চলো ঈমান বাড়াই গল্প শুনে

লিখেছেন লিখেছেন ইমরান বিন আনোয়ার ০৯ জানুয়ারি, ২০১৫, ১২:৩৫:২৫ দুপুর

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়া'লা বলেন, "নিশ্চই মুমিনদের কাছে যখন আল্লাহ'র আলোচনা করা হয়, তখন তাদের হৃদয় প্রফুল্ল হয়ে উঠে। আর যখন তাদের কাছে আল্লাহ'র পবিত্র আয়াত পাঠ করা হয়- তখন তাদের অন্তরে ঈমান বেড়ে যায়। আর তারা আল্লাহ'র ওপর ভরসা করে।"

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা, রাদিয়াল্লাহু আনহু, তাঁর সাথীদের একজনের হাত ধরে বলতেন, "চল আমরা কিছু সময় ঈমান নিয়ে আলোচনা করি। চলো আমরা আল্লাহ'র আলোচনা করি এবং তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে ঈমান বৃদ্ধি করি। হয়ত তিনি আমাদেরকে তাঁর ক্ষমার অনুগ্রহে স্মরণ করবেন।"

গল্পঃ

অনেক দিন আগের কথা নয়। এটা সব যামানারই কথা! কোনো এক মুসলিম দেশে মুসলমান পণ্ডিতদেরকে একজন নাস্তিক চ্যালেঞ্জ করে বসল। বলল যে, 'এই মহাজগতে আল্লাহ বলে কেউ নেই'! তার কথায় আলিমগণ স্তম্ভিত! তবু এই কথার যুক্তিপূর্ণ জবাব এবং দ্ব্যর্থহীন প্রতিবাদ জানাতে সেদেশের আলিমগণ -তাদের মাঝে যিনি সবচেয়ে বুদ্ধিমান ছিলেন- তাঁকে নির্বাচিত করলেন। সর্বোপরি ওই অবিশ্বাসী নাস্তিকের সঙ্গে বিতর্কের জন্য সবাই মিলে একটি সময়ও নির্ধারণ করলেন। খুব দ্রুতই সে দিনটি চলে এল। নির্দিষ্ট সময়ে, নির্ধারিত মঞ্চে সবাই সেই আলিমের জন্য অধীর হয়ে অপেক্ষা করছেন। অথচ তিনি আসছেননা। বিলম্ব করছিলেন। তাই সুযোগ পেয়ে ওই নাস্তিক বলে উঠল, 'আরে, তোমাদের পণ্ডিত আমাকে ভয় পেয়ে পালিয়ে গেছে। কারণ সে বুঝে গেছে, আজকে আমিই জয়ী হব আর একথা প্রমাণ করে দিব যে, এই মহাজগত নিজে নিজেই সৃষ্টি হয়েছে। এর কোনো প্রভু বা সৃষ্টিকর্তা নেই!' নাস্তিক যখন এসব কথা বলছিল ঠিক সেসময়েই ওই বিজ্ঞ আলিম সবার মাঝে উপস্থিত হলেন। তিনি নিজের বিলম্বের জন্য সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। একটু জিরিয়ে নিয়ে তিনি বলতে শুরু করলেন, 'সত্যি বলতে কী, এখানে আমার আসার জন্য পথে একটি নদী পড়ে। কিন্তু আজ নদী পার হওয়ার জন্য আমি কোনো নৌকা খুঁজে পাইনি। ফুলে নদী-তীরে বেশ অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হল। হঠাৎ দেখি, নদীতে কিছু কাঠের টুকরো ভেসে উঠেছে এবং সেগুলো নিজে নিজেই দ্রুত শৃঙ্খলার সাথে পরস্পরে জোড়া লেগে একটি নৌকা তৈরি হয়ে গেছে! তারপর আবার সেই নৌকাটি চালকবিহীন অবস্থায় আমার কাছেও এসে ভিড়েছে। আমি সেই নৌকাতে চড়েই আপনাদের কাছে আসলাম।' মহামান্য পণ্ডিত মহোদয়ের এমন অদ্ভুত কথাবার্তা শুনে ওই নাস্তিকটি চেঁচিয়ে উঠল। বলল, 'নিশ্চয় এ ব্যক্তি পাগল হয়েগেছে। নইলে কোনো মিস্ত্রির তৈরি ছাড়া কয়েকটি কাঠের টুকরো কিভাবে একত্রিত হয়ে নিজেরাই নৌকা-রূপ ধারন করে? আর কিভাবেই বা সেটি কোনো চালকের সাহায্য ছাড়া নিজে নিজে চলতে পারে? নাস্তিকের এই কথায় ওই বিদ্বান ব্যক্তি হেসে উঠলেন। বললেন, 'তাহলে তুমি কিভাবে বল যে, এত বড় মহা সৃষ্টিজগত কোনো প্রভূ ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে?

উপদেশ ও উপসংহার। নাস্তিক ও আল্লাহ বিরোধীরা সবসময় ইসলাম ও আল্লাহ বিশ্বাসীদের অপমানে লালায়িত থাকে। রাস্তার পাগলের মত এরা আল্লাহ বিশ্বাসী দেখলেই আজেবাজে চেঁচিয়ে যায়। তাই এদের মাতাল কথাবার্তায় কান না দিয়ে শুধুমাত্র নিজের ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতি আমাদের মনোনিবেশ করা উচিৎ। আল্লাহ সবাইকে শক্তি দান করুন।

বিষয়: বিবিধ

১২৭০ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

299924
০৯ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:০৭
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : চমৎকার এবং শিক্ষণীয় গল্পটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। যাজাকাল্লাহ Praying
০৯ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:২০
242769
ইমরান বিন আনোয়ার লিখেছেন : বারাকিল্লাহু ফীক। গল্পটি পড়েছেন বলে অসংখ্য ধন্যবাদ। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে দৃঢ় করে দিন। আমিন।
299926
০৯ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:১২
জোনাকি লিখেছেন : " রাস্তার পাগলের মত এরা আল্লাহ বিশ্বাসী দেখলেই আজেবাজে চেঁচিয়ে যায়। তাই এদের মাতাল কথাবার্তায় কান না দিয়ে শুধুমাত্র নিজের ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতি আমাদের মনোনিবেশ করা উচিৎ।"
০৯ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:২২
242770
ইমরান বিন আনোয়ার লিখেছেন : হ্যা, ব্যপারটা এমনই। শুধুমাত্র ইসলাম, মুসলমান আর আল্লাহ বিশ্বাসীদের প্রতি ওদের যত ক্ষোভ আর বিদ্বেষ! তাই ওদের কথায় কান না দিয়ে আমাদের উচিৎ নিজেদের ঈমানকে দৃঢ় করার চেষ্টা করা। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দিন। আমিন।
299932
০৯ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:০০
মায়াবন বিহারিণী হরিণী লিখেছেন : নিজের প্রশ্নে ধরা খেলেন মশাই। আপনার আল্লাহ কি এমনি এমনি সৃষ্টি হয়ে গেল নাকি??
০৯ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০৩:০৩
242771
নোমান২৯ লিখেছেন : ainabanu!Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor
299935
০৯ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:২৯
ইমরান বিন আনোয়ার লিখেছেন : আমার আল্লাহ, মানে আপনার আল্লাহ নয়? মানে আপনিও আমার গল্পের ওই 'মানুষ'টিই?
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, "বলুন, আল্লাহ এক। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকে জন্মও দেয়া হয়নি। এবং তার সমকক্ষ আর কেউ নয়।"
একজন মুসলমান হিসেবে আমি এই মূলনীতিই বিশ্বাস করি। আপনি যদি আমার গল্পের ওই আল্লাহ বিরোধী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে হাজার যুক্তি দিলেও আপনি বুঝতে চাইবেননা যে, এই পৃথিবীর সত্যিই একজন স্রষ্টা আছেন। কারণ ধর্মীয় বিশ্বাস উপলব্ধি করার সামর্থ্য আপনার নেই!
তারপরও আমি আপনার জন্য, আপনার বোধোদয়ের জন্য আল্লাহ'র কাছে দোয়া করছি। আল্লাহ আপনাকে হেদায়াত দান করুন। আমিন।
299937
০৯ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:৫৭
নোমান২৯ লিখেছেন : সুন্দর Applause। ভাল্লাক্সে Thumbs Up।ধন্যবাদ আপনাকে Rose
১০ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৫:৩৪
242829
কাহাফ লিখেছেন :
শ্রদ্ধেয় নোমান২৯ ভাই! 'আয়নাবানু'রা মিছে ছলনায় জীবন কাটায় শুধু! মিথ্যে নিয়েই ওদের জীবনাচার!
ছালছাবিল ভাইয়াও 'মুক্তিযুদ্ধের কন্যা'র পিছু নিয়েছিলেন হেদায়েতের পথে আনতে!
ওদের তো মোহর মারা গোমরাহীতে!তাই......।
১০ জানুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২৪
242861
নোমান২৯ লিখেছেন : কি বলেন ভাইয়া ? ওরকম কোন ইনটেনশন থেকে ওটা বলিনি/লিখিনি । লিখিছি শুধু জাস্ট একারণে যে একজন-ই তো নিকগুলো চালাচ্ছে তাতে ওদের লগইন ন্যামগুলো আউলা-বাউলা ।
যেমন-মুক্তি__ক'র টাতে-(May b) fuljanbibi.
মায়া__ হ'র টাতে- ainabanu
ধন্যবাদ ভাইয়া ।
299938
০৯ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০৩:৩৮
ইমরান বিন আনোয়ার লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ। আপনার আইনাবানু তো খুব দুর্দান্ত যুক্তিবাদী! Tongue তাকে একটু বুঝিয়ে দেবেন প্লীজ! Winking Good Luck ভালো থাকুন।
299939
০৯ জানুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৪:০৩
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : আমিও এই সৃষ্টিজগত সম্পর্কে মাঝে মাঝে ভাবি । ভেবে মহান রবের অস্তিত্ব টের পাই। নাস্তিকরা হয়তো এসব নিয়ে ভাবে না তাই তারা তার অস্তিত্ব টের পায় না।
299941
০৯ জানুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৪:৩০
ইমরান বিন আনোয়ার লিখেছেন : যার সুন্দর ভাবনা আছে, মহান প্রভূকে ভালবাসা ও বিশ্বাসের হৃদয় আছে, তিনি অবশ্যই মহান আল্লাহ'র অস্তিত্বকে টের পাবেন। অন্তত তার অস্তিত্বকে মনে মনে হলেও স্বীকার করবেন। আর ওরা, ওদের 'সুন্দর' অসভ্যতা আছে, মনে নষ্টামির 'আলো' আছে, তাই তারা আল্লাহ'র অস্তিত্ব টের পায়না। ওদের জন্য সমবেদনা রইল। পরকালে এই সমবেদনাটুকুই হয়তো ওদের সম্বল হতে পারে!
299995
১০ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০৩:৩৫
১০ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৯:৩৫
242835
ইমরান বিন আনোয়ার লিখেছেন : Happy Smug Good Luck Good Luck
১০
300004
১০ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৫:৩৫
কাহাফ লিখেছেন :


বৈষয়িক ক্ষুদ্র স্বার্থেই মিথ্যা আকড়ে পড়ে থাকে নাস্তিক নামের স্বার্থবাজরা! সঠিক যুক্তি ওদের মগজে ঢোকবে কেমনে!!
১১
300012
১০ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৯:৪৩
ইমরান বিন আনোয়ার লিখেছেন : সম্ভবত আপনার কথাই ঠিক! নাস্তিকতার নামে শুধুমাত্র ইসলামের বিরোধিতা করার পিছনে এক ধরণের বিকৃত লালসার অর্জনকেই ওরে সবচেয়ে বড় মনে করে। সেজন্যই ইসলামের সুমহান নীতিমালা ওদের কাছে বিষের মত মনে হয়! আর এটাই ওদের চূড়ান্ত ধ্বংসের কারণ হবে ইনশাআল্লাহ।
১২
300084
১১ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:২৫
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : গল্পটি আগেও শুনেছি, আজকেও শুনলাম। অনেক ভাল লাগল। জাজাকামুল্লাহহু খাইরান।
একটি কথাই বলবঃ সেই যুগের আলেমরা ছিলেন অনেক অনেক জ্ঞানী এবং পণ্ডিত। কিন্তু এই যুগের আলেম বলে যাদের আমরা জানি তারা আসলে কি ? টা একটু ভাবনার বিষয়। সে যুগের আলেম সমাজ জ্ঞানী ছিলেন বলেই, তাদের মধ্যে কে জ্ঞানী তা তারা বেছে নিতে পেরেছেন। এই সিলেকশন করতে পারাটাই জ্ঞানী মানুষের লক্ষণ। আর তাই তারা নাস্তিকদের কে উপযুক্ত জবাবের মাধমে শায়েস্তা করতে পেরেছিলেন। কিন্তু আজ দেখেন আমাদের সমাজের আলেমদের কে যারা নিজেরা নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ প্রমান করার জন্য, একজন অন্যজনকে ভয়ানক ভাবে আক্রমণ করছে। সব আলেমের দাবি তিনিই সেরা, কেউ কাউকে মর্যাদা দিতে রাজী না। কেউ কেউ তো আর ১৪ ধাপ এগিয়ে, তারা টাকা পয়সা কিম্বা বড় বড় সরকারী পদের জন্য , এমন হেন কাজ নেই যা তারা করছেনা। প্রয়োজনে তারা নাস্তিকদের পদ সেবাও করছে!!!!!!!!!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File