টাইটানিকের বেকুব মালিকপক্ষ এবং ভাঙ্গা নৌকা নিয়ে শেখ সেলিম ও হানিফদের একই বাগাড়ম্বর
লিখেছেন লিখেছেন মিনার রশীদ ০৫ মার্চ, ২০১৪, ১০:৪৫:০২ সকাল
টাইটানিক জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ ১৯৮৫ সালে সমুদ্র তলা থেকে খুজে পাওয়া গেছে। যে স্টিল দিয়ে টাইটানিক নামক যাত্রীবাহী জাহাজটি তৈরি করা হয়েছিল কম তাপমাত্রায় তা মারাত্মকভাবে ভঙ্গুর (brittle হয়ে পড়ে । এই ধরনের স্টিল দিয়ে বানানো একটি জাহাজকে আনসিংকেবল বা অডুবনীয় ঘোষণা করা কত বড় বোকামি ছিল, তা ভাবলেও শরীর আজ শিহরিয়ে ওঠে।
টাইটানিকের সময় থেকে বর্তমানে মেটালার্জি ও জাহাজ নির্মাণ টেকনোলজি হাজার গুন উন্নত হয়েছে। জাহাজের নিরাপত্তা নিয়ে বহু গবেষণা ও অনেক নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠিত হয়েছে। প্রতিটা নৌ-দুর্ঘটনার কারন অনুসন্ধানের পর ডিজাইন মডিফিকেশন ও জাহাজ চলাচলে নতুন নতুন আইন -কানুন যোগ হয়েছে। এত কিছুর পরেও (টাইটানিকের এক শ বছর পরে ) এখনও কোন জাহাজকে আনসিংকেবল ঘোষণা করা অসম্ভব । কোন পাগল ও বেকুব ছাড়া এই ধরনের ঘোষণা অন্য কেউ এখনও করতে পারবে না।
আজ বেশী জেনে মানুষ বুঝেছে যে সেদিন কম জানা তার জন্যে কত ভয়ংকর ছিল।
কম জ্ঞান মানুষকে শুধু বেকুবই বানায় না - তাকে ঔদ্ধত্যও করে তুলে। মাঝে মাঝে আইসবার্গ বা অন্য কিছুর সাথে ধাক্কা খাইয়ে মানুষের এই বোকামি ও ঔদ্ধত্যকে স্মরণ করিয়ে দেন পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা।
টাইটানিকের এই রহস্যের মতো এই পৃথিবীর আরো কিছু বিষয় রহস্যাবৃত হয়ে আছে। আওয়ামী লীগের হাইব্রিড নেতা হিসাবে পরিচিত হানিফ অনেকটা দম্ভোক্তি করে বলেছেন, ইতিহাসে পচাত্তর অার আসবে না।
যে গয়েশ্বর রায়কে লক্ষ্য করে এই কথা বলেছেন সেই গয়েশ্বরদের বিএনপি এই 'পচাত্তর' আনে নি। কোন রাজাকার বা পাকিস্তান পন্থীও এই পচাত্তর আনেন নি।
এই 'পচাত্তর' এনেছিল হানিফের চেয়েও অনেক কাছে এবং গুরুত্বে থাকা বাকশালের তিন নম্বর সদস্য খন্দকার মোশতাক। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর মোশতাক মন্ত্রীসভার অধিকাংশ পদে এই হানিফের চেয়ে অধিক দরদীরাই জায়গা করে নিয়েছিলেন। মন্ত্রী হওয়ার ঘোষণা প্রচার হলেও এই হানিফ এখনও দরদের সেই স্তরে ( যারা মুিজব ও মোশতাক উভয়ের মন্ত্রী ছিলেন -সাকুল্যে ১৮জন বা কাছাকাছি) পৌছতে পারেন নি।
আওয়ামীলীগের প্রতি জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত আস্থাবান ছিলেন মালেক উকিল। এক পর্যায়ে পচাত্তর উত্তর মূল আওয়ামীলীগের সভাপতিও হয়েছিলেন। সেই মালেক উকিল তখন লন্ডনে গিয়ে বলে আসেন, ফেরাউনের রাজত্বের অবসান হয়েছে। মুক্ত বিশ্বের পরম নিরাপদ জায়গা লন্ডনে তো ফারুক-রশীদদের হুমকি ছিল না? তারপরেও কেন এই কঠিন কথাটি তিনি বলেছিলেন তা চিন্তা ও ভাবনার উদ্রেক করে বৈকি।
যারা জনগণকে হুমকি ধামকি দিয়ে দেশ চালায় তাদেরকেই ফেরাউন বলা হয়।
মূল ফেরাউন তার প্রজাদেরকে ভয় দেখাতো এই বলে যে বিপরীত দিক থেকে একটি হাত ও একটি পা কেটে দেয়া হবে। এভাবেই নাকি নিরীহ প্রজাদের হাত পা কাটতো সেই ফেরাউনের রক্ষীবাহিনী ও চাপাতি বাহিনী । কী তাজ্জব মিল ! শেখ সেলিম এখন ফেরাউনি স্টাইলেই বিরোধী পক্ষের হাত পা কেটে ফেলার হুমকি দিচছেন !
মুল বিরোধী পক্ষকে বাইরে রেখে ১৫৩টি সিটে বিনা নির্বাচনে এবং বাকিগুলিতেও ৫ ভাগ ভোট পেয়ে সরকার গঠন করে এখন বলছেন যে জনগণ তাদেরকে ৫ বছরের জন্যে ক্ষমতায় বসিয়েছে !
কয়েক বছর আগে গুলশানের এক ছেলে তার সুস্থ্য ও ভালো বাবাকে জোর করে পাগলা গারদে ভর্তি করিয়ে বলে, বাবা পাগল হয়ে গেছেন । সম্পদ লোভী ছেলেকে রাগে-ক্ষোভে-হতাশায় গালি দেন ভদ্রলোক। দাঁত কিড়মিড় করেন,হাত পা বাঁধা থাকায় কামড় দিতে চান। ছেলে এগুলিকে বাবার পাগলামির লক্ষণ হিসাবে তুলে ধরে।
এই বাবার ছেলের মতোই এদেশের জনগণকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে শেখ সেলিম, হানিফ,কামরুল গণ। অবরুদ্ধ বাবা যে দৃষ্টিতে এই ধূর্ত ও সম্পদলোভী ছেলের পানে তাকায়, এই সব কথা শোনার পর জনগণও সেই একই দৃষ্টিতে শেখ সেলিমদের দিকে তাকাচ্ছে।
মাঝে মাঝে দৃষ্টি টি রাখছে আকাশ পানে।
বিষয়: বিবিধ
১২৬৭ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার সদয় অবগতির জন্য
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/11/25/225818
পচাত্তর সালে ততকালীন শেখ মুজিবের পাশে থেকে খায়খাঁ হিসেবে যারা অধিক পরিচিত ছিল তারাই মুহুর্তেই মধ্যেই সুযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই অন্তরে লালিত আসল রূপটি প্রকাশ করেছিলেন কেউ দেশের ভিতর কেউ বা দেশের বাইরে গিয়ে। তারা জনগনের সেন্টিমেন্ট বুঝতে পেরেছিলেন বলেই সেদিন কোন নেতা বা কান্ডারী জায়নাজায় শরীক হওয়ার মত নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দেননি।
আমরা অনেক ছোট মানুষ। বড় বড় হাতি নেতাদের সান্নিধ্য হওয়ার সুযোগ হয় না। কিন্তু ছোট্ট হওয়ার সুবাদে গ্রাম বাংলার গরীব দুঃখী মানুষের আড্ডার আসর তথা চায়ের দোকানের আড্ডা, স্থানীয় পাতি নেতাদের মুখের ভাষা ও অন্তরের ঘৃণা যখন প্রকাশ্যে নিজ দল ও নেত্রী-নেতাদের বিরুদ্ধে পোষণ করতে দেখি তখন কিছুটা হলেও অনুমান করতে পারি উপরের লেভেলে ‘কাছের আপনদের’ মাঝে কি পরিমাণ শত্রু ও ভয়াবহ দুশমনী অন্তরের ভিতর লালনকারী অবস্থান করছে। হয়তো এরাও কোন মহান সুযোগের অপেক্ষায় অস্থির কিনা একমাত্র আলেমুল গায়েব আল্লাহই ভাল জানেন।
আপনাকে পেয়ে টুডেব্লগ আরো উচ্চতা পেলো
প্রথম পোস্ট পড়েই অনুমান করছিলাম,
এবারে নিশ্চিত হওয়া গেল
কলমসৈনিকদের শীর্ষকাতারে অবস্থান উজ্জ্বতর ও দীর্ঘায়ূ হোক
টাইটানিক কে যেমন আনসিংকেবল বলা হয়েছিল তেমনই আওয়মি লিগ সরকারকে বলা হচ্ছে কোনভাবেই গদি ছাড়বেনা। কিন্তু সময় কখন কাকে কিভাবে নিয়ে যাবে আল্লাহছাড়া কেউ কি জানে।
ধন্যবাদ সুন্দর পোষ্টটির জন্য।
আকাশের পানে যারা তাকাচ্ছে তাদের ফরিয়াদ একদিন কথা বলবেই।
আপনাকে অসংখ্য মোবারকবাদ।
আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ।
বর্তমানটাতো হয়ে গেছে ফিকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন