সাবধান,কয়েকটা টাকার লোভে আপনার পুরানো ক্রীম, পারফিউমের বোতল বিক্রী করবেন না! কারন,ভেজাল সহ ওটা আবার আপনিই কিনে আনবেন!!!
লিখেছেন লিখেছেন নানা ভাই ০৮ জুলাই, ২০১৪, ০৩:৩৫:৩৩ রাত
পোশাক কারখানায় কাপড় ধোয়ার কাজে ব্যবহৃত তরল সাবান, কৃত্রিম রঙ ও সুগন্ধি দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু। নিম্নমানের স্পিরিটের সঙ্গে রঙ মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বডি স্প্রে। পুরান ঢাকার বংশালের মালিটোলা এলাকার নকল প্রসাধনসামগ্রী তৈরির কিছু কারখানায় গতকাল সোমবার দেখা গেছে এ চিত্র। সেখানে তৈরি হেড অ্যান্ড শোল্ডার, সানসিল্ক, ক্লিয়ার, হ্যাভক, ব্রুটের মতো ব্র্যান্ডের হুবহু নকল পণ্য ছড়িয়ে পড়ত সারাদেশে। র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত গতকাল সেখানে অভিযান চালিয়ে দু'জনকে কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ১৮টি কারখানা ও গুদাম সিলগালা করে দেন। সাবান, রঙ ও সুগন্ধি দিয়ে তৈরি হচ্ছে ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এএইচএম আনোয়ার পাশা সমকালকে বলেন, বংশাল থানার পেছনে মালিটোলার ময়না হাজির বাড়ি এবং আশপাশের কয়েকটি বাড়িতে গড়ে উঠেছিল নকল প্রসাধনসামগ্রীর কারখানা। শ্যাম্পু ও পণ্যের ব্যবহৃত কনটেইনার সংগ্রহ করে তাতে ইচ্ছামতো উপাদান ভরে বাজারজাত করত এই অসাধু ব্যবসায়ীরা। আসল মোড়ক ও প্রায় হুবহু রঙ-সুগন্ধি ব্যবহারের কারণে সাধারণ ক্রেতার পক্ষে বোঝাও মুশকিল তা খাঁটি, না নকল।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, গোপন খবরের ভিত্তিতে গতকাল দুপুরে মালিটোলার ১৫ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় নকল প্রসাধন কারখানার দুই মালিক মোহাম্মদ হাওলাদার ও ছানোয়ার হাওলাদারকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কারখানা ও গুদামগুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়। র্যাব-১০-এর কর্মকর্তা মেজর শামীম আহমেদ অভিযান পরিচালনা করেন। বিএসটিআই কর্মকর্তা মনির হোসেনও অভিযানে উপস্থিত ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা বিপুল পরিমাণ কনটেইনার ও প্রসাধন তৈরির উপাদান ধ্বংস করারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্তরা ভ্রাম্যমাণ আদালতকে জানান, ১৯৯১ সাল থেকে তারা ফেরিওয়ালা হিসেবে কাগজ ও প্রসাধনসামগ্রীর খালি কনটেইনার কিনতেন। প্রায় এক যুগ আগে তারা শুধু প্রসাধনসামগ্রীর কনটেইনার কেনাবেচার পাইকারি ব্যবসা শুরু করেন। এর পরই তাদের মাথায় আসে নকল প্রসাধন তৈরির পরিকল্পনা। তারা ময়না হাজির বাড়ির দোতলা, নিচতলা ও পাশের কয়েকটি বাড়িতে কারখানা ও গুদাম তৈরি করেন।
এসব স্থানে মজুদ করা হয় বিপুল পরিমাণ খালি কনটেইনার, কাগজের মোড়ক, লেবেল, হলোগ্রাম স্টিকার ও কাঁচামাল। কোনোরকম অনুমোদন ও বৈধ প্রক্রিয়া ছাড়া নিজেরাই তরল সাবান, স্পিরিট, সুগন্ধি ইত্যাদি দিয়ে শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, লোশন, সুগন্ধি ও বডি স্প্রে তৈরি করা শুরু করেন। সেগুলো ব্যবহৃত আসল কনটেইনারে ভরে বাজারজাত করা হতো। এর মধ্যে ছিল প্যান্টিন, ডাভ, হেড অ্যান্ড শোল্ডার, সানসিল্ক ও ক্লিয়ার ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু এবং মেক্সি, এক্স, হ্যাভক, ব্রুট ও ডয়েট ব্র্যান্ডের বডি স্প্রে ও লোশন।
নকল প্রসাধন কারখানার কর্মচারী মশিউর জানান, ব্যবহৃত কনটেইনার ভালোভাবে পরিষ্কার করে তাতে নতুন লেবেল ও হলোগ্রাম লাগিয়ে নতুনের মতো করা হতো। পরে ইনজেকশন সিরিঞ্জের সাহায্যে নকল শ্যাম্পু বা লোশনের তরল পদার্থ ভেতরে ঢোকানো হতো। দেখতে আসলের মতো হওয়ায় এবং নির্ধারিত ব্র্যান্ডের অনুরূপ সুগন্ধি ব্যবহারের কারণে ব্যবহারকারী আসল-নকলের পার্থক্য সহজে বুঝতে পারতেন না। সাধারণ বিপণিবিতান তো বটেই, অনেক নামকরা শপিংমলেও এসব পণ্য বিক্রি হয় বলে তার দাবি।
বিষয়: বিবিধ
১১৩৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন