গনতন্ত্র কার আবিস্কার? চাই সঠিক উত্তর ?

লিখেছেন লিখেছেন রিদওয়ান বিন ফয়েজ ২০ আগস্ট, ২০১৪, ০৮:০৬:৪৯ রাত

আসসালামুয়ালাইকুম।

আসলে আমি ব্লগে লিখার সময় পাই না, ডিউটি অনেক লম্বা তাই।

গত কিছুদিন আগে আমি আকার এক কাকার সাথে কথা বলি দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে । তিনি আমাকে নিত্যদিনের কিছু খবর বলে । কথার শেষ মূহুর্তে তিনি আমাকে বলেন কাকা শিবির ছেড়ে দেন আমি তাকে প্রশ্ন করলাম কেন ? তিনি বললেন জামায়াতে ইসলামি ও শিবির নাকি যে গনতন্ত্রের চর্চা করে তা নাকি আব্রাহাম লিংকনের তৈরি করা গনতন্ত্র । আমারতো পুরাই মাথা খারাপ কি বলেন কাকা এগুলো । আমি তাকে সঠিক উত্তরের জন্য আপনাদের সাহায্য দরকার তাই আপনাদের নিকট এই আবেদন । আমি কিছু দলিল সহ সঠিক উত্তর চাই আপনাদের নিকট ।

বিষয়: বিবিধ

৪৭৭০ বার পঠিত, ২৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

256445
২০ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:১৪
কাজি সাকিব লিখেছেন : খুবই আজাইরা রকমের একটি প্রশ্ন করছে ইদানীং এক গ্রুপ গণতন্ত্র হারাম বলে!গণতন্ত্রের নানা সংজ্ঞ্যা রয়েছে তবে আসল কথা হচ্ছে সকলের মতামতের একটি মর্যাদা রয়েছে!ইহা যদি হারাম হয় তবে রাসুল সাঃ মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্তে হযরত আবু বকর রাঃ কে খলীফা হিসেবে নির্ধারিত করে না দিয়ে সাহাবাদের উপর ছেড়ে দিয়েছিলেন কেন? কেন তিনি কয়েকজনের নাম প্রস্তাব করে বলেছিলেন এদের মধ্য থেকে একজনকে তোমাদের খলীফা হিসেবে নির্বাচিত করবে!

লোকের মতামতের যদি কোন দাম নাই থাকতো তবে মক্কী যুগেই ইসলাম কায়েম হয়ে গেল না কেন যখন সমাজের অধিকাংশ লোকেরাই ছিল কাফের? কি কারণে মদীনায় ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠীত হলো যেখানকার ক্ষমতাবান অধিকাংশ লোক ইসলাম গ্রহন করেছিল?আল্লাহ যদি চাইতেন তবে তো মক্কী যুগেই একদিনেই ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করে দিতে পারতেন!কেন করলেন না,নিশ্চয়ই সেখানে শিক্ষার কিছু রয়েছে!

আব্রাহাম লিংকন গণতন্ত্রের তার মত করে একটি সংজ্ঞ্যা দিয়েছেন যা শুনতে খুবই ভালো লাগে কিন্তু তাই বলে এর উদ্ভাবক তিনি নন! তারা বলে যে গণতন্ত্রে সকল ক্ষমতার উতস জনগণকে মনে করা হয় যা শিরক,তা সেইটা না মানার কারণেই তো জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হলো!
গণতন্ত্র কোন মতবাদের নাম নয়,মতবাদ হচ্ছে অন্য জিনিষ যেমন সেক্যুলধর্মনিরপেক্ষতা,ইসলামিক,বামপন্থা,উগ্রপন্থা ইত্যাদি নানা জিনিষ যেগুলোর বাস্তাবায়ন যেই কেউই গণতন্ত্রের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন করতে পারে!আর প্রচলিত গণতন্ত্রের যে সকল অগ্রহনযোগ্য দিক রয়েছে জামায়াত সেগুলো মানেও না এবং সেগুলো খারাপ তা একবাক্যেই সকলেই স্বীকারও করে এবং সেই বিষয়ে সম্প্রতী আল্লামা সাঈদী সাহেব রচিত নন্দিত জাতি নিন্দিত গন্তব্য নামক গ্রন্থেও লিখা রয়েছে,অতীতে অন্যরাও লিখেছেন!
এখন প্রচলিত গণতন্ত্রের বাইরে থেকে আমরা যদি সমাজের সকল কর্তৃত্ব তাগুতের হাতে তুলে দেই তবে তা হবে ইসলামের জন্য ক্ষতিকারক!মক্কী যুগে যখন প্রাথমিকভাবে কিছু সাহাবা রাঃ আবিসিনিয়ায় হিজরত করলেন তখন কিন্তু তাঁরা সেদেশের আইনই মেনে চলেছেন!
কাজেই যারা গণতন্ত্র হারাম বলে ফতোয়া জারি করে মুসলিমদের রাষ্ট্রনীতি,সমাজনীতি বিমুখ একটি অথর্ব জাতিতে পরিণত করতে চায় তারা হয় ইসলামকে বুঝে না অন্যথায় তাগুতের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে!
২০ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:০৮
200083
রিদওয়ান বিন ফয়েজ লিখেছেন : ধন্যবাদ, আপনি সুন্দর দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছেন। আমি যখন সাথীপ্রার্থি ছিলাম তখন একটা বই পড়ছিলাম নামটা ছিল মনে হয় (গনতন্র ও ইসলাম) আমি ঐ বইটা খুজছিলাম পাচ্ছিনা। আমি আজ অনেক বছর দেশের বাহিরে। তাই যথা যথ দলিল সহ উত্তর দিতে পারছিনা । আর আমি যে দেশে আছি সেখানে আমাদের একটা বিশাল লাইব্রেরী আছে প্রায় ৫০,০০০/- বই সংরক্ষনে আছে । কিন্তু সেখানে এই ধরনের বই সংরক্ষনে নাই । যদি এই ধরনের বই অন লাইনে লিংক থকলে আমাকে দিলে উপকৃত হতাম। জাযাকাল্লা খাইর ...
২০ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:১৫
200096
এলিট লিখেছেন : @ কাজি সাকিব
বোঝা গেল আপনি ইসলাম ভালো বোঝেন। কিন্তু গনতন্ত্র কতটুকু বোঝেন সেটা এখন একটা প্রশ্ন।
ভোট দেওয়া, জনগনের মতামত দেওয়া এগুলো গনতন্ত্র নয়। গনতন্ত্র অর্থ হল - দেশের মালিক জনগন। যেমন রাজতন্ত্রে দেশের মালিক রাজা নিজে। তেমনি গনতন্ত্রে দেশের মালিক জনগন। জানিনা কিভাবে, সবাই গনতন্ত্রের সাথে আব্রাহাম লিঙ্কন এর নাম মুখস্ত করেছে। তার জন্মের আগে থেকেই তার দেশে গনতন্ত্র ছিল। আপনি যেমন "লেখাপড়া" এর আবিস্কারক খুজে পাবেন না, তেমনি গনতন্ত্রের আবিস্কারকও খুজে পাওয়া যায় না। তবে ঐতিহাসিকদের তথ্যমতে গনতন্ত্রের চর্চা ছিল প্রাচীন রোমান সভ্যাতার যুগে।
ইসলামে গনতন্ত্র নেই। ভোট দেবার ব্যাবস্থা ও গনতন্ত্র জিনিস নয়। ইসলামিক রাস্ট্রে দেশের মালিক আলাহ। গনতন্ত্রে দেশের মালিক জনগন। এ দুটো সম্পুর্ন আলাদা ব্যাবস্থা। এর একটার মধ্যে আরেকটা থাকে না।
আরো জানতে পড়ুন - ইসলামে গনতন্ত্রের রূপ
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ০২:৩৭
200152
সাদাচোখে লিখেছেন : কাজি সাকিব ভাই, আমি জামায়াত বিদ্বেষী নই কিংবা জামায়াত আমার কাছে এ্যালার্জিক নয়। ধর্মীয় বিবেচনায় ও পলিটিক্যাল বিবেচনায় - সংগঠন হিসাবে জামায়াত নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম প্রধান একটি ভাল দল - এবং পরিবর্তিত উপমহাদেশের পলিটিক্স এ আমাকে যদি ফেবারিট হিসাবে একটি দলকে চ্যুজ করতেই হত - তবে নিঃসন্দেহে এখনকার জানাশোনা ও বুঝ অনুযায়ী আমি জামায়াত কেই চ্যুজ করতাম।

আমি একই সাথে স্বীকার করছি - ইসলাম সম্পর্কে আমার জ্ঞান খুবই সীমাবদ্ধ। স্যেকুলার ধ্যান-ধারনায় আমি বড় হয়েছি এবং স্যেকুলার বিষয়াদির পেছনেই অনেক অনেক বছর দৌড়িয়েছি এবং আমার লেভেল অনুযায়ী দুনিয়াবী ইস্যুতে নিজেকে নিজে সাকসেসফুল ই মনে করতাম।

যাক, যে ইস্যুটিতে ব্লগার মতামত চেয়েছেন আর আপনি মতামত দিয়েছেন - তা আমি পড়েছি এবং আপনার জাস্টিফিকেশানের ধরন দেখে বুঝলাম - আপনি যৌক্তিক একটা ব্যাখ্যা দিতে চেয়েছেন - যা আমার কাছে কোরান হাদীস কেন্দ্রিক ব্যাখ্যা মনে হয়নি বলেই আমার মতামত লিখার চেষ্টা করছি।

কিন্তু এ ইস্যুতে বেশ কয়েকটি কারনে - আমি আপনার উত্তরে কনভিন্সড হতে পারিনি বলে দুঃখিত। আর সে নিমিত্তে ও এ লিখার অবতারনা। আমি মনে করি - একজন সত্যিকারের মুসলিম হিসাবে - এ ইস্যুতে আমাদের কারোরই ক্ষুদ্ধ, রাগ বা বিরাগ হবার কোন সুযোগ নেই। বরং এ আলোচনাকে এমন ভাবে উৎসাহিত করা উচিত - যাতে আমরা কোরান হাদীসের আলোকে - এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারি এবং তা যথাযথভাবে প্রপাগেইট করতে পারি - যদি তা ইসলামের জন্য, উম্মাহর জন্য ভাল হয়।

অথবা কোরান হাদীসের আলোকে এর ক্ষতিসমূহ চিহ্নিত করতে পারি, নেগেটিভিটিসমূহ উপলব্ধি করে এর যথাযথ রিফর্ম করতে পারি কিংবা অলটারনেটিভ খুঁজতে পারি কিংবা একেবারে না পারলে 'আখেরাত ঠিক রাখা'র জন্য এ থেকে বের হয়ে আসতে পারি।

কারন আমার মনে হয় - একজন মুসলিম হিসাবে এ পৃথিবীতে আমাদের সত্যকে চেনা, জানা ও বোঝা অনেক বেশী ইমপোর্টেন্ট, সত্যকে আকড়ে ধরে ওপারে যাবার প্রস্তুতি নিশ্চিত করা ইমপোর্টেন্ট - যা নবী মোহাম্মদ সঃ আমাদের জন্য আল্লাহর কাছ হতে সত্য সাক্ষীসহ এনে দিয়েছেন।

আর কোন কারনে কোন বিষয়ে যদি কোন নেগেটিভিটি, যদি কোন বেদাত, শিরক ইত্যাদি আমাদের মধ্যে ডুকে গিয়ে থাকে - তবে তা যত পুরোনো দিনের প্রাকটিস ই হোক না কেন, যত কাল ধরেই প্রাকটিস হয়ে থাকনা কেন - তার থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করাই একজন মুসলিম হিসাবে অন্যতম কর্তব্য।

আমি ব্যক্তিগতভাবে আরো মনে করি - আমরা আল্লাহ, কোরআন, হাদীস, মোহাম্মদ সঃ ইত্যাকার ইস্যুর সত্যতা, ন্যায্যতা, যথার্থতা - আমাদের সামর্থ্যের পুরোটা দিয়েই ডিফেন্ড করবো এবং সেখানে কোন কম্প্রোমাইজ করবো না, করা উচিত না।

কিন্তু ম্যান-মেইড কোন সংগঠন, কোন ধ্যান ধারনা, কোন আবিষ্কার কে কখনো কোরান হাদীস দিয়ে ভ্যালিডেটেড না হলে - চুড়ান্ত রকমের তথা অন্ধভাবে ডিফেন্ড করবো না। ডিফেন্ড করতে গিয়ে এমন কোন টার্ম কিংবা টার্মস ব্যবহার করবো না - যাতে সত্য প্রকাশ হতে বাধাঁ প্রাপ্ত হয়, কিংবা কেউ সত্য খোঁজায় অনুৎসাহিত হয়। এই জন্য যে ম্যান মেইড বিষয়ে ভুল হলেও হতে পারে, কিংবা সময়ের সাথে বা জেনারেশানের আবর্তনে তা পরিবর্তিত হতে পারে, অতি রাইট কিংবা অতি রং ও মনে হতে পারে।

আমার লিমিটেড জ্ঞান এর আলোকে আমি যা বুঝেছি - ইউনিভার্সালী - কোন আলেম কিংবা আলেম সমাজ যথাযথ রিসার্চ করে কোরান হাদীসের আলোকে অফিশিয়ালী 'আজকের বিশ্বে যে গণতন্ত্র প্রাকটিশ হয় - গনতন্ত্র বলতে যা বোঝায় তা'কে ইসলামে জায়েজ, বৈধ কিংবা হালাল বলেন নি। যা আপনিও আপনার কমেন্ট এ বলেছেন এইভাবে, 'আর প্রচলিত গণতন্ত্রের যে সকল অগ্রহনযোগ্য দিক রয়েছে জামায়াত সেগুলো মানেও না এবং সেগুলো খারাপ তা একবাক্যেই সকলেই স্বীকারও করে এবং সেই বিষয়ে সম্প্রতী আল্লামা সাঈদী সাহেব রচিত নন্দিত জাতি নিন্দিত গন্তব্য নামক গ্রন্থেও লিখা রয়েছে,অতীতে অন্যরাও লিখেছেন'!

ইন্টারেস্টিংলী তখন মনে আসে তাহলে আমরা কোন গনতন্ত্রের কথা বলছি? পৃথিবীতে কি ইসলামী গনতন্ত্র বলে কোন কিছু আছে? যদি থেকে থাকে কতজন মুসলিম সে বিষয় সম্পর্কে জানে? এসব লেজিটেমেট প্রশ্ন সামনে চলে আসে।

অথচ ইতিহাসে আমরা দেখি - বৃটেনের প্রেশারে অটোমান খেলাফত কে ব্যান্ড করে (মাত্র ৯০ বছর আগে), স্যেকুলার ও ইসলাম বিদ্বেষী কামাল আতাতূর্ক এর হাত ধরে গণতন্ত্রের আইডিয়া মেইন মুসলিম ভূখন্ডে বা ধ্যাণ ধারনায় প্রবেশ করে। পরবর্তীতে 'পরাধীন মুসলিম বিশ্বব্যবস্থায়' (বহুদাভাগে বিভক্ত মুসলিম ন্যাশানহুড কে ধ্বংশ করে আঞ্চলিক জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে বিভক্ত নতুন করে সৃষ্ট ন্যাশানহুড)- তুলনামূলক অগ্রসর ও বিশ্বব্যবস্থাপনা বুঝতে সক্ষম অমন মুসলিম লিডার শীপ রা (টিপিক্যাল স্কলার রা নন) - পরাধীনতা হতে উত্তোরিত হতে - কিংবা খেলাফত ফিরে পাবার নিমিত্তে - হার্ডলাইন স্ট্রাগল এ না গিয়ে - মন্দের ভাল এই ধারনার বশঃবর্তী হয়ে - গনতন্ত্রকে আলিংগন করেছে।

মুসলিম নেতাদের ঐ সময়ের প্রেক্ষিত বিবেচনায় নিলে মনে হয় - তারা বুঝিবা যথাযথ সিদ্ধান্তই নিয়েছিলেন। যেমন আপনি আপনার কমেন্ট এ - তেমন একটি বক্তব্য অনুরনন করেছেন 'এখন প্রচলিত গণতন্ত্রের বাইরে থেকে আমরা যদি সমাজের সকল কর্তৃত্ব তাগুতের হাতে তুলে দেই তবে তা হবে ইসলামের জন্য ক্ষতিকারক!'

এই আর্গুমেন্টটা ইসলামী আকিদানুযায়ী ও স্পিরিট অনুযায়ী দূর্বল মনে হয়। কারন আমরা দেখেছি মোহাম্মদ সঃ মক্কায় কিংবা আবিসিনিয়ায় তাগুতের হাত হতে কর্তৃত্ব ছিনিয়ে নিতে চান নি। বরং আমরা দেখি মক্কায় ওনাকে রাজা বানাতে চাইছে কোরাইশরা - তথা কর্তৃত্ব দিতে চাইছে - কিন্তু উনি তা গ্রহন না করে আল্লাহর রাস্তায় নির্যাতন চ্যুজ করেছেন। আবার মদীনায় ও উনি কর্তৃত্ব নিজের হাতে তুলে না নিয়ে মদীনা সনদ তৈরী করে কর্তৃত্ব ভাগাভাগি করে ইয়াহুদী ও মূর্তি পূজকদের দিয়েছেন - ধর্মীয় লাইনানুযায়ী।

অন্যদিকে স্টাবলিশড ফ্যাক্টস বলছে - পাশ্চিমা গণতন্ত্রের জন্মই হয়েছে - আল্লাহ বা স্রষ্টার নামে শাসনের অথরিটিকে চ্যালেন্জ করে - মানুষের নামে মানুষকে শাসন করার অলটারনেটিভ বা বিকল্প একটা মেকানিজম হিসাবে।

পৃথিবীর ইতিহাসে পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিন, কোথাও, কোন কালে, আল্লাহ/স্রষ্টা ভিন্ন অন্য কারো আইনে/ডিকটেশানে মানুষ শাসিত হয়নি। তা সে ফেরাওন হোক আর নমরুদ হোক আর ১৬৪৮ সালের আগে - গনতন্ত্রের সুতিকাগার বৃটেন ই হোক। সব সময়ই, সব কালেই, সব ভূখন্ডেই - রাজা বাদশা ফেরাও, আজিজ কিংবা পোপ, র‍্যাবাই, খলিফা - মানুষ শাসন করেছে স্রষ্টার নামে বা স্রষ্টার পাওয়ার নিজের উপর আরোপ করে তথা নিজেকে স্রষ্টা ক্লেইম করে - ডিভিনিটিকে সামনে এনে। শাসকরা অলয়েজ যে আইন মানুষের সামনে পেশ করেছে - তা আল্লাহর নামে চালিয়েছে - কোন দিন বলেনি এটা তাদের বানানো আইন।

কিন্তু ১৬৪৮ এ অফিশিয়ালী বৃটেন স্রষ্টার আইন মানতে অপারগতা জানায়, তারা প্রটেস্ট করে সাকসেসফুলি সেফারেট হয় এবং রাজা ও সংসদকে আইন প্রনয়নের অধিকার ওপেনলি দেয় - এবং মানুষ তা মেনে নেয়।

এর ধারাবাহিকতায় সৃষ্ট সিস্টেমকে তারা গনতন্ত্র বলে তথা গনতন্ত্রের জন্ম দেয়। এর জন্ম হয়েছে - (১) স্রষ্টার দেওয়া শরীয়া কে অস্বীকার করার নিমিত্তে (যা তখন ক্যাথলিক পোপ এর আয়ত্বাধীন ছিল) এবং নিজের তৈরী আইনকে শরীয়ার উপরে স্থান দিতে, (২) ভূখন্ডের উপর স্রষ্টার সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করার অভিপ্রায়ে এবং তার পরিবর্তে জনগনকে সার্বভৌমত্ব দেবার সংকল্পে।

গনতন্ত্রের আওতায় আইন তৈরীতে - স্রষ্টার বিকল্প হিসাবে সামনে আনা হয় রাজাকে এবং মানুষের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিকে - যাকে/যাদেরকে (নব্য) লর্ড উপাধী দেওয়া হয়। অন্যদিকে ভূখন্ডের অধিপতি স্রষ্টাকে অস্বীকার করে মানুষকে তথা জনগনকে মালিকানা বা সার্বভৌমত্ব দেওয়া হয়। স্রষ্টাকে গৌন বা সেকেন্ডারী ক্লাসের ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। স্রষ্টাকে লিটারেলী চার দেয়ালে বন্দী করা হয়, এবং সিরিমোনিয়াল পজিশান হিসাবে জন্ম, মৃত্যু ও বিয়েতে কাজে লাগানো হয়।

পরবর্তীতে ইউরোপের শাসক ও শোষক (ব্যবসায়ী) শ্রেনী - বৃটেনের - স্রষ্টা মুক্ত নব্য অবস্থায় - পরিপূর্ন নিয়ন্ত্রণমূলক বিধিনিষেধ মুক্ত স্বাধীনতা ও আইন প্রনয়নে ফ্ল্যাক্সিবিলিটির সুবিধা দেখে - একে একে স্রষ্টার আইন ছেড়ে - গণতন্ত্রকে আলিংগন করে। (উল্লেখ্য ইয়াহুদী দ্বারা নির্যাতিত ইউরোপীয়ান খৃষ্টানডোম বিগত প্রায় ১৪০০ বছর ধরে তাওরাতের আইন বা শরীয়া বাদ দিয়ে - কালচারাল ইনফ্লুয়েন্স ও প্রয়োজনানুযায়ী আইন তৈরী করে ঈশ্বরের নামে চালিয়ে আসছিল এবং তার কারনে বিতর্কিতও হয়ে ছিল)

আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনার রেফারেন্স বিহীন হাদীস সংশ্লিষ্ট মন্তব্যটির ক্লু খুঁজছিলাম যেখানে আপনি বলেছেন - 'ইহা (গনতন্ত্র) যদি হারাম হয় তবে রাসুল সাঃ মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্তে হযরত আবু বকর রাঃ কে খলীফা হিসেবে নির্ধারিত করে না দিয়ে সাহাবাদের উপর ছেড়ে দিয়েছিলেন কেন? কেন তিনি কয়েকজনের নাম প্রস্তাব করে বলেছিলেন এদের মধ্য থেকে একজনকে তোমাদের খলীফা হিসেবে নির্বাচিত করবে'!

আমি বরং ইসলামিক সোর্স হতে পেলাম, মোহাম্মদ সঃ এর ওফাত এর পর কিছু আনসার নেতৃবৃন্দ রা মিটিং এ বসেন রাসুলের সঃ এর উত্তরাধিকার নির্ধারন (কনসেনসাস এর মাধ্যমে সিলেকশান বা সুরা বা পরামর্শের মাধ্যমে নির্ধারন) করার জন্য। নির্বাচন (ক্যানডিডেচার কিংবা নন ক্যানডিডেচার এর মাধ্যমে - যেখানে একজনের ভার্চুসমূহ জনসন্মুখে হাইলাইটেড হবে, নেগেটিভিটি গৌন বা গোপন হবে) করার জন্য নয়। সংবাদ পেয়ে ওমর রাঃ, আবু বকর রাঃ কে নিয়ে সেখানে আসেন এবং আবু বকরের নাম প্রস্তাব করেন এবং সকলে মেনে নেন। সেখানে আবু বকরের কোন গুনাগুন আলোচনা হয়নি এবং কোন ভোটিং কিংবা মতামত ছিল না বরং বাইয়াতের আহ্বান ছিল। প্যারালালী আমরা দেখি আবু বকর নির্বাচন না করে পরামর্শ নিয়েছেন ইনার সার্কেলের কয়েকজনের। এবং ওমর রাঃ কে নমিনেট করেছেন। সিমিলারলী আমরা ওসমান ও আলী রাঃ এর ক্ষেত্রেও তাই দেখি। সো আপনার ঐ রেফারেন্সটিকে কোথায় কিভাবে ফিট ইন করাবো বা করতে পারবো - যা আজকের গনতন্ত্রকে ইসলাম দ্বারা জায়েজ করবো।

মূলতঃ গণতন্ত্রের সৃষ্টি হয়েছে আল্লাহ দ্রোহ হতে। গনতন্ত্রের বিকাশ হয়েছে স্রষ্টাকে সাইডলাইনে নিতে। একটিভলী, জোর করে, এজেন্ট নিয়োগ করে, টাকা পয়সা দিয়ে, মিডিয়া ক্যাম্পেইন করে - এর বিস্তৃতি অপরাপর দেশে (মুসলিম দেশ সহ) ছড়ানো হয়েছে - আল্লাহর কর্তৃত্বকে খর্ব করে - পশ্চিমা কর্তৃত্বকে সে স্থানে রিপ্লেইস করার জন্য। এ কাজে ট্রিলিয়নস অব ডলার ইনভেস্টমেন্ট করেছে দজ্জালিক স্বত্তা সমূহ (বৃটেন, অভিবাসিত অবস্থায় ইউএস(অস্ট্রেলিয়া) ও ইসরাইল) তামিম আদ দারীর হাদিসের ইন্টারপ্রিটেশান অনুযায়ী এবং খুন করেছে হাজারে হাজারে মুসলিম ও নন মুসলিম ল্যান্ড সমূহে।

এরপর আমরা দেখি গণতন্ত্রের নামে ইউএন সিকিউরিটি কাউন্সিল এর উদ্ভব এবং মুসলিম ভূখন্ড-সমূহ তাদের সিকিউরিটি বা নিরাপত্তার মালিকানা - আল্লাহর পরিবর্তে ইউএন সিকিউরিটি কাউন্সিলের কাছে লিখিতভাবে দিয়ে বসেছে। ফলাফল স্বরূপ আমরা ২ বছর পর পর গাজার সিকিউরিটির অবস্থা দেখছি, এর আগে প্রমানহীন খুনীকে হস্তান্তর না করার কারন দেখিয়ে আফগানিস্থানের সিকিউরিটির নামে লাখ লাখ মুসলিম নিধন সাইড লাইনে দাঁড়িয়ে দেখেছি, ডব্লিওএমডির নামে ইরাকে, গনতন্ত্রের নামে ইয়েমেনে ড্রোনহত্যা, লিবিয়া, আলজেরিয়া, মিশর, সিরিয়া, আবর ইরাক আমরা দেখছি। গণতন্ত্র, সিকিউরিটি কাউন্সিল, এবং তা হতে সংসদ দ্বারা উদঘত শিশুসমূহ - হিউম্যান রাইটস, ইউনিভার্সাল জাস্টিস, ওমেন এ্যামপাওয়ারমেন্ট, মিডিয়ার স্বাধীনতা ইত্যাকার নামে আমরা মুসলিম নিধনকে হালালিফাইড করছি - আর সেই গনতন্ত্র আইনের শাসনের কারনে, তার দোহাই দিয়ে - আমরা মুসলিমরা সাইড লাইনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমাদের মা বোন ভাইয়ের হত্যা দেখছি, ধর্ষিত হতে দেখছি, নির্যাতিত হতে দেখছি, পুংগু হতে দেখছি।

আমরা গণতন্ত্রের নামে মুসলিম ব্রাদারহুডকে সরকার হতে অপসারিত হয়ে এবং চিড়িয়াখানার কেইজ এর ভিতর দেখছি। আমরা গনতন্ত্রের নামে হামাসকে শুটিং স্পট হতে দেখেছি। আর বাংলাদেশে জামায়াত আর শিবিরের দিকে তাকালে, পুলিশের কোলে চড়ে বিচারলয়ে যাওয়া মুসলিম দের দেখলে - গণতন্ত্রকে আর যাই হোক মোস্ট সুবিধাবাদী, মোস্ট কনভেনিয়েন্ট, মোস্ট ইউজফুল মুসলিম নির্যাতন যন্ত্র ছাড়া -অন্য কিছু মনে হয়না ভাই।

যদি কোন কারনে আপনার মনে উদয় হয় - বাংলাদেশে কিংবা মুসলিম প্রধানদেশে গনতন্ত্র ইম্যাচূউরড - তাই অমন চিত্র। তাহলে বলবো আপনি মিসৌরীর রিসেন্ট ঘটনাটি অবলোকন করুন, বিচার বিশ্লেষন করুন। কিভাবে শক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে, কিভাবে বন্দী করা হচ্ছে। আপনি যদি ওয়েস্টার্ন কোন দেশে থাকেন এবং চিন্তা করার সুযোগ পান - তবে দেখবেন গনতন্ত্রের নামে কিভাবে এ্যানস্লেইভমেন্ট নিশ্চিত করা হয়েছে, মানুষকে কিভাবে অনুভূতিহীন মেশিন বানানো হয়েছে।

অথচ আল্লাহর বই ও হাদীস পড়লে এটা পরিষ্কার ই হয় - মুসলিমদের কাজ ই হল আল্লাহর পথে - অন্যায়ের বিরুদ্ধে সামর্থ্যানুযায়ী কনপ্রনটেশানে যাওয়া - এবং এ উছিলায় মরলেই সাকসেস আর বেঁচে থাকলেও রিওয়ার্ড। আপনি তাওরাতেও তাই পাবেন, ইন্জিলেও তাই। কিন্তু আমরা কনপ্রন্টেশানে যেতে পারছি না। গনতন্ত্রের ছেলে মেয়ে নাতি ও নাতনি ক্যাপিটালিজম, কনজুমারিজম, সেল্পসেন্ট্রিক ইনকাম ও এক্সপেনডিচার সহ ভদ্র, অমায়িক এর এক নতুন ইলোশান আমাদেরকে আকড়ে ধরেছে। আর ম্যাক্রো লেভেল এ প্রতিবেশী দেশ কি ভাববে, কিভাবে রিএ্যাক্ট করবে, আন্তর্জাতিক গুড বুকে আমার নাম কোথায় উঠবে, শামীম ওসমান, বেনজির, মানিক টাইপ লোকেরা বুঝি আমাদেরকে সাইজ করে ফেলবে - এমন কত কিছুই না হিসাব নিকাশ করি এই গণতন্ত্রের বাতাবরনে - কিন্তু আল্লাহকে আল্লাহর নির্দেশকে সেভাবে আর সামনে আনতে পারিনা।

দুঃখিত লিখাটি বেশী লম্বা হয়ে যাবার জন্য। শেষ মেশ একটা উদাহরন দিয়ে শেষ করবো। দেখুন ২০০১ সালে আমেরিকা পৃথিবীর সব চাইতে পাওয়ারপুল দেশ, নাথিং ইক্যুয়ালস টু ইট। তারা বললো বিন লাদেন টুইন টাওয়ার ভেংগেছে। তাকে তার হাতে তুলে দিতে মোল্লা ওমর কে আদেশ দেওয়া হল।

মোল্লা ওমর গনতন্ত্র, আমেরিকা, ন্যাটো, সিকিউরিটি কাউন্সিল ইত্যাদিকে সিম্পলী ফেরাউন জ্ঞান করলো আর আল্লাহর সুপ্রিমিসিকে ধারন করে কোরানহাদীস অনুসারে বললো - দয়া করে আমাদেরকে প্রমান দিন প্রথমে। আমেরিকা প্রমান দিলনা - আফগানিস্থানকে ধুলায় মিশিয়ে দিল।

রেজাল্ট - মুসলিম আইনানুযায়ী - আমেরিকা অসংখ্য নিরাপরাধ মানুষের হত্যাকারী হল। মোল্লা ওমর একজন নিরাপরাধ মানুষকে (যেহেতু কোন কালেই আমেরিকা কোন প্রমান উপস্থাপন করতে পারেনি) বাচিঁয়ে সারা মানবতাকে বাঁচালো।

অন্যদিকে জেনারেল মোশাররফ - গনতান্ত্রিক নিয়ামানুযায়ী কোন প্রমান ছাড়াই নিজেকে আমেরিকার কাছে সোপর্দ করলো এই যুক্তিতে যে - পাকিস্থানের নিরাপরাধ মানুষের জীবন রক্ষার্থে আর বিনিময়ে মুজাহিদীন নামক অল্প কিছু মুসলিম হত্যার বিনিময়ে। বিচারদিনের সম্ভাব্য রেজাল্ট বিবেচনায় বলুন - গনতান্ত্রিক টা রাইট ছিল না কি মোল্লা ওমর এর ইসলামিক টা রাইট ছিল।

আমাদের দেশে আমরা নিরাপরাধ কাদের মোল্লাকে গনতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক হওয়ায় বাঁচাতে পারিনি। কিন্তু মোল্লা ওমর হলে ইসলামিক কনসিকোয়েন্স এর কথা মনে রেখে হলেও গনতন্ত্র অন্য কিছু করতো বলে আমার মনে হয়।
২১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৯:৪১
200222
চির উন্নত মম শির লিখেছেন : সাদাচোখে 'র সাথে পুরোপুরি একমত।
আর জামা'ত যেহেতু ভোটের রাজনীতি করে, তারা ও লিংকনের গণতন্ত্র ফলো করে। এটা দিবালোকের মত সত্যি। জামা'ত জাস্ট ফ্লেভারটা চেন্জ করে ইসলামি নাম দিয়েছে।
২১ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:০৬
200273
রিদওয়ান বিন ফয়েজ লিখেছেন : ধন্যবাদ সাধা চোখ ভাই .।। আপনি যথার্তই লিখেছেন ।
256509
২০ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:১০
এলিট লিখেছেন : গনতন্ত্র কে আবিস্কার করেছে, কে কেমন গনতন্ত্র চর্চা করে, গনতন্ত্র ইসলামে হারাম কিনা - এমন প্রশ্নের উত্তর খুজে আমরা হয়রান। ওদিকে গনতন্ত্র কাকে বলে সেটা আমরা জানিনা, উত্তরও খুজি না।
ভোট দেওয়া, জনগনের মতামত দেওয়া এগুলো গনতন্ত্র নয়। গনতন্ত্র অর্থ হল - দেশের মালিক জনগন। যেমন রাজতন্ত্রে দেশের মালিক রাজা নিজে। তেমনি গনতন্ত্রে দেশের মালিক জনগন। জানিনা কিভাবে, সবাই গনতন্ত্রের সাথে আব্রাহাম লিঙ্কন এর নাম মুখস্ত করেছে। তার জন্মের আগে থেকেই তার দেশে গনতন্ত্র ছিল। আপনি যেমন "লেখাপড়া" এর আবিস্কারক খুজে পাবেন না, তেমনি গনতন্ত্রের আবিস্কারকও খুজে পাওয়া যায় না। তবে ঐতিহাসিকদের তথ্যমতে গনতন্ত্রের চর্চা ছিল প্রাচীন রোমান সভ্যাতার যুগে।
ইসলামে গনতন্ত্র নেই। ভোট দেবার ব্যাবস্থা ও গনতন্ত্র জিনিস নয়। ইসলামিক রাস্ট্রে দেশের মালিক আলাহ। গনতন্ত্রে দেশের মালিক জনগন। এ দুটো সম্পুর্ন আলাদা ব্যাবস্থা। এর একটার মধ্যে আরেকটা থাকে না।
আরো জানতে পড়ুন - ইসলামে গনতন্ত্রের রূপ
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ১২:১৪
200124
বুড়া মিয়া লিখেছেন : @এলিট, গণতন্ত্রে কোন কালে দেশের মালিক জনগণ ছিলো না, সর্বকালের দেশের মালিক রাজা/সরকারই ছিলো আজও আছে প্রত্যেকটা দেশেই, লীজ-রেন্ট/খাজনার বিনিময়ে প্রজা/জনগণ রাজা/সরকারের ভূমিতে থাকার অধিকার পেয়ে থাকে।

শাসন ব্যবস্থা একই সিষ্টেমে চলে আসতেছে জোর-যার-মুল্লুক তার, এটা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নামে অভিহিত হয়ে আসছে, বর্তমানে সর্বাধিক প্রচারিত গণতন্ত্র, এটাও সেই পুরোনো শাসনব্যবস্থারূপী মদ ‘গণতন্ত্র-নামক’ নতুন বোতলে!

গণতন্ত্রে/সমাজতন্ত্রে/রাজতন্ত্রে যা আছে তার সবই ইসলামের ইতিহাসে আছে।
২১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৭:৪৪
200206
গ্রামের পথে পথে লিখেছেন : @ জনাব এলিট,

আপনি বলেছেন : ইসলামে গনতন্ত্র নেই। ভোট দেবার ব্যাবস্থা ও গনতন্ত্র জিনিস নয়। ইসলামিক রাস্ট্রে দেশের মালিক আলাহ।

সহিহ কথা- ইসলামে গনতন্ত্র নেই, ইসলামিক রাস্ট্রে দেশের মালিক আল্লাহ।

আজকের জামানায় মুসলিমরা ফুলেফেপে মাশাল্লা ১.৬ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। তো, এত এত মুসলমানদের জন্য গনতন্ত্রহীন আল্লাহ রাস্ট্র এখন কোনটি? নাকি একটিও নেই। যদি না থেকে থাকে, তাহলে কি আমরা ধরে নিব রাস্ট্র সংক্রান্ত ইসলামের ধারনা নিছক ভ্রান্ত, ছু মন্তর ছু টাইপের কল্পনা বিলাস? উত্তর দিন।
২১ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:০৭
200275
রিদওয়ান বিন ফয়েজ লিখেছেন : এলিট ভাই আপনাকে ধন্যবাদ । আপনার লিংকটি আমি পড়েছি । ভালো লাগল.।
256527
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ১২:০৬
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : ভাই, এমন একটা প্রশ্ন করলেন যার সংক্ষিপ্ত উত্তরের জন্যও কয়েক ভলিউমের বই রচনা করতে হয় Big Grin Big Grin Big Grin

সহজ অর্থে যদি বলা হয়, গনতন্ত্রের মূল দর্শন হলো- by the people, of the people, for the people অর্থাৎ জনগনের দ্বারা, জনগনের প্রতিনিধিত্বে, জনগনের স্বার্থের জন্য সৃষ্ট শাসন ব্যবস্থা। গনতন্ত্রের মূল কনসেপ্ট-এর জনক গ্রীক দার্শনিক ক্লেইসস্থেনেস (খ্রিষ্টপূর্ব ৫৭০-৫০৮ অব্দ)। গনতন্ত্রের প্রথম মন্ত্র দেখে একে নিতান্তই "জনগনের ওকালতি ব্যবস্থা" মনে করতে কারো দ্বিধা থাকে না, কিন্তু পরবর্তীতে মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগের বিশেষজ্ঞদের ঘষামাজার ফলে গনতন্ত্রের বর্তমান যে অবস্থা আমাদের সামনে তা মূলত Democracy ও Republic এর অদ্ভুত একটি খিচুরি। এ বিষয়ে আলোচনা অত্যন্ত দীর্ঘ, খাটো করার বিশেষ কোন উপায় নেই। তবে নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই ছোট আকৃতিতে দেওয়া সম্ভব।

আমি বিশ্বাস করি, যারা সত্যিকার অর্থে ইসলামী মূল্যবোধের রাজনীতি করেন, তারা কিছুতেই গনতন্ত্রে বিশ্বাস করতে পারেন না (ঐ সব বিধানগুলো যা শরীআর নীতিমালার মধ্যে পড়ে সেগুলো তো গ্রহন করা যেতেই পারে, তার জন্যে আবার আলাদা নামের দরকার কি!) আমি একটা কথা বুঝিনা, আমাদের কেন ইসলামী গনতন্ত্রই বলতে হবে? কিছু কিছু ইসলামপন্থী রাজনীতিবিদও ইসলামী গনতন্ত্র জপে মগ্ন। গনতন্ত্রের কথা উঠতেই মানুষের মনে যে দুটি চিত্র ভেষে ওঠে তা হলো (১) ওই by the people মতবাদ আর (২) এখানে জনগনই সকল ক্ষমতার উৎস। এবং নিঃসন্দেহে এ ধরনের চিন্তার ইসলামে কোন স্থান নেই।

ইসলাম নিজেই একটি স্বতন্ত্র পূর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা, যার অন্যতম অংশ শাসন ব্যবস্থা তথা রাষ্ট্র ব্যবস্থা। তো এটাকেই গনতন্ত্রের তকমাটাই লাগাতে হবে কেন!!! এটাকে তো র্নিদ্বিধায় ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা, ইসলামী শাসন ব্যবস্থা ইত্যাদি বলা যেতে পারে, গনতন্ত্রটা এখানে টেনে আনা জরুরী কেন!?
256528
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ১২:০৯
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : ও, একটা কথা যোগ করতে ভূলে গেছি, Republic কিন্তু প্রথম দিকে আলাদা একটা কনসেপ্ট ছিলো, এর আবিস্কারক গ্রীক দার্শনিক প্লেটো (৪২৮-৩৪৮ অব্দ)। Democracy ও Republic এর খিচুড়ি শুরু হয় প্রায় ১৫ শতকের দিকে, যা বর্তমানেও চলমান।
২১ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:১১
200281
রিদওয়ান বিন ফয়েজ লিখেছেন : ধন্যবাদ ..
256552
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ০১:৩৬
মাটিরলাঠি লিখেছেন :
গণতন্ত্রকে মতবাদ হিসাবে গ্রহণ করলে তা হারাম। আর পদ্ধতি হিসাবে গ্রহণ করা যেতে পারে। এটাই বর্তমান যুগের অনেকে ইসলাম বিশেষজ্ঞের মত।

২১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:৫৪
200266
রিদওয়ান বিন ফয়েজ লিখেছেন : ধন্যবাদ.। আপনার সাথে আমিও একমত .।
256561
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ০২:০৭
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : গনতন্ত্র ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম, কারণ আইন দাতা বিধান দাতা এক মাত্র আল্লাহ।
গনতন্ত্রে আল্লাহর আইন মানা হয়না তাই গনতন্ত্র হারাম।

তবে বর্তমান পেক্ষাপট বিবেচনা করলে দেখা যায় মানুষে সমর্থন নিয়ে বেশির ভাগ দেশে আইন প্রচলন আছে। যেহেতু আল্লাহর আইন প্রয়োগ করার সুযোগ নেই ক্ষেত্রে গনতন্ত্রের সুযোগ নিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা করা দোষের কিছু বলে মনে হয়না।
২১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:৫৩
200265
রিদওয়ান বিন ফয়েজ লিখেছেন : ধন্যবাদ আপু । আপনার কথার যুক্তি আছে । জাযাকাল্লাহুল খাইর ।।
256574
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৪:১৫
গ্রামের পথে পথে লিখেছেন : মুমিন পন্ডিতের আস্তানা??
256591
২১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৬:৫৫
গ্রামের পথে পথে লিখেছেন : @ জনাব সাদাচোখ,

১। অন্যদিকে স্টাবলিশড ফ্যাক্টস বলছে - পাশ্চিমা গণতন্ত্রের জন্মই হয়েছে - আল্লাহ বা স্রষ্টার নামে শাসনের অথরিটিকে চ্যালেন্জ করে - মানুষের নামে মানুষকে শাসন করার অলটারনেটিভ বা বিকল্প একটা মেকানিজম হিসাবে।

আসলে কাঁটা বনে কখনো আপেল ফলে না। দিনদিন শুধু কাঁটা বড় হয়। ইসলামের অবস্থাও তাই। পশ্চিমারা কবেই মুসলিম মুল্লুক থেকে গাঠ্ঠি গোল করে চলে গেছে। কিন্তু মুসলিম মুল্লুকে আল্লার ইসলাম আপেল ফলাতে পারেনি। অথচ ২য় মহাযুদ্ধের পারমানবিক বোমার ধ্বংসস্তুপ থেকে আজকের জাপান কোথায় চলে গেছে। জার্মানী, ইটালী, ফ্রান্স, ভিয়েৎনাম, চীন......... আজকে কোথায়? অথচ মুসলিমরা এখনো শয়নে স্বপনে পশ্চিমা ক্লু খুঁজে, দর্জ্জালের আগমন অনুভব করে।
আক্ষেপ, শুধু কথার ফুলঝুড়ি!! ১ম মহাযুদ্ধের ১০০ বছর পরও মুসলিমরা জার্মান, ফ্রান্সের প্যারালাল একটি খেলাফত রাষ্ট্র গঠন করে পশ্চিমাদের দেখাতে পারল না।


২।অথচ আল্লাহর বই ও হাদীস পড়লে এটা পরিষ্কার ই হয় - মুসলিমদের কাজ ই হল আল্লাহর পথে - অন্যায়ের বিরুদ্ধে সামর্থ্যানুযায়ী কনপ্রনটেশানে যাওয়া - এবং এ উছিলায় মরলেই সাকসেস আর বেঁচে থাকলেও রিওয়ার্ড।

হাঁ ভাই, মুসলিমরা এ কাজটি নিপুন ভাবে করছে। সুন্নিরা শিয়া মসজিদে, শিয়ারা সুন্নি মাসজিদে বোমা মেরে ইসমালী রিওয়ার্ড/সাকসেস এর পাহাড় নির্মান করছে বটেই।

এই আজকেও ইরাকে একজন আমেরিকান ফোটো জার্নালিষ্টের কল্লা কাটার ভিডিও রিলিজ করে মুসলিম জেহাদীরা পরকালের রিওর্য়াডের বোঝা আরও মজবুদ করেছে


ধন্যবাদ আপনাকে।
256596
২১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৭:৪৬
গ্রামের পথে পথে লিখেছেন : @ জনাব এলিট,

আপনি বলেছেন : ইসলামে গনতন্ত্র নেই। ভোট দেবার ব্যাবস্থা ও গনতন্ত্র জিনিস নয়। ইসলামিক রাস্ট্রে দেশের মালিক আলাহ।

সহিহ কথা- ইসলামে গনতন্ত্র নেই, ইসলামিক রাস্ট্রে দেশের মালিক আল্লাহ।

আজকের জামানায় মুসলিমরা ফুলেফেপে মাশাল্লা ১.৬ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। তো, এত এত মুসলমানদের জন্য গনতন্ত্রহীন আল্লাহ রাস্ট্র এখন কোনটি? নাকি একটিও নেই। যদি না থেকে থাকে, তাহলে কি আমরা ধরে নিব রাস্ট্র সংক্রান্ত ইসলামের ধারনা নিছক ভ্রান্ত, ছু মন্তর ছু টাইপের কল্পনা বিলাস? উত্তর দিন।
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:৫১
200562
কাজি সাকিব লিখেছেন : এখন কথা হচ্ছে যে ইসলামে গণতন্ত্র রয়েছে কিনা? উত্তর অবশ্যই রয়েছে;ইসলামে গণতন্ত্র,সমাজতন্ত্র এরকম নানা তন্ত্র-মন্ত্রের যেসকল ভালো ভালো ডায়লগ রয়েছে তারই সবই রয়েছে বাস্তবে যেখানে ঐসকল তন্ত্র-মন্ত্রে ঐসবই রয়েছে ডায়লগের মাঝেই সীমাবদ্ধ!যেমন গণতন্ত্রে ডায়লগ রয়েছে যে কারোরই ঐ সমাজে অধিকার রয়েছে সে চাষা-ভুষা,কূলি-মজুর,কালো-ধলো যাই হোক যা আসলে ডায়লগেই রয়েছে কিন্তু ইসলাম সে অধিকার বাস্তবেই দিয়ে দিয়েছে ১৪শত বছর আগেই!এখন এই যে বাস্তবে না হয়ে শুধু ডায়লগবাজিতেই রয়েছে এর দোষতো গণতন্ত্রের নয়,দোষ তাদের যারা একে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে কিন্তু বাস্তব প্রয়োগ ঘটাচ্ছে না ঠিক যেমন তা ঘটতে পারে একজন খলীফার ক্ষেত্রেও যিনি খলীফা অথচ কোরআনের আইন বাস্তবায়ন না করে নিজের খেয়াল খুশি মত দেশ চালাচ্ছেন সেখানেও দোষ ইসলামের নয় বরঞ্চ সেই খলীফার!দোষ তাদের যারা তাদের নীতিমালা তৈরী করার সময় কোরআনকে সামনে রাখছে না,দোষ তাদের যারা তাদের জীবণের সকল কর্মকান্ডের জন্য যে জবাবদিহি করতে হবে তা ভাবছে না যা ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট কিংবা খলিফা উভয়ের দ্বারাই হতে পারে!এবং সে কারণেই সমাজের বহু বিপত্তি যেমন ঘটছে গণতন্ত্র নামধারী প্রেসিডেন্টদের দ্বারা,ঠিক তেমনি ঘটেছে বহু খলীফার দ্বারা,আবার তাই ঘটে যাচ্ছে রাজা-বাদশাহদের দ্বারা!এসকল কিছুর জন্য যেমন দায়ি নয় ইসলাম তেমনি দায়ি নয় গণতন্ত্রও!আমেরিকা যেভাবে দিকে দিকে মুসলিমদের মারছে সে দোষ তাদের ঐ গণতন্ত্রের নয়,সে দোষ তাদের চরিত্রের যা তারা করে আসতেছে আজকের এই ভোটিং সিস্টেম আসার বহুকাল আগে থেকেই!পারভেজ মোশাররফ ওসামা বিন লাদেনকে তুলে দিয়েছে আর মোল্লা ওমর দেয় নাই,মিশরে গণতান্ত্রিকভাবে মুরসী ক্ষমতায় এসেছিল বলেই এমনভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে নামিয়ে দেয়া গিয়েছে,তাহলে আফগানিস্তানে,ইরাকে কি হয়েছিল,কিংবা আজকেই যখন শাম থেকে দামেস্ক পর্যন্ত খিলাফত ঘোষণা করে বসা আইএসআইএল এর উপর আমেরিকা বিমান হামলা চালাচ্ছে তা কেন হবে? শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা গণতান্ত্রিক ছিলেন তাই বাঁচানো গেল না তাহলে ওসামা বিন লাদেনকে কেন বাঁচানো গেল না?আসলে ভাই এর জন্য গণতন্ত্র নামক কোন তন্ত্র-মন্ত্রের দায় নেই,সম্পূর্ণ দায় তাদের দুজনের মাঝের খোদাভীরুতার যে কারণে ইদানীং কালে গণতন্ত্রের বাইরে সৌদী রাজাদেরও দেখি মিশরের ইখওয়ানকে সন্ত্রাসি হিসেবে ঘোষণা করে গণহত্যাকারী সিসির জন্য কোটি কোটি ডলার আর্থিক সাহায্য প্রদান করতে,ইজরাইলীদের বিরুদ্ধে কিছু না বলতে দেখলেও দেখি গাজার পক্ষে মিছিলকে বিদা'ত ফতোয়া দিতে!বিশ্বাস করেন আজকে যদি তাকওয়াবিহীন কোন খলীফাও এ জায়গায় থাকতেন তিনিও তাই করতেন!
আসলে গণতন্ত্রের রয়েছে অনেক রূপ। যেমনঃ
Anticipatory, Athenian, Consensus, Deliberative, Demarchy, Direct, Economic, Grassroots, Illiberal, Inclusive, Liberal, Messianic, Non-partisan, Participatory, Radical, Representative, Representative direct, Republican, Social, Sociocracy, Soviet, Totalitarian....

সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রের একক কোন সংজ্ঞা নেই, একেক জন একেক ধরনের সংজ্ঞা দিয়েছেন।

যারা গণতন্ত্রকে হারাম বলেন তারা শুধু একটি সংজ্ঞাই জানেন, আর তা হল-
“গণতন্ত্র হল জনগণের সরকার, জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত সরকার, এবং জনগণের জন্য গঠিত সরকার”
অতএব, গণতন্ত্র হারাম!
কিন্তু এটাতো শুধু আব্রাহাম লিঙ্কনের (Abraham Lincoln) বক্তব্য।
তিনি তার দুমিনিটকাল স্থায়ী ১৮৬৩ সালের ১৯ নভেম্বরে প্রদত্ত গেটিসবার্গ বক্তৃতায় বলেন :That Government of the people, by the People, for the People, shall not perish from the earth.

আমি যদি বলি সঙ্গীত হারাম না হালাল? কি উত্তর দেবেন?
সঙ্গীতের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা হচ্ছে- "গীত,বাদ্য ও নৃত্যূ - এই তিনটিকে একত্রে সংগীত বলে।" এটা বিভিন্ন সংস্কৃত ভাষার বইতে উল্লেখ করা হয়েছে (গীতং বাদ্যং তথা নৃত্যং ত্রয়ং সঙ্গীতমুচ্যতে)। এই সংজ্ঞামতে সঙ্গীত হারাম। তা যে ধরনেরই হোক।
কিন্তু সঙ্গীতের আরও একটি সংজ্ঞা হচ্ছে - "স্বর ও তালবদ্ধ মনোরঞ্জক রচনাকে বলা হয় সংগীত।" এই সংজ্ঞানুযায়ী শর্তসাপেক্ষে তা হালাল হতে পারে।
তেমনি গণতন্ত্র আব্রাহাম লিঙ্কনের প্রতিষ্ঠিত কোন মতবাদ নয়। ইসলামের যে অংশটুকু গণতন্ত্রের শিক্ষা দেয় তাকে আমরা ইসলামী গণতন্ত্র বলতে পারি। যেমন সঙ্গীতের যে অংশটুকু ইসলামী অনুশাসন লংঘন করে না, তাকে আমরা ইসলামী সঙ্গীত বলতে পারি।

গনতন্ত্র শব্দে জটিলতা পরিহারে এভাবে চিন্তা করা যেতে পারে।
১.বিয়ে অনেক ধর্মে আছে। কিন্তু ইসলামে বিয়ের রুলস আলাদা । বিয়ে অন্য ধর্মে আছে বলে আমরা বিয়ে শব্দটা ইউজ করবনা সেটা সহীহ হতে পারেনা। রুলস ভিন্ন হতে হবে বা ইসলামী হতে হবে।
২. কোন অমুসলিম মুসলিম হলে বডি স্ট্রাকচারে কোন চ্যাঞ্জ হয়না। চিন্তা বিশ্বাস আমলে পরিবর্তন হয়। ঠিক তেমনি গনতন্ত্র শব্দটির প্র্যাকটিসে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক না হলে কোন সমস্যা নাই।
৩. ব্যাংক শব্দটি ইসলামে নাই। সুদ পরিহার করে মুদারাবা , বাইয়ে মুরাবাহা, বাইয়ে সালাম, ইজারা , মুশারিকা পদ্বতি এপ্লাই করে চললে ব্যাংক শব্দটি কোন সমস্যা সৃষ্টি করছেনা।
৪. গনতন্ত্র শব্দটি জেনা, মদ , জুয়া , সুদ , ঘুষ এর মত কোরআন ঘোষিত কোন হারাম শব্দ নয়।
৫. গনতন্ত্র শব্দটি কোন ধর্মের ওয়ার্ডও নয়।
৬. কে ভোটাধিকার পাবে তা ইসলামী কোর্ট নির্ধারন করবে। পরামর্শের বেলায় সাক্ষী(ভোট) দেয়ার অধিকার যদি আপনি সবাইকে দিবেননা বলে মনে করেন।
৭.আর কারা ভোটে প্রার্থী হতে পারবে তা ইসলামী গার্ডিয়ান কাউন্সিল বিবেচনা করে নির্ধারন করে দেবে। ইসলামী যোগ্য প্রার্থীরা নির্বাচিত হবে তাদেরকে সাক্ষী বা পরামর্শ করার যোগ্য মনে করতে হবে। সাধারন ভোটাররা নেতা নির্বাচনের অধিকার পাবে মাত্র। কোন বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার নয়। বড় সিদ্ধান্ত নেবে শুরা বা পার্লামেন্ট।
৮. কোরআন বিরোধী যে কোন আইন তা এমনিতেই বাতিল ঘোষিত হবে যদিও বা তার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত থাকে ।
৯. সকল ক্ষমতার উতস জনগণ নয় বরং আল্লাহ এ কথা লিপিবদ্ধ থাকবে
১০. নাম নয় ...শব্দ নয় কি প্র্যাকটিস করছি বা মানছি তাই আসল বিষয়।
১১. এরপরও কেউ যদি মনে করে গনতন্ত্র নয় অন্য কোন টার্মিনোলজি ব্যবহার করবে তাতেও আমার কোন আপত্তি নেই।
আর জামায়াত গণতন্ত্রকে আদর্শ হিসেবে মানছে না স্রেফ মানজিলে মাকসুদে পৌছাবার সিড়ি হিসেবেই দেখছে!জামায়াতের জন্মলগ্ন থেকেই আদর্শ ঐ কোরআন,ঐ হাদিস তার বাইরে কোন নিজামী,সাঈদী,ওবামা,বুশ,লাদেন নয়!ব্যাপারটা ঠিক এইরকম একজন লোক ট্রেন ষ্টেশনে পৌছেই দেখেন যে ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছে,তিনি তাড়াতাড়ি পকেট থেকে টিকেট বের করে দেখলেন যে তার বগি নাম্বার হচ্ছে "ক' যা ট্রেনের একেবারে শুরুতে রয়েছে,তাই তিনি শেষ বগি "ট' তে উঠে পড়লেন এবং মনে রাখলেন যে তার লক্ষ্য হচ্ছে "ক" বগি!
ঠিক সেই সময়ে আরেকজন লোক তড়িঘড়ি করে ষ্টেশনে ঢুকলেন আর দেখতে পেলেন যে ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে এবং গতি একটু একটু করে বাড়ছে,তিনি তাড়াতাড়ি পকেট থেকে টিকেট বের করে দেখলেন যে তার বগি নাম্বার হচ্ছে "খ',তিনি তখন তার নাগালের চাইতে কিছুটা দূরে থাকা "ট' বগিতে না উঠে ঐ "খ' বগি লক্ষ্য করে দৌড়াতে লাগলেন,আগের সেই ব্যক্তি তাকে বললেন যে "ট' তেই উঠে পড়েন!তিনি বললেন যে না এই বগি আমার জন্য না,এতে উঠা হারাম,হারাম,হারাম!কিছুক্ষণের মাঝেই তার নাগালের মাঝে থাকা ঐ শেষ বগি "ট' ও তাকে ছেড়ে অনেকদুরে চলে গেল!তিনি ঐ ট্রেনই মিস করে ফেললেন আর বিড়বিড় করতে লাগলেন হারাম,হারাম,হারাম!আর আগেই সেই ব্যক্তিটি তখন ব্যস্ত ট্রেনের ভিতরে "ট' বগি থেকে "ক' বগির দিকে আগানোতে!
২২ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৪:২৮
200635
গ্রামের পথে পথে লিখেছেন : @ জনাব সাকিব,

মসজিদের ইমামদের মত কি সব আবলতাবল প্যাচমারা কথা বলছেন!! পশ্চিমা গনতন্ত্র ফেল মেরেছে বলে আল্লার ইসলাম লাড্ডু মারবে ক্যান? কথা বলার সময় তো কম বলেন্না- সরলপথ, সহজপথ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ জীবন বিধান আল্লা আপনাদের দিয়েছেন, পরিপূর্ণ জীবন বিধান দিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ জীবন দিয়েছেন, সর্বশ্রেষ্ঠ মানব মোহাম্মদের জীবনী দিয়েছেন, আলকোরাণের বিজ্ঞান ভান্ডার দিয়েছেন, ফাস্টেড গ্রোইং রিলিজিয়ন অফ দি ওর্য়াল্ড, আরো কত কি!!!! কিন্তু কাজের বেলায় ঠনঠন ক্যান??

অথচ মুসলমারা রোজা, নামাজ, হজ্জ, গোলটুপি, পাগড়ী, আলখাল্লা, বহুবিয়ে, নারীনির্যাতন, কাফের কতল........... সবকিছুতেই ফিটফাট।
১০
256911
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:৫০
কাজি সাকিব লিখেছেন : ১৬৪৮ সালঃবৃটেন স্রষ্টার আইন মানতে অপারগতা জানায়,রাষ্ট্রীয় নীতি থেকে ধর্মকে আলাদা করে,একেবারেই সত্য কথা কিন্তু আসল কথা হচ্ছে তাতো আসলে স্রষ্টার আইন ছিলই না বরঞ্চ ছিল মানব রচিত আইনই যার আসলে কোন মূল্য নেই!ধর্মজাজকেরা নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে তাদের রচিত আইনে শরীয়াহর 'শ'টাও রাখেনি!সুতরাং তাদের অধীন থেকে বের হওয়ার সাথে আসলে শরীয়াহ থেকে বের হওয়ার কোন সম্পর্ক নেই!বরং তা একদল স্বৈরশাসকের হাত থেকে মুক্তির মতই!তবে হ্যাঁ কথা হছে তাতে কি মুক্তি মিলেছে? উত্তরঃঅবস্থার কিছু পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু মুক্তি আসলে মিলেনি,মিলবে কি করে তার পরিবর্তে কোথাও তো আর ইসলামী শরীয়াহ প্রতিষ্ঠিত হয়নি!মূলত যতক্ষণ পর্যন্ত সকল আইনের উতস করআন না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত রাজা বলেন,অথবা বাদশাহই বলেন,কিংবা প্রেসিডেন্ট বলেন অথবা খলীফাই বলেন সব একই!
আর মুসলিম খলীফা টুকটাক যা অবশিষ্ট ছিল হয় কাফেরদের কাছে পরাজিত হয়ে ধ্বংস হয়েছে না হয়তো খেলাফতের নামে রাজতন্ত্রের সূচনা করেছে!ফলাফল লোকে ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচিত করা শুরু করলো যা আমাদের এদিকেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে!শুরুতে সকল আলেমরাই তা বর্জন করলেন!সেই ভোট বর্জনের তথা রাষ্ট্রীয়নীতি বর্জনের ঢেউ লাগলো শিক্ষানীতিতে,অর্থনীতিতে,চিকিতসানীতিতে,বাণিজ্যনীতিতে,সমাজনীতিতে,রাজনীতিতে তো বটেই! ফলাফল হল সমাজের সকল প্রতিষ্ঠানগুলো মুসলিমদের হাতছাড়া হয়ে গেল,সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো চলে গেল বিধর্মী নয়তো মুনাফেকদের হাতে,অর্থনীতি চলে গেল তাদের হাতে,যেই বিজ্ঞানের মূল ছিল মুসলিমেরা আর ইউরোপে ছিল নিষিদ্ধ সেগুলোর হর্তাকর্তাও রাতারাতি হয়ে গেল অমুসলিমেরা!
আর কোরআন হাদীস জানা মুসলিমেরা নিজেদের স্বেচ্ছায় বন্দী করে নিল মসজিদের কোণায়,রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে হয়ে পড়লো বেখবর এবং ফলাফল আজ দেখাই যাচ্ছে সমাজের কোন অংশে কোরআন-হাদীসের জ্ঞ্যান সম্পন্ন লোকেদের অবস্থান নেই বললেই চলে,কোরআন-হাদীস চর্চাকারীদের ভবিষ্যত হয়ে পড়েছে পাড়ায় মিলাদ পড়ানো আর কেউ মারা গেলে কোরআন খতম দেয়া যা দুর্ভাগ্যজনক হলেও সেটাই বাস্তবতা !
ধীরে ধীরে সেক্যুলার শিক্ষানীতির কারণে আর সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ট্রাক ভিন্ন হয়ে যাওয়াতে তৈরী হতে লাগলো শুধু সূরা ফাতেহা আর ১০ সুরা জানা মুসলমান!পরবর্তীতে তৈরী হতে লাগলো শুধু জুমু'আর নামাজ পড়া মুসলমান যারা সূরা ফাতেহার অর্থ জিজ্ঞাসা করলে বলে জানিনা,দুয়ায় কুনু'তের অর্থ জিজ্ঞাসা করলে বলে জানিনা,তাশাহুদের অর্থ কি জিজ্ঞাসা করলে বলে জানিনা,এমনকি অযূর ফরজ কয়টি জিজ্ঞাসা করলে বলে তাও জানিনা!
সমগ্র অর্থনীতি চলে গেল সূদী ব্যবস্থাপনায় যার থেকে বের হওয়ার রাস্তা নেই বললেই চলে,জীবণের কোন না অংশে জড়িয়ে পড়তে হবেই সমাজে বেঁচে থাকতে হলে!
সেই পরিস্থিতিতে বিশ্বের অনেক ইসলামী চিন্তাবিদ আলেমরা সিদ্ধান্ত নিলেন এর থেকে পরিত্রান চাইলে অবশ্যই রাষ্ট্রনীতিতে ঢুকতে হবে তা এখন যেই পদ্ধতিতেই থাকুক না কেন,ঢুকতে হবে শিক্ষানীতিতে,ঢুকতে হবে অর্থনীতিতে!রাসুল সাঃ মক্কায় ইসলাম প্রচার করেছেন কাফের জালিমদের পরিচালিত সমাজ ব্যবস্থার অধীনেই,তাদের দেয়া বিচারের রায় মেনেই ৩ বছর নির্বাসনে থাকতে হয়েছিল যা আজকে কারাগার হয়েছে!তায়েফের ময়দানে রাসুল সাঃ এর দিকে বৃষ্টির মত পাথর ছুড়ে মারা হয়েছে,দান্দাল মুবারক শহীদ হয়েছে কিন্তু বিনিময়ে রাসুল সাঃ একটি ফুলের টোকাও দেননি!সুতরাং পরিবেশ পরিস্থিতির আলোকেই কাজ করতে হবে!
বলেছিলেন যে রাসুল সাঃ কে রাজা হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল তিনি মানেননি,কিন্তু যেটা উল্লেখ করেননি তা হল তার বিনিময়ে রাসুল সাঃ কে আল্লাহর একত্ববাদের প্রচার বাদ দিতে হবে যার মানে হচ্ছে নিজের ব্যক্তিগত জীবণ থেকেই ইসলামকে দূরে সরিয়ে দেয়া,সমাজের প্রশ্নতো বহু পরে!তা রাসুল সাঃ মানেননি! কিন্তু যেখানে নিজের ঈমান আকীদাকে ঠিক রেখে ইসলাম প্রচার করা গিয়েছে সেখানে রাসুল সাঃ কোন কার্পণ্য করেননি যার উদাহরণ হুদাইবিয়ার সন্ধি!
আজো যদি প্রচলিত ব্যবস্থায় রাজনীতি করতে গেলে নিজের জীবণেই শিরকে লিপ্ত হতে হয় তবে সেই রাজনীতি জামায়াত করে নাই,করছে না,ইনশাআল্লাহ করবেও না যার প্রমাণ জামায়াতকে বলা হয়েছিল সকল ক্ষমতার উতস জনগণ এই কথা মেনে নাও কিন্তু জামায়াত মানেনি!জামায়াতকে ক্ষমতার লোভ দেখানো হয়েছে বিনিময়ে ঈকামাতে দ্বীনের দায়িত্ব থেকে দূরে সরে মসজিদের কোণায় বসে জিকির করো সমস্যা নাই,জামায়াত মানেনি,সংসদে মুজিব কিংবা অন্য কারো ছবির সামনে মাথা নত করতে বলা হয়েছিল জামায়াত নেতারা তা করেনি,জামায়াত নেতাদের ফাঁসির কাষ্ঠে নেয়া হচ্ছে ঐ ইসলাম প্রচারের দায়ে,কসাই বানানো হচ্ছে ঐ ইসলামকে প্রতিষ্ঠি করার আন্দোলন করার জন্যেই জামায়াত তাগুতের কাছে মাথা নত করেনি,জামায়াত নেতাদের বলা হচ্ছে প্রাণ ভিক্ষা চাও রাষ্ট্রপতির কাছে,সেদিনের ঘটনা জামায়ত নেতাদের কেউ আজো তা করেনি!
শুধু যা করছে জামায়াত তা হচ্ছে প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার ভিতর থেকেই একটি বিপ্লব ঘটাতে চাচ্ছে যার নাম ইসলামী বিপ্লব!জামায়াতের উদ্দেশ্য কোন গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করা নয়,কোন সমাজতন্ত্র,পুজিবাদ,মুজিববাদকে প্রতিষ্ঠিত করা নয় বরঞ্চ উদ্দেশ্য আল্লাহর সৃষ্ট এ জমিনে আল্লাহর আইনকে প্রতিষ্ঠিত করা যার মাঝেই ঐ গণতন্ত্র,সমাজতন্ত্র হেন তন্ত্র তেন তন্ত্র সকল তন্ত্রের সকল ভালো গুণগুলোই রয়েছে!
১১
256912
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:৫২
কাজি সাকিব লিখেছেন : এখন কথা হচ্ছে যে ইসলামে গণতন্ত্র রয়েছে কিনা? উত্তর অবশ্যই রয়েছে;ইসলামে গণতন্ত্র,সমাজতন্ত্র এরকম নানা তন্ত্র-মন্ত্রের যেসকল ভালো ভালো ডায়লগ রয়েছে তারই সবই রয়েছে বাস্তবে যেখানে ঐসকল তন্ত্র-মন্ত্রে ঐসবই রয়েছে ডায়লগের মাঝেই সীমাবদ্ধ!যেমন গণতন্ত্রে ডায়লগ রয়েছে যে কারোরই ঐ সমাজে অধিকার রয়েছে সে চাষা-ভুষা,কূলি-মজুর,কালো-ধলো যাই হোক যা আসলে ডায়লগেই রয়েছে কিন্তু ইসলাম সে অধিকার বাস্তবেই দিয়ে দিয়েছে ১৪শত বছর আগেই!এখন এই যে বাস্তবে না হয়ে শুধু ডায়লগবাজিতেই রয়েছে এর দোষতো গণতন্ত্রের নয়,দোষ তাদের যারা একে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে কিন্তু বাস্তব প্রয়োগ ঘটাচ্ছে না ঠিক যেমন তা ঘটতে পারে একজন খলীফার ক্ষেত্রেও যিনি খলীফা অথচ কোরআনের আইন বাস্তবায়ন না করে নিজের খেয়াল খুশি মত দেশ চালাচ্ছেন সেখানেও দোষ ইসলামের নয় বরঞ্চ সেই খলীফার!দোষ তাদের যারা তাদের নীতিমালা তৈরী করার সময় কোরআনকে সামনে রাখছে না,দোষ তাদের যারা তাদের জীবণের সকল কর্মকান্ডের জন্য যে জবাবদিহি করতে হবে তা ভাবছে না যা ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট কিংবা খলিফা উভয়ের দ্বারাই হতে পারে!এবং সে কারণেই সমাজের বহু বিপত্তি যেমন ঘটছে গণতন্ত্র নামধারী প্রেসিডেন্টদের দ্বারা,ঠিক তেমনি ঘটেছে বহু খলীফার দ্বারা,আবার তাই ঘটে যাচ্ছে রাজা-বাদশাহদের দ্বারা!এসকল কিছুর জন্য যেমন দায়ি নয় ইসলাম তেমনি দায়ি নয় গণতন্ত্রও!আমেরিকা যেভাবে দিকে দিকে মুসলিমদের মারছে সে দোষ তাদের ঐ গণতন্ত্রের নয়,সে দোষ তাদের চরিত্রের যা তারা করে আসতেছে আজকের এই ভোটিং সিস্টেম আসার বহুকাল আগে থেকেই!পারভেজ মোশাররফ ওসামা বিন লাদেনকে তুলে দিয়েছে আর মোল্লা ওমর দেয় নাই,মিশরে গণতান্ত্রিকভাবে মুরসী ক্ষমতায় এসেছিল বলেই এমনভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে নামিয়ে দেয়া গিয়েছে,তাহলে আফগানিস্তানে,ইরাকে কি হয়েছিল,কিংবা আজকেই যখন শাম থেকে দামেস্ক পর্যন্ত খিলাফত ঘোষণা করে বসা আইএসআইএল এর উপর আমেরিকা বিমান হামলা চালাচ্ছে তা কেন হবে? শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা গণতান্ত্রিক ছিলেন তাই বাঁচানো গেল না তাহলে ওসামা বিন লাদেনকে কেন বাঁচানো গেল না?আসলে ভাই এর জন্য গণতন্ত্র নামক কোন তন্ত্র-মন্ত্রের দায় নেই,সম্পূর্ণ দায় তাদের দুজনের মাঝের খোদাভীরুতার যে কারণে ইদানীং কালে গণতন্ত্রের বাইরে সৌদী রাজাদেরও দেখি মিশরের ইখওয়ানকে সন্ত্রাসি হিসেবে ঘোষণা করে গণহত্যাকারী সিসির জন্য কোটি কোটি ডলার আর্থিক সাহায্য প্রদান করতে,ইজরাইলীদের বিরুদ্ধে কিছু না বলতে দেখলেও দেখি গাজার পক্ষে মিছিলকে বিদা'ত ফতোয়া দিতে!বিশ্বাস করেন আজকে যদি তাকওয়াবিহীন কোন খলীফাও এ জায়গায় থাকতেন তিনিও তাই করতেন!
আসলে গণতন্ত্রের রয়েছে অনেক রূপ। যেমনঃ
Anticipatory, Athenian, Consensus, Deliberative, Demarchy, Direct, Economic, Grassroots, Illiberal, Inclusive, Liberal, Messianic, Non-partisan, Participatory, Radical, Representative, Representative direct, Republican, Social, Sociocracy, Soviet, Totalitarian....

সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রের একক কোন সংজ্ঞা নেই, একেক জন একেক ধরনের সংজ্ঞা দিয়েছেন।

যারা গণতন্ত্রকে হারাম বলেন তারা শুধু একটি সংজ্ঞাই জানেন, আর তা হল-
“গণতন্ত্র হল জনগণের সরকার, জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত সরকার, এবং জনগণের জন্য গঠিত সরকার”
অতএব, গণতন্ত্র হারাম!
কিন্তু এটাতো শুধু আব্রাহাম লিঙ্কনের (Abraham Lincoln) বক্তব্য।
তিনি তার দুমিনিটকাল স্থায়ী ১৮৬৩ সালের ১৯ নভেম্বরে প্রদত্ত গেটিসবার্গ বক্তৃতায় বলেন :That Government of the people, by the People, for the People, shall not perish from the earth.

আমি যদি বলি সঙ্গীত হারাম না হালাল? কি উত্তর দেবেন?
সঙ্গীতের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা হচ্ছে- "গীত,বাদ্য ও নৃত্যূ - এই তিনটিকে একত্রে সংগীত বলে।" এটা বিভিন্ন সংস্কৃত ভাষার বইতে উল্লেখ করা হয়েছে (গীতং বাদ্যং তথা নৃত্যং ত্রয়ং সঙ্গীতমুচ্যতে)। এই সংজ্ঞামতে সঙ্গীত হারাম। তা যে ধরনেরই হোক।
কিন্তু সঙ্গীতের আরও একটি সংজ্ঞা হচ্ছে - "স্বর ও তালবদ্ধ মনোরঞ্জক রচনাকে বলা হয় সংগীত।" এই সংজ্ঞানুযায়ী শর্তসাপেক্ষে তা হালাল হতে পারে।
তেমনি গণতন্ত্র আব্রাহাম লিঙ্কনের প্রতিষ্ঠিত কোন মতবাদ নয়। ইসলামের যে অংশটুকু গণতন্ত্রের শিক্ষা দেয় তাকে আমরা ইসলামী গণতন্ত্র বলতে পারি। যেমন সঙ্গীতের যে অংশটুকু ইসলামী অনুশাসন লংঘন করে না, তাকে আমরা ইসলামী সঙ্গীত বলতে পারি।

গনতন্ত্র শব্দে জটিলতা পরিহারে এভাবে চিন্তা করা যেতে পারে।
১.বিয়ে অনেক ধর্মে আছে। কিন্তু ইসলামে বিয়ের রুলস আলাদা । বিয়ে অন্য ধর্মে আছে বলে আমরা বিয়ে শব্দটা ইউজ করবনা সেটা সহীহ হতে পারেনা। রুলস ভিন্ন হতে হবে বা ইসলামী হতে হবে।
২. কোন অমুসলিম মুসলিম হলে বডি স্ট্রাকচারে কোন চ্যাঞ্জ হয়না। চিন্তা বিশ্বাস আমলে পরিবর্তন হয়। ঠিক তেমনি গনতন্ত্র শব্দটির প্র্যাকটিসে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক না হলে কোন সমস্যা নাই।
৩. ব্যাংক শব্দটি ইসলামে নাই। সুদ পরিহার করে মুদারাবা , বাইয়ে মুরাবাহা, বাইয়ে সালাম, ইজারা , মুশারিকা পদ্বতি এপ্লাই করে চললে ব্যাংক শব্দটি কোন সমস্যা সৃষ্টি করছেনা।
৪. গনতন্ত্র শব্দটি জেনা, মদ , জুয়া , সুদ , ঘুষ এর মত কোরআন ঘোষিত কোন হারাম শব্দ নয়।
৫. গনতন্ত্র শব্দটি কোন ধর্মের ওয়ার্ডও নয়।
৬. কে ভোটাধিকার পাবে তা ইসলামী কোর্ট নির্ধারন করবে। পরামর্শের বেলায় সাক্ষী(ভোট) দেয়ার অধিকার যদি আপনি সবাইকে দিবেননা বলে মনে করেন।
৭.আর কারা ভোটে প্রার্থী হতে পারবে তা ইসলামী গার্ডিয়ান কাউন্সিল বিবেচনা করে নির্ধারন করে দেবে। ইসলামী যোগ্য প্রার্থীরা নির্বাচিত হবে তাদেরকে সাক্ষী বা পরামর্শ করার যোগ্য মনে করতে হবে। সাধারন ভোটাররা নেতা নির্বাচনের অধিকার পাবে মাত্র। কোন বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার নয়। বড় সিদ্ধান্ত নেবে শুরা বা পার্লামেন্ট।
৮. কোরআন বিরোধী যে কোন আইন তা এমনিতেই বাতিল ঘোষিত হবে যদিও বা তার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত থাকে ।
৯. সকল ক্ষমতার উতস জনগণ নয় বরং আল্লাহ এ কথা লিপিবদ্ধ থাকবে
১০. নাম নয় ...শব্দ নয় কি প্র্যাকটিস করছি বা মানছি তাই আসল বিষয়।
১১. এরপরও কেউ যদি মনে করে গনতন্ত্র নয় অন্য কোন টার্মিনোলজি ব্যবহার করবে তাতেও আমার কোন আপত্তি নেই।
আর জামায়াত গণতন্ত্রকে আদর্শ হিসেবে মানছে না স্রেফ মানজিলে মাকসুদে পৌছাবার সিড়ি হিসেবেই দেখছে!জামায়াতের জন্মলগ্ন থেকেই আদর্শ ঐ কোরআন,ঐ হাদিস তার বাইরে কোন নিজামী,সাঈদী,ওবামা,বুশ,লাদেন নয়!ব্যাপারটা ঠিক এইরকম একজন লোক ট্রেন ষ্টেশনে পৌছেই দেখেন যে ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছে,তিনি তাড়াতাড়ি পকেট থেকে টিকেট বের করে দেখলেন যে তার বগি নাম্বার হচ্ছে "ক' যা ট্রেনের একেবারে শুরুতে রয়েছে,তাই তিনি শেষ বগি "ট' তে উঠে পড়লেন এবং মনে রাখলেন যে তার লক্ষ্য হচ্ছে "ক" বগি!
ঠিক সেই সময়ে আরেকজন লোক তড়িঘড়ি করে ষ্টেশনে ঢুকলেন আর দেখতে পেলেন যে ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে এবং গতি একটু একটু করে বাড়ছে,তিনি তাড়াতাড়ি পকেট থেকে টিকেট বের করে দেখলেন যে তার বগি নাম্বার হচ্ছে "খ',তিনি তখন তার নাগালের চাইতে কিছুটা দূরে থাকা "ট' বগিতে না উঠে ঐ "খ' বগি লক্ষ্য করে দৌড়াতে লাগলেন,আগের সেই ব্যক্তি তাকে বললেন যে "ট' তেই উঠে পড়েন!তিনি বললেন যে না এই বগি আমার জন্য না,এতে উঠা হারাম,হারাম,হারাম!কিছুক্ষণের মাঝেই তার নাগালের মাঝে থাকা ঐ শেষ বগি "ট' ও তাকে ছেড়ে অনেকদুরে চলে গেল!তিনি ঐ ট্রেনই মিস করে ফেললেন আর বিড়বিড় করতে লাগলেন হারাম,হারাম,হারাম!আর আগেই সেই ব্যক্তিটি তখন ব্যস্ত ট্রেনের ভিতরে "ট' বগি থেকে "ক' বগির দিকে আগানোতে!
২২ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:৪৯
200734
রিদওয়ান বিন ফয়েজ লিখেছেন : কাজী সাকিব ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ । আল্লাহ আপনাকে উত্তম যাযা দান করুক । আমার কাছে আপনা যুক্তি গুলো অনেক ভালো লাগল।
১২
256916
২২ আগস্ট ২০১৪ রাত ১২:০৭
ইমরান ভাই লিখেছেন : মাওলানা মওদুদি সাহেব গঠনতন্ত্র কে
কুফর শির্ক বলতেন। যারা ভোট দিতো তাদের দল থেকে বের করে দিতেন। অথচ অনেকে এখন গঠনতন্ত্র কে প্রমান করার জন্য লেগে পরছে। হায় কই যাই।
২২ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:৫০
200735
রিদওয়ান বিন ফয়েজ লিখেছেন : ইমরান ভাই যে আবার নতুন কথা শুনাইলেন বুঝলামনা । ধন্যবাদ .।
২২ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০২:১২
200746
ইমরান ভাই লিখেছেন : জি যারা গনতন্ত্রকে হালাল বানাতে চাচ্ছে তাদের সম্মানিত আলেমই গনতন্ত্র বিরোধী ছিলেন শুধু বিরোধী বললে ভুল হবে ঘোড় বিরোধী ছিলেন। Happy
২২ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১২
200833
কাজি সাকিব লিখেছেন : আমার আগের কমেন্টটাতেই আমি লিখেছি শুরুতে সকলেই এর বিরোধী ছিলেন,কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেল যে গণতন্ত্রের ভিতর থেকেই তার দোষগুলোকে বর্জন করে ভালোগুলোকে কাজে লাগিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজে এগিয়ে না গেলে ইসলামের নাম-নিশানা মুছে ফেলার ইয়াহুদী-নাসারাদের যে ষড়যন্ত্র তাই আরো ব্যাপকতর হচ্ছে অনেকটা খেলায় কোন দল ওয়াকয়াউট করলে যেমন বিপক্ষ দক আরো খুশি হয় তেমনি!তারই পরিপ্রেক্ষিতে অধিকাংশ আলেমই পরবর্তীতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েই ইসলাম প্রতিষ্ঠায় ভুমিকা রাখার চেষ্টা করেছেন যেই মিছিলে রয়েছেন মাওলানা মওদুদী রহঃ থেকে শুরু করে মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহঃ,শ্রদ্ধেয় হাফেজ্জী হুজুর,শাইখুল হাদীস আল্লাম আজিজুল হক সহ বহু শীর্ষস্থানীয় আলেমগণ!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File