ও আমার ঈদ! ও আমার কষ্ট!
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান বিন আনোয়ার ০৭ অক্টোবর, ২০১৪, ০২:২২:৫২ দুপুর
সকালে ঘুম থেকে উঠেই আম্মাকে ফোন করলাম। ওপাশ থেকে কী বলবেন তিনি, তা আগে থেকেই অনুমিত ছিল। তবু, শুধু মনের ভিতরে গুমরে উঠা অসীম যন্ত্রণাগুলোকে সহানুভূতি পাইয়ে দিতেই আম্মাকে ফোন করা। আম্মা আমাকে সহানুভূতি জানাননি। তিনি নিজেই কেঁদেছেন। আমাকেও কাদিয়েছেন। জীবনের প্রায় তেইশটি বসন্ত পার হয়ে গেলেও এই প্রথম, একেবারে প্রিয়জনদের সান্নিধ্য ছাড়া, পরিবার-পরিজনহীন ঈদ উদযাপন করলাম। 'উদযাপন' না বলে এটাক কষ্টের 'মাতম সওয়া' বললেও ভুল হবেনা। আগে থেকেই জানতাম, প্রবাসে ঈদ মানেই একটি দীর্ঘ 'বেদনাক্লিষ্ট' দিন! অথবা কষ্টের জাঁতাকলে পুরোনো ঈদ-স্মৃতিগুলোকে হাতড়ে ফেরা! এবার আমি উপলব্ধি করেছি, প্রবাসে ঈদ মানে কষ্ট-অপমান, আর নিজেদের অস্তিত্বের যথার্থতা নিয়ে নিজেদের মনেই সন্দেহ রূপণ করা।
সকালে ফজর নামাজ শেষে, প্রায় সাথে সাথে; পূর্ণ একটি ঘন্টাও পেরুবার আগে, ঈদের নামাজ সম্পন্ন হয়ে যায়। তারপর আর সবদিনের মতই, অন্য সাধারণ একটি নামাজ শেষে আমরা যেভাবে নিজেদের ঘরে ফিরি, ঠিক ঈদের নামাজ শেষেও আমাদের জন্য ভিন্ন কিছু অপেক্ষা করেনা। ঘরে এসে কার উপর অভিমানে কে জানে, হয়ত নিয়তির উপরেই, দীর্ঘ একটি ঘুমের আয়োজন করা হয়। এ যেন অসীম দুঃখকে ভুলে যেতে 'প্রিয়' মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া। মন বলে যদি কিছু না থাকত, তবে মানুষের জন্য তার দুঃখ-কষ্টের ভার বহন করা খুব সহজ হয়ে যেত। আর মন আছে বলেই কষ্টের উপশমে নিদ্রা সবসময় ফলপ্রসূ হয়না। তাই ঈদের দিনে নিজেদের অতৃপ্তিটুকু ভুলে যেতে আমরা ঘুমিয়ে পড়লেও আমাদের মন তার চোখ বন্ধ করেনা। প্রবাসীরা বিশেষ করে ঈদের দিনে তাদের সব কষ্ট বিস্মৃত হতে চাইলেও তাদের কষ্টরা কখনো তাদেরকে রেহাই দিতে চায়না। অতীতের ধুলো পড়ে যাওয়া সুখের স্মৃতি তাদেরকে এমনভাবে টেনে নিয়ে যায়, যেমন শেকল-পরা কোনো বন্দীকে তার অনিচ্ছায় কোনো শাস্তির মুখোমুখি হতে বাধ্য করা হয়। (চলবে)
বিষয়: বিবিধ
১৫০৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার এগিয়ে চলার পথে অনেক অনেক শুভকামনা .....
ঈদ মুবারক
লেখাটি প্যারা করে দেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন