ক্ষমা করতে পারছি না মতি ভাই

লিখেছেন লিখেছেন মিনার রশীদ ২০ মার্চ, ২০১৪, ০১:১৭:৫৪ দুপুর



টাকা পাঠাতে অক্ষম বাবার চিঠি পড়ে সদ্য কৈশোর পেরনো ছেলেটি যেভাবে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে, সেই একই কান্না এই লেইট -ফর্টি তে এসে কেঁদেছি মতি ভাই আপনার গতকালের লেখাটি পড়ে। আপনি লিখেছেন, ' ক্ষমা করবেন পাঠক , ভয় পেয়ে গেছি '।

মতি ভাই, আমরা সবাই মরা নিয়ে কাঁদতে চাই। মরা নিয়ে কাঁদা যতটুকু নিরাপদ সেই মরাকে বাঁচানো বা সেই চেষ্টা ততটুকুই ডেঞ্জারাস ! তবে আল্লাহর দোহাই, এই লেখায় নিজের অজান্তে কিছু খোঁচা দিলেও সেই কান্নাটি থামিয়ে দিবেন না। আপনার এই বিলাপে কোন কাজ না হলেও মনটা তো অন্ততঃ শান্ত হবে।

অন্য আরেক 'মতি ভাই' ক্ষমা চেয়েছেন আদালতের কাছে। তিনি অবশ্য আরেকবার ক্ষমা চেয়েছিলেন বায়তুল মোকাররমের খতিবের কাছে। তাঁর সেই ক্ষমা প্রার্থনা দুই বারই মঞ্জুর হয়েছে।

কিন্তু সবিনয়ে জানাতে চাই যে আপনার এই ক্ষমা প্রার্থনাটি মঞ্জুর হয় নি। আপনার আশেপাশে দুয়েক জন ভিন্ন কথা বললেও ওরা ঠিক বলছে না। সম্ভবত কোন মতলব থেকে ওরা আপনাকে তেল বা সান্ত্বনা দিচ্ছে।

এভাবে ক্ষমাপ্রার্থনার কথা উঠলে এক 'বাই-চান্স' সম্পাদকের কথা মনে পড়ে যায়। শুধু মাত্র একবারের তততরে সম্পাদক সমাজ আপনারা তাঁর সেই নামটি মুখে নিয়েছিলেন। এখন আর মুখেও সেই নামটি উচ্চারন করেন না।

গোলাম সারোয়াররা তখন বিবেকের দংশন কমিয়েছিলেন। এখন সেই বিবেকটি দংশনমুক্ত হয়ে ফুরফুরে হয়ে পড়েছে । কোনরূপ বিচার ছাড়াই সেই সম্পাদক মাসের পর মাস এখন কারাগারে আটকে আছেন। আপনারা সামান্য খবরও নেন না।

তিনি সাংবাদিকতার ব্যাকরন মানেন নি এই ধরনের অসংখ্য অভিযোগ ও ক্ষোভ তাঁর বিরুদ্ধে আপনাদের পক্ষ থেকে ছিল। তাঁর পক্ষে একটি বাক্য লিখতে হলে বিপক্ষে তিনটি লিখে নিজেরা সেইফ সাইডে থাকতেন। আপনার মতো দুয়েকজন একটু মুখ খুলতে চাইলেও 'অফ-চান্স' সম্পাদক হিসাবে চিহ্নিত হওয়ার ভয়ে বোধহয় আর এগোন নি। মহামান্য সম্পাদকদের একটি এলিট ক্লাব করার ঘোষণাও শুনেছিলাম। সেই আগ্নেয়গিরিটি এখন ঘুমিয়ে থাকলেও বিএনপি জোট ক্ষমতায় আসলে তা জাগ্রত হবে তাতে কোনই সন্দেহ নাই।

এটা সত্যি, আপনাদের যা আছে মাহমুদুর রহমানের তা ছিল না। আবার মাহমুদুর রহমানের যা ছিল তা আপনাদের হয়তোবা কারো মধ্যেই নেই। সেটি হলো সাহস কিংবা দুঃসাহস। একটি অপ্রিয় সত্য কথা লিখলে মন খারাপ করবেন না মতি ভাই। ইতিহাসে ইদুরের বাচ্চা অনেক জন্মালেও সিংহের বাচ্চা হয় হাতে গোনা দুয়েকজন।

আপনি ক্ষমা চেয়েছেন জনতার আদালতে । সেই আদালতের কথা আপনারা প্রায়ই বলেন, কিন্তু তার প্রকৃত অবয়বটি কখনই ভালোভাবে দেখার চেষ্টা করেন না। তারপরেও বলতে সংকোচ নেই যে বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে অন্যদের সঙ্গে আপনার কোন তুলনা হয় না। অাপনার অনুভবের স্ক্যানারে যা ধরা পড়েছে, অন্যদের কাছে তাও ধরা পড়ে নি। নিজের এই ভয়ের কথাটি আপনার মতো করে জানানোর সাহস আজ অন্য অনেকের হয় নি।

তবে জনগণ কেমন সঠিকভাবে আপনাদের ইভ্যালুয়েট করতে পারে বা মাপতে পারে, তা জানতে পারলে আরেকটু অবাক হবেন। জনগণের সেই বিশেষ স্কুলের বিশেষ শ্রেণী কক্ষটিতে আপনাকে ফার্ষ্ট অথবা সেকেন্ড বয় হিসাবে স্বীকৃতি দিতে সম্ভবত কারো অাপত্তি থাকবে না। ক্লাসে প্রথম হলেও কিন্তু পাশ নম্বরটি আপনার ভাগ্যেও জুটে নি।

দুই সম্পাদক সহ আপনারা মোট চার জন বিশেষ 'মতি' এদেশে রয়েছেন । এই চারজন মতির বর্তমান গতি বা পরিণতির দিকে তাকালে এদেশের রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক মতিগতিটি স্পষ্ট হয়ে পড়ে। এক মতির (মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী) বৃহস্পতি এখন তুঙ্গে এবং এরা এখন সকল সমালোচনা ও সকল মানবিক অনুভূতির উর্ধ্বে। অন্য মতির( প্রথম অালোর সম্পাদক) বৃহস্পতি সকল সময়ে, সকল মৌসুমেই তুঙ্গে থাকে। আরেক মতি(জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী) শনির দশায় না কিসের দশায় পড়েছেন তা বুঝতে পারছি না। কারন সেই 'মতি'কে সরকার যুদ্ধাপরাধী ও 'মইত্যা রাজাকার' বানাতে চাইলেও জনতার আদালত 'অন্য রায় দিয়ে বসেছে। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনের ফলাফলটিতে তা স্পষ্ট হয়ে পড়েছে।

এই 'মইত্যা' ধরনের শব্দ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আমাদের শব্দ ভান্ডারকে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ করছেন। আপনাকেও এই প্রিয় নামেই বোধহয় তিনি ডাকেন। তারেকের 'ছ্যাচার' ভয়ে সুশীলরা নাকি মুখ বন্ধ করে রাখতেন। এখন বেশি বেশি 'চুমু' দেয়ার কারনেই সুশীলদের মুখটি এমন উন্মুক্ত হয়েছে বলে তিনি মনে করেন ।

কাজেই জনগণের আদালতটি বড়ই অদ্ভুত মতি ভাই। জনগণের আদালতে আপনার ফাইলটি হলো এই 'মতি' সিরিজের চার নম্বর ফাইল।

অাপনার আবেদন মত আপনাকে ক্ষমা করে দিলে আপনার অধীনস্ত এই দুশ স্টাফ বেঁচে যাবে। কিন্তু ষোল কোটি মানুষের এই দেশটি ভয়ানক বিপদে পড়ে যাবে।

সবাই এমন করে যদি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান অথবা নিজ নিজ পিঠ বাচানোর চিন্তা করি তবে ষোল কোটি জনগণকে বাঁচানোর চিন্তা আর কারা করবে ?

পিস্তলের গুলি ছুড়ে বা ছুড়তে সহায়তা করে পরে আফসোস বা বিলাপ করলে কী লাভ হবে? গুিল যেদিকে ছোড়া হবে সেদিকে যাবেই এবং ক্ষতি যা হওয়ার তা হবেই ।

তখন অাপনি আস্তে কান্দেন আর জোরে কান্দেন, সুর করে কান্দেন অার বেসুরে কান্দেন পরিণাম হবে একই।

সুজন,টিআইবি এরাও সরকারের সাথে মনে হয় ' টক-দই ওয়ালা আর গৃহস্থের স্টাইলে' ঝগড়া করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে ।

এদের কপট ঝগড়া দেখে যদি ভাবি যে জনগনকে মিষ্টি দইটি এরাই খাওয়াবে, তবে বোধহয় মারাত্মক ভুল করা হবে।

কাজেই শুধু কথা নয়, সেই কথার কার্যফল দেখেই জনগণ কাউকে ক্ষমা করে, কাউকে করে না।

বিষয়: বিবিধ

১১২৫ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

195153
২০ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০১:১৯
গেরিলা লিখেছেন : মতি ভাইয়ের মতি গতি ঠিক নাই । জামাত-বিএনপিদের সাথে নাকি মতি টাকা দাবি করেছে
195155
২০ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০১:৩৬
রাইয়ান লিখেছেন : আমার প্রানের কথাগুলোই আপনার কলম দিয়ে বের হয়ে এসেছে ভাইয়া । সাংবাদিকেরা জাতির বিবেক , আমাদের সবই পচে যাচ্ছে - গেছে , আপনারা জাতির বিবেক হয়ে যদি এরকম আর্তচিত্কার করেন , পিছু হটে যান , তবে ন্যায় ও সত্যের পথে লড়বে কে ? কে আমাদেরকে আশার বাণী শোনাবে ?
195161
২০ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০১:৫৮
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : সোনার বাংলা সোনার দেশ,
পঁচা আলু আর দিল্লী স্টার করছে শেষ।
195174
২০ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০২:৩৩
অনেক পথ বাকি লিখেছেন : মোঃ ওহিদুল ইসলামের সাথে আমি এক মত । ধন্যবাদ ।
195194
২০ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:২৯
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : মতি ভাই কে ক্ষমা করার মত কোন কারন নেই। আপনার এই বাক্যটির সাথে একমত।
একটি অপ্রিয় সত্য কথা লিখলে মন খারাপ করবেন না মতি ভাই। ইতিহাসে ইদুরের বাচ্চা অনেক জন্মালেও সিংহের বাচ্চা হয় হাতে গোনা দুয়েকজন।
মাহমুদুর রহমানরা ইতিহাসে কয়েকজন হন না। বরং একজন হন। অন্যরা চেষ্টা করেন না।বরং ক্ষমা চেয়ে পীঠ বাচাতে চান।
195196
২০ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:৩১
মেঘ ভাঙা রোদ লিখেছেন : বুকে সাহস না থাকলে এরকম লিখে শুধু মনের ক্লেদই মেটানো যায়, লোকের সহানুভূতি লাভ করা যায় কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।
195212
২০ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৬
আবু আশফাক লিখেছেন : তারপরও মনে করি জনগণ দুই সম্পাদক মতির মতিগতি ভালোভাবে লক্ষ্য করলে আলোর মতির তুলনায় জমিনের মতিকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতেই দেখবে।
মতি ভাইয়ের মনের যন্ত্রণা খুন হয়ে তার ঐ কলামের প্রতি বর্ণে ফোটা হয়ে ঝরেছে সন্দেহে নেই।
তবুওতো আমরা বুঝলাম, বিদ্রোহী নয়, বরং একটু বিবেক নিয়ে চলতে গেলেও আজ কত ভয়ংকর পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়!!
195261
২০ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৩
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আপনার লেখাটা পড়ে খুব ভালো লেগেছে।
195263
২০ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৪
সালাম আজাদী লিখেছেন : দারুন এনালাইসিস। বরাবরের মত ভালো লাগলো, মিনার ভাই
১০
195275
২০ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৮
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : অবস্থা বেগতিক দেখলে তিনি তা-ই করেন। এটা অবশ্য ভালো লক্ষণ নয়।
১১
195345
২০ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৯
ফেরারী মন লিখেছেন : মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : অবস্থা বেগতিক দেখলে তিনি তা-ই করেন। এটা অবশ্য ভালো লক্ষণ নয়।
১২
195402
২০ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:৪০
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : গেরিলা লিখেছেন : মতি ভাইয়ের মতি গতি ঠিক নাই । জামাত-বিএনপিদের সাথে নাকি মতি টাকা দাবি করেছে
১৩
195439
২০ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:১৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আজকে মৃত্যবরন করেছেন খুশবন্ত সিং। তিনি ভারতিয় পররাষ্ট্র দপ্তর ও ইউনেস্কোতে চাকরির পর সরাসরি ভারতিয় সরকারের নিজস্ব প্রচারনা ম্যাগাজিন "যোজনা" তে সম্পাদক হন। তারপর "ইলাষ্ট্রেটেড উইকলি অফ ইন্ডিয়া" এবং "হিন্দুস্থান টাইমস" এর মত প্রত্রিকার সম্পাদনা করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের নতুন বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে করা রিপোর্ট এর জন্য তাকেও আদালত অবমাননার অভিযোগের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। কিন্তু তাইবলে তাকে "চান্স সম্পাদক" বলে কেউ বলে নি। মতিউর রহমান চেীধুরি কে একজন ভাল সাংবাদি হিসেবে জানি ছোট থেকেই। ৯০ এর বিশ্বকাপের সময় থেকে। কিন্তু তারা যে গাছ লাগিয়েছেন তার ফল তাদের ভোগ করতেই হবে। আপনার মত আমরাও ক্ষমা করতে পারিনা। ধন্যবাদ আমাদের সবার মনের কথা বলার জন্য।
১৪
195516
২০ মার্চ ২০১৪ রাত ১১:০২
নামহীন আমি অনামিকা লিখেছেন : ভালো লাগলো
১৫
195991
২২ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৮:০৫
১৬
196581
২৩ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০২:৩৩
আহমদ মুসা লিখেছেন : ধন্যবাদ মুহতারাম কলামিষ্ট মিনার রশিদ সাহেবকে। আমাদের অনেকের মনে লালিত কথাগুলোই আপানার ক্ষুরধার লিখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
২৮ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২৮
149101
ইবনে হাসেম লিখেছেন : ভাই, জুনিয়র মূসার বয়সটা জানি কত হবে? দেখি তো অনুমান করতে পারি কিনা, এই এক বছর পূর্ণ হলো হয়তঃ
১৭
199277
২৮ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২৬
ইবনে হাসেম লিখেছেন : চলুক এভাবে আপনার ক্ষুরধার কলম। আর একজন মাহমুদুর রহমানের ধূসর প্রতিচ্ছবি যেন দেখতে পাচ্ছি আপনার লিখাগুলোতে। আল্লাহ আপনাকে দেশ ও দশের কল্যাণে সংগ্রামরত অবস্থায় ক্ববুল করে নিন, আমিন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File