হেফাজতের সেই নেতাদের বলছি
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান বিন আনোয়ার ২২ মে, ২০১৪, ০৫:৪৩:১০ বিকাল
ক্ষোভটা শুধু আমার নয়, নিজেকে প্রতারিত ভাবেন এমন যে কারো মনেই এই ক্ষোভের সঞ্চার হতে পারে, এবং হয়েছেও তাই। আমাদের এই 'মন্দ কথা' যাদের আত্মসম্মানকে আঘাত করেছে বলে মনে করবেন, তাদের প্রতি আহ্বান, আসুন আমরা আল্লাহ'র কাছে বিচার দাবি করি। যদি আমাদের এই 'অসমীচীন' প্রতিবাদ আপনাদের 'নিষ্কলুষ' ব্যক্তিত্বকে কিছুটা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত করে, তবে আল্লাহ যেন আমাদের 'কুচক্রী' মনোভাব থেকে আপনাদের রক্ষা করেন। আর বিপরিতে যদি আপনাদের 'জ্ঞানহীন স্বার্থপরতা' আমাদের মত আকাঙ্ক্ষী মানুষগুলোকে ব্যথার অনলে দগ্ধ করে-এবং ফলাফলে আমরা প্রতিবাদ করে থাকি, তবে এর দায়ভারও সবটুকু আপনাদের উপরই বর্তাবে। মনে রাখবেন, সীমিত সামর্থের এই ব্যথিত মানুষগুলোকে আপাত ক্ষমতার শক্তিতে দূরে সরিয়ে রাখতে পারলেও আল্লাহ'র দরবারে আপনি-আমি, আমরা সবাই সমান। বিচারের দিনে আমাদের পাওনা পরিশোধ না করে আপনারা এক কদমও এগুতে পারবেননা। ৫ই মে' ২০১৩, যে ভয়াবহ নৃশংসতম হত্যাকান্ড আমাদের উপর চালানো হয়েছে, সে প্রেক্ষিতে আপনারা কী করেছেন তা আমরা জানতে চাই। মনে মনে হয়ত নাক ছিটকাবেন! মিথ্যা আবেগ মিশিয়ে বলবেন, সেদিনের আগে ও পরে দেশে যে নাজুক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তার বিপরীতে কোনো অন্যায়ের প্রতিকার চাওয়া ছিল অচিন্তনীয় ব্যাপার। তাই আপনারা কিছু করতে পারেননি। কিছু করার সামর্থ আপনাদের ছিলনা। আপনাদের একথাটি মেনে না নেয়ার অসংখ্য যুক্তি আমাদের কাছে আছে। তবু বরাবরের মত আপনাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে বলছি, সে 'গণহত্যা'র নীরব সন্তোষে একটি বছর পার করে দিয়ে এখনো আপনাদের মনে কেন প্রতিবাদের মনোবল জেগে উঠেনি? আপনাদের বর্তমান অবস্থান ও পদক্ষেপগুলো কি কি সেগুলো আমরা জানতে চাই। ইসলামী জাগরণের অসাধ্য স্বপ্ন দেখিয়ে এক বছর পর আপনাদেরই কেউ কেউ এখন সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগে মানুষের ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়েছে। এটা কেন হল? কোন নোংরা অভিলাষে ইসলামী আন্দোলনের নাম ভাঙ্গিয়ে আমাদের এই ‘মহাপুরুষে’রা আজ টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন? আমাদের এই অভিযোগগুলো শুধুমাত্র আবেগী মনের বিচ্ছিন্ন ক্ষোভ নয়। এটা চতুর্দিক থেকে ধেয়ে আসা প্রমাণিত অপরাধের সামান্য জিজ্ঞাসা মাত্র। যদি আপনারা সত্যিই নিষ্কলুষ হন, তবে সেটা প্রমানের দায়িত্ব আপনাদেরই। বুকে দৃঢ়তা নিয়ে পারলে এই 'অপবাদ'গুলো ভুল প্রমান করুন। উহ, অজানাসংখ্যক আমাদের মুসলমান ভাই; যাদের রক্তে মতিঝিলের বিবশ পথ-ঘাটগুলো নীরবে কেঁদেছে, তাদের জন্য গত একটি বছরেও আপনারা কিছু করতে পারেননি এটা আমাদের মেনে নিতে হবে? যদি এতটাই অথর্ব আর ব্যর্থ আন্দোলনের শঙ্কা জেগে উঠত, তবে আগেই কেন সহজ ও নির্ঝঞ্জাট ‘কাপুরুষ-নীতি’ গ্রহন করলেননা। আমাদের শ্রদ্ধেয় শাইখ আহমদ শফী'তো আপনাদের এই নেমকহারামির অপরাধে শামিল হতে পারেননা। আল্লাহ তায়ালা আমাদের কল্যাণ চেয়েছেন বিধায় তাঁর মত একজন বিদগ্ধ আলেমকে আমাদের মাথার উপরে ছায়া হিসেবে দান করেছেন। আমাদের ইসলামী আন্দোলনের অগ্রদূত হিসেবে তাঁকে আমাদের জন্য মনোনিত করেছেন। আর তিনিও তাঁর সাধ্যমত যথাযথ কর্তব্য পালনে এতটুকু পিছপা হননি। বয়সের ভারে তিনি যদি আজ শক্তিহীন হয়ে না পড়তেন, তবে হয়ত আপনাদের মত আত্মসর্বস্ব অক্ষম নেতৃবৃন্দের কাছে আমাদের 'অরণ্যে রোদন' করতে হতনা। মানুষের স্বপ্নকে, ইসলামী আন্দোলনকে আপনাদের অনেকেই নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন-এটা ভাবতে আমাদের ঘৃণা হয়। অশিক্ষা ও লোলুপ কামনা আপনাদেরকে আল্লাহ এবং নবী-রাসুলের ইজ্জত বাঁচাতেও আগ্রহী করে তুলতে পারেনি! এতটা সংকীর্ণ ও বেপরোয়া ইচ্ছাশক্তিতে আপনারা কিভাবে অধিষ্ঠিত হলেন তা আমরা ভেবে পাইনা! হাজারো নিরপরাধ মানুষের জীবন-ঝরে যাওয়া সে রাক্ষুসে কন্দলে আপনারা নিজেদের পেটপুর্তির উপাদান খুজে বেড়িয়েছেন-তাতে অবশ্যই আমরা ক্ষুব্ধ হয়েছি। বিশ্বাস করি, এ ব্যপারে আমাদের প্রতিবাদ করার অধিকারও আছে। কে আপনারা? আল্লাহ-রাসুলের কথা বলে প্রবৃত্তির পূজা করছেন কোন সাহসে? এজন্য আপনাদেরকে জাতির কাছে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। যদি এ যাত্রায় আমাদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েও যান, তবে কবরে গিয়ে আপনারা যাতে সুখের আশ্রয় না পান, সে তীব্র আকাঙ্ক্ষা আমরা আল্লাহ'র কাছে জানিয়েই রাখব।
বিষয়: বিবিধ
১০৮৩ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
'গণহত্যা'র নীরব সন্তোষে একটি বছর পার করে দিয়ে এখনো আপনাদের মনে কেন প্রতিবাদের মনোবল জেগে উঠেনি?///////////////////////////
ধর্ম ব্যসায়িদের বলা হয় নি নাস্তকের শাস্তি চাওয়ার জন্য ।। নাস্তিকের বিচার আল্লাহই করবেন ,।
এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। দজ্জাল ও কাজ্জাব সাকসেসফুলি হেফাজতকে ধ্বংশ করে দিয়েছে।
এটা ভেবে প্রবোধ ও পেতে পারেন। আবার রিয়ালিটি ভেবে - কোরআন ও হাদীস হতে দিক নির্দেশনা নেবার চেষ্টা করতে পারেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন