ভয়ংকর প্রেমিকা ও মারাত্মক বন্ধু
লিখেছেন লিখেছেন মিনার রশীদ ১১ এপ্রিল, ২০১৪, ০৬:১২:৫২ সন্ধ্যা
'ভয়ংকর প্রেমিকা' শিরোনামে একটি সংবাদের প্রতি আজ অনেকেরই হয়তোবা চোখ পড়েছে। এই ধরনের শিরোনাম দেখলেই পুরুষের মাথার চুল খাড়া হয়ে পড়ে। অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে। মাঝে মাঝে বেশ পুলকও অনুভূত হয়।
এক মেয়ে নিজের চাচা ও খালার প্ররোচনায় প্রেমের এই বাণিজ্যে নেমে পড়ে । তার টার্গেট 'লুইচ্চা' গোছের ব্যবসায়ী, রাজনীিতবিদ এবং অসৎ কর্মকর্তা। মোবাইলের মাধ্যমে এদেরকে প্রেমের ফাদে আটকানোই তার মূল কাজ ।
প্রেমকাতর এই কিছিমের পুরুষগণ প্রেম আর টাকা - দুটোই বিজলীর গতি বা হলমার্কসের গতিতে অর্জন করতে চান । কাজেই শিকারদেরকে কথিত খালার 'ফাকা' বাসায় নিয়ে আসতে তার সময় লাগতো মাত্র পনের দিন। এই বাসায় আনতে পারলেই তার নিজের কাজ শেষ হয়ে পড়ত। তার পরেই প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের কাজ শুরু হয়ে যেত।
অন্য একটি কাগজে সদ্য প্রয়াত সাংবাদিক এবিএম মুসার লন্ডনে অবস্থানরত এক বন্ধু তাঁর চলে যাওয়া নিয়ে একটি কলাম লিখেছেন। লেখাটি পড়ে অনেকেই কাছাকাছি ধরনের নোনা স্বাদ আস্বাদন করেছেন । এবিএম মুসা মারা যাওয়ার আগে তাঁর শিরকে যতটুকু খাড়া করেছিলেন, এই বন্ধুটি তার সেই উচু শির ততটুকু নুইয়ে ফেলতে চাচ্ছেন। জীবিত বন্ধুকে দিয়ে যা পারেন নি, মৃত বন্ধুকে দিয়ে বোধহয় তাই করাতে চাচ্ছেন। খালার ফাকা বাসায় নিয়ে আসার পর চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া সেই শিকারদের অন্য কিছু করার থাকতো না। তেমনি মৃত্যুর পর বন্ধুকে এভাবে উদ্ধৃত করলে অন্য কোন জগত থেকে চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া এবিএম মুসার আর কিছু করার নেই । জীবিত থাকার মত এখন তো আর দেশবাসীকে উপদেশ দিতে পারবেন না যে দেখামাত্রই বলুন, 'তুই একটা ঢাহা মিথ্যুক।
আগাচৌ নামে পরিচিত সেই কলামিস্ট লিখেছেন,
"
তাঁর সঙ্গে আমার শেষ আলাপ বেশ কয়েক দিন আগে। তিনি বলেছিলেন, ‘গাফ্ফার, আপনার কাছে আমার একটা শেষ অনুরোধ আছে। আপনি শেখ হাসিনাকে বলবেন, আমাকে যেন মাফ করে দেন।’ প্রধানমন্ত্রীকে সহসা টেলিফোনে পাওয়া যায় না। তাঁকে আমি একটা চিঠি পাঠিয়েছি। তাতে মূসার শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছি। "
এই কথাটি তিনি এবিএম মুসা বেচে থাকতে জানান নি। অথচ তাকে নাকি কয়েকদিন আগে জানিয়েছেন। সেই কথাটি তিনি এখনও শেখ হাসিনাকে কিংবা তার প্রতিবেশী শেখ রেহানাকে জানাতে পারেন নি। উঠতে বসতে আওয়ামী বলয়ে বাঘ ভাল্লুক মারা এই হলো তার সাথে শাসক পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের নমুনা ! কাজেই
বন্ধুর হয়ে ক্ষমা চেয়ে নেত্রীকে চিঠি দেয়ার জন্যে এখনই হলো গাফফার চৌধুরীর মোক্ষম সময়।
বেচে থাকতে যিনি শেখ হাসিনার কাছে কিছু চান নি, মরার পর তাঁর আর কী চাওয়ার থাকতে পারে? অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে সত্য কথা বলে তিনি তো তার জীবনের সর্বোত্তম জেহাদটি জ্ঞানতই করে গেছেন। এই হাদিসটি দুদিন আগে আগাচৌ সাহেব নিজেই উল্লেখ করেছেন। তিনি তো কোন পাপ করেন নি, যে গাফফার চৌধুরীকে মাধ্যম বানিয়ে শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে? আমার বিশ্বাস,শেখ হাসিনার অনেক নিকটজন রয়েছেন যারা এবিএম মুসার ফোন পাওয়া মাত্রই তা শেখ হাসিনার নিকট সাথে সাথেই পৌছে দিতেন। দেশের যে কোন প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মিডিয়া তাঁর এই ক্ষমা চাওয়াটি মহা আগ্রহে প্রচার করতো।
কাজেই বলা যায়, আওয়ামীলীগকে রাজনৈতিকভাবে ধ্বংস করার জন্যে যেমন কয়েকজন হাইব্রিড ও লালব্রিড নেতা যথেষ্ট, তেমনি বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে দেউলিয়া বানানোর জন্যে আগাচৌ এর মত কয়েকজন বুদ্ধিজীবিই যথেষ্ট।
বিষয়: বিবিধ
১৩৭৩ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ পোষ্টটির জন্য।
৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী আওয়ামী লীগের গুন্ডামী আর পান্ডামীর পেছনে এসব মুসা-গাদ্দাররা কম ভূমিকা রাখেনি। বাংলাদেশের জন মানুষের দুর্গতি এবং দুঃখের পেছনে আওমীদের কুকীর্তিগুলোকে সুকীতি হিসেবে প্রকাশ করে এসব সাংঘাতিকরা যুগের পর যুগ প্রচারের দায়িত্ব নিয়ে মিডিয়া জগতটাকে মিথ্যার হাতিয়ার বানানোর ক্ষেত্রে পাইওয়ানিরের ভূমিকা রেখেছিল। যার কারণে বাংলাদেশের তাবত মিডিয়া এবং মিডিয়াকর্মী গড়ে উঠেছে মিথ্যা প্রচারের এক মারাত্মক বিষপোড়া হিসেবে।
জীবনের শেষ বয়সে এসে মুসা সাহেব কিছু কিছু সত্য উপলব্ধী ও তা প্রচারের সাহস করেছিল। এতেই শেখ হাসিনা ও তার গোয়েবলস বাহিনীর পান্ডাগুলো বেচারার মুখে পচা আন্ডা মারতে মারতে শেষ পর্যন্ত ওপারেই পাঠিয়ে দিলেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন