ছেলেটির পকেটে এসিডের বোতল

লিখেছেন লিখেছেন bojrokonTho ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৭:১৮:০৩ সন্ধ্যা



এসিড প্রসঙ্গে পরে আসছি। মেয়েটি আমার ফ্রেন্ডলিস্টে ছিল। মাঝে মাঝে লাঞ্চ হইছে, ডিনার? এ জাতীয় টুকটাক কথা হতো। একদিন বলল, 'আমার গিট্টু হয়ে গেছে' ভাবলাম বিয়ে। কিন্তু বিয়ে না, লাভ না টাভ হয়েছে একজনের সাথে। বললাম ছেলেটা কে? ছবি এবং আইডি লিঙ্ক দিল।

বাংলা পাঁচের মত ভাঙ্গা গাল, ম্যাচের কাঠির মত শরীরের র‍্যাব ছেলেটাকে দেখে ভালো লাগল না। বললাম, তোর সাথে মানাবে না। কিন্তু তার মধ্যে তৃপ্তির ঢেকুর দেখে চুপ হয়ে গেলাম। একদিন ছেলেটা অনেকক্ষন চ্যাট করল। এর কয়েকদিন পর তাদের কারো আইডি খুঁজে পাচ্ছিলাম না। ভাবলাম এ কাহিনিটা তাহলে এখানেই শেষ..

গত দুদিন আগে কাহিনিটাতে সংযোজন হয়েছে। হঠাৎ নীলের আবির্ভাব। ভালো-মন্দ জানার পর বললাম,

-র‍্যাব কেমন আছে?

-ওতো একটা কু...

-কেন, কি হয়েছে?

-ও আমার লাইফটা বিষাক্ত করে তুলেছে। আমার সিম তুলে নিয়েছে, আমার এফবি আইডিতে ঢুকে পরিচিত সকল ফ্রেন্ডকে ব্লক মেরেছে, আমার সবকিছুতেই তার বাধা। সর্বশেষ সে আমাকে পালিয়ে বিয়ে করতে বলেছে। কিন্তু এটা আমার পক্ষে সম্ভয় নয় বলে আমি তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছি। এখন সে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে...

-তখনতো বলেছিলাম তোর সাথে মানাবে না।

-ও আমাকে ম্যান্টালিটি ব্লাকমেইল করেছিল, বলতো আমাকে না পেলে মরে যাবে.. নিজেকে শেষ করে দিবে...

এর মধ্যেই নীলের তুলে নেয়া নাম্বার থেকে র‍্যাব ছেলেটা ফোন দিল। কুশল বিনিময়ের পর কেঁদে ফেলল ছেলেটা। বলল রাফসান (আমার ছদ্ম নাম) তোমার কি একটু সময় হবে? আমার ষ্টোরি শুনলে তুমি-ও চোখের পানি ধরে রাখতে পারবে না। বলতে শুরু করল সে-

আমার লাইফের সবচে বড় ভুল এই মেয়েটাকে ভালোবাসা, সে শুধু আমার চোখদুটো খায়নি আর সব খেয়ে ফেলেছে। ফেসবুকে অসংখ্য ছেলের সাথে তার রিলেশন। এসব নিয়ে কথা বললে সে আমাকে এড়িয়ে চলে। তার সিম তুলে পার্টনার লিস্টে একটি নাম্বার পাই। এ ব্যাপারে আমার সাথে ঝগড়া হয়। তখন সে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ১৫দিন কথা বলতে না পেরে আমি আমার ডান হাতের রগ কেটে ফেলি। আমার চাকরিটা চলে যায়। কিন্তু এটা জানার পর-ও সে আমার কোন খোঁজ নেয়নি। আরো কিছুদিন পর একদিন আমি তাকে রাত ১২টা পর্যন্ত সময় দিলাম। মেসেজে জানালাম, আজ রাতের মধ্যে কথা না বললে আমি আত্মহত্যা করব। ১২টা পেরিয়ে গেলেও তার কোন মেসেজ বা ফোন আমি পাইনি। ১২টা পাঁচে আমি রশিতে ঝুলে পড়ি।

আমার গলার রগ ফেটে যায়।

-তুমি মেয়ে মানুষ নাকি? পুরুষ মানুষ কি গলায় দড়ি দেয়?

-আমি এখন মানুষ্‌ই না।

-তুমি যখন জেনে গেছ মেয়েটা ভালো না, তবু তার জন্য নিজেকে শেষ করতে গেলে কেন?

-আমিতো আগে জানতাম না ও এমন। আমি কিন্তু তাকে ছাড়ছিনা ভাইয়া..

-তুমি নিজেই নিজের ক্ষতি করেছ, তার দোষ কি? এখন বাদ দাও সব। নিজের জীবনটাকে গোছানোর চেষ্টা করো।

-না ভাইয়া, ও আমাকে স্বপ্ন দেখালো কেন? আমার মরহুম বাবাও যদি কবর থেকে এসে রিকুয়েষ্ট করে, তবু আমি আমার প্রতিজ্ঞা থেকে সরে আসবো না।

-কি করতে চাও?

-আমি তাকে এমন যন্ত্রনা দিব, যেন সারাজীবন আমাকে মনে রাখে। আমি তার বাড়ি- ঘর দেখে এসেছি। সারাদিন ফটিকছড়িতে ই থাকি। আমার পকেটে এসিডের বোতল থাকে। আমি তার সুন্দর মুখটা জাষ্ট ঝলসে দিব... একটা সুযোগ...শুধু একটা সুযোগের অপেক্ষায় আছি..

শেষ পর্যত কোনো দুর্ঘটনার সংবাদ যেন না শুনি, সে কামনাই করছি। মেয়েটাকে আশ্বস্ত করেছি। বলেছি, ভয় নেই। তবে সতর্ক থাকিস। ছেলেটাকে অনেক বুঝাচ্ছি। এ জাতীয় ঘটনা রোধে সবার সচেতন হ্‌ওয়া প্রয়োজন। সম্পর্ক বিস্তৃতির ক্ষেত্রে নিয়ম মানা উচিৎ. আর নিজের ক্ষতি করার আগে ভাবতে হবে একশবার.. টপ করে দড়িতে ঝুলে পড়া নয়...

বিষয়: বিবিধ

১১৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File