কই এর তেলে কই ভুনাঃ প্রসঙ্গ সুদ [নো মিস প্লীজ]

লিখেছেন লিখেছেন bojrokonTho ১৫ মে, ২০১৪, ০১:০৫:৫০ দুপুর

কই এর তেলে কই ভুনাঃ প্রসঙ্গ সুদ

[নো মিস প্লীজ]

প্রথমে 'সুদ' এর সংজ্ঞাটা দেয়া যাক।

'কাউকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ঋণ দেয়া লাভ দেয়ার শর্তে'

এটাই সুদ।

সুদের আরো একটি প্রকার আছে সে প্রকার নিয়ে আজ আলোচনা নয়।

উল্লেখিত সুদকে জায়েয করার জন্য কেউ কেউ এটিকে দুই ভাগে ভাগ করে থাকে।

১/ মহাজনী সুদ

২/ তেজারতী সুদ

তাদের বক্তব্য মহাজনী সুদ নাজায়েয। এটি পূর্বে ছিল। এর প্রকৃতি হল, অভাবী লোকেরা মহাজন থেকে সুদের ভিত্তিতে টাকা ধার নিত। মহাজন জুলুমপূর্বক সুদ নিত।

সুতরাং মহাজনী সুদ অবৈধ।

আর তেজারতী সুদ বৈধ।

যুক্তি হল।

যেহেতু গরীব লোকেরা অল্প অল্প করে ব্যাংকে টাকা রাখে। আর বড়লোকেরা ব্যাংক থেকে সেই টাকা নিয়ে মিল-ফ্যক্টরী করে।

যদি এ সুদকে নাজায়েয বলা হয়।

তাহলে বড়লোকেরা গরীবের টাকা দিয়ে ব্যবসা করবে। অথচ গরীব কিছুই পাবেনা।

বাহ্যিক ভাবে এই বক্তব্য যুক্তিযুক্ত মনে হচ্ছে।

এর জবাব হল শরীয়ত আবর্তিত হয় 'কারন' এর ভিত্তিতে।

কে নেবে? কেন নেবে? কার থেকে নেবে? এ সকল বিষয় সুদের সংজ্ঞায় উল্লেখ করা হয়নি।

বলা হয়েছে যে কেউ নিক, যে কেউ দিক যদি তা নির্দিষ্ট সময়ে 'লাভ' এর শর্তে হয়। তাই সুদ।

আর বর্তমানে সুদ জায়েয না হলে গরীব মানুষকে ঠকানো হয়। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা।

আসুন কই এর তেলে কই ভাজার সে নমুনাটা দেখে আসি।

মনে করুন একজন লোক একটি বিস্কুট ফ্যক্টরী করবে।‎‏ ‏এ জন্য সে ব্যাংক থেকে লোন নিল ৯০ হাজার টাকা। তার নিজস্ব ১০হাজার টাকা। ব্যাংকের টাকাগুলো কিন্তু গরীব জনগণের। সুতরাং তার ব্যবসায় ৯০% টাকা জনগণের ১০% তার।

তাহলে মালিক ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ফ্যক্টরী করল। তারপর বিস্কুট উৎপাদন করল।

এবার এই বিস্কুটের দাম নির্ধারণ করবে ( ) বিভাগ। এ ক্ষেত্রে তারা হিসেব করবে কত হাজার বিস্কুট উৎপাদন হয়েছে। এর পেছনে কতটাকা ব্যয় হয়েছে। সব ব্যয় হিসেবের পর কিছু লাভ রেখে বিস্কুটের দাম ঠিক করা হয়।

তারা দেখবে এই পরিমাণ বিস্কুট উৎপাদন করতে কত টাকা শ্রমিকদের দিতে হয়েছে?

এক মাসের মেশিন ভাড়া কত?

বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল কত?

পদস্থ কর্মকর্তাদের বাসা ভাড়া কত?

দেশে প্রাকৃতিক দূর্যোগে ত্রান হিসেবে সরকারকে কত দিতে হয়েছে?

কাঁচামাল লেগেছে কত টাকার?

প্যাকিং খরচ কত?

সর্বশেষ তারা দেখবে ব্যাংক থেকে যে টাকা ধার নেয়া হয়েছে তার সুদ কত পার্সেন্ট?

ধরুন ১২% . এটাও হিসাব করা হবে।

এই সব মিলিয়ে ১ প্যাক বিস্কুটের দাম ঠিক করা হবে। যাতে সব খরচ বাদ দিয়ে কিছু লাভ থাকে।

[ধরুন টোটাল খরচ হল পার পিস এ ১ টাকা ৯০ পয়সা। দাম ধরে দিল ২ টাকা]

এখন আসুন আপনি ব্যাঙ্কে টাকা রেখেছেন ব্যাংক আপনাকে ৮% সুদ দিবে। আর ব্যাংক মালিককে টাকা দিয়েছে ১২% সুদে। ৪% ব্যাংকের, বাকী ৮% আপনার।

এবার দেখুন উক্ত মালিক তার পণ্যটা বিক্রি করবে কাদের কাছে?

আপনার আমার মত গরীব জনগণের কাছেই।

ফল দাঁড়াল কি?

আপনি যে বিস্কুটের প্যাকেট কিনলেন এতে মালিক আপনার কাছ থেকে তার ব্যাংকের ১২% সুদের টাকা নিয়ে নিল।

আপনি পাচ্ছেন ৮% সুদ। আর আপনার টাকা দিয়ে ব্যবসা করে আপনার কাছ থেকেই কোম্পানী নিয়ে গেল ১২% সুদ।

আপনি জুলুমের শিকার!

মনে আছে? আপনি এই কোম্পানীর ৯০% এর মালিক।

তার মানে আপনার কোম্পানীর পণ্য আপনি কিনছেন উচ্চ সুদে...

এবার ভেবে দেখুন এই সুদ জায়েয হলে গরীবের লাভ হবে?

নাকি গরীবকে আরো মারা হবে?

বিষয়: বিবিধ

১১৭১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

221821
১৫ মে ২০১৪ দুপুর ০২:৪৫
আহ জীবন লিখেছেন : সবই গনতন্ত্র আর পুঁজিবাদের খেলা।
221871
১৫ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৫
ফেরারী মন লিখেছেন : সুদকে ঘৃণা করি। কখনো খাইনি কাউকে দেইওনি। আপনার ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File