Winking life
লিখেছেন লিখেছেন সূর্য্য গ্রহণ ১১ মে, ২০১৪, ১০:৫৭:৪৩ রাত
প্রখর রোদে হাঁটাটা অদ্ভুত। নেশাখোরের মত লাগে। অনেকক্ষণ ধরে হাঁটলে শরীরের অবস্থা কাকভেজা হয়ে যায় ঘেমে। ঘামানো শরীরের সব কিছুই পাতলা পাঞ্জাবীর ভেতর দিয়ে দেখা যাচ্ছে কারণ পাতলা পাঞ্জাবিটা ঘামে ভিজে শরীরের সাথে লেপ্টে আছে। একটা যাত্রী ছাউনী খঁজছি, ছায়ায় বসলে মাথার পাগলামিটা কমে যাবে। ছায়ায় বসায় নতুন কেনা পাঞ্জাবীটার একটা বৈশিষ্ট্য দেখা যাচ্ছে। এর হাতার শেষদিকটা পাতলা সাদা সুতোর নকশা করা। এটা দেখতে পেলে কিনতাম না, নকশা জিনিসটা আমার পছন্দ নয়।
নকশা নিয়ে একটা কাহিনী আছে। গতবার সাদা পাঞ্জাবী পড়ে মিলির সাথে রিকশায় ঘুরছিলাম। রিকশা থেকে নামার সময় পকেটটা ছিড়ে যায়। মিলি আমার পাঞ্জাবিটা রেখে দেয় সেলানোর জন্য। পাঞ্জাবীর নিচের কালো গেঞ্জির জন্যে সেবার উদোম গায়ে বাসায় ফিরতে হয়নি। তিনদিন পর পাঞ্জাবী সেলাই করে মিলি ফেরত দিয়ে যায়। পাঞ্জাবীর দুই হাতায় নকশা, যা আগে ছিলো না। এর কারণে পাঞ্জাবিটা আর পড়া হয়নি। আজ তার অনুপস্থিতিটা বুঝছি।
-ভাইয়ের কাছে ম্যাচ হবে?
-না ভাই।
-দুঃখিত। ভেবেছিলাম আপনি সিগারেট খান।
-খাই না, তবে পান করি।
-তাহলে ম্যাচ নেই যে?
-ম্যাচ পকেটে রাখলে ঘামে ভিজে যায়, সাথে ম্যাচও নষ্ট
-তাই ঠিক
-হুম্
-ভাই আপনিও একটা নিন না !
-না ভাই। একজনের কথায় বাদ দিচ্ছি।
-ও বুঝেছি কার কথায়
-না বুঝেননি। যার কথায় ছাড়ছি সে আমার সম্পূর্ণ অপরিচিত
-হে হে ! ভাইসাহেব তো আজব মানুষ !!
-আসলে তার কথা ঠিক। এটার কোনো উপকার নেই, শুধুই বুকে ব্যাথা !!!
-ঠিক। কিন্তু এটাই তো একমাত্র বন্ধু !!!
-আর কোনো কথা নয়। যা আমার ক্ষতি করে তা কখনোই বন্ধু হতে পারে না।
লোকটা গম্ভীর হয়ে গেলো। পাঁচটা বেনসনসহ প্যাকেটটার দিকে অবিশ্বাসের চোখে তাকাচ্ছে। সামনের ড্রেনে ফেলে দিবে কিনা ভাবছে। ড্রেনের নোংরা পানির স্রোত তাকে বলছে "ফেলে দে, ফেলে দে।" লোকটা উঠে দাঁড়ালো। হাতটা এগিয়ে প্যাকেটটা ফেলে দিলো। প্যাকেটটা হয়তো "টুপ" করে পড়েছে, কিন্তু শহরের কোলাহলে তা শোনা যায়নি। আমার মাথাটা শহরের কোলাহল থেকে অনেক দূরে। এই সময়টা কোনো অপরিচিতের হাত ধরার নয়। নয়তো শহুরে ঘুরে ফিরা কাক কিংবা বনবনিয়ে চলা মাছির "ফেলে দে, ফেলে দে" শুনতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১০০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন