দয়া করে পড়ুন, না পড়লে আপনার ক্ষতি ! আপনার বিপদ আপনাকেই জানতে হবে, বিভ্রান্ত হবেন না

লিখেছেন লিখেছেন পদ্ম পাতা ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৪:৩৯:২২ বিকাল

গত ২৩ অক্টোবর, ২০১৫ তারিখে সঠিক ইসলাম নামের এক মুসলিম ব্যক্তি “টুডে ব্লগে” মিথ্যা এবং অসত্যে ভরপুর একটা পোস্ট দিয়েছেন । পোস্টটি বেশ অনেকবার পঠিত হয়েছে । বিভ্রান্তি দূর করার জন্য আমি এর ভন্ডামী নিরসনে কিছু প্রমান পেশ করছি । দেখুন, বিভ্রান্তি কিভাবে ছড়ানো হচ্ছ্‌ এবং কিভাবে আপনার আবেগ নিয়ে খেলা করা হচ্ছে ।

শেখ হাসিনার মাধ্যমে বাংলাদেশ আবার তার স্বাধীনতা হারাবে ভারতের কাছে - কাসিদায় শাহ নেয়ামতুল্লাহ এর ভাবিষ্যতবানী! শিরোনামের এই লেখায় অখ্যাত এক শাহ নেয়ামতুল্লাহর কথা বলা হয়েছে যিনি ৮৫৭ বছির আগে যা ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন তার সবই একটার পর একটা প্রমাণীত হচ্ছে ।

কিন্তু আমার লেখার দ্বারা প্রমাণিত হবে যে,

০১) এটি আসোলে ৮৫৭ সালের আগের রচনা নয়, বরং ইদানিংকালে কোন ভন্ডের নিজস্ব রচনা

০২) সেই সাথে পূর্বকালের এই ধরণের কোন রচনার অস্তিত্বই ছিল না

প্রথম দিকে লেখা হয়েছে,

শাহ নেয়ামতুল্লাহ (রহ.) ‘কাশ্ফ’ ও ‘ইলহাম’র মাধ্যমে প্রাপ্ত এসব অদৃশ্য ইশারা তথা ভবিষৎবাণী লাভ করেন।


যেখানে কোন রাসূল পর্যন্ত ভবিষ্যত জানতেন না সেখানে তথাকথিত কোন নেয়ামতুল্লাহর প্রশ্নই উঠে না । ‘কাশ্ফ’ ও ‘ইলহাম’ কি রাসূলদের ছিল না ?? নাকি তথাকথিত এই নেয়ামতুল্লাহ তাদের চাইতেও বেশি শক্তিশালী ?? আল্লাহ বলেছেন, আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই। আমি এমন বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না ? (৬:৫০)

তারপর বলা হয়েছে

ইংরেজ আমলে ব্রিটিশ শাসকরা এটি নিষিদ্ধ করে। এর দ্বারা যুগে যুগে মুসলমানেরা উজ্জীবিত হয়েছেন।


ইতিহাসে এই ধরণের কোন গ্রন্থের নজির মেলে না । আবার নাকি বৃটিশ সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ হয়েছিল ! তাহলে ত আরও বেশি বিখ্যাত হবার কথা । লেখক পারলে এর কোন ঐতিহাসিক প্রমান পেশ করুক ।

এরপর লেখা হয়েছে

পাশ্চাত্যের অনেক গবেষক শাহ নেয়ামতুল্লাহ (রহ.)-এর কাশফে প্রাপ্ত ইলহামী এ কবিতা নিয়ে অতীতে যেমন গবেষণা করেছেন, বর্তমানেও এটি নিয়ে গবেষণার অন্ত নেই।



আদৌ কোন গবেষণার প্রমাণ নেই । পারলে দেখান ।

তারপর রয়েছে

বইটি ১১৫৮ সালে শাহ নিয়ামাত উল্লাহ রচনা করেন। তিনি একজন আরবি কবি ও আলেম ছিলেন, কাসিদাহ বইটি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হাদিসের আলোকে আরবি ভাষায় লেখা হয়েছে


একই লেখার আরেক যায়গায় লেখা হয়েছে,

৫৮ লাইনের এ ভবিষ্যৎবাণী ফার্সি ভাষায় ১১৫৮ সালে লেখা হয়েছিল । এটি ইংরেজ আমলে নিষিদ্ধ ছিল।


ভন্ডামী আর কাকে বলে !

এরপর রয়েছে

বইটি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলায় অনুবাদ করেছে। বঙ্গানুবাদ বইটি আজ থেকে ৪৩ বছর আগের ।

মজার ব্যাপার হল আজ থেকে তেতাল্লিশ বছর আগে বাহাত্তর সাল । আর ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয় ৭৫ সালে । অর্থাৎ তখন ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিতই হয়নি । আর ইসলামিক ফাউন্ডেশনও এধরণের কোন বই অনুবাদ করে নি ।

আরও দেখুন

বইটির 37 নং লাইনে বলা আছে, কোন একসময় হিন্দুদের অর্থাৎ (ভারতের) পাঞ্জাব প্রদেশ মুসলমানরা দখল করে ফেলবে। এরপর 38 লাইনে বলা আছে, ভারত পাল্টা মুসলমানদের একটি শহর দখল করে ফেলবে। আর সেখানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড চালাবে, ধনসম্পদ লুটপাট করে নিয়ে যাবে। প্রত্যেকটি ঘর কারকালায় রুপান্তরিত হবে। আপনি কী জানেন হিন্দুরা অর্থাৎ ভারত কোন শহরটির দখলে নিবে? ভারত দখল নিবে বাংলাদেশের। হ্যাঁ বাংলাদেশের। কারন : 39 নং লাইনে বলা আছে, দুই ইদের মাঝখানে কোন এক মুসলিম নামধারী শাষক ভারতের সাথে একটি চুক্তি করবে। এরপর ভারত ঐই শহরটি দখল করবে। মুসলিম নামধারী শাষকের পরিচয় এভাবে দেয়া হয়েছে যে, তার নামের প্রথম অক্ষর হবে, আরবি অক্ষর শিন দিয়ে, আর শেষ অক্ষর নুন দিয়ে।

আপনি কী জানেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামের প্রথম.অক্ষর ও শেষ অক্ষর কি দিয়ে?

শিন ও নুন দিয়ে। যারা আরবি জানেন তারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। অর্থাৎ শেখ হাসিনা।


মজার ব্যাপার হল সামান্যতম আরবী জানে তারাও জানেন যে আরবীতে (شيخ حسنة) লিখতে শেষে গোল তা ব্যবহার করতে হয় -নূন নয় । অর্থাৎ ভন্ডটা আরবীও ঠিক মত জানেনা । সাধারণ মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার এক মহা কৌশল । এরপরও কি প্রমান করতে হবে এরা ভন্ড ??

দয়া করে লক্ষ করবেন,

লেখাটিতে বারবার বাংলাদেশ হিন্দুস্তান জড়িয়ে একটা যুদ্ধের অবতারনা করার কথা বলা হয়েছে । আবার মুসলমানদের যুদ্ধ-জয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে ।

এবার আরেকটু ভালো করে লক্ষ করুণ,

এই মূহুর্তে বাংলাদেশে একটি জঙ্গি শক্তির উত্থান কাদের সবচাইতে বেশি জরুরী ? যুক্তরাষ্টের নয় কি ? চীনকে চাপে রাখার জন্য আশেপাশে একটি সামরিক ঘাটি তাদের খুবই দরকার । ইদানিং যেসব ব্লগার হত্যাকান্ড সংঘঠিত হচ্ছে তার প্রত্যেকটা ঘটনার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র তাদের তদন্ত দল পাঠাতে চাইছে, যা আগে কখনও চায়নি । কোথায় শিয়া মসজিদে হামলা হয়েছে তার সংবাদ যুক্তরাষ্ট্রের ইনটেলিজেন্স এজেন্সির ওয়েব-সাইট জুড়ে । অর্থাৎ They are in action. হুজুগে মুসলমানদের উস্কে দিয়ে মোটামুটি একটা লিগ্যাল গ্রাউন্ড তৈরী করেই তারা এখানে হামলে পড়ার একটা ইঙ্গিত এগুলো । সাবধান হতে হবে এখনই । লক্ষ করেছেন কিনা জানিনা শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের কোন তদন্ত দলকে বাংলাদেশে আসার অনুমতি দেননি, ওদিকে সরকারও কোন ঘটনার কূল কিনারা করতে পারছে না । শেখ হাসিনা ভালো করেই জানে এখন যদি এদেরকে ঢুকতে দেয়া হয় তাহলে এরা আর বেরুবে না । তাতে সবার ক্ষতি ।

বিষয়: বিবিধ

৩২৮১ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

354161
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:০৭
সালাহউদ্দিন নাসিম লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ।
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:১৪
294018
পদ্ম পাতা লিখেছেন : আমাকে আরও ধন্যবাদ দেন ;Winking
354169
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৫৬
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন :
৮৫৭ বছির আগে যা ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন তার সবই একটার পর একটা প্রমাণীত হচ্ছে ।


তিনি স্বীকার করেছেন তথ্যে ভুল সাল যোগ হয়েছে।
আপনাকে বলব, অনেকেই অনেক কিছু লিখবে, তা যদি মিথ্যে এবং ভুল হয়, তাহলে শুদ্ধটা কি, তা সবিস্তারে বর্ণনা করবেন, আপনার শুদ্ধটা লিখার উদ্দেশ্য শুধু যে ভুল লিখেছে সেই হবে না বরং ব্লগের সবাই তা জানবে, ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ রইল।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সত্যটা নিয়ে হাজির হওয়ার জন্য এবং জাযাকাল্লাহু খাইর।
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৫০
294032
পদ্ম পাতা লিখেছেন : শুধু কি সালে ?? ভুল ত আমি অনেকগুলো ধরেছি । উনি কি তার জবাব দিয়েছেন ??
354176
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:২৪
শেখের পোলা লিখেছেন : আপনি মাঠ ফাঁকা করে গোল দিতে চান এমন বীর পুরুষ! সাহস থাকলে তিনি আপনার জবাব পোষ্টের মাধ্যমে দিতে বাধ্য হয়েছেন, কারণ আপনি তাকে ব্লক করেছেন৷ তিনি হয়ত আপনার জন্য তা করেননি৷ সেখানে গিয়ে কাদা ছুঁড়ে আসেন৷
১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৪৯
294031
পদ্ম পাতা লিখেছেন : সচেতনভাবে ব্লক করিনি, হয়ত কোন ভাবে হয়ে গেছে । আমি কমেন্ট করেছি গিয়ে দেখে আসুন ।
354330
১৭ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ০৮:৪৩
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : লেখাটি ভালো লাগলো। দলিল ভিত্তিক লেখা।
354797
২১ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৩৬
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : ভালো লাগলো

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File