প্রসঙ্গ স্পাই-হ্যাক এবং আমাদের গাঁজা আবুল
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান বিন আনোয়ার ১৬ এপ্রিল, ২০১৪, ০৩:৫৮:২৬ দুপুর
আবুলের ঘরে চোর ঢুকেছে। আবুল কিন্তু কিছুই জানেনা! জানবে কিভাবে? তার কাজ যে শুধুই গাঁজা টানা। তাছাড়া গাঁজা টেনে টেনে 'পাঁড়' হয়ে, নিজের পশ্চাতদেশ আকাশমুখী করে নাক ডেকে ঘুমানোও তার প্রিয় কাজ। তাই একদিন ঘুম থেকে জেগে আবুল শুনল, তার ঘরে নাকি চোর ঢুকেছে! চোরের স্পর্ধায় সে রাগে অগ্নিশর্মা হয়। ভাঙ্গা চোয়ালে শপথ করে; "চুরির প্রতিশোধ নিতে হবে।" সে তখন 'কামান' দাগায়! তবে সত্যিকারের কামান নয়। লুট করে আনা রঙ্গিন প্রসাধনীতে চেহারাকে 'ছাগলের খোঁয়াড়' বানিয়ে ফেলা আবুল- যতগুলো 'ল্যাওড়া' শব্দের ভান্ডার তাঁর মানস্পটে জমা আছে, সেগুলো দিয়েই চোরের উদ্দেশ্যে 'গাল-কামান' দাগায়। ফলশ্রুতিতে তার সে বিধ্বংসী গোলাবারুদে আশেপাশের সব নেড়ে ইঁদুরেরা দৌড়ে পালায়। উঁহু, আপনাদের'তো বলাই হয়নি; ঘুম থেকে জেগে আবুল কিভাবে জানল যে তার ঘরে চোর ঢুকেছে। সে এক বিরাট ইতিহাস! বহুদিন আগে দু'জন অজ্ঞাত নারী-পুরুষের ঔরসে জন্ম নেয় আবুলের 'মহামাণ্য' পিতা। যদিও সে জন্ম-চাষাবাদে ব্যপক অনিয়ম হয়েছে! তবে আমি সেদিকে এগুতে চাইনা। আবুলের পিতা যখন সেই অজ্ঞাত 'জন্মখানা' থেকে মুক্ত হয়ে বর্তমানের আস্তানায় ঘাঁটি গেঁড়ে বসলেন, তখন থেকেই তিনি শুধুমাত্র গাঁজা-হাদিয়ার বিনময়ে এই আস্তানাটি ইজারা দিয়ে দেন তার জন্মদাতা আড়দ্দারদের কাছে। লোকেরা এই ইজারা-কাহিনীর সারবস্তু সম্পর্কে খুব ভালভাবেই জানত, তবু শক্তিশালী 'পিতা'র চোটপাটের ভয়ে কেউ আর তেমন 'রা' করেনি। অবশ্য এটাওতো ঠিক, পাশের বাড়ীর 'চাষী-দাদাগণ' কাগজে-কলমে কখনো এই আস্তানার দাবী জানায়নি। যেন অনেকটা 'পোষা বিড়াল'কে দুধ খেতে দেয়ার মত আরকি! যাইহোক, 'মহামাণ্য' পিতা ও তার রক্তনালীতে ভেসে আসা আমাদের আবুল মনেপ্রাণে সেই দাদাগণকে মিলিয়ন-মিলিয়ন 'পেন্নাম' জানিয়ে আসছিলেন। আবুলের পিতা নরকবাসী হয়েছেন বহুদিন! তার অভাবে আবুল এখন কাবুলের 'আফিম' খেয়ে সুখের সন্ধান করে বেড়ায়। আর পিতার মতই নিজের দাদাদের ভালবাসায় তার প্রেমের শেষ তাজমহলটিও উৎসর্গ করে দেয়। রক্তের শেষ'বিন্দুটি দিয়ে হলেও তাদের প্রতিটি ফরমায়েশ পালন করতে দ্বিধা করেনা। জন্মদাতা দাদা বলে কথা! বিনিময়ে আবুলের মন রক্ষায় তার দাদাদের পক্ষ থেকে সময়বিশেষে বিভিন্ন 'স্পেশাল' অনুদান এসে থাকে। উদাহনণস্বরূপ বলতে পারি, আবুলের অর্চনায় সন্তুষ্ট হয়ে কিছুদিন আগেই তার শখের আস্তানায় আরো কিছুকাল আমোদ করার ব্যবস্থা করে দিল দাদারা। অধিকন্তু সেই দাদারাই, জন্ম ও রক্তসূত্রে-গাঁথা সেই মনিব দাদাগণই আবুলের সুখ-শান্তি নির্বিঘ্ন করতে তারই ঘরের উঠান থেকে সেদিন এক চোরকে পাকরাও করে নিল। আগেই কয়েছিলাম, আবুল তখন ঘ্যাৎ-ঘ্যাৎ করে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছিল। ফলে তার মাথায় যদি মুগরের বাড়িও দেয়া হত তথাপি তার ঘুম ভাঙ্গতনা। ফলে দাদার 'ছাওয়েরা' আবুলকে একপ্রকার 'উষ্টা' মেরে তার গাঁজার মাজার থেকে এক চোরকে ধরে নিয়ে গেল এবং বিশেষ দয়ার্দ্র হয়ে আবুলকে সে তথ্য জানিয়েও দিল। এটা শুনে আবুল এখন আপ্লুত-প্রাণে দাদাদের গুনকীর্তনে ব্যস্ত সময় পার করছে। আর চোরদের উদ্দেশ্যে সর্বশক্তি নিয়োগ করে, তার শাণিত অশ্রাব্য 'কামান' দাগিয়ে উল্লাস যাপন করছে।... (সমাপ্ত)
বিষয়: বিবিধ
১০৪৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমার আজকের পোষ্টটি পড়ার আমন্ত্রন রইল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন