যৌনাচার মুক্ত ক্যাম্পাস চাই
লিখেছেন লিখেছেন হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ০ ০৩ এপ্রিল, ২০১৪, ১২:০৩:১১ রাত
তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়তাম, হলে ছাত্র লীগের দু গ্রুপের সংঘর্ষে ৭০-৮০ জন ছাত্র আহত হয়েছিল। তার মধ্যে আমার অনেক বন্ধু, রুম্মেইট ছিল। এক জনকে হাসপাতালে দেখতে রওয়ানা দিলাম। কলা ভবনের সামনের রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম, হাতে ছিল খবার ভর্তি টিপিনকারী ।
হাতের বাম পার্শ্বে আমতলার দিকে চোখ পড়ল, সেখানে পরিবেশটা ছিল কিছুটা আলো আধারি। সন্ধার পর কপোত কপোতিরা সেখানে ভির জমায়, অন্তরঙ্গ অবস্থায় কি সব করে বেড়ায়। আশ্চর্যের ব্যপার হল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু জায়গা এই রকম আলো আধারি থাকে কোন অজানা কারণে, অজানা বললাম, এই জন্য কারণ আমার জানা নেই।
তাদের মধ্যে দুজনকে এমন আপত্তিকর অবস্থায় দেখলাম যে বেদিশা হয়ে তাদের লীলা খেলা দেখতে গিয়ে আচমকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা বিদ্যুতের খাম্বার ঝুলানো তারের সাথে আঘাত খেলাম, হাত থেকে টিফিঙ্কারি পড়ে গেলো। গলায় বেশ কিছুটা চোট পেয়ে ছিলাম। মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। কিন্তু কি করতে পারি, যা করে করুক, আমার কি এই মনে করে আবার হাঁটতে শুরু করলাম।
এটা কোন বিনোদন পার্ক নয়, দেশের সেরা বিদ্যা পীঠ, এমন একটি জায়গায়র পরতে পরতে হরদম নোংরামি চলছে, দেখার কেও নেই, বলার কেও নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ বিশেষ জায়গায় গুলোতে বহিরাগত নষ্টাদের দল এসে এই সব নোংরামি করে বুক ফুলিয়ে চলে যায়। যা কিছু হয় হোক, হয় উপভোগ করো, নয়ত চোখ বন্ধ করে পথ মাপ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্তিরিয়াল বডির একটা গাড়ি সন্ধ্যা ৭/৮তার দিকে মাইকিং করে বহিরাগতদের ক্যাম্পাস ছেরে চলে যেতে বলে। কি লাভ , ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে যায়। নোংরামির কিয়দংশ রেখে কাম্পাস অপবিত্র করে ক্লান্ত শরীর, কিন্তু প্রফুল্ল মন নিয়ে স্ব সম্মানে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে।
সন্ধার পর পর যদি বিশ্ববিদ্যালয় করতিপক্ষ প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহন করত, তাহলে শিক্ষার পরিবেশে নষ্টাদের যৌনাচারের ক্ষেত্র তৈরি হতোনা। বিষয়টা আমার এই রকম মনে হচ্ছে, তোমাদের এক দু ঘন্টা সময় দিলাম, এই সময়ে যা কিছু করার করে নাও, তারপর, আমরা আসব, তোমরা চলে যাবে, আমাদের দায়িত্ব পালন করা হল, আর তোমারাও তৃপ্তির ঢেকুর তুলে সদর্পে চলে গেলে।
অনেক লোক বেড়াতে এসে এই সব বেহায়াপনা দেখে স্বভাবতই মনে করে এই সব এখানকার ছাত্র ছাত্রিদের কাজ, একটা নেতিবাচক ধারনা জন্ম নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রিদের প্রতি। প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে, নষ্টাদের বেশিরভাগ, শতকরা ৮০ ভাগ বহিরাগত। হা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কুলাঙ্গারও আছে, যারা এই নষ্টামিতে যোগ দিয়ে থাকে।
আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাস আজ সব দিক থেকে অরক্ষিত। যে কেও এসে এখানে নষ্টামি, লোচ্চামি করতে পারবে, মদ গাজার আসর বসাতে পারবে, ইভটিজিং, যৌন হয়রানি করতে পারবে। কার কি বলার আছে। বিশ্ববিদ্যালয় করতিপক্ষ যেন মরে গেছে। আমাদেরি কিছু মহা বদ ছাত্র নেতার সাহাযে এই সব কিছু হচ্ছে।
সন্ধার পর বট তলা, আমতলা, টি এস সি, চারুকলা, মুহসিন হল মাঠ হয়ে কেও ঘুরে আসলে বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে এটা বিশ্ববিদ্যালয়, এটা পড়াশুনার জায়গা। তারা ধরেই নেবে পতিতালয়ের এক্সটেনশন।
প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাজার ছাত্র ছাত্রী মেধা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে বের হয়, কিন্তু নৈতিক অবক্ষয়ের ফলে নীতি নৈতিকতার মানদণ্ডে অনেক পছনে পড়ে থাকে। এখনি সময় এই সবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার। নয়ত এই স্থান নষ্টাদের স্বর্গ রাজ্যে পরিনত হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৫৫৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নষ্টামি ঠেকাতে শিবিরের বিকল্প নেই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন