আজ মুসলিম জাতির আকাশে আর সেই ঔজ্জ্বল্য নেই। নেই সেই মনোলোভা দীপ্তি আর চাঁদনি।
লিখেছেন লিখেছেন জাগ্রত চৌরঙ্গী ০৮ মার্চ, ২০১৪, ১২:৩৮:২৬ রাত
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা’।
ইসলাম মানবতা, সাম্য, প্রীতি ও শান্তির ধর্ম। আরবের জাহেলী যুগের যাবতীয় অধর্ম-অনাচার থেকে তৎকালীন বর্বর-অসভ্য জাতিকে মুক্ত করেছিল শান্তির ধর্ম ইসলামই। তাই ইসলাম সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম।
ইসলাম বিশ্বনবীর আনিত সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ জীবন বিধান।
ইসলামের সংবিধান মহাগ্রন্থ আল কোরআন।
এখন একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন হলো যে, সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলাম হলে, স্বাভাবিকভাবে বর্তমান ইসলামের অনুসারী দেড়শ কোটিমুসলিম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে গণ্য হওয়া চাই। কিন্তু আজ পৃথিবীর কর্তৃত্ব কার হাতে? পদে পদে মুসলমানরা আজ নির্যাতিত ও নিহীত। মুসলমানদের রক্তে রঞ্জিত রাজপথ। শ্রেষ্ঠ জাতি মুসলমানের ঘরে জন্ম গ্রহন করে ও পৃথিবীতে আজ গোলাম হয়ে বসবাস করতে হচ্ছে। আজ চারদিকে মুসলমান মেয়েদের মান-ইজ্জত ভুলন্ঠিত হচ্ছে। মা-বোনদের ধর্ষিত মুখ দেখতে হচ্ছে।
মাতার ছেলের রক্তে রাঙানো লাশ নিয়ে কাঁদছে। স্বাধীন বাংলাদেশ সহ বচনিয়া-চেচনিয়ায় মুসলমানের রক্ত ঝরছে। কাশ্মির-ফিলিস্তিন ও লেবাননে মুসলমানদের খুনে লালে লাল হয়ে যাচ্ছে রাজপথ।
বুলেট বোমার আঘাতে পাকিস্তানে মুসলমানরা দুঃখ-দুর্দশায় জীবন যাপন করছে।
মায়ানমারের রখায়ান প্রদেশে এবং ভারতের আসামে মুসলমানরা অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। চারদিকে মুসলমানদেরকে অপমান, অবমাননা ও লাঞ্চনা সহ্য করতে হচ্ছে।
ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে তারা আজ আবদ্ধ। মানবাধিকারের নামে তাদের উপর পৃথিবীর সব দুর্গতি এনে চাপিয়া দেওয়া হচ্ছে। আধুনিক বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে মুসলমানদের নৈতিকতাকে ধুলিস্বাত করা হচ্ছে। বিজ্ঞানের করাল গ্রাস মুসলমানদের চরিত্রকে গিলে খাচ্ছে।
হলিউড-বলিউড এর চরিত্র-বিনাশী ফিল্মেও মোহে আকৃষ্ট হয়ে মুসলমানরা নিজেদের জাতিসত্বাকে ভুলে গেছে, যার কারণে মুসলমানদের ঘরে ঘরে টিভি চ্যানেল ও ডিশ এন্টেনার নগ্ন ও অশ্লীল পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। তারা তাদের মমিান্বিত গৌরবের কথা ভুলে গেছে।
আজ মুসলিম জাতির আকাশে আর সেই ঔজ্জ্বল্য নেই। নেই সেই মনোলোভা দীপ্তি আর চাঁদনি।
নেই সেই রক্তমাভ সূর্য। অথচ একসময় মুসলমানগণ বিশ্বের বুকে শির উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল।
দিকে দিকে ঘোষিত হয়েছিল তাদের বিজয় মহিমা। মুসলমানদের সোনালী যুগ আজ অতীত।
‘সত্যবাণী’প্রবন্ধে নজরুলের ভাষায়-
‘তোমার সে মহাগৌরবের কথা বিশ্বে চির মমিান্বিত। মনে পড়ে কি, তোমার সেই রক্ত পতাকা, যাহা বিশ্বের সিংহদ্বারে উড়িয়া ছিল। তোমার সেই শক্তি যাহা দুনিয়া মথিত আলোড়িত করেছিলো। বল বীর, বল আজ তোমার সেই শক্তি কোথায়?
তাই আজ আবার মুসলমানকে তার হৃত গৌরব ফিরে পেতে চাইলে তাকে নজরুলের ভাষায় একথা বিশ্বাস করতেই হবে যে,
সত্য তোমার ভূষণ, সাম্য, মৈত্রী, স্বাধীনতা--- তোমার লক্ষ্য।
সত্যকে আকড়ে ধরে বিশ্বব্যাপী দাওয়াতি কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
ইসলামের প্রচার-প্রসারের জন্য নিজেকে সমর্পন করে দিতে হবে।
ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য মিডিয়া খুবই উপযোগী।
কারণ ইসলামের মহানশিক্ষা যদি ইহুদি-খ্রিষ্টানদের কাছে পৌঁছে,
অবশ্যই তারা ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিবে। ইসলাম একটি সার্বজনীন জীবনাদর্শ।
মহাগ্রন্থ আল কোরআন ও হাদীস শরীফের বাণীসমূহ মিডিয়ার সাহায্যে জাতির কাছে অনায়াসে পৌঁছিয়ে দেওয়া যায়। বিশ্বে ইসলাম আজ যে গতীময়তা ও গতীশীলতা লাভ করেছে, এটাকে স্তব্ধ ও রুদ্ধ করে দেওয়ার লক্ষ্যে ইহুদি খ্রিষ্টানরা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে ।
এই ধ্বংসাত্বক চক্রান্ত থেকে ইসলামকে রক্ষা করতে হলে মিডিয়ার সাহায্যে তাদের ষড়যন্ত্রের মূলে কুঠরাঘাত করতে হবে। ইসলামের প্রচার-প্রসারে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার বর্তমানে অনস্বীকার্য।
ইসলামের মূল শিক্ষা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার বিকল্পহীন মাধ্যম হলো মিডিয়া।
ইহুদী - খ্রিষ্টানদের অপসংস্কৃতির বিষাক্ত ছোবল থেকে মুসলিম জাতিকে রক্ষা করিতে হলে, কাটা দিয়ে কাটা তোলার ন্যায় মিডিয়াকেই প্রধান হাতিয়ার রূপে ব্যবহার করতে হবে।
সংবাদ পত্র, টিভি-চ্যানেল,অনলাইন টিভি, গণমাধ্যম ও ইন্টারনেটের সাহায্যে মুসলমানদেরকে একতা ও পুণঃজাগরনের দিকে আহবান করতে হবে।
আমাদের উচিৎ সেকেলে ধ্যান-ধারণা ও মরিচীকাপূর্ণ চিন্তাভাবনা পারিহার করা।
আমাদের মনে রাখতে হবে মহান ইসলাম ধর্মের দিকে অমুসলিমদের আহবান করা প্রতিটি মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব।
বিষয়: বিবিধ
১৫৪২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন