শব্দটি খেয়াল করে দেখুন।
"অতঃপর ঈসা (আঃ) যখন বণী ইসরায়ীলের কুফরী সম্পর্কে উপলব্ধি করতে পারলেন, তখন বললেন, কারা আছে আল্লাহর পথে আমাকে সাহায্য করবে? সঙ্গী-সাথীরা বললো, আমরা রয়েছি আল্লাহর পথে সাহায্যকারী। আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি। আর তুমি সাক্ষী থাক যে, আমরা মুসলিম।"
এই হলো ইসলাম ও মুসলিম বিশ্বাস, এর বাইরে অন্য কিছু আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, এই আয়াতে তাই বলা হচ্ছে। আমরা নবী হিসেবে মুসা ও ঈসার (আঃ) উপর ঈমান রাখি, আর এটা আল্লাহর নির্দেশ। সুতরাং নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম। ইহুদী ও খ্রিষ্টানরা আর আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। দু'কলম লিখতে হলো কারণ বহু মুসলিম এই সত্যটি জানে না।
সুরা আলে ইমরানঃ ১৯
নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম। এবং যাদের প্রতি কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের নিকট প্রকৃত জ্ঞান আসার পরও ওরা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে, শুধুমাত্র পরস্পর বিদ্বেষবশতঃ, যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি কুফরী করে তাদের জানা উচিত যে, নিশ্চিতরূপে আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত দ্রুত।
ঈসা আঃ মানুষকে তাঁর ইবাদত করতে বলেন নি, আরো দুটি আয়াত পড়ে দেখুনঃ
কোন মানুষকে আল্লাহ কিতাব, হেকমত ও নবুওয়ত দান করার পর সে বলবে যে, তোমরা আল্লাহকে পরিহার করে আমার বান্দা হয়ে যাও-এটা সম্ভব নয়। বরং তারা বলবে, তোমরা আল্লাহওয়ালা হয়ে যাও, যেমন, তোমরা কিতাব শিখাতে এবং যেমন তোমরা নিজেরা ও পড়তে। - আলে ইমরানঃ ৭৯
তাছাড়া তোমাদেরকে একথা বলাও সম্ভব নয় যে, তোমরা ফেরেশতা ও নবীগনকে নিজেদের পালনকর্তা সাব্যস্ত করে নাও। তোমাদের মুসলমান হবার পর তারা কি তোমাদেরকে কুফরী শেখাবে?- আলে ইমরানঃ ৮০
তোমাদের মুসলমান হবার পর তারা কি তোমাদেরকে কুফরী শেখাবে?- এই কথাও প্রমাণ করে যে ঈসা আঃ মুসলিম ছিলেন, তাঁর প্রকৃত অনুসারীগণও।
মুসা ও ইসার (আঃ) উপর বর্তমান সময়ের ইহুদী ও খৃষ্টানরা যে ধারনা পোষণ করে, সেই একই ধারনা রাখলে কেউ কী মুসলিম থাকতে পারবে? উত্তর হচ্ছে- না।
ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, আমরা ঈমান এনেছি মূসা ও ঈসার আঃ উপর। ইহুদী ও খৃষ্টানরা সঠিক ধর্মের উপরে নেই। কথাগুলো বারবার আসছে কারণ, এটা আমাদের বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিতঃ
সুরা আলে ইমরানঃ ৮৩
তারা কি আল্লাহর দ্বীনের পরিবর্তে অন্য দ্বীন তালাশ করছে? আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে স্বেচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক, তাঁরই অনুগত হবে এবং তাঁর দিকেই ফিরে যাবে।
সুরা আলে ইমরানঃ ৮৪
বলুন, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের উপর, ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তাঁদের সন্তানবর্গের উপর আর যা কিছু পেয়েছেন মূসা ও ঈসা এবং অন্যান্য নবী রসূলগণ তাঁদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আমরা তাঁদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না। আর আমরা তাঁরই অনুগত।
সুরা আলে ইমরানঃ ৮৫
যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত।
তাহলে সারকথা দাঁড়াল- "Many messengers but one Message" তাই আমরা সকল নবীদের উপর যথাযথ ঈমান রাখি, ইহুদি- খৃষ্টানদের মত বাড়াবাড়ি করি না।
"Is Jesus God himself or sent by God as Prophet? নামে আমার একটি ফেইসবুক পেইজ ও গ্রুপ আছে, দয়া করে ভিজিট করে সমৃদ্ধ করবেন; বিশেষ করে অমুসলিম ফ্রেন্ড থাকলে অ্যাড করার অনুরুধ করছি ( ইংরেজীতে পোস্ট দেওয়া হয়)।
https://www.facebook.com/groups/413838885328504/
https://www.facebook.com/pages/Is-Jesus-God-himself-or-sent-by-God-as-Prophet/459524250794539?ref_type=bookmark
আল্লাহ আমাদের কবুল করুন।
বিষয়: বিবিধ
৩২০৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ আমাদের জ্ঞান বাড়িয়ে দিন।
জাজাকাল্লাহু খাইরান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন