একজন মুসলমান যেভাবে আল্লাহ'র কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে

লিখেছেন লিখেছেন ইমরান বিন আনোয়ার ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৭:৫৬:৩০ সন্ধ্যা



সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়া'লার, যিনি আমাদেরকে ইসলামের নেয়ামতে সৌভাগ্যবান করেছেন। দরূদ ও সালাম সে মহামানবের প্রতি, যাকে প্রেরণ করা হয়েছে আমাদের সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা হিসেবে। তিনি পুরো মানব জাতির জন্যই এক জাজ্বল্যমান আলোকবর্তিকা। তাঁর পরিবার, সাথীবর্গ, এবং কেয়ামত পর্যন্ত তাঁদের অনুসারীদের প্রতি রইল শ্রদ্ধা ও শান্তি কামনা। অতঃপরঃ-

একজন মুসলমানের জীবন এজন্য শ্রেষ্ঠ যে তা সবসময় সৎ কাজ ও ধর্মীয় অনুশাসনে ভরপুর থাকে। সে আল্লাহ’কে ভয় করে এবং তাঁর খোদাভীরুতা তাঁকে বিরতিহীন ইবাদাতে মগ্ন করে দেয়। সত্য কথা বলা, ভালো কাজ করা, এবং আল্লাহ ‘জাল্লা উলাহ’র প্রতি গভীর ভালবাসার সাধনায় সে নিবেদিত হয়। এই নিবেদনে কোনও দুঃখ-কষ্ট, বিরাগ অথবা অভিমান থাকেনা। মোটকথা হল, একজন মুসলমানের জীবন পুরোটাই আল্লাহ’র ইবাদাত, আনুগত্য, এবং আল্লাহ’র ‘নৈকট্য লাভ করিয়ে দেয়’ এমন ভালো কাজে ব্যপ্ত হয়। যে-কাজে শ্রষ্ঠার সাথে আত্মার মেলবন্ধন ঘটে, জীবনের প্রতিটি অনুভাগে সে কাজের অনুশীলন একজন মুসলিমকে আরো পরিশীলিত করে তুলে।

প্রকৃত মুসলমানের জীবন কখনো ইবাদাত থেকে বিচ্যুত হয়না। এতে করে তাঁর জন্য একটি সৃজনশীল জীবন-পদ্ধতির আবির্ভাব ঘটে। উদাহরণস্বরূপ, দিনে-রাতে পাঁচবেলা নামাজ। এরমাঝে আবার সপ্তাহে একদিন জুমা’র নামাজ, পুরো বছরে একটি রোজার মাস, এর অনুগামী হয়ে শাওয়ালের ছয়টি মুস্তাহাব রোজা, প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজা, মাসের তিনটি মুস্তাহাব রোজা, তারপর আসে জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের ইবাদাত। এভাবে সৎ কাজ ও সুন্দর চরিত্রের বিনিময়ে একজন মুসলিম আল্লাহ’র নিকট প্রিয় হয়ে ওঠে।

এখানেই শেষ নয়। আছে পবিত্র হজ ও কুরবানির সৌন্দর্য। ওমরা পালন, হজ আদায়কারী ব্যতিত অন্যদের আরাফাহ’র দিনে রোজা রাখা, পবিত্র আশুরার দিনে ও এর আগে-পরে মোট দুটি রোজা পালন, বিত্তবান ও সম্পদশালীদের জন্য যাকাতের বাধ্যবাধকতা, অসহায়দের সাহায্য করা ও মানুষের সাথে সদয় আচরণ, বেশি বেশি নফল ইবাদাত, ভালো কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ; এসবই একজন মুসলমানের জীবনের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে থাকে। আর মানবতা ও ভালোবাসার ছবি প্রতিবিম্ব হয় তাঁর বিনীত অবয়বে। ফলে একজন প্রকৃত মুসলিম অবধারিতভাবে তাঁর সমাজ ও পরিবেশের জন্য হিতৈষী বনে যায়। সাথে তাঁর স্রষ্টারও ভালোবাসা লাভ করে। তবে এটা কোনও নিষ্ফল অথবা গতিহীন জীবনবোধ থেকে নয়, বরং আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “ যখনই অবসর পাও, কঠোর শ্রমে লেগে যাও” । (সুরা আল-শারহ, আয়াতঃ ৭) । তাই ভালো কাজের অনুশীলন একজন মুসলিমকে করতেই হয়।

মুসলমানের জীবনে কিছু বাৎসরিক উৎসব ও ধর্মীয় অনুপ্রেরনা রয়েছে। সেগুলোকে বেশ গুরুত্ব ও যত্নের সাথে পালন করা উচিৎ এবং এ সময়ে অপরিমিতভাবে ভালো কাজ ও শুভ রীতিনীতির চর্চা করা জরুরি। এগুলো তাঁর বৈষয়িক জীবনকেও রাঙ্গিয়ে দেবে এবং তাঁকে একটি দৃঢ় সত্যাশ্রয়ী হৃদয়ের অধিকারী বানাবে। আল্লাহ তো বলেছেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে যে সবচেয়ে বেশি তাকওয়ার অধিকারী, আল্লাহ’র কাছে সে-ই সবচেয়ে বেশি মর্যাদাবান”। তাই বলা যায়, তাকওয়া ও ইবাদাতের একনিষ্ঠ সংমিশ্রণে একজন মুসলিম আল্লাহ’র সবচেয়ে প্রিয়পাত্র হয়।

বিষয়: বিবিধ

১২৫১ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

342532
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:১৯
আবু জান্নাত লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া। জাযাকাল্লাহ খাইর
342548
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:০২
ইমরান বিন আনোয়ার লিখেছেন : ওয়াআলাকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। আপনার ধন্যবাদ সাদরে গ্রহণ করছি। দোয়ার আবেদন রইল।
342567
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১০:৫২
বিনো৬৯ লিখেছেন : বেশ সাজানো গোছানো একটি লেখা। তারচেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ এর তথ্যগুলো। আপনার লেখাগুলো পড়তে ভালো লাগে। অনেক উৎসাহব্যঞ্জক একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
342569
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১০:৫৪
ইমরান বিন আনোয়ার লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকেও। আপনার প্রশংসা আমাকে প্রেরণা দিয়েছে। দোয়া করবেন, যেন নিয়মিত লিখে যেতে পারি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File