উইকিপিডিয়ায় হেফাজত'কে নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারঃ নিজেদের দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যাবেননা

লিখেছেন লিখেছেন ইমরান বিন আনোয়ার ০১ মার্চ, ২০১৪, ০১:৩৮:১৬ রাত

সারাদিন ধরে অমানুষিক পরিশ্রম আর বিকেলের দিকে প্রচন্ড মাথাব্যথায় আমি প্রায় অস্থির হয়ে আছি। ভাবছিলাম, মাগরিবের নামাজ পড়ে একটা নাতিদীর্ঘ ঘুম দিতে হবে। তবে জীবনটাতো আর নিজের ইচ্ছেমাফিক সবসময় এগিয়ে চলেনা। সন্ধাবেলা ফেসবুক লগইন করে সবেমাত্র একটু গা-এলিয়ে বসেছি, প্রায় সাথেই সাথেই আমার ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু আমার ফেবু-ইনবক্সে একটা লিঙ্ক পাঠাল। বলল, "ইমরান, এইডা দেখ। মাথা পুরাই গরম হয়া গেছে।" আমি সাথে সাথে বন্ধুর পাঠানো লিঙ্ক ধরে এগিয়ে যেতেই উইকিপিডিয়াতে চমকে যাওয়া কিছু তথ্য দেখতে পেলাম। সারাদিনের ক্লান্তি ও মাথাব্যথা যতটা না আমায় বিপর্যস্ত করেছিল, তারচেয়ে বেশি চমকে দিয়েছে উইকিপিডিয়াতে ভাসমান তথ্যগুলো। এত বড় অসত্য ও মিত্থ্যা প্রোপাগান্ডা একটা আন্তর্জাতিক তথ্যকোষে ছড়িয়ে দেয়া হল দেখে প্রতিবাদের তিব্র ঘৃণা ও ক্ষোভ দু'চোখের কোণে এসে জমা হতে লাগল। তৎক্ষণাৎ কয়েকজন বন্ধুর সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নিলাম, আমরা নিজেদের সাধ্যমত চেষ্টা করে ওই ভুল তত্থ্যগুলোকে মুছে দিয়ে সঠিক ও যথাযথ তথ্য-বিবরণ মানুষের সামনে তুলে ধরব, ইনশাআল্লাহ। নতুবা আল্লাহ না করুক, আমাদের চোখের সামনে এত বড় একটা জালিয়াতি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে প্রতিবাদ না করার অপরাধে একদিন এর তেতো ফল আমাদেরও ভোগ করতে হবে। আর কাল কিয়ামতের দিন আল্লাহ'র দরবারে তো পাকড়াও হতেই হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। যাইহোক, কথা না বাড়িয়ে মূল প্রসঙ্গটা তুলে ধরি। বন্ধুর দেয়া লিঙ্ক অনুযায়ী উইকিপিডিয়া'তে ঢুকা'মাত্রই দেখতে পেলাম সেখানে ইংরেজি বর্ণমালায় অত্যন্ত সুকৌশলে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সুশৃঙ্খল একটি ধর্মীয় সংগঠনকে অত্যন্ত বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সেই ধর্মীয় সংগঠনটি কী অথবা তাদের পরিচয় সম্পর্কে আলোচনা করার আগে পাঠকদের সুবিধার্থে উইকিপিডিয়ায় উল্লিখিত সত্য-ভ্রষ্ঠ সে ভিত্তিহীন আলোচনার কিয়দাংশ হুবহু এখানে তুলে আনলাম।

"Hefajat-e-Islam Bangladesh (Bengali: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশWinking also known as Hifazat-e-Islam Bangladesh is a madrasa based fundamentalist Islamic group in Bangladesh, was formed in January 2010. This group, politically backed by Bangladesh Jamaat-e-Islami, was formed in 2010 to protest against the secular education policy of Bangladeshi government. In 2011, they showed violent demonstrations against the women's equal rights policy of the government and in 2013, became headlines after holding large rallies asking the government to take action against the Shahbag protesters, who are demanding capital punishment of Bangladesh liberation war criminals. In 2013 this group warn government with 13 point charter, which includes banning the woman right of work outside, execution of so-called atheist bloggers and stopping Shahbag protests. German ambassador Albrecht Conze in Bangladesh says Hifazat's demands fundamentalism in Bangladesh"।

" 'হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ' বাংলাদেশের মাদরাসা-ভিত্তিক একটি ইসলামী ধর্মান্ধ-গোষ্ঠী। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১০ সালে। রাজনৈতিকভাবে দলটি জামাতে ইসলামী বাংলাদেশের মদদপুষ্ট। দলটিকে গঠন করা হয় ২০১০সালে বাংলাদেশের 'ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষানীতির' বিরোধিতার জন্য। ২০১১ সালে তারা বাংলাদেশ সরকারের নেয়া নারী-পুরুষ সমান-অধিকার সংক্রান্ত নারী উন্নয়ন নীতিমালার বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি প্রকাশ করে। ২০১৩ সালে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী-অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করা শাহবাগী-বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে তারা সরকারের কাছে শাস্তি দাবি করে অনেক বড় একটি সমাবেশের আয়োজন করার পর আলোচনায় আসে। ২০১৩'তেই এই দলটি সরকারকে ১৩'দফা নীতিমালার মাধ্যমে হুঁশিয়ারি দেয়। যেটিতে রয়েছে ঘরের বাইরে নারীর কাজ করার অধিকার হরণ করা, কথিত নাস্তিক-ব্লগারদের ফাঁসির দাবী এবং শাহবাগ-বিক্ষোভ'কে বন্ধ করে দেয়ার আহ্বান। বাংলাদেশে জার্মানি রাষ্ট্রদূত Albrecht Conze বলেনঃ হেফাজত বাংলাদেশের ধর্মান্ধতা উস্কে দিচ্ছে"।

সচেতন পাঠকমাত্রই উপরের নির্লজ্জ তথ্য-সন্ত্রাসের ব্যপারটি অনুধাবন করতে পারবেন। আমার 'কপি' করা দৃশ্যমান কথাগুলো উইকিপিডিয়ায় উল্লিখিত অসংখ্য মিথ্যাবাজির সাধারণ সূচনা-বক্তব্য মাত্র! হেফাজতকে নিয়ে সার্থান্ধ-মুর্খরা আরো অনেক অবিশ্বাস্য-উদ্ভট কাহিনী প্রচারের চেষ্টা করেছে এই নিবন্ধটিতে। যা কিনা একজন সরলপ্রাণ জ্ঞানুসন্ধানী মানুষকে মুহুর্তেই বিভ্রান্তিতে ফেলে দিতে পারে। আমি যদি নিবন্ধটির প্রতিটি বক্তব্য চিহ্নিত করে করে সেগুলোকে মিথ্যা প্রমানে অগ্রসর হতাম, তবে সেটাই হয়ত সবচেয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ হত। কিন্তু সেটা ছিল যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ। ফলে আমার সময়ক্ষেপণের মুহুর্তটাতে কিছু অতি উৎসাহী! মানুষ একটা একনিষ্ঠ-ধর্মীয় সংগঠন সম্পর্কে না জানি কী কী ভেবে বসত। তাই আমি কালবিলম্ব না করে আমার বন্ধুর সহায়তায় এই মিথ্যা-বানোয়াট কথাগুলোকে নির্ধারিত সাইট থেকে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে মুছে দিয়েছি। এই মুছে দেয়ার ব্যপারটিতে আমাদের মধ্যে কোনো ধরণের কনফিউশন কাজ করেনি। কারণ, আমরা খুব দৃঢ়তার সাথে বিশ্বাস করি, আমরা যেটা করেছি সেটাই হল সুস্থ সমাজের জন্য প্রতিটি মানুষের দায়বদ্ধতার প্রতিদান। একটা ব্যপার আমি খোলাসা করে দিতে চাই, আমার লেখা পড়ে কেঊ যদি আমায় 'হেফাজত কর্মী' কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত করতে চায়, তবে সেটা হবে তার স্থূলবুদ্ধির চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। আমি আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকে অদ্যাবদি কোনো রাজনৈতিক অথবা অরাজনৈতিক দল বা সংগঠনের সাথে নিজেকে কখনো জড়িত করিনি। রাজনীতি ব্যপারটাতে আমার একটা অনুচ্চারিত ঘৃণা আছে। তাই ওই পথে কখনো পা বাড়াবার ইচ্ছা জাগেনি। তবে হ্যা, কিছু ভাল মানুষ যখন কোনো পবিত্র উদ্দেশ্যে একসাথে সমবেত হয় তখন তাদের প্রতি আমার নৈতিক সমর্থন ও আন্তরিক সহানুভূতি প্রদর্শনে আমি কখনোই কার্পণ্য করিনা। 'হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ' দলটিকে আমি তেমনই একটি-'ইসলাম রক্ষায় আত্মনিবেদিত কিছু ধর্মপ্রাণ-মনুষের দল' হিসেবে গণ্য করি। তাই তাদের প্রতি কটুক্তি কিংবা তাদেরকে পৃথিবীর সামনে হেয় করার অসাধু চেষ্টা আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিনা। যারা এ ধরণের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে তাদের প্রতি আমি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করছি এবং তাদের বিকারগ্রস্থ মানসিকতায় গড়া এ সকল অপকর্মের যথোপযুক্ত প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি আমার কর্তব্য পালন করতে চাই। কারণ আমি বিশ্বাস করি, পৃথিবীর কোনো মানব সন্তান আমার হৃদয়ের আবেগটুকু ধারণ করতে না পারলেও আকাশ ও জমিনের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা'য়ালা নিশ্চয় আমার মনের কথা বুঝবেন। আমাকে আমার গুটিকয়েক লেখনী-প্রতিবাদের বিনিময়ে পরকালের ভয়াবহ আজাব থেকে হয়ত দয়া করে মুক্তি দান করবেন।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর প্রকৃত পরিচয় ও কার্যক্রম

'হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ' বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসা-শিক্ষকদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন, যেটি ২০১০ এর ১৯ জানুয়ারিতে, প্রায় একশোটি কওমি মাদ্রাসার শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত হয়। হাটহাজারী মাদ্রাসার পরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী এবং ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতী ইযহারুল ইসলাম এই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা। সংগঠনটি তার সূচনাকাল থেকেই কওমী মাদরাসা ও তদসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কল্যানমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

২০১১ সালে তারা বাংলাদেশ নারী উন্নয়ন নীতি (২০০৯) এর কয়েকটি ধারাকে ইসলামের সাথে সাঙ্ঘর্ষিক দাবি করে এর তীব্র বিরোধীতা করে।

২০১৩ সালে তারা ইসলাম ও রাসুলকে কটুক্তিকারী নাস্তিক ব্লগারদের ফাঁসি দাবী করে ব্যপক আন্দোলন ও সমাবেশ শুরু করে। এ প্রেক্ষিতে তারা ১৩ দফা দাবী উত্থাপন করে।

৬ই এপ্রিল, ২০১৩ হেফাজতে ইসলাম সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে লং মার্চ করে এবং ঢাকার মতিঝিল শাপলা চত্ত্বরে তাদের প্রথম সমাবেশ করে। এই সমাবেশে প্রচুর লোক-সমাগম হয়। ধারণা করা হয় সেখানে ১০লক্ষ কিংবা তারচেয়ে অনেক বেশি মানুষের আগমন ঘটে। সেদিন বিভিন্ন বাধার কারণে অনেক কর্মী চট্টগ্রাম সহ প্রায় সারা দেশ থেকেই ঢাকা যেতে ব্যর্থ হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগঠনের কর্মীদের সাথে আইনশৃঙ্খলারক্ষী বাহিনীর সংঘর্ষ হয় এবং বেশ কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটে।

হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবী

1.সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন এবং কোরআন-সুন্নাহবিরোধী সব আইন বাতিল করা।

2.আল্লাহ্, রাসুল ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস।

3.শাহবাগ আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী স্বঘোষিত নাস্তিক এবং রাসুল এর নামে কুৎসা রটনাকারী ব্লগার ও ইসলামবিদ্বেষীদের সব অপপ্রচার বন্ধসহ কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা করা।

4.ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বালনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।

5.ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা।

6.সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।

7.মসজিদের নগর ঢাকাকে মূর্তির নগরে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করা।

8.জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে বাধাবিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করা।

9.রেডিও-টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাড়ি-টুপি ও ইসলামি কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসিঠাট্টা এবং নাটক-সিনেমায় নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করা।

10.পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিও এবং খ্রিষ্টান মিশনারিগুলোর ধর্মান্তকরণসহ সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।

11.রাসুলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র রাসুলপ্রেমিক জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং গণহত্যা বন্ধ করা।

12.সারা দেশের কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক, ওলামা-মাশায়েখ ও মসজিদের ইমাম-খতিবকে হুমকি-ধমকি, ভয়ভীতি দানসহ তাঁদের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করা।

13.অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত সব আলেম-ওলামা, মাদ্রাসাছাত্র ও রাসুলপ্রেমিক জনতাকে মুক্তিদান, দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণসহ দুষ্কৃতকারীদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রদান।

ঢাকা অবরোধ

২০১৩ সালের ৫ই মে, হেফাজতে ইসলাম ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি এবং ঢাকার মতিঝিলে তাদের দ্বিতীয় সমাবেশের আয়োজন করে। ৫ ও ৬ই মে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এই সংগঠনের কর্মীদের ব্যাপক হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠে। রাতের অন্ধকারে নামাজরত কিংবা কোরআন তিলাওয়াতে মগ্ন নিরীহ হেফাজত কর্মীদের উপর পুলিশ, বিজিবি ও অন্যান্য নিরাপত্তাবাহিনীর প্রায় ১০ হাজার সদস্যের উপরযপুরী গুলি বর্ষণে শত-শত হেফাজত কর্মী নিহত হয়।

৬ই মে, সংগঠনের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীকে, ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ আরও বিভিন্ন অভিযোগ এনে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে ৫ই মে শাপলা চত্ত্বরে গভীর রাতে মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে। হেফাজতের কর্মীদের বানিজ্যিক এলাকা থেকে সরানোর উদ্দেশ্যে সরকারী আইন-শৃংখলা বাহিনী আক্রমণ পরিচালনা করে। পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরা এতে অংশগ্রহণ করে। এছাড়া এই অভিযান পরিচালনার পূর্বেই সরকার বিরোধী স্যাটেলাইট টেলিভিশন- দিগন্ত টিভি ও ইসলামিক টিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিরোধী দল বিএনপি এবং হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় ৫ই মে শাপলা চত্তরে গভীর রাতে সরকারি আইন-শৃংখলা বাহিনী হেফাজতে ইসলামের হাজার হাজার কর্মীকে হত্যা করে এবং তাদের লাশ গুম করে। এশীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে বলা হয়, বিভিন্ন ইন্টারনেট রিপোর্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে তারা ২৫০০ বা তারও বেশি হেফাজত কর্মী ওই হামলায় নিহত হতে পারে বলে ধারনা করছে এবং এজন্য তাদের রিপোর্টে একে গণহত্যা বলে অভিহিত করে।

বিষয়: বিবিধ

১৩৭৭ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

184797
০১ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:৪৫
এনামুল মামুন১৩০৫ লিখেছেন : কি করা বিকল্প কোন ব্যাবশ্তা নাই, না হয় বর্জন করতাম ইকিপিদিয়া
০১ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:৫১
136737
চেয়ারম্যান লিখেছেন : উইকিপিডিয়া বর্জনের কিছু নাই। আপনি ও এই লেখাটি এডিট করতে পারবেন। শাহবাগীরা যত একটিভ , বিএনপি জামায়াত এত একটিভ না। নাহলে হেফাজত নিয়ে আরো পজেটিভ আর্টিকেল থাকত
০১ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:৫৪
136738
এনামুল মামুন১৩০৫ লিখেছেন : ভাই লিংটা দেন, আমি এডিট কররা চেষ্টা করবো্- ধণ্যবাদ
০১ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:৫৫
136739
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ,পাশাপাশি কুটনৈতিক তত্পরতার মাধ্যমে কিছু একটা করা যায় কি না দেখতে পারে হেফাজতে ইসলাম।
184800
০১ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:৫০
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ,পাশাপাশি কুটনৈতিক তত্পরতার মাধ্যমে কিছু এক
184803
০১ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:৫৫
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ,পাশাপাশি কুটনৈতিক তত্পরতার মাধ্যমে কিছু একটা করা যায় কি না দেখতে পারে হেফাজতে ইসলাম।
184808
০১ মার্চ ২০১৪ রাত ০২:২৭
নোমান২৯ লিখেছেন : তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
184819
০১ মার্চ ২০১৪ রাত ০৩:০৪
মুক্তির মিছিল লিখেছেন : খবরটা দেয়ার জন্য ধন্যবাদ!
184875
০১ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৯:৫৫
আবদুল আলিম লিখেছেন : তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
184981
০১ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:১৪
ইমরান বিন আনোয়ার লিখেছেন : 'চেয়ারম্যান'ভাইজানের সাথে একমত পোষণ করছি। যারা মনের গভীর থেকে নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন তাদের জন্য রইল আন্তরিক অভিনন্দন।
185085
০১ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:০৯
শফিউর রহমান লিখেছেন : আমি আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকে অদ্যাবদি কোনো রাজনৈতিক অথবা অরাজনৈতিক দল বা সংগঠনের সাথে নিজেকে কখনো জড়িত করিনি। রাজনীতি ব্যপারটাতে আমার একটা অনুচ্চারিত ঘৃণা আছে। তাই ওই পথে কখনো পা বাড়াবার ইচ্ছা জাগেনি। -- এটাই মানুষকে অসহায় করেছে। যারা নিজেদেরকে ভাল মানুষ মরে করেন তারা সাথে সাথে এটা মনে করে আত্মতৃপ্তি লাভ করেন যে, তিনি কোন রাজনৈতিক পঙ্কিলতায় গা ডুবান নি। ফল হিসাবে কি হলো, যারা পঙ্কিল তারা রাজনীতিকে দখল করে নিল। যার ফলশ্রুতিতে ঐ ভাল মানুষসহ সবাই পঙ্কিল মানুষদের হাতের খেলনাতে পরিণত হলো।
দূর্ভাগ্য আমাদের - সংসদের মতো দেশের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী স্থান চোর, বাটপার, জেনাকারী, মিথ্যাবাদী, জুলুমবাজদের হাতে ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে দোয়া করি দেশ ও জাতীর শান্তির জন্য। রেডিকুলাস!
"আমি ভাল মানুষ - আমি রাজনীতি করি না" - এই কথাটা জাতির জন্য দূর্ভাগ্যের কথা।
185148
০১ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:১৩
ইমরান বিন আনোয়ার লিখেছেন : ভাইজানের কথার সাথে শতভাগ একমত। ভাল মানুষদের রাজনীতিতে এগিয়ে আসা উচিত। কারণ ভাল মানুষগুলোই আমাদের সমাজ, দেশটাকে সুন্দর করে গড়ে তোলার সামর্থ রাখে। তবে আমার লেখায় যদি নিজেকে 'সাধু' হিসেবে জাহির করার কোনো প্রবনতা ফুটে উঠে থাকে, সেজন্যে আমি দুঃখিত। অবশ্য আমি এটাও বলছি, কিছু ভাল মানুষ যখন কোনো পবিত্র উদ্দেশ্যে একসাথে সমবেত হয় তখন তাদের প্রতি আমার নৈতিক সমর্থন ও আন্তরিক সহানুভূতি প্রদর্শনে আমি সবসময়ই নিবেদিত হয়ে থাকি। আমি মনে করি সেটাই আমার জন্য সান্ত্বনার।
১০
185409
০২ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৪৫
সজল আহমেদ লিখেছেন : আসলে বামপন্থিরা গোপনে পেছন থেকে আক্রমন করে!বর্তমানের বামপন্থিরাও সেটাই করছে।
১১
185757
০২ মার্চ ২০১৪ রাত ১১:০৬
ইমরান বিন আনোয়ার লিখেছেন : সম্ভবত এমনটিই হতে পারে!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File