মৌলবাদী বিজেপির অাস্তানায় বাংলাদেশের যৌগবাদী ঠাকুর ও ঠাকুরানীগণ
লিখেছেন লিখেছেন মিনার রশীদ ১৩ মার্চ, ২০১৪, ০৩:০৭:১৬ দুপুর
বাংলাদেশের সুশীল ও সুশীলাগণ মৌলবাদকে প্রচন্ড রকম ঘৃণা করেন। এমনকি জামায়াত আর বিজেপিকে একই দিকে রেখে তারা নিজেদের ঘৃণার কামানটি ছুড়তেন। নিজামী,সাঈদী ও আদভানীকে এক সাথে মিলিয়ে অনেক ছড়াও তারা কেটেছেন। এই ভাবে মৌলবাদকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে একেক জন বিরাট আকারের যৌগবাদী ঠাকুর অথবা ঠাকুরানী সেজে গেছেন।
কিন্তু ভারতবর্ষে পরিবর্তনের হাওয়া টের পেয়ে বাংলাদেশের এই যৌগবাদী ঠাকুর ও ঠাকুরানীগণ হিন্দু মৌলবাদী বিজেপির নেতা নেত্রীদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই দেখা করে এসেছেন। এই মিশনের নেতৃত্বে রয়েছেন সুলতানা কামাল চক্রবর্তী ও শাহরিয়ার কবির গং ।
তাদের বর্তমান পেরেশানিটুকু স্পষ্ট। দিল্লীতে যদি ক্ষমতার পালাবদল ঘটেও যায় তবুও কংগ্রেস সরকার ঢাকায় যে অবৈধ সন্তানটি পয়দা করে গেছে তার দেখভালে যেন কোন ব্যাঘাত না ঘটে। মিসেস চক্রবর্তীদের টিআইবি সহ অন্য সুশীল সংগঠন এই জারজ সন্তানটির প্রতি কেমন দরদ পোষণ করেন তাও স্পষ্ট হয়ে পড়েছে। এই মাসী-পিসীদের আশংকা, জন্মদাতা বাবা যেভাবে দেখভাল করবেন , মামা চাচারা তো আর সেভাবে করবেন না। তাছাড়া 'জারজ' বলে কথা। কংগ্রেসের জারজটিকে বিজেপি কেমন দেখভাল করবে তা নিয়ে এই মাসীদের দুশ্চিন্তাটি যেন কাটছে না।
আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীও তার সর্বশেষ কলামে জানিয়েছেন এই মুহূর্তে বিজেপির ক্ষমতায় চলে আসলে তারা উদ্বিগ্ন নন। কেউ যদি বলে, 'আমরা ভয় পাই না' তখন তার এই কথাটিতেই সেই ভয়টি আরো করুণভাবে ধরা পড়ে। কাজেই আগাচৌ এর সামনের লেখাগুলিতে আরো বিজেপি/মমতা বন্দনা ফুটে উঠলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না। এখন চলছে বিজেপির প্রতি ঘৃণা থেকে ভালোবাসায় রূপান্তরে আগাচৌদের ট্রানজিশন পিরিয়ড। দরকার পড়লে ভালোবাসার সওদা নিয়ে সামনেও যাওয়া যাবে। অাবার বাজারের ব্যাগ রেখে এসেছি বলে প্রয়োজনে পেছানোও যাবে।
এই জারজ সন্তানটির দেখভাল নিশ্চিত করার জন্যে যৌগবাদী ঠাকুর ঠাকুরানীগণ শুধু যে হিন্দু মৌলবাদী গোষ্ঠির আস্তানাতেই ধর্ণা দিচ্ছেন তা নয়- তারা মধ্যপ্রাচ্যের অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী লর্ডদের তাবুতেও চলে গেছেন । মধ্যপ্রাচ্য তথা অারবভূমিতেও এশক বা মোহাব্বত বাড়ানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন । মিসরের সামরিক সরকার, আরব লীগ ও ওআইসির অগণতান্ত্রিক শক্তিসমূহকেও নিজেদের পক্ষে টানতে মরু এলার্জিক এই ঠাকুর-ঠাকুরানীদের একটুও কষ্ট হচ্ছে না।
এরশাদকে নিজের জোটে নেয়ার পর সমালোচনা শুরু হলে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, প্রয়োজনে শয়তানের সাথে বন্ধুত্ব করতেও তিনি পিছুপা হবেন না । কাজেই সারা পৃথিবীর সকল শয়তানদের (গণতন্ত্র ও মানবিকতার শত্রু) আজ খুঁজে খুঁজে বের করে বন্ধুত্ব করছেন। দেশের মানুষ ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে তার এই অভিযানে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন যৌগবাদী এই ঠাকুর ও ঠাকুরানীগণ।
তাঁর কথিত সেই শয়তানদের (মধ্যপ্রাচ্যের) ধরার জন্যে সমচরিত্রের একজনকে বিশেষ দূতও নিয়োগ দিয়েছেন । কারন এই রতন ওই রতনদের ম্যানেজ করতে পারবে বলে আশা করছেন। তথাকথিত শয়তানের এই পূজা এখন আর গোপনে নয়, প্রকাশ্যেই শুরু হয়ে গেছে। শয়তান জেনেই তিনি এই সব মরু শয়তানদের সহায়তা নিচ্ছেন।
এই ঠাকুরদের সময় বোধহয় ফুরিয়ে আসছে । এরা এখন নিজের ছায়া দেখেও আঁতকে উঠছে। যৌগবাদী ঠাকুর শাহরিয়ার কবির বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রীর অফিসে এখনও জামায়াত রয়েছে। ' দেশের যে কোন প্রান্তে একটু শান্তিতে দাঁড়ানোর জন্যে যে জামায়াত সামান্য জায়গা খুজে পাচ্ছে না, সেই জামায়াতকে খোদ প্রধানমন্ত্রীর অফিসে অাবিস্কার করেছেন এই যৌগবাদী ঠাকুর ! কাজেই এদের রোগ বা ব্যারামটি যে কতটুকু মারাত্মক তা সহজেই অনুমেয়।
এই রোগ বা ব্যারামটি সারানোর জন্যে অনেকেই নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে অষ্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত তরুণ লেখক ও গবেষক ফাহাম আব্দুস সালাম অন্যতম । ক্রিকেট খেলায়, ইন্ডিয়া ও পাকিস্তানকে সমর্থন এবং তজ্জন্য সৃষ্ট বিতর্ক নিয়ে অত্যন্ত যৌক্তিক (সাহসী তো বটেই! ) একটা লেখা তার ফেইসবুক পেইজে পোষ্ট করেছেন। লেখাটি ভালোভাবে না পড়েই এই ধারার কেউ কেউ তাকে 'আল্লামা' উপাধি দিয়ে ফেলেছেন !
রাজনৈতিক কিংবা ধর্মীয় ফ্যানাটিসিজমকে নিয়ে ভয়ের কারনটি হলো এদের সাথে ইন্টেলেকচুয়াল কন্টাক্ট বা ডিবেইট দুস্কর হয়ে পড়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী এই দলটিকে নিয়ে একই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর লিবারেল ও ডেমোক্রেটিক অংশ দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে। কামরুল-হানিফ-হাছান-আগাচৌ-আরাফাতদের কনূইয়ের ধাক্কায় নুরে আলম-মান্না-রনি -আবু সাইদ-এবিএম মুসারা কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন। এখন এই দলটিতে একজন যুক্তিবাদী মানুষ মাইক্রোস্কোপ কিংবা টেলিস্কোপ দিয়ে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। নৈতিকভাবে এত দেউলিয়া বোধহয় এই দলটি আগে কখনই হয় নি।
ডাকাত যেমন রাতের রাজা। রাত পোহালেই তার রাজত্ব খতম হয়ে যায় । আওয়ামী লীগ আজ সেই ডাকাত সেজে নিজেকে রাজা ভাবছে ।
জনগণ শুধু এখন রাতটি পোহাবার অপেক্ষায় আছে। ডাকাতরা যতই ফুর্তি করুক না কেন, এই রাত অবশ্যি অবশ্যি পোহাবে।
যৌগবাদী ঠাকুর- ঠাকুরানীদের অনেক বাছ-বিচার ছিল। কিন্তু এখন 'যা-পাই তাই- খাই ' ভাবটি দেখে সেই সুবহে সাদেকের আভাষটিই যেন পাওয়া যাচ্ছে।
বিষয়: বিবিধ
১০৪৬ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
প্রয়োজন জাতীয়তাবাদীরা চিনলেই হল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন