আসামের সাহসী কিসার (kisser), ইমরান খাঁনের কোলে বসা সুশীলাগন এবং টাইমস অব আসাম এর সাহসী ফিচার
লিখেছেন লিখেছেন মিনার রশীদ ০৪ মার্চ, ২০১৪, ১১:২৯:৫১ সকাল
রাহুল গান্ধী আসামে সফরে গেলে সেখানকার এক মেয়ে আচমকা ইন্ডিয়ার সবচেয়ে কাঙ্খিত এই ব্যাচেলরকে চুমু খেয়ে বসে । কিছুদিন আগে এমনই আচমকা থাপ্পড় মেরেছিল এক বেকার যুবক,শিকার ছিল ইন্ডিয়ার অন্য রাজ্যের এক মুখ্যমন্ত্রী । বেকার যুবকের অাচমকা থাপ্পড়ের কারনটি যতটুকু স্পষ্ট , অাচমকা এই চুমুর কারনটি ততটুকুই অস্পষ্ট।
আশির দশকে ক্রিকেটার এবং সেই সময়ের প্লেবয় ইমরান খান ঢাকায় বেড়াতে এলে এদেশের নায়িকা,গায়িকা, সুশীলারা সব ঝাপটি মেরে পড়েন। তার গাড়ির কাঁচও নাকি এই ললনাদের লিপস্টিকে লাল হয়ে পড়েছিল । কেউ কেউ জোর করে ঢাকার তারকা হোটেলের লবিতেই তাঁর কোলে বসতে চেয়েছিলেন। ইমরান খাঁন বলে উঠেন, অসহ্য।
কিন্তু সেই ইমরান খান যে এতবড় রাজাকার ছিলেন তা সেই সুশীলারা এতদিন পর টের পেয়েছেন যখন কাদের মোল্লার ফাসির বিরুদ্ধে পাকিস্তানের এই রাজনীিতবিদ কথা বলেছেন। কাজেই প্রেম আর রাজনীিতর মধ্যকার সম্পর্কটি বড়ই অদ্ভুত। রাজাকার বধে এ মুলুকের সবচেয়ে বড় সিপাহসালার নিজের মেয়েকে এই রাজাকারের বাচ্চার হাতেই তুলে দিয়েছেন! কাজেই এই রাজাকার নিয়ে সামথিং রং সামহোয়ার।
রাজনীিততে এরকম চুমু, থাপ্পড় কিংবা কোলে বসে পড়ার স্মৃতি জনগণকে বিমল আনন্দ দেয়। এসব সংবাদ কান দুটিকে যারপরনাই খাড়া করে ফেলে।
সঙ্গত কারনেই উক্ত অঞ্চলের মেয়েদের সাহসের প্রশংসা করেছেন ইতিমধ্যেই উদিত সম্ভাব্য এই তরুণ রাষ্ট্রনায়ক । তবে দিনটি রাহুলের হলেও রাতটি ছিল পুরাপুরি স্বামীর। সেই রাতেই আগুনে পুড়িয়ে এই সাহসী কিসারকে হত্যা করেছে তার স্বামী। স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার পর নিজেও পুড়ে আধমরা হয়েছেন । ইন্ডিয়ান সংস্কৃতি ও মানসের এক জটিল রূপ এই ঘটনার মাধ্যমে ফুটে ওঠেছে। অপরের স্ত্রীর সাহসের জন্যে হাততালি দেয় , কিন্তু নিজের স্ত্রীকে সেই একই কাজের জন্যে পুড়িয়ে মারে।
আশির দশকে ইমরানের কোলে বসা সুশীলাদেরকে আমাদের দেশের সুশীল স্বামীগন কিছুই করেন নি। কাজেই বুকটিকে ফুলিয়ে আমরা ছত্রিশ ইঞ্চি করতেই পারি।
আসামের এই মেয়েটি যেরকম সাহস দেখিয়েছে তার চেয়ে বেশী সাহস দেখিয়েছে টাইমস অব আসাম পত্রিকাটি। Truth,bold and fearless হিসাবে যথার্থ দাবি করা পত্রিকাটির একটি সাম্প্রতিক কলামের শিরোনাম , Verdict of Arms Smuggling to ULFA questions Bangladesh Sovereignty. অর্থাৎ উলফার নিকট অস্ত্র চোরাচালান মামলার রায়টি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
" বাংলাদেশকে ইন্ডিয়া মর্টগেইজড রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলছে। ইন্ডিয়া চায় না বাংলাদেশ স্বাধীন থাকুক,পৃথিবীর অন্য কোন রাষ্ট্রের সঙ্গে তার এই 'রক্ষিতা' বা মর্টগেইজড রাষ্ট্রটি কোনরূপ সম্পর্ক রাখুক।"
হায়রে দুর্ভাগা জাতি ! টাইমস অব আসামের চোখে যা ধরা পড়েছে আমাদের দেশের কোন টাইমস বা আলোর চোখে তা কখনই ধরা পড়বে না।
এমনকি টাইমস অব আসামের এই সাহসের কথা প্রচার করার সাহসটিও আমাদের দেশের তথাকথিত মূল ধারার কোন পত্রপত্রিকার হয় নি। যদিও রাহুলকে জড়িয়ে ধরে ঐ মেয়ের চুমুর সচিত্র কাহিনীটি বেশ আগ্রহ ভরে প্রায় সবগুলি পত্রিকাই প্রকাশ করেছে। এক সাহস চোখে পড়ল, অন্যটি পড়ল না।
এই পত্রিকাগুলিই পকেটের পয়সা খরচ করে আমরা কিনি! অন লাইনে ক্লিক করে তাদের প্রচার ও প্রসার বাড়িয়ে দেই। আমরা না কিনলে কিংবা না পড়লে এই পত্রিকাগুলি এমন বাহাদুরি সহকারে বেঁচে থাকে কীভাবে ? বিষের গুণ জানার পরেও তা খেলে এই জানায় ফায়দা কী ? জেনে খাই আর না জেনে খাই, বিষ তো তার ক্রিয়া করবেই। দেশের প্রায় অাশি ভাগ মানুষের অবস্থান এই দালাল মানসিকতার বিরুদ্ধে হলেও মিডিয়ার নব্বই ভাগ এদের দখলে যায় কীভাবে? আমরা সবাই নেতাদের ভুল ভ্রান্তি নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও নিজেদের ফানি বা অদ্ভুত আচরন বা স্বভাব সম্পর্কে একটুও খেয়াল রাখি না।
প্রচলিত কোন পত্রিকাই পছন্দ না হলে কিংবা কোন বিশেষ পন্থী হিসাবে চিহ্নিত হওয়ার ভয় থাকলে নিজের বাসায় বা অফিসে পত্রিকা না রাখাই উত্তম। টিভি চ্যানেলের ব্যাপারেও একই কথা প্রযোজ্য। চ্যানেলের দর্শক কমে গেলে বিজ্ঞাপনদাতারাও সেই চ্যানেলগুলিতে বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। সংবাদ জানতে হলে দেশে বিদেশের অসংখ্য টিভি চ্যানেল ছাড়াও রয়েছে ইন্টারনেট, মোবাইল,ফেইস বুক,টুইটার, ব্লগ প্রভৃতি মাধ্যম। এগুিলর ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে দেশে গজিয়ে ওঠা মিডিয়া ইভিলকে জব্দ করা সম্ভব। কারন বিকল্প চ্যানেল বের হয়ে পড়ায় সত্যকে এরা এখন আর লুকিয়ে রাখতে পারবে না।
রাক্ষস গোক্ষসের আত্মা যেমন একটি কৌটায় সংরক্ষণ করা থাকতো। অগনতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী সরকারের আত্মাটিও বিশেষভাবে সাজানো এই মিডিয়া নামক কৌটায় সুরক্ষিত রয়েছে। এই কৌটাটি ঠিকভাবে জব্দ করতে না পারলে আমাদের উপর চেপে বসা ফ্যাসিবাদী রাক্ষসকে ধ্বংস করা বা অপসারন করা সম্ভব হবে না।
বিষয়টি শুধু নিজে বুঝলে হবে না, এই বোঝ বা উপলব্দিটুকু সর্বত্র ও সকল ভাব ও ভঙ্গিতে ট্রান্সলেট করে ছড়িয়ে দিতে হবে ।
বিষয়: বিবিধ
১২৩৭ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বাংলাদেশের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বিশেষ করে দু’য়েকটি গায়ের জোরে আত্মপ্রচারকারী “শীর্ষস্থানীয়” পত্রিকা আলো ছড়ানোর নামে ল্যান্ডিয়ানদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে একনিষ্ট গোলামীতে নিয়োজিত। ইন্ডিয়ান কোন বেইশ্যা বা নর্তকীও যদি মারা যায় তখন এসব পত্রিকার পাতা জুড়ে শোকে মাতম করতে দেখা যায়। একই অবস্থা দেখা গেল সুচিত্রা সেন নামের রহস্যময়ী বিতর্কিত নায়িকা নামের এক নর্তকীর মৃত্যুতে কি আহাজারি! অথচ ইন্ডিয়াতেই এই মহিলা সম্পর্কে অনেক নেতিবাচক মুখরোচক খবর রটেছিল বলে শুনা যায়।
মজার বিষয় হচ্ছে মিথ্যাজীবি এসব মিডিয়াগুলোর রথী মহারথি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের অপপ্রচার এখন আগের মত মানুষ খায় না। মানুষ এখন এসব হলুদালু বা “মিথ্যাকন্ঠঃ”গুলোর দূর্গন্ধযুক্ত বিষাক্ত আওয়াজে কানে আঙ্গুল দিয়ে রাখে।
তাদের বিপরীতে যদিও অসংগঠিত বা অনেকটা অগোচালোই বলা যায় ভার্চুয়াল মিডিয়াতে শক্ত প্রতিদন্ধী গড়ে উঠেছে। ইনশায়াল্লাহ অদূর ভবিষ্যতে হয়তো এসব নবীন দেশপ্রেমিক বাংলাদেশপন্থীদের বহুমূখী পদচারণায় ’হলুদালু’ এবং ’কন্ঠ’ওয়ালাদের অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করতে হবে পারে।
আশা করি নিয়মিত লেখা পাবো। এবং আমাদের লেখায় আপনার পরামর্শ থাকবে। আপনাকে অসংখ্য মোবারকবাদ।
আপনি যে প্রস্তাবনা করেছেন - আমি সেটা মানার চেষ্টা করছি ৫ জানুয়ারী থেকে।
আপনাকে ব্লগে পাবো এতো পরম পাওয়া। যদি সত্যিই এটি আপনার নিক হয়ে থাকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন