শেখ হাসিনার বাংলাদেশে এখন শায়েস্তা খানের আমল চলছেঃ পঞ্চগড়ে অভাবের তাড়নায় এক হাজার টাকায় নবজাতক বিক্রি!

লিখেছেন লিখেছেন নানা ভাই ২৪ মার্চ, ২০১৪, ০২:৩৪:৪৪ রাত



অভাবের সংসার তার ওপর ঘরভাড়া বাকি। ভাড়ার টাকা পরিশোধ করতে দুদিনের দুধের শিশুকে বিক্রি করেছেন এক অসহায় মা। নির্মম ও হৃদয়বিদারক এই ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড় জেলা শহরের রৌশনাবাগ এলাকায়। নবজাতককে বিক্রি করার ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। নবজাতক বিক্রির পর মিনা বেগমকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে অনেকে বলছেন দত্তক নয় অভাবের তাড়নায় টাকার জন্য সন্ত্মানকে বিক্রয় করে দিয়েছে তার মা।

জেলা শহরের রৌশনাবাগ এলাকায় ফেরিওয়ালা দেলোয়ারের তৃতীয় স্ত্রী মিনা বেগম বসবাস করত। দেলোয়ার বিয়ের পর সেখানে রাখলেও তাকে ঠিকমত বাড়িভাড়া ও খাওয়া পরার খরচ দিতে পারত না। দেলোয়ার ও মিনার তিন সন্তান। ইতোপূর্বেও সে এক ছেলেকে অন্যের কাছে দত্তক দেয়। মিনা অন্যের বাসায় ঝিয়ের কাজ করে কোনোরকমে এক ছেলে ও এক মেয়েকে

নিয়ে সংসার চালাত। দুমুঠো ভালোভাবে খেতে পারত না। তার ওপর বাসা ভাড়া। বাড়িওয়ালা ভাড়ার তাগাদা দিতেই থাকে। এরই মধ্যে গত শুক্রবার গভীর রাতে মিনার কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে আরও এক ছেলে সন্তান। দুই সন্তানকে পড়ালেখা ও খাওয়ানোর খরচ জোগাতে ব্যর্থ মিনা অবশেষে গতকাল বিকালে দুদিনের দুধের শিশু নবজাতককে দত্তক নামার মাধ্যমে মাত্র ১ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। জেলা শহরের রৌশনাবাগ এলাকার স্বর্ণকার মিজানুর রহমান মিজান-রাশেদা বেগম দম্পতি ওই শিশুটিকে নিয়েছেন। মিজান-রাশেদা দম্পতির বিয়ের ১০ বছর। নিঃসন্তান মিজান ও রাশেদা দম্পতি ফুটফুটে ওই নবজাতককে নিজের সন্তান হিসেবে দত্তক নিয়েছেন।

মিজানের স্ত্রী রাশেদা বেগম জানান, মিনা বাড়িভাড়া ও নিজের চিকিত্সার টাকা জোগাড় করতে নবজাতককে আমার কাছে নিয়ে আসে। আমি তখন তাকে ১ হাজার টাকা দিই। সে তার নবজাতককে আমার কাছে দিয়ে যায়। আমরা সেটা দত্তকনামার মাধ্যমে লিখিত করে নেই।

তিনি আরও বলেন, মিনা বেগম এসে তার নবজাতক শিশুটিকে দত্তক দেয়ার প্রস্তাব দিলে আমরা তাতে সম্মত হই। এরপর শিশুটির মা দত্তক নামায় স্বাক্ষর করে শিশুটিকে দিয়ে চলে যায়। যাওয়ার সময় শিশুটির মায়ের হাতে ওষুধ খাওয়ার জন্য এক হাজার টাকা দিই। আমাদের কোনো সন্তান না থাকায় এই শিশুটিকে নিজের সন্তানের মতোই মানুষ করতে চাই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফেরিওয়ালা দেলোয়ারের তিন স্ত্রী রয়েছে। সন্তানও অনেক। কোনো স্ত্রী ও সন্তানকে ঠিকমত ভরণপোষণ দেয় না দেলোয়ার হোসেন। সবাই বিভিন্ন স্থানে ভাড়া বাড়িতে থাকে। মিনা বেগমকেও তার স্বামী খরচ দিতে না পারায় মানুষের বাসায় কাজ করে সন্তান লালন পালন করত সে। এর আগেও তার ২টি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। এলাকার লোকজন জানিয়েছে, অভাবের কারণে আগেও একটি ছেলে সন্ত্মানকে দত্তক দেয় মিনা বেগম।

বিষয়: বিবিধ

১০২৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File