একটি পিস্তল থেকে একটি সুসংগঠিত সেনাবাহিনী: হামাস

লিখেছেন লিখেছেন নানা ভাই ২৫ জুলাই, ২০১৪, ১১:৪৯:১৯ রাত



১৯৯০ সালের আগে হামাসের সামরিক শাখা সবার কাছে অপরিচিত ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে সে বছরে এ সামরিক শাখার কার্যক্রম উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পায়।

১৯৩৫ সালে ফিলিস্তিনের শহর ইয়া’বাদ এ বৃটিশ সৈন্যদের গুলিতে নিহত সিরিয়ান মুক্তি আন্দোলনের নেতা শহীদ ‘এজ্জেদিন-আল-কাসসাম’-এর নাম অনুসারে এ সামরিক শাখার নাম দেয়া হয় ‘আল কাসসাম’ বিগ্রেড।

১৯৯২ সালের ১ জানুয়ারি এই বিগ্রেড তাদের প্রথম অপারেশনের ঘোষণা দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। এ ঘোষণায় বলা হয়, কফরদরম স্থাপনায় দরন সশান নামের একজন ইহুদি পণ্ডিতকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘোষণার মাধ্যমে আল-কাসসাম বিগ্রেডকে হামাস তাদের সামরিক শাখা হিসেবে ঘোষণা করে।



শুরুতে সীমিত সংখ্যক সৈন্য নিয়ে শুরু করা এ বিগ্রেড এখন গাজার একটা বড় অংশ জুড়ে আছে। কিন্ত পশ্চিম তীরে তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।

নিজেদের ২০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রচারিত এক বুলেটিন অনুসারে কেবল গাজাতেই তাদের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। এটি একটি সত্যিকারের সেনাদল যেটিতে সৈন্যদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে কোম্পানি, ব্যাটালিয়ন এবং বিগ্রেড।

বুলেটিন এ ঘোষণা দেয়া হয় যে, নর্দার্ন গাজা বিগ্রেড, গাজা বিগ্রেড, সেন্ট্রাল গাজা বিগ্রেড এবং সাউর্দার্ন গাজা বিগ্রেড নামে আল-কাসাসামের চারটি বিগ্রেড আছে।

এ সামরিক শাখা প্রথমে একটি পিস্তল নিয়ে শুরু হয়, এরপর অস্ত্রাগারে যোগ হয় একটি রাইফেল এবং এরপরে নিজেদের তৈরি মেশিন গান। ধীরে ধীরে ‘হোয়াজ’ এর মত বিস্ফোরক যন্ত্র, আত্মঘাতী হামলার জন্য বেল্ট এবং দূর থেকে হামলার জন্য বিস্ফোরক যন্ত্র যোগ হয়।

আল-কাসসাম বিগ্রেড ২০০১ সালের ২৬ অক্টোবর স্থানীয়ভাবে তৈরি রকেট দিয়ে ইসরাইলের ‘স্টেরট’ স্থাপনায় হামলা চালায়। এই রকেটের নাম ছিল ‘কাসসাম-১’।

এটিকে নিয়ে টাইম ম্যাগাজিন ‘একটি পুরোনো রকেট যেটি মধ্যপ্রাচ্যকে বদলে দিতে পারে’ শিরোনাম প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

দ্রুতই ‘কাসসাম-২’ উদ্ভাবিত হয় যেটি ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যবহার করা হয়। এই দলটি ৮০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রমে সক্ষম রকেট তৈরি করেছে।

এর মধ্যে ২০১২ সালের গাজার সাথে যুদ্ধে এম-৭৫ ব্যবহার করে। এ মাসের যুদ্ধে তারা ইসরাইলের হাইফা শহরকে লক্ষ্য করে আর-১৬৯ রকেট ব্যবহার করেছে।

বিস্ময়করভাবে আল-কাসসাম ১৪ জুলাই ইসরাইলের ভেতরের বিশেষ অপারেশনে অংশ নিতে সক্ষম এরকম তিনটি ড্রোন নির্মাণের ঘোষণা দেয়।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের সেনাবাহিনীর মত আল-কাসসাম বিগ্রেডের ইঞ্জিনিয়ারিং, এরিয়াল, আর্টিলারি এবং আত্মঘাতী স্কোয়াড রয়েছে।

চলমান যুদ্ধে তাদের নৌ সেনাদের একটি দল ইসরাইলের আস্কেলন শহরে অবস্থিত সুরক্ষিত জাকিম সামরিক ঘাঁটিতে হামলা করে প্রথম অপারেশনের ঘোষণা দিয়েছে। ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসনের মোকাবেলার জন্য আল-কাসসাম বিভিন্ন প্রযুক্তিগত উন্নতি সাধন করেছে।

মিলিটারি শাখা ‘আল-বাত্তার’, ‘আল-ইয়াসিন’ নামের কামান বিধ্বংসী গোলা তৈরি করেছে যেটি ইসরাইলের প্রবাদতুল্য মারকাভা কামান ধ্বংস করতে সক্ষম।

এছাড়াও তারা ইতিমধ্যে ইসরাইলের কিছু সেনাকে আটক করতে সক্ষম হয় যার মধ্যে একজন ছিল গিলাত শালিত। ২০০৫ সালে কর্তব্য পালনরত অবস্থায় তারা তাকে আটক করে। ২০১১ সালে ১০৫০ জন বন্দি ফিলিস্তিনির মুক্তির বিনিময়ে তাকে মুক্তি দেয়।

এই বিগ্রেড ২০০৮ এবং ২০১২ সালে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের হামলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ইসরাইলের প্রভূত ক্ষতি সাধন করেছে।

কাসসাম বিগ্রেডের বর্তমান প্রধানের নাম মোহাম্মদ-আল-দেইফ। ইসরাইল তাকে হত্যা পরিকল্পনার তালিকার শীর্ষে রেখেছে এবং একাধিক বার তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। তাকেই ইসরাইল আল-কাসাসামের সকল আক্রমণের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করেছে।

সূত্র: মিডলইস্ট মনিটর

বিষয়: বিবিধ

১১৫১ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

248250
২৬ জুলাই ২০১৪ রাত ০৩:১৫
সন্ধাতারা লিখেছেন : Encouraging post. Jajakalla
248332
২৬ জুলাই ২০১৪ দুপুর ১২:১১
হতভাগা লিখেছেন : এদের এইসব অস্ত্রসষ্ত্র আসে কোথা থেকে ?
248407
২৬ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File