'মুই কার খালু' থেকে 'বদু চাচা' - ডঃ ওয়াজেদের মত 'দার্শনিক' হওয়ার পথে পুরো জাতি
লিখেছেন লিখেছেন মিনার রশীদ ০৮ মার্চ, ২০১৪, ১০:০২:৫৬ সকাল
আমাদের প্রত্যেকের বাল্য স্মৃতিতেই দুয়েকজন তালপাতার সেপাই এবং শিনাজোর কিসিমের সহপাঠিনী কিংবা খেলার সাথী রয়েছে। প্রাইমারী স্কুলে আমাদেরও তেমনি একজন সহপাঠিনী ছিল। কারো সঙ্গে ঝগড়া লাগলে সেই বেচারার 'খবর' হয়ে যেতো। মুখটিও চলতো বেশ।
আমাদের এক স্যার ছিলেন খুব মজার মানুষ। অনেক নিরস জিনিসকেও সরস বানিয়ে ফেলতে পারতেন। একদিন সেই স্যার বাংলা ব্যাকরনের পুংলিঙ্গ আর স্ত্রীলীঙ্গ পড়াচ্ছেন। স্যার পুংলিঙ্গের শব্দটি উচ্চারন করেন, আমরা সঙ্গে সঙ্গে মিলিয়ে স্ত্রী লিঙ্গের শব্দটি বলে দেই। গোয়ালা-গোয়ালিনী এই ধরনের অনেকগুিল শব্দ বলার পর স্যার হঠাৎ 'কবি' শব্দটি উচ্চারন করে বসেন । আমরা সবাই আমাদের আগের স্পিড কমিয়ে দিলেও সেই মেয়েটি আগের গতিতেই বলে ফেলে - কবিন্নী। সারা ক্লাস হেসে ওঠে। এর পর থেকে ওকে 'কবিন্নী' বলেই ডাকতাম।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী বার বার সেই সব বাল্য স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। একের পর এক সেই প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। তাঁর কবি প্রতিভা দেখে মনে হয়, আমার উপরোক্ত বাল্যস্মৃতির 'কবিন্নী' শব্দটি গ্র্যামাটিকেলি ভুল হলেও পলিটিকেলি কারেক্ট ছিল।
মারাত্মক কবি প্রতিভার অধিকারী প্রধানমন্ত্রী নালিশের পাশে বসানোর জন্যে কোনরূপ দ্বিধা না করে 'বালিশ' শব্দটি বসিয়ে দিয়েছেন । তিনি তাঁর সেই ছন্দে আরো টেনেছেন ' লাল টুকটুকে শাড়ি পড়ে বদু চাচার সঙ্গে দুজনে কুজনে মিলেছেন। '
দেখা যাচ্ছে কোন ভদ্রলোক এবং ভদ্রমহিলা এক সাথে মিটিং করলেই ( যা তিনি নিজেও অহরহ করছেন) কেন যেন তাঁর মাঝে এক বিশেষ ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এজন্যে তারা যাদেরকে তেতুল হুজুর বলেন নিজেদের অবস্থা তাদের চেয়েও মারাত্মক।
ডঃ ইউনূস এবং হিলারী ক্লিনটনের মিটিং সম্পর্কে লন্ডনের আওয়ামী নেতাদের সঙ্গে কোরাস গেয়েছিলেন, কৃষ্ণা আইলা রাধার কুঞ্জে...
পুরো দেশটিকেই যিনি অন্য একটি দেশের হাতে তুলে দিয়েছেন সেই তিনিই যখন বলেন, বিদেশীদের কাছে ধর্ণা দেন না তখন আর কীইবা বলার থাকে। সারা বিশ্বের গণমাধ্যম এমনকি ইন্ডিয়ার পত্রপত্রিকাতেও বিষয়গুলি এখন খোলামেলা আলোচিত হচ্ছে। ২০০৫ এবং ২০০৬ সালে তিনটি বিশেষ দেশের রাষ্ট্রদূতদের সাথে তিনি এবং তার দল কী করেছিল তা দেশবাসী ভুলে যান নি। আসলে এসব কথা বার বার স্মরন করালেও কোন লাভ হবে না। সেই একই রেকর্ড তিনি এবং তার সাগরেদগণ বাজিয়ে যাবেন।
ডঃ ওয়াজেদ মিয়া জীিবত থাকতে অাকাশের পানে চেয়ে বলতেন, জীবনটি কেন এমন হলো ?
অাওয়ামী লীগের বড় বড় নেতারা তখন এর ব্যাখ্যায় বলতেন, ' উনি (ডঃ ওয়াজেদ) দার্শনিক টাইপের মানুষ। কাজেই কী বলতে কখন কী বলে বসেন তার কোন ঠিক ঠিকানা নেই। '
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, কিছু চেলা চামচা ছাড়া দেশের বাদবাকী মানুষও এখন ডঃ ওয়াজেদের মত দার্শনিক হতে চলেছে।
বিষয়: বিবিধ
১৩১৭ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যাই হোক মুই কার খালুর সেই খালুকে ইদানিং আর স্বরব দেখা যাচ্ছে না; হয়তো এর চেয়েও কোনো ভয়াবহ কথা শোনার আশঙ্কায়!
যেই আহবান দিয়েছিলেন - শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া। দেশপ্রেমিক একজন মানুষের প্রয়োজন।
সমস্যা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন