মাজহাব মানা বা না মানা ঝগড়ার বিষয় নয়
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান বিন আনোয়ার ২৮ মার্চ, ২০১৫, ০৯:৪০:৩৪ রাত
ব্যক্তিগতভাবে আমি হানাফি মাজহাবের অনুসারী। অনেক বিপরীত যুক্তি গ্রহণ করেও মাজহাব অনুসরণের ব্যপারে আমার অভিমতটি হল, এটি না মানার চেয়ে মানাটাই শ্রেয়। অবশ্য কেউ যদি মাজহাব না-ই মানতে চান, সেজন্য তাকে ফাসিক অথবা কাফির বলে দেওয়াটা চূড়ান্ত বোকামি। আমি সবসময় যে ধারণাটি পোষণ করি তা হল, আমাদের চার ইমামের প্রত্যেকেই সত্য অনুসন্ধানে সর্বোচ্চ প্রয়াস চালিয়ে গেছেন। তাদের নিষ্ঠা, ফিকহী মাসআলা অনুসন্ধানে তাঁদের অপরিসীম ত্যাগ ও দ্বীনকে মানুষের সামনে সঠিকভাবে উপস্থাপনের জন্য তাঁদের নিঃস্বার্থ অধ্যাবসায়; এর সবকিছুই জগতের মানুষের জন্য অতুলনীয় দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। ফলে তাদের যে কোনো একজনকে অনুসরণ করলেই দ্বীনে ইসলামকে যথাযথভাবে বুঝার তৌফীক লাভ হবে বলে ধারণা করা যায়। আল্লাহ ইয়াহদীনা।
তবে নির্দিষ্টভাবে তাঁদের কেউ একজনকে না মানলে, অথবা নিজের অনুসরণীয় মনীষীর একটি 'দুর্বল' যুক্তিকে সবল বলে প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে আমি লজ্জিত হয়ে যাব- এমন ধারণা একেবারেই অমূলক। উপমহাদেশে বসবাসকারী মুসলিমেরা সাধারণত ইমাম আবু হানিফা রাহঃ এর অনুসরণ করেন। আরব বিশ্বে অন্যান্য ইমামদের অনুসারী বেশি বলে প্রমাণিত। আর কিছু ভাই আছেন যারা কোনো মাজহাব অনুসরণেরই পক্ষে নন। আমার সাধারণ আকুতি হল, আপনি মাজহাব মানুন অথবা না-ই মানুন, এটা নিয়ে বাদানুবাদ করার প্রয়োজন নেই।
ইসলামে আরো হাজারটা বিষয় আছে যা নিয়ে আপনি আপনার 'প্রখর মেধা' ব্যয় করতে পারেন। অযথা 'রাফয়ে ইয়াদাইন', তারাবীর নামাজ কত রাকাত- এসব নিয়ে নিজেদের মাঝে ফ্যাসাদ লাগাবেন না। বেতরের নামাজ এক সালামে নাকি দুই সালামে পড়বেন- তা নিয়েও আপনার যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার দরকার নেই। আপনার আশেপাশের কোনো নির্ভরযোগ্য আলেমকে জিজ্ঞাসা করে তার সিদ্ধান্তটি মেনে নিন। অথবা আপনার যদি সত্যিকারের 'মুজতাহিদ' হওয়ার যোগ্যতা থাকে, তো সেটিকেও কাজে লাগান। ব্যস, এই তো! মাজহাব না মানলে ফাসিক, কাফির; অথবা 'সহীহ হাদিস' ছাড়া কিচ্ছু বুঝিনা- এসব বলে নিজের গোঁড়ামিকে কেন প্রশ্রয় দিবেন? ইসলামকে বিজয়ী করতে এসবের কোনো প্রয়োজন নেই।... চলবে
বিষয়: বিবিধ
১০২০ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বর্তমান মুসলিম সমাজে দেখা যায় নিজের মতআদর্শ প্রতিষ্টিত করার জন্য প্রতিযোগিতার পর প্রতিযোগিতা....!! কোনটা সত্য সেটা দেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনা। যদিও ইসলাম ধর্মে সত্যের পরে আর কিছুই নেই।
সত্য এলে মিথ্যা বিতাড়িত কিন্তু সুবিধা বাদীরা সত্য মানতে নারাজ।
২. নামাজের শুরুতে কি নিয়ত পড়া লাগবে ?
৩. তাক্ববীর বলার পর হাত বাঁধা কি ম্যান্ডেটরি ? কোথায় বাঁধবে - বুকের সাথে না কি নাভির সাথে ?
৪. দাড়িয়ে সূরা পড়ার সময় , রুকুর সময় , দুই সিজদার মাঝখানে এবং বৈঠকে দৃষ্টি কোথায় কোথায় রাখবো ?
৫. বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু , দরুদে ইব্রাহীম - এ দুটোই কি পড়তে হবে ? দোয়ায়ে মাসূরা পড়ি দরুদে ইব্রাহীম এর পর - ঠিক আছে কি ?
৬. আত্তাহিয়্যাতু পড়ার শেষ সময় যখন ''আশহাদু আল্লাহ ইলাহা ইল্লাল্লাহু....'' বলা হয় তখন ডান হাতের তর্জনী উঠানোর নিয়ম আছে - সেটা কি সেই লাইন শেষ করা পর্যন্ত তুলে ধরবো ?
৭. জামায়াতে যখন নামাজ পড়ি তখন ৪ রাকাত ফরযের শেষের দুই রাকাতে শুধু সূরা ফাতেহা পড়েই রুকুতে যাওয়া হয় । তবে ১ম দুই রাকাতে সূরা ফাতেহা পড়তে যে সময় লাগে ঈমাম সাহেবের ৩য় ও বা ৪র্থ রাকাতে তার চেয়ে সময় বেশ কম লাগে । ব্যাপারটা জানতে ইচ্ছে করছে ।
৮. কোন কারণে যদি ফজরের ফরয পড়ার আগে সুন্নত পড়তে না পারা যায় তাহলে সেটা নাকি সূর্য ওঠার ২৩ মিনিট পরে পড়তে হয় ?
সূর্য ওঠার ২৩ মিনিট পর না পড়তে পারা ফজর নামাজ পড়ার যে কথা চালু আছে সেটা কি ঠিক ? এই ২৩ মিনিটের কথা কেন এসেছে ?
৫ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে ফজরের নামাজ কাযা হয়ে যাবার খুব সম্ভাবনা থাকে কারণ এসময়ে মানুষ ঘুমে অচেতন থাকে । যতটুকু জানি যে যদি এমন হয়ে যায় তাহলে ঘুম থেকে উঠে প্রাকৃতিক কাজ সারবার পর প্রথমেই ফজরের নামাজ পড়ে ফেলতে হয় । ঠিক কি ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন