'ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়'-এ পড়ে কেন আমাদের ফ্ল্যাশ মবের এই আদিখ্যাতা?
লিখেছেন লিখেছেন নাহিদ নোমান ২৩ মার্চ, ২০১৪, ১০:১২:২৭ সকাল
সামগ্রিকভাবে কোনদিনও একটা জাতি/ভার্সিটির মানদন্ড তাদের নাচ-গান/ফ্যান্টাসি দিয়ে বিবেচিত হয় না; বরং তা অবশ্যই তাদের জ্ঞানের অনুশীলন/পৃষ্ঠপোষকতার অপর নির্ভর করে। গ্রীকরা যখন জ্ঞান-বিজ্ঞানে উৎকর্ষ সাধন করেছিল তখন তাদের মাঝেও যথেষ্ট ফ্যান্টাসিপ্রিয়তা, নাচ-গানে আসক্তি ছিল। সেগুলো তখন বিভিন্ন মহলে সমাদৃতও ছিল। কিন্তু আমরা তাদের স্মরন করি কেন? শুনতে খারাপ হলেও প্রশ্ন করি- নাচে-গানে আমরা ঢাকা-ভার্সিটির সমান হলেই কি আমরা ঢাকা ভার্সিটির সমান বিবেচিত হব? অতদূর না, আমরা ইবির প্রায় সমবয়স্ক শাবিপ্রবির কথা আমরা বিবেচনায় আনতে পারি, যারা কম্পিউটার/সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ এখন বুয়েট/ অন্যান্য ভার্সিটিকেও চোখ-রাঙাচ্ছে! তাদের নাচ-গান এক্সট্রা কারিকুলাম হতে পারে, কিন্তু পরিচিত তারা ঐ কারনেই। তাই আমরা যদি আসলেই অন্যদেরকে প্রমান দিতে চাই আমরা তোমাদের চেয়ে কোন অংশে কম না, তাহলে শিক্ষা/জ্ঞানের দৌড়েই এগোতে হবে।
নিষেধ না থাকলেও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বা কোন মেডিকেল কলেজ প্রোগ্রামিং কনটেস্টের আয়োজক হলে বিষয়টা বেমানানই লাগে তাই না? আর যদি বেমানানের মাপকাঠিটা আইডোলজিক্যাল হয়ে থাকে তো সেখানে বিষয়টা আরো লেজে গবরেই মনে হয়।
ফ্ল্যাশ মব হওয়া/না হওয়ার সাথে ভার্সিটির (তাও ইবি'র) মান-সম্মান-এর সম্পর্কটা কোথায় একটু ব্যাখ্যা দিবেন কি কেউ? লজিক দিয়ে। যে ভার্সিটিতে কোন গবেষনা হয় না, যে ভার্সিটি কয়েকটি কুলাঙ্গারের হাতে বন্দি হয়ে খাবি খাচ্ছে নিয়ত; যে ভার্সিটির এত এত ছাত্র থাকা সত্ত্বেও আমাদের শিক্ষকেরা বহিরাগত গুটি কয়েক নোংরা হাতের আক্রমনের শিকার হয়; তখন কোথায় থাকে মান-সম্মান? যখন ভার্সিটির বাইরে এসে নিজের কোয়ালিটির দূর্বলতা ঢাকতে অনেকেই এই ভার্সিটির নাম গোপন করতে চায়, তখন কোথায় থাকে মানসম্মান? আচ্ছা নিজেকে মডারেট মুসলিম প্রমান করার জন্য নামাজের টুপি পরে, জায়নামাজ হাতে কোনদিন ছিনেমা হলে ছিনেমা দেখতে গেছে কেউ? তাহলে 'ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়'-এ পড়ে কেন আমাদের ফ্ল্যাশ মবের এই আদিখ্যাতা? এরকম আরও অনেক কিছুই আছে ধরার মত! এগুলো কেন? এটাই কি প্রমান করার চেষ্টা!-'আমাদের নামের পূর্বে 'ইসলামী' থাকলেও আমরা কিন্তু অতটা না...' !! আমার মনে হয় এখানে যারা পড়তে আসে তাদের মাথায় এই ভার্সিটির বাইরে যে আলাদা একটা আবেদন আছে, তা মাথায় নিয়েই আসা উচিত। না চাইলেও তাকে মানতেই হবে অন্যদের চোখে 'তুমি মাদ্রাসায়(!!!) পড়'।
আচ্ছা আরেকটা দিক বলি, আমাদের ভার্সিটির নামের পূর্বে 'ইসলামী...' নামটার কারনে অনেকেই নাক শিটকায়, কিন্তু এটাই হতে পারতো আমাদের প্রমান করার একটা সুযোগ যে 'এই ভার্সিটি অনেকদিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও সমসাময়িক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাথে সাথে আদর্শ বা নৈতিকতাতে বাংলাদেশে সেরা, এখানের শিক্ষার্থীরা আর কিছু না হোক মানবীয় নৈতিকতার শিক্ষায় দেশ সেরা...' আমি হলফ করে বলতে পারি সুরুচিবান বাবা-মা'র কাছে এই ভার্সিটির দাম ঢাবি/বুয়েট থেকে কোন অংশে কম হত না।
তাই যারা 'ইসলামী...' নাম নিয়ে অসন্তুষ্টিতে ভোগেন, যারা বহির্বিশ্বকে জানাতে চেষ্টারত যে আমরাও পারি... তোমাদের মত... তাদের প্রতি পরামর্শ- আগে "ইসলামী... না, 'শেখপাড়া বিশ্ববিদ্যালয়' চাই''-এ মর্মে একটা আন্দোলন করুন, সফল হৌন, তারপর না হয়...
বিষয়: বিবিধ
১২৪৯ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন