আরাকান আর্মি ও আরাকান লিবারেশন পার্টি; ইঁদুরের হাস্যকর লাফালাফি
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান বিন আনোয়ার ২৭ আগস্ট, ২০১৫, ০৪:১২:২৬ বিকাল
ওদেরকে বলা হচ্ছে 'আরাকান আর্মি' ও 'আরাকান লিবারেশন পার্টি'। আমার ভয় হচ্ছে, আরাকান নামটি শোনামাত্রই কিছু ধর্মাবেগী মানুষের মনে এই সন্ত্রাসীদের জন্য 'মায়া' জেগে ওঠতে পারে! যদিও দেশপ্রেমের চাহিদা হল, দেশের স্বার্থ রক্ষা ও সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখতে যে কোনও শত্রু দলকে পরাজিত করতে হবে এবং দেশের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় যে কোনও আক্রমণকারী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আমাদের সমুচিত জবাব দিতে হবে। হ্যা, এটিই হবে বুদ্ধিমানের কাজ! এবার আসি মূল প্রসঙ্গে।
যাদেরকে বলা হচ্ছে 'আরাকান আর্মি' ও 'আরাকান লিবারেশন পার্টি'- এরা আসলে কারা?
আরাকান আর্মি বা সংক্ষেপে এএ হচ্ছে বৌদ্ধ উগ্রবাদীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। যদিও সংগঠনটি আরাকান রাজ্যের বিদ্রোহীদের নিয়ে গঠিত, তবে তারা বার্মার কাচিন রাজ্যে যুদ্ধরত। এরা কাচিন রাজ্যের অন্যান্য বিদ্রোহীদের সাথে যুক্ত হয়ে মায়ানমারের সরকারি (সামরিক) বাহিনীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত। এদের সংখ্যা বেশি নয়, সর্বসাকুল্যে ৪০০ থেকে ৫০০!
দ্বিতীয়ত, আরাকান লিবারেশন পার্টি (এএলপি):
আরাকান আর্মির মত এ সংগঠনটিও বৌদ্ধ উগ্রবাদীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিদ্রোহী গ্রুপ। এরা দেশটির কারেন প্রদেশ ও রাখাইন প্রদেশে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে। এ সংগঠনটির সদস্য সংখ্যা ২ হাজারের আশেপাশে।
একটি 'পাঁচশ সদস্য বিশিষ্ট' কিংবা 'দুই হাজার যোদ্ধা' নিয়ে গঠিত বিদ্রোহী দল নিজের দেশ বাদ দিয়ে হঠাৎ বাংলাদেশের মত একটি স্বাধীন ও সামরিকভাবে শক্তিশালী দেশের ভিতরে আক্রমণ করে বসবে, এ কথাটি গাঁজাখোর মিডিয়াকর্মী ছাড়া আর কারো বিশ্বাস করার উপায় নেই। কেউ বিশ্বাস করলে সে-ও ওই পাগলদের দলেই অন্তর্ভুক্ত হবে! যতটুকু ধারণা করা যায়, এরা ছিল মূলত মায়ানমারেরই সীমান্তরক্ষী বাহিনী, কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনীর সহায়তায় এরা বাংলাদেশের সামরিক শক্তিকে একটু বাজিয়ে দেখতে চেয়েছিল। নাহলে যে বিদ্রোহী দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে সরকারী বাহিনীর সাথে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে, তাদেরকে সুযোগ পেয়েও কেন মায়ানমার সরকার আটক করেনি? যাই হোক, আমাদের সৌভাগ্য, বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক বীর সেনাবাহিনী ওই সন্ত্রাসীদেরকে কুকুরের মত তাড়িয়ে দিতে পেরেছে। বিপরীতে দুর্ভাগ্য হল, বরাবরের মত মিডিয়ার 'সান অভ বিচেরা' নিজেদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ না হয় এমন সব খবর প্রচার করে যাচ্ছে। বিজিবি বা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যদিও বর্তমানে বিতর্কিত অবস্থানে রয়েছে, তবু তাদের পরিচালিত এই শক্তিশালী অভিযানকে সশ্রদ্ধ সমর্থন জানাই।
লেখার শেষে উল্লেখযোগ্য একটি তথ্য যোগ করতে চাই, সেটি হল; আরকান আর্মি ও আরাকান লিবারেশ পার্টি রাখাইন (আরাকান) স্টেটে রোহিঙ্গা মুসলিমদের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না। এ সংগঠন দুটি খুব কঠিনভাবে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন চালায়। শুধু নির্যাতন করেই তারা ক্ষান্ত হয় না, রোহিঙ্গা মুসলিমদের ধরে ধরে তারা থ্যাইল্যান্ডে নিয়ে পশুর মত বিক্রি করে দেয়। তাই এদের প্রতি যেন নিজের অজ্ঞাতসারেই কারো দরদ উথলে না উঠে সে ব্যপারে কঠোর সতর্কবার্তা জানিয়ে রাখলাম।
বিষয়: বিবিধ
১৬২০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন