'পিকে' নিয়ে যে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দিলেন আমির খান
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান বিন আনোয়ার ০৮ জানুয়ারি, ২০১৫, ১০:১১:৩৭ সকাল
সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত আমির খানের 'পিকে' ছবিটি নিয়ে ভারতসহ পুরো বিশ্বজুড়েই চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়! ভারতে তো এটাকে নিষিদ্ধ করার জন্য প্রায় সহিংস আন্দোলনও হয়েছে। চলছে আমিরের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ও তাঁর শাস্তি দাবি। এরই প্রেক্ষিতে এক সাক্ষাৎকারে আমির খান তাঁর নতুন এই ছবিটিকে নিয়ে কয়েকটি বিশেষ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। পাঠকের সুবিধার জন্য আমি ইংরেজি থেকে সেই সাক্ষাৎকারটুকু অনুবাদ করে এখানে প্রকাশ করলাম। আশা করি এটি পড়ে সবাই উপকৃত হবেন!
প্রতিবেদকঃ (ছবিতে) আপনি হিন্দু মন্দির থেকে টাকা চুরি করেছেন, অথচ মসজিদ অথবা সমাধিস্তম্ভ থেকে 'চাদর' চুরি করেননি?
আমির খানঃ এই পৃথিবীতে বাঁচার জন্য মানুষের টাকার প্রয়োজন হয়, 'চাদরে'র নয়।
প্রতিবেদকঃ ছবির একটি দৃশ্যে ভগবান শিবা'কে হেস্তনেস্ত করা হয়েছে। কেন ইসলামের নবী অথবা ইমাম হুসাইনকে এমনটি করা হলনা?
আমির খানঃ প্রথমত, কোনো ভগবানকে হেস্তনেস্ত করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, মুসলমানরা কখনো তাদের নবী অথবা ইমাম হুসাইনে'র দেহ-আকৃতির ছবি ব্যবহার করেনা। তাছাড়া, আপনি কোনোভাবেই তাদেরকে কোনো আকৃতি দান করতে পারেননা।
প্রতিবেদকঃ ছবিতে হিন্দুধর্মের নিরুদ্দেশ ভগবান এবং মহিলাদের পোস্টার প্রদর্শন করা হয়েছে। কেন মুসলমানদের খোদার ক্ষেত্রেও এমনটি করা হয়নি?
আমির খানঃ আমি এই প্রশ্নটিরও সেই একই উত্তর দিতে চাই। আপনি আল্লাহ এবং তাঁর বৈশিষ্টের উপর কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারেননা। যেহেতু ইসলাম তাঁর কোনো ছবি ব্যবহার করেনা বা তাঁকে প্রদর্শন করেনা।
প্রতিবেদকঃ ছবিতে (উপস্থাপিত) ছেলেটি ছিল মুসলিম অথচ মেয়েটি ছিল হিন্দু। ছবিটি শেষ হয়েছে এটা দেখানোর মাধ্যমে যে, মুসলমান অথবা পাকিস্তানীরা প্রতারক নয় বরং বিশ্বস্ত। আপনি কি মনে করেননা যে, ওই ভালবাসার গল্পটি একটি 'জিহাদে'র অংশ?
আমির খানঃ না। ছবির শেষ দৃশ্যের একটি বার্তা ছিল যে, আমরা যেমনটি ভাবি আসলে মুসলমান এবং পাকিস্তানীরা তেমন নয়। তারা বিশ্বস্ত এবং কর্তব্যপরায়ণ। আমরা পূর্বে অনেক ছবিতে একজন হিন্দু ছেলে এবং একজন মুসলিম মেয়ের চরিত্র দেখেছি। না তো আমরা তখন প্রতিবাদ করেছি আর না তো আপনি করেছেন। আমি মনে করি আপনার এখনো প্রতিবাদ করা উচিৎ নয়।
প্রতিবেদকঃ আমরা দেখেছি যে, আপনি পুরো ছবিতে হিন্দু ঋষিদের পেছনে লেগেছেন। কেন মুসলমান অথবা পাদ্রীদের পেছনে নয়?
আমির খানঃ ইসলামী সমাজের কোনো দরবেশই নিজেকে খোদার বার্তাবহ বা এমন কেউ- যে খোদার সাথে যোগাযোগ করতে পারে- বলে দাবি করেনা। প্রত্যেক বুজুর্গই, চাই তিনি যত বড়ই হোন না কেন, আল্লাহ'র পবিত্র বই, পবিত্র কোরআন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং তা থেকেই তারা ধর্ম প্রচার করেন ।
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৫ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমি একজন মুসলিম হিসেবে এটা দাবী করি যে এ সব বিষয়ে লাফালাফি না করাই উত্তম।
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : যে কোন ধর্মিয় বিষয়ে এই ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি করা উচিত নয়। কারন সেটা মানুষের মনে আঘাত দেয়।
১) আমাদের বেশী খুশী হওয়ার কোন কারন নেই, কারণ রাজ কুমার হিরানি অনেক মেধাবী এবং চালাক। সাথে তিন খানই সেক্যলার, এদের কে মুসলিম বললে আমাদের দেশের সুলতানা কামাল,ফেরদসি মজুমদার দের কে মাওলানা বলতে হবে।
২)মুভিতে কিন্তূ আল্লাহ নাই, এই রকম একটা ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সেটা কি ভুলে গেছেন !!!!! সুক্ষভাবে, যেভাবে ষাঁড় যাফ্রিকবাল তাই বইতে দিয়ে থাকেন ।
৩)২০১২ সালে অক্ষয় কুমার এবং পরেশ রাওয়াল অভিনীত OMG মুভিটি ও একেই থিম নিয়ে করা হয়েছিল। কিন্তু সেই মুভি নিয়ে কোন আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ হয় নি?? কিন্তু কেন ??
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এই ছবিটি আমিরের 'হিন্দু ধর্মের প্রতি ক্ষোভ আর ইসলামের প্রতি কিছুটা অনুরাগ হিসেবে বার্তা প্রকাশে'র চেষ্টা করেছে! আমার ধারণা অবশ্যই ভুল হতে পারে। তবে আমিরের উল্লিখিত উত্তরগুলোতে তার জাফ্রিকবালের মত এতটা ধুরন্ধর হওয়ার আলামত দেখা যায়নি।
আর বলিউডে 'খান গং'দের মাঝে আমির কিছুটা কম 'ধর্মিয় কমার্শিয়াল' বলেও আমি মনে করি। এমনটি হলেই হয়তো ভালো হত!
অবশ্য এতসব কথা বলার একটাই কারণ, আমিরের ছবিকে বাহবা দেওয়া নয়, তার কথাগুলোকে সত্য ভাবার চেষ্টা করা! সত্যিই যেন হয়! সবশেষে, ভালো থাকুন।
সবার মত আমারও এই মত যে, এ সব নিয়ে উচ্ছাস বেশী দেখানোর কিছু নেই! চলচ্চিত্র জগতটাই তো অনৈসলামী! সেখানে কোন ধর্মের মুখোশ খুলা হল তা দিয়ে আমাদের কাজ কী!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন