বাপ বেটির গোয়ার্তুমি, জনগণ তার বলি।
লিখেছেন লিখেছেন হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ০ ০৩ জুন, ২০১৪, ০৪:২৬:৩৩ বিকাল
দেশের জন্ম লগ্ন থেকেই জন্মানুষের মতামতকে তোয়াক্কা না করে নিজের চিন্তা ভাবনা একক সিদ্ধান্ত জণগনের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল। অধকাংশের মতকে উপেক্ষা করে অল্প কিছু সংখ্যক পা চাটা গোলামদের মতামতকে সবার উপর চাপিয়ে দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাহেব। মুজিব সাহেব যেমন ছিলেন একরোখা, পক্ষপাতদুষ্ট, দাদাভাইদের অন্ধ অনুসরণ ও সার্বিক সহযোগিতায় আত্মতুষ্ট তার তনয়া ঠিক তেমনি।
চলুন কথা না বাড়িয়ে মুজিব সাহেবের গোয়ার্তুমির কিছু হালচিত্র দেখে আসি-
# স্বাধীনতা পরবর্তী দেশকে তিনি পার্লামেন্টারিয়ান শাসন থেকে প্রেসিডেন্সিয়াল ব্যবস্থায় রুপান্তর করেন, সংবিধান সংশোধন করেন, একটি এক দলীয় শাসন ব্যাবস্থা কায়েম করার সর্বোচ্চ ক্ষমতা হাতে তুলে নেন। সবকটা দল বাদ দিয়ে গঠন করলেন একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল, জণগনের মতামত নেয়ার কোন প্রয়োজন মনে করেন নি, যার হাত দিয়ে গণতণত্র এল, সেদিন থেকে তার হাতেই গণতন্ত্রের কবর রচিত হল।
# সংবিধানের অনুষদ ৬এ বলা হল, বাংলাদেশের সকল নাগরিক বাঙ্গালী বলে পরিচিত হবে, অথচ তাতেও জনগনের মতামত নেয়া হলনা, আসলে তারা কি বাংলাদেশি হতে চায় না বাঙ্গালী হিসেবে থাকতে চায়। দেশের একটি বিরাট অংশ সেদিন বাঙ্গালি জাতিয়তাবাদ চায়নি, কিছু দিন পর তার প্রমাণ মিলল। একিরকম ভাবে CHT এর উপর চাপিয়ে দেয়া হল বাঙ্গালী জাতিয়তাবাদ।
# দেশের শুধু চারটা রেখে আর সব কটা পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হল সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে। তাতে জণগণের আপত্তি থাকা সত্বেও মুজিবের বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস কারো ছিলনা, কেননা ততদিনে মুজিব সাহেব প্রচন্ড প্রতাপশালী সৈরাচারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল।
# সংবিধানে চার মূলনীতি অন্তর্ভূক্তি করণঃ গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, বাঙ্গালী জাতিয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ। সমাজতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ মানুষের উপর চাপিয়ে দেয়া হল অথচ সামান্য কিছু লোক ছাড়া অধিকাংশ মানুষ বিরুদ্ধে ছিল। যা অখাদ্য তা যেমন পেটে গেলে বদজমের কারণে পেট বমি করে বের করে দেয় ঠিক তেমনি ঐ দুইটা মতবাদ বাংলাদেশের সংখাগরিষ্ঠ মুসলমানের জন্য হজম যোগ্য ছিলনা, তাই মুজিব মানুষের ঘারে পা রেখে নাক টিপা দিয়ে গলায় মতবাদ দুটি ঢেলে দিলেন, কিন্তু তারা হজম করতে পারেন নি বলে বমি করে বের করে দিয়েছেন। তবে তারাই স্বানন্দে গিলেছে, যাদের মুখে মানুষ বা প্রানীর বিষ্ঠা অমৃত মনে হয়েছে। অতএব কারণে সমাতরন্ত্র আজো দেশে কন অবস্থান তৈরি করতে পারেনি।
এক ফকির, যুদ্ধ পরবর্তী ত্রাণ নিতে গিয়ে একটা কলা, আর এক্তা রুটি পেয়ে বুঝল, সমাজতন্ত্রিরা আসলে মুখে যা বলে কাজে তা করেনা, সেদিন সে দেখেছিল ত্রাণের টাকা কিভাবে পকেটে ভরে। সমবন্টন, সম্পত্তিতে ব্যক্তি নয় রাষ্ট্র মালিক, তাতে সবার সমান অধিকার, শ্রেণী বৈষ্ম্যহীন সমাজব্যবস্থা কায়েম, এই হল তাদের লক্ষ উদ্দেশ্য, কিন্তু বন্টনের বেলায় ঠিকি পকেট ভারী করাতে সিদ্ধহস্ত, আর মুখে ছিনালের হাসি!
# আর ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ সম্পর্কে মানুষের অবস্থান পরিস্কার, যে যত ভুল ভাল বুঝাক না কেন, মানুষ ভাল করেই জানে ধর্মনিরপেক্ষতা মানেই হল ধর্মহীনতা যা এ দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব নয়, অন্তত বাস্তব অনুশীলনে তাই প্রমাণিত। যারা ইসলামের সঠিক শিক্ষাকে ( ব্যক্তিগত ইবাদতের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার নাম ইসলাম নয়, যার পরিব্যাপ্তি পরিবার সমাজ রাষ্ট্র সর্বোপরি বিশ্বব্যাপী) তাদের জীবনে অনুশীলনে ভয় পায়, তারা ধর্মনিরপেকক্ষতার পক্ষে আদা জল খেয়ে নেমেছে। অনেকে বলবেন, বিশাল জনগোষ্ঠী শেখ সাহেবকে সমর্থন দিয়েছিল, তাকে সমর্থন মানেইত ধর্মনিরপেক্ষতবাদকে সমর্থন দেয়া। আসল ব্যাপার হল, মানুষ তাকে সমর্থন দিয়েছিল তার নেতৃত্বে দেশকে স্বাধীন করার জন্য, ধর্মহীনতাকে মেনে নেয়ার জন্য নয়।
# ১৯৭৩ সালে শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টের উপর পাবলিক ওপিনিয়নের জন্য কিছু প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়, যেখানে মাত্র ২১% ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে মত আর ৭৪ % মত দেয় ধর্মীয় শিক্ষার পক্ষে। সেখানেও শেখ সাহেব গোয়ার্তুমি করলেন, ৭৪ % লোকের মতামতকে গ্রাহ্য না করে ২১ % লোকের প্রাধান্য দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা ব্যাবস্থা চালু করলেন। উনার কীর্তি কাহিনী সব লিখে শেষ করা যাবেনা, তাই খান্ত দিলাম।
# তার তনয়া হাসিনা ঠিক তার বাবাকেই অনুসরণ করে চলেছেন, বরং তার বাবার চাইতে কয়েক ধাপ এগিয়ে গেছেন। তত্বাবধায়কের প্রশ্নে ৯০% মানুষের মতামতকে তুচ্ছ করে পা চাটা নির্বাচন কমিশন দিয়ে জোরপুর্বক নির্বাচন করে ক্ষমতার গদিকে পাকাপোক্ত করেছেন। শাহবাগীদের তর্জন গর্জনে রাতারাতি সংবিধান সংশোধন করে আল্লাহর এক নিরপরাধ বান্দাকে ফাসির কাষ্ঠে ঝোলালেন, অথচ শাপলা চত্বরে শাহবাগের চেয়ে দ্বিগুন মানুষের দাবী তিনি কানেও তুললেন না, বরং আরেকটি রাতের আধারে আরেকটি অপারেশ্ন সার্চ লাইটের অবতারণা করলেন।
মানুষ দুঃখ কষ্টগুলোকেই বেশি মনে রাখে। ভাল কাজের মাধ্যমেই মানুষের কাছে আপনি হতে পারেন অধিক জনপ্রিয়, মানুষ আপনাকে স্মরণ করবে গর্বের সাথে। আর মানুষের মনে কষ্ট দিবেন তো, আপনাকে ঘৃণাভরে স্মরণ করবে।
শেষে একটা গল্প বলে শেষ করব, এক লোক, যার পেশা ছিল রাতের আধারে লাশ চুরি করা। একদিন তার ছেলদের ডেকে বলল, তোমরা এমন কাজ করবে, যাতে লোকজন তোমাদের বাবাকে ভাল বলে।
ছেলেরা চিন্তা করে দেখল, লাশ চুরি করা ছাড়া বাবাকে তো আর কিছু করতে দেখেনি, তাহলে আমরাও তাই করব, তবে অভিনব পন্থায়। তারা লাশ চুরি করত, অতঃপর কলিজা, নাড়ি ভূড়ি বের করে ঝুলিয়ে রাখত। তাদের এইসব জঘন্য কান্ড দেখে লোকজন বলতে লাগল, এই বদ গুলোর চাইতে তাদের বাপই অধিক ভাল ছিল......
বিষয়: বিবিধ
১৬৯১ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন